আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের প্রত্যেকের রয়েছে দামি গাড়ি ও ঢাকায় বাড়ি। কারও কারও আছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস। গত তিন মাসে এই চক্রের ব্যাংক হিসাবে কমবেশি ২৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এরই মধ্যে তাঁদের সবার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস কাণ্ডে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ছয়জনই পিএসসিতে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পদের কর্মকর্তা যেমন আছেন, তেমনি রয়েছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও। তাঁরা এক যুগ ধরে বিসিএসসহ অন্তত ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ জন গতকাল সন্ধ্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
পিএসসির গ্রেপ্তার তিন কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম হোতা সিলেট বিভাগীয় অফিসের উপপরিচালক (ডিডি) জাহাঙ্গীর আলম। এই কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ভরানীগঞ্জে। নিজ এলাকায় বিপুল সম্পদের মালিক তিনি; পাশাপাশি ঢাকায়ও রয়েছে তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ডি ব্লকের ১ নম্বর সড়কের ৮/ও নং বাড়ির তৃতীয় তলায় ২ হাজার বর্গফুটের বেশি একটি সুসজ্জিত আধুনিক ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। এই ফ্ল্যাট থেকেই তাঁকে ৭ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এ ছাড়া রাজধানীর মিরপুর ও ভাটারায় তাঁর একাধিক ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। এই কর্মকর্তার তিনটি ব্যাংকে অন্তত ১৩ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ৫ জুলাই রেলওয়ের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই সময়ও তাঁর অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়।
সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার পিএসসির অপর উপপরিচালক মো. আবু জাফরের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া এলাকায়। তিনি ঢাকার আজিমপুরে সরকারি কলোনিতে পরিবার নিয়ে বাস করলেও তাঁর নামে মোহাম্মদপুরের তিনরাস্তা এলাকায় প্লট ও ফ্ল্যাট রয়েছে। মালিবাগের চৌধুরীপাড়ায় জ্যোতি কমার্শিয়াল সেন্টার নামের কোচিং সেন্টার রয়েছে তাঁর। সেখানে চাকরির কোচিংয়ের আড়ালে ফাঁস করা প্রশ্নের কেনাবেচার কারবার ও নিয়োগ-বাণিজ্যের চুক্তি করেন তিনি। এই কর্মকর্তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র।
আবু জাফরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে প্রায় ৬০ শতাংশ জমির ওপর একটি ডুপ্লেক্সের নির্মাণকাজ চলমান রেখেছেন তিনি। বাড়ির দরজায় একটি মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
মিয়া বাড়ি হাফিজিয়া লিল্লাহ বোর্ডিং মাদ্রাসা নামের ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ইমরান হোসেন বলেন, ‘মসজিদ মাদ্রাসা তাঁদের, এখানে যত খরচ জাফর মিয়া ও তাঁর ভাই আউয়াল মিয়া চালান।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক মৃধা বলেন, ‘আমরা জানি, জাফর মিয়া সচিবালয় চাকরি করে, ভালো টাকাপয়সা আছে। এহানে একটা বাড়ি বানাইতেছে আর মসজিদ মাদ্রাসা করছে। তয় এখানে তেমন আসে না।’
অভিযুক্ত পিএসসির আরেক কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির। তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছীর কোলাহাট এলাকায়। রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের সরকারি বাসভবনে পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। তাঁরও মিরপুরে চাকরির কোচিং সেন্টার রয়েছে। ওই কোচিং সেন্টারে যাঁরা কোচিং করতেন, তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিতেন এই কর্মকর্তা। তাঁর কাছেও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মিলেছে।
পিএসসির গ্রেপ্তার হওয়া ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমানের গ্রামের বাড়ি যশোরের কেশবপুরের বড়েঙ্গায় নিম্নপদে চাকরি করলেও ঢাকায় দামি ফ্ল্যাট ও গাড়ি আছে তাঁর। গত ৬ বছরে এসব সম্পদ করেছেন খলিল। রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফিটের পরমাগলিতে তাঁর ফ্ল্যাট আছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত পিএসসির আরেক কর্মচারী সাজিদুল ইসলাম এক যুগের বেশি অফিস সহকারীর কাজ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর চরজব্বার থানার চরবাটা এলাকায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের অন্যতম হোতা এই সাজিদুল। তাঁর ভাই ও বোনের স্বামী বিসিএস ক্যাডার। তাঁর বাবাও সরকারি পরিবহন পুলের গাড়িচালক ছিলেন। সাজিদুল মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন। নোয়াখালীতে তিনি নতুন বাড়ির কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
তবে সবচেয়ে বেশি যাঁকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তিনি হলেন পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। প্রায় ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক আবেদ আলী পিএসসির অন্তত তিনজন চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন। ঢাকায় ফ্ল্যাট, রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা, হোটেল ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে তাঁর। কয়েক বছর আগে তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ধরা পড়ে চাকরিচ্যুত হন। তাঁর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে গত সোমবার তাঁকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গ্রেপ্তার ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের গ্রেপ্তার ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল এ বিষয়ে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সংস্থাটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে ৬ জনের দায় স্বীকার
গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ৬ জন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন আবেদ আলী, পিএসসির অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, ডেসপাস রাইডার সাজেদুল ইসলাম, পানি ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন, সাখাওয়াতের ভাই সাইম হোসেন এবং ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী লিটন সরকার।
অন্যদিকে অপরাধ স্বীকার না করা ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের আবাসন ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, পিএসসির ডিডি আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, এডি এস এম আলমগীর কবীর, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের মুদ্রাক্ষরিক মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল কলেজের টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান ও সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের তদন্ত হবে। সেখানে অবৈধ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে অর্থ পাচারের মামলার সুপারিশ করা হবে।
আরও খবর পড়ুন:

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের প্রত্যেকের রয়েছে দামি গাড়ি ও ঢাকায় বাড়ি। কারও কারও আছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস। গত তিন মাসে এই চক্রের ব্যাংক হিসাবে কমবেশি ২৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এরই মধ্যে তাঁদের সবার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস কাণ্ডে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ছয়জনই পিএসসিতে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পদের কর্মকর্তা যেমন আছেন, তেমনি রয়েছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও। তাঁরা এক যুগ ধরে বিসিএসসহ অন্তত ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ জন গতকাল সন্ধ্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
পিএসসির গ্রেপ্তার তিন কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম হোতা সিলেট বিভাগীয় অফিসের উপপরিচালক (ডিডি) জাহাঙ্গীর আলম। এই কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ভরানীগঞ্জে। নিজ এলাকায় বিপুল সম্পদের মালিক তিনি; পাশাপাশি ঢাকায়ও রয়েছে তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ডি ব্লকের ১ নম্বর সড়কের ৮/ও নং বাড়ির তৃতীয় তলায় ২ হাজার বর্গফুটের বেশি একটি সুসজ্জিত আধুনিক ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। এই ফ্ল্যাট থেকেই তাঁকে ৭ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এ ছাড়া রাজধানীর মিরপুর ও ভাটারায় তাঁর একাধিক ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। এই কর্মকর্তার তিনটি ব্যাংকে অন্তত ১৩ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ৫ জুলাই রেলওয়ের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই সময়ও তাঁর অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়।
সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার পিএসসির অপর উপপরিচালক মো. আবু জাফরের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া এলাকায়। তিনি ঢাকার আজিমপুরে সরকারি কলোনিতে পরিবার নিয়ে বাস করলেও তাঁর নামে মোহাম্মদপুরের তিনরাস্তা এলাকায় প্লট ও ফ্ল্যাট রয়েছে। মালিবাগের চৌধুরীপাড়ায় জ্যোতি কমার্শিয়াল সেন্টার নামের কোচিং সেন্টার রয়েছে তাঁর। সেখানে চাকরির কোচিংয়ের আড়ালে ফাঁস করা প্রশ্নের কেনাবেচার কারবার ও নিয়োগ-বাণিজ্যের চুক্তি করেন তিনি। এই কর্মকর্তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র।
আবু জাফরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে প্রায় ৬০ শতাংশ জমির ওপর একটি ডুপ্লেক্সের নির্মাণকাজ চলমান রেখেছেন তিনি। বাড়ির দরজায় একটি মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
মিয়া বাড়ি হাফিজিয়া লিল্লাহ বোর্ডিং মাদ্রাসা নামের ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ইমরান হোসেন বলেন, ‘মসজিদ মাদ্রাসা তাঁদের, এখানে যত খরচ জাফর মিয়া ও তাঁর ভাই আউয়াল মিয়া চালান।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক মৃধা বলেন, ‘আমরা জানি, জাফর মিয়া সচিবালয় চাকরি করে, ভালো টাকাপয়সা আছে। এহানে একটা বাড়ি বানাইতেছে আর মসজিদ মাদ্রাসা করছে। তয় এখানে তেমন আসে না।’
অভিযুক্ত পিএসসির আরেক কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির। তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছীর কোলাহাট এলাকায়। রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের সরকারি বাসভবনে পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। তাঁরও মিরপুরে চাকরির কোচিং সেন্টার রয়েছে। ওই কোচিং সেন্টারে যাঁরা কোচিং করতেন, তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিতেন এই কর্মকর্তা। তাঁর কাছেও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মিলেছে।
পিএসসির গ্রেপ্তার হওয়া ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমানের গ্রামের বাড়ি যশোরের কেশবপুরের বড়েঙ্গায় নিম্নপদে চাকরি করলেও ঢাকায় দামি ফ্ল্যাট ও গাড়ি আছে তাঁর। গত ৬ বছরে এসব সম্পদ করেছেন খলিল। রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফিটের পরমাগলিতে তাঁর ফ্ল্যাট আছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত পিএসসির আরেক কর্মচারী সাজিদুল ইসলাম এক যুগের বেশি অফিস সহকারীর কাজ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর চরজব্বার থানার চরবাটা এলাকায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের অন্যতম হোতা এই সাজিদুল। তাঁর ভাই ও বোনের স্বামী বিসিএস ক্যাডার। তাঁর বাবাও সরকারি পরিবহন পুলের গাড়িচালক ছিলেন। সাজিদুল মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন। নোয়াখালীতে তিনি নতুন বাড়ির কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
তবে সবচেয়ে বেশি যাঁকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তিনি হলেন পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। প্রায় ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক আবেদ আলী পিএসসির অন্তত তিনজন চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন। ঢাকায় ফ্ল্যাট, রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা, হোটেল ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে তাঁর। কয়েক বছর আগে তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ধরা পড়ে চাকরিচ্যুত হন। তাঁর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে গত সোমবার তাঁকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গ্রেপ্তার ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের গ্রেপ্তার ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল এ বিষয়ে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সংস্থাটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে ৬ জনের দায় স্বীকার
গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ৬ জন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন আবেদ আলী, পিএসসির অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, ডেসপাস রাইডার সাজেদুল ইসলাম, পানি ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন, সাখাওয়াতের ভাই সাইম হোসেন এবং ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী লিটন সরকার।
অন্যদিকে অপরাধ স্বীকার না করা ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের আবাসন ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, পিএসসির ডিডি আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, এডি এস এম আলমগীর কবীর, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের মুদ্রাক্ষরিক মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল কলেজের টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান ও সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের তদন্ত হবে। সেখানে অবৈধ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে অর্থ পাচারের মামলার সুপারিশ করা হবে।
আরও খবর পড়ুন:
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের প্রত্যেকের রয়েছে দামি গাড়ি ও ঢাকায় বাড়ি। কারও কারও আছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস। গত তিন মাসে এই চক্রের ব্যাংক হিসাবে কমবেশি ২৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এরই মধ্যে তাঁদের সবার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস কাণ্ডে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ছয়জনই পিএসসিতে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পদের কর্মকর্তা যেমন আছেন, তেমনি রয়েছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও। তাঁরা এক যুগ ধরে বিসিএসসহ অন্তত ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ জন গতকাল সন্ধ্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
পিএসসির গ্রেপ্তার তিন কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম হোতা সিলেট বিভাগীয় অফিসের উপপরিচালক (ডিডি) জাহাঙ্গীর আলম। এই কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ভরানীগঞ্জে। নিজ এলাকায় বিপুল সম্পদের মালিক তিনি; পাশাপাশি ঢাকায়ও রয়েছে তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ডি ব্লকের ১ নম্বর সড়কের ৮/ও নং বাড়ির তৃতীয় তলায় ২ হাজার বর্গফুটের বেশি একটি সুসজ্জিত আধুনিক ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। এই ফ্ল্যাট থেকেই তাঁকে ৭ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এ ছাড়া রাজধানীর মিরপুর ও ভাটারায় তাঁর একাধিক ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। এই কর্মকর্তার তিনটি ব্যাংকে অন্তত ১৩ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ৫ জুলাই রেলওয়ের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই সময়ও তাঁর অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়।
সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার পিএসসির অপর উপপরিচালক মো. আবু জাফরের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া এলাকায়। তিনি ঢাকার আজিমপুরে সরকারি কলোনিতে পরিবার নিয়ে বাস করলেও তাঁর নামে মোহাম্মদপুরের তিনরাস্তা এলাকায় প্লট ও ফ্ল্যাট রয়েছে। মালিবাগের চৌধুরীপাড়ায় জ্যোতি কমার্শিয়াল সেন্টার নামের কোচিং সেন্টার রয়েছে তাঁর। সেখানে চাকরির কোচিংয়ের আড়ালে ফাঁস করা প্রশ্নের কেনাবেচার কারবার ও নিয়োগ-বাণিজ্যের চুক্তি করেন তিনি। এই কর্মকর্তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র।
আবু জাফরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে প্রায় ৬০ শতাংশ জমির ওপর একটি ডুপ্লেক্সের নির্মাণকাজ চলমান রেখেছেন তিনি। বাড়ির দরজায় একটি মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
মিয়া বাড়ি হাফিজিয়া লিল্লাহ বোর্ডিং মাদ্রাসা নামের ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ইমরান হোসেন বলেন, ‘মসজিদ মাদ্রাসা তাঁদের, এখানে যত খরচ জাফর মিয়া ও তাঁর ভাই আউয়াল মিয়া চালান।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক মৃধা বলেন, ‘আমরা জানি, জাফর মিয়া সচিবালয় চাকরি করে, ভালো টাকাপয়সা আছে। এহানে একটা বাড়ি বানাইতেছে আর মসজিদ মাদ্রাসা করছে। তয় এখানে তেমন আসে না।’
অভিযুক্ত পিএসসির আরেক কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির। তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছীর কোলাহাট এলাকায়। রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের সরকারি বাসভবনে পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। তাঁরও মিরপুরে চাকরির কোচিং সেন্টার রয়েছে। ওই কোচিং সেন্টারে যাঁরা কোচিং করতেন, তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিতেন এই কর্মকর্তা। তাঁর কাছেও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মিলেছে।
পিএসসির গ্রেপ্তার হওয়া ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমানের গ্রামের বাড়ি যশোরের কেশবপুরের বড়েঙ্গায় নিম্নপদে চাকরি করলেও ঢাকায় দামি ফ্ল্যাট ও গাড়ি আছে তাঁর। গত ৬ বছরে এসব সম্পদ করেছেন খলিল। রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফিটের পরমাগলিতে তাঁর ফ্ল্যাট আছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত পিএসসির আরেক কর্মচারী সাজিদুল ইসলাম এক যুগের বেশি অফিস সহকারীর কাজ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর চরজব্বার থানার চরবাটা এলাকায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের অন্যতম হোতা এই সাজিদুল। তাঁর ভাই ও বোনের স্বামী বিসিএস ক্যাডার। তাঁর বাবাও সরকারি পরিবহন পুলের গাড়িচালক ছিলেন। সাজিদুল মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন। নোয়াখালীতে তিনি নতুন বাড়ির কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
তবে সবচেয়ে বেশি যাঁকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তিনি হলেন পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। প্রায় ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক আবেদ আলী পিএসসির অন্তত তিনজন চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন। ঢাকায় ফ্ল্যাট, রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা, হোটেল ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে তাঁর। কয়েক বছর আগে তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ধরা পড়ে চাকরিচ্যুত হন। তাঁর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে গত সোমবার তাঁকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গ্রেপ্তার ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের গ্রেপ্তার ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল এ বিষয়ে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সংস্থাটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে ৬ জনের দায় স্বীকার
গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ৬ জন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন আবেদ আলী, পিএসসির অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, ডেসপাস রাইডার সাজেদুল ইসলাম, পানি ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন, সাখাওয়াতের ভাই সাইম হোসেন এবং ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী লিটন সরকার।
অন্যদিকে অপরাধ স্বীকার না করা ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের আবাসন ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, পিএসসির ডিডি আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, এডি এস এম আলমগীর কবীর, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের মুদ্রাক্ষরিক মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল কলেজের টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান ও সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের তদন্ত হবে। সেখানে অবৈধ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে অর্থ পাচারের মামলার সুপারিশ করা হবে।
আরও খবর পড়ুন:

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের প্রত্যেকের রয়েছে দামি গাড়ি ও ঢাকায় বাড়ি। কারও কারও আছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস। গত তিন মাসে এই চক্রের ব্যাংক হিসাবে কমবেশি ২৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এরই মধ্যে তাঁদের সবার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস কাণ্ডে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ছয়জনই পিএসসিতে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পদের কর্মকর্তা যেমন আছেন, তেমনি রয়েছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও। তাঁরা এক যুগ ধরে বিসিএসসহ অন্তত ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ জন গতকাল সন্ধ্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
পিএসসির গ্রেপ্তার তিন কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম হোতা সিলেট বিভাগীয় অফিসের উপপরিচালক (ডিডি) জাহাঙ্গীর আলম। এই কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ভরানীগঞ্জে। নিজ এলাকায় বিপুল সম্পদের মালিক তিনি; পাশাপাশি ঢাকায়ও রয়েছে তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ডি ব্লকের ১ নম্বর সড়কের ৮/ও নং বাড়ির তৃতীয় তলায় ২ হাজার বর্গফুটের বেশি একটি সুসজ্জিত আধুনিক ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। এই ফ্ল্যাট থেকেই তাঁকে ৭ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এ ছাড়া রাজধানীর মিরপুর ও ভাটারায় তাঁর একাধিক ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। এই কর্মকর্তার তিনটি ব্যাংকে অন্তত ১৩ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ৫ জুলাই রেলওয়ের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই সময়ও তাঁর অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়।
সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার পিএসসির অপর উপপরিচালক মো. আবু জাফরের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া এলাকায়। তিনি ঢাকার আজিমপুরে সরকারি কলোনিতে পরিবার নিয়ে বাস করলেও তাঁর নামে মোহাম্মদপুরের তিনরাস্তা এলাকায় প্লট ও ফ্ল্যাট রয়েছে। মালিবাগের চৌধুরীপাড়ায় জ্যোতি কমার্শিয়াল সেন্টার নামের কোচিং সেন্টার রয়েছে তাঁর। সেখানে চাকরির কোচিংয়ের আড়ালে ফাঁস করা প্রশ্নের কেনাবেচার কারবার ও নিয়োগ-বাণিজ্যের চুক্তি করেন তিনি। এই কর্মকর্তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র।
আবু জাফরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে প্রায় ৬০ শতাংশ জমির ওপর একটি ডুপ্লেক্সের নির্মাণকাজ চলমান রেখেছেন তিনি। বাড়ির দরজায় একটি মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
মিয়া বাড়ি হাফিজিয়া লিল্লাহ বোর্ডিং মাদ্রাসা নামের ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ইমরান হোসেন বলেন, ‘মসজিদ মাদ্রাসা তাঁদের, এখানে যত খরচ জাফর মিয়া ও তাঁর ভাই আউয়াল মিয়া চালান।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক মৃধা বলেন, ‘আমরা জানি, জাফর মিয়া সচিবালয় চাকরি করে, ভালো টাকাপয়সা আছে। এহানে একটা বাড়ি বানাইতেছে আর মসজিদ মাদ্রাসা করছে। তয় এখানে তেমন আসে না।’
অভিযুক্ত পিএসসির আরেক কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির। তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছীর কোলাহাট এলাকায়। রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের সরকারি বাসভবনে পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। তাঁরও মিরপুরে চাকরির কোচিং সেন্টার রয়েছে। ওই কোচিং সেন্টারে যাঁরা কোচিং করতেন, তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিতেন এই কর্মকর্তা। তাঁর কাছেও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মিলেছে।
পিএসসির গ্রেপ্তার হওয়া ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমানের গ্রামের বাড়ি যশোরের কেশবপুরের বড়েঙ্গায় নিম্নপদে চাকরি করলেও ঢাকায় দামি ফ্ল্যাট ও গাড়ি আছে তাঁর। গত ৬ বছরে এসব সম্পদ করেছেন খলিল। রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফিটের পরমাগলিতে তাঁর ফ্ল্যাট আছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত পিএসসির আরেক কর্মচারী সাজিদুল ইসলাম এক যুগের বেশি অফিস সহকারীর কাজ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর চরজব্বার থানার চরবাটা এলাকায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের অন্যতম হোতা এই সাজিদুল। তাঁর ভাই ও বোনের স্বামী বিসিএস ক্যাডার। তাঁর বাবাও সরকারি পরিবহন পুলের গাড়িচালক ছিলেন। সাজিদুল মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন। নোয়াখালীতে তিনি নতুন বাড়ির কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
তবে সবচেয়ে বেশি যাঁকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তিনি হলেন পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। প্রায় ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক আবেদ আলী পিএসসির অন্তত তিনজন চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন। ঢাকায় ফ্ল্যাট, রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা, হোটেল ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে তাঁর। কয়েক বছর আগে তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ধরা পড়ে চাকরিচ্যুত হন। তাঁর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে গত সোমবার তাঁকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গ্রেপ্তার ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের গ্রেপ্তার ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল এ বিষয়ে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সংস্থাটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে ৬ জনের দায় স্বীকার
গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে ৬ জন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন আবেদ আলী, পিএসসির অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, ডেসপাস রাইডার সাজেদুল ইসলাম, পানি ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন, সাখাওয়াতের ভাই সাইম হোসেন এবং ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী লিটন সরকার।
অন্যদিকে অপরাধ স্বীকার না করা ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের আবাসন ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, পিএসসির ডিডি আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, এডি এস এম আলমগীর কবীর, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের মুদ্রাক্ষরিক মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল কলেজের টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান ও সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের তদন্ত হবে। সেখানে অবৈধ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে অর্থ পাচারের মামলার সুপারিশ করা হবে।
আরও খবর পড়ুন:

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের প্রত্যেকের রয়েছে দামি গাড়ি ও ঢাকায় বাড়ি। কারও কারও আছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস। গত তিন মাসে এই চক্রের ব্যাংক হিসাবে
১০ জুলাই ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের প্রত্যেকের রয়েছে দামি গাড়ি ও ঢাকায় বাড়ি। কারও কারও আছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস। গত তিন মাসে এই চক্রের ব্যাংক হিসাবে
১০ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের প্রত্যেকের রয়েছে দামি গাড়ি ও ঢাকায় বাড়ি। কারও কারও আছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস। গত তিন মাসে এই চক্রের ব্যাংক হিসাবে
১০ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের প্রত্যেকের রয়েছে দামি গাড়ি ও ঢাকায় বাড়ি। কারও কারও আছে একাধিক প্লট-ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক স্পেস। গত তিন মাসে এই চক্রের ব্যাংক হিসাবে
১০ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫