বিউটি: যাদুকাটা নদীটা কোথায় রে রংলাল?
রংলাল: টাঙ্গুয়ার হাওর ছাড়াইয়া, নীলাদ্রী পার হইয়া আরও উত্তর দিকে। সীমান্তের কাছাকাছি একদম।
বিউটি: শুনছি সেখানকার পানি খুব নীল। আকাশের রঙের মতো।
রংলাল: সে নদীর ওপারে একটা ঘর হইছে। জলের শব্দ, ঝিঁঝি পোকার গান—সব শোনা যায়। আমরা সেখানেই যাইতেছি বিউটি কুইন।
‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমার একদম শেষের দিকের সংলাপ। বানিয়াশান্তা থেকে বিধ্বস্ত শরীর-মন নিয়ে, আগুনে পোড়া সার্কাস প্যান্ডেলের ধ্বংসস্তূপ সঙ্গী করে বিউটি চলেছে অচেনা-অনিশ্চিত পথে। যেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে আরও কঠিন সংগ্রাম। বৃষ্টি পড়ছে। অসময়ের বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে, একই সঙ্গে জয়-পরাজয়ের অনুভূতির ভেলায় ভেসে, এরপর বিউটি কোথায় যাবে? কোথায় তার জন্য একটুখানি নিরাপদ জমিন?
এই প্রশ্ন যখন উঁকি দেয় মনে, সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে দৃশ্যজুড়ে আসে সকাল। আড়মোড়া ভেঙে উড়ে যায় পাখির দল। বিউটিকে দেখা যায় খোলা ময়দানে রিং ঝুলিয়ে, সীমিতসংখ্যক দর্শক নিয়ে একাই দেখাচ্ছে কসরত। চোখমুখে তার ততোধিক আত্মবিশ্বাস। রিংয়ে ঝুলতে ঝুলতে বিউটি বলছে, ‘এই আসমান বিউটি সার্কাসের তাঁবু, এই জমিনে আমাদের হক আছে। বিউটি সার্কাস আছে, বিউটি সার্কাস থাকবে।’
বিউটিরূপী জয়া আহসানের এই সংলাপে হলজুড়ে অনেকক্ষণ হাততালির শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়। এর আগে অনেক কিছুই ঘটে গেছে বিউটির জীবনে।
বানিয়াশান্তায় সার্কাস দেখাতে এসে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনৈতিক আবদার, কাফনের কাপড়ে রক্তের হরফে লেখা সার্কাস বন্ধের হুমকি দেওয়া চিঠি, ক্রমাগত আক্রমণ, মাঝরাতে তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন, বিউটি যাকে নিজের ভাইয়ের চেয়ে বেশি ভালোবাসত, সেই স্যামের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া, সার্কাসের তাঁবুতে সন্ত্রাসীদের আগুন, অবশেষে পুড়ে সব শেষ। বিউটি তখন পরাজয়ের কিনারায়। সব হারিয়ে প্রায় নিঃসঙ্গ। এই পরিস্থিতিতে কেউ যখন নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ায় নিজের সীমিত অবলম্বন নিয়ে, সেই দৃশ্য মহাকাব্যের চেয়ে কম কিছু!
‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমাটি এমন এক সময়ে মুক্তি পেল, যখন দেশজুড়ে নারীদের অর্জনের জয়গান। শত প্রতিবন্ধকতা তাচ্ছিল্য করে যেভাবে সাফ শিরোপা জয় করে আনলেন দেশের নারী ফুটবলাররা, নির্মাতা মাহমুদ দিদার তাঁর প্রথম সিনেমায় বুঝিয়ে দিলেন, একই রকম অদম্য মানসিকতা নিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরে এ দেশের নারীরা তাঁদের লড়াই জারি রেখেছেন যুগ যুগ ধরে। বিউটি সার্কাস তাই কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই সংগ্রামের বীজ পোঁতা আছে এ দেশেরই জমিনে। এই জনপদে আছে অসংখ্য নারীর অর্জনের গল্প। ফলে বিউটি সার্কাস শুধু সিনেমা নয়, হয়ে উঠেছে নারী সংগ্রামের আশ্চর্য দলিল।
সিনেমার প্রতি ফ্রেমে, সংলাপে, দৃশ্যায়নে যেভাবে সার্কাস উঠে এসেছে গল্পের অনুষঙ্গ হিসেবে, তা এককথায় অনবদ্য। তবে শুধু সার্কাসের ডকুমেন্টেশন নয়, নির্মাতা যেতে চেয়েছেন আরও গভীরে। দেখাতে চেয়েছেন সার্কাস, যাত্রা কিংবা পুতুলনাচের মতো ঐতিহ্যবাহী বিনোদনমাধ্যম কীভাবে ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়। কীভাবে সব সাংস্কৃতিক বনিয়াদ উপড়ে ফেলা হয়। এর পেছনে মৌলবাদীদের আস্ফালন যেমন আছে, স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশ কিংবা ক্ষমতাশালীদের ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রবণতাও কম দায়ী নয়। গল্পে সব প্রসঙ্গই ছুঁয়ে গেছেন মাহমুদ দিদার।
এসেছে মুক্তিযুদ্ধও। পুরো গল্পের প্রাণভোমরা আসলে লুকানো সেখানে। বিউটির বাবা, যিনি দ্য বেঙ্গল সার্কাসের দল নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতেন, যার কাছে বিউটি শিখেছে সার্কাসের প্রথম সবক, মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে আলবদর বাহিনীর নাদের মোল্লা। সিনেমার একটি বড় অংশজুড়ে বিউটি খুঁজে চলে হত্যাকারীকে। তবে মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পর এসে বাবার হত্যাকারীকে খোঁজার মিশনে কেন নামল বিউটি, গল্পে সেটি পরিষ্কার নয়।
একইভাবে অসম্পূর্ণ ফেরদৌসের চরিত্রটি (মির্জা মোহাম্মদ বখতিয়ার)। গল্পজুড়ে তাঁকে শুধুই দেখা গেল নারীলিপ্সু হিসেবে। যতবার স্ক্রিনে আসে চরিত্রটি, ততবারই কিছুটা বিরক্তির উদ্রেক হয়। জমিদারের নাতি হিসেবে তাঁর আরও কিছু কর্মকাণ্ড দেখানো গেলে এ চরিত্র হয়তো আরও বৈচিত্র্যময় হতে পারত।
বিউটি: যাদুকাটা নদীটা কোথায় রে রংলাল?
রংলাল: টাঙ্গুয়ার হাওর ছাড়াইয়া, নীলাদ্রী পার হইয়া আরও উত্তর দিকে। সীমান্তের কাছাকাছি একদম।
বিউটি: শুনছি সেখানকার পানি খুব নীল। আকাশের রঙের মতো।
রংলাল: সে নদীর ওপারে একটা ঘর হইছে। জলের শব্দ, ঝিঁঝি পোকার গান—সব শোনা যায়। আমরা সেখানেই যাইতেছি বিউটি কুইন।
‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমার একদম শেষের দিকের সংলাপ। বানিয়াশান্তা থেকে বিধ্বস্ত শরীর-মন নিয়ে, আগুনে পোড়া সার্কাস প্যান্ডেলের ধ্বংসস্তূপ সঙ্গী করে বিউটি চলেছে অচেনা-অনিশ্চিত পথে। যেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে আরও কঠিন সংগ্রাম। বৃষ্টি পড়ছে। অসময়ের বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে, একই সঙ্গে জয়-পরাজয়ের অনুভূতির ভেলায় ভেসে, এরপর বিউটি কোথায় যাবে? কোথায় তার জন্য একটুখানি নিরাপদ জমিন?
এই প্রশ্ন যখন উঁকি দেয় মনে, সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে দৃশ্যজুড়ে আসে সকাল। আড়মোড়া ভেঙে উড়ে যায় পাখির দল। বিউটিকে দেখা যায় খোলা ময়দানে রিং ঝুলিয়ে, সীমিতসংখ্যক দর্শক নিয়ে একাই দেখাচ্ছে কসরত। চোখমুখে তার ততোধিক আত্মবিশ্বাস। রিংয়ে ঝুলতে ঝুলতে বিউটি বলছে, ‘এই আসমান বিউটি সার্কাসের তাঁবু, এই জমিনে আমাদের হক আছে। বিউটি সার্কাস আছে, বিউটি সার্কাস থাকবে।’
বিউটিরূপী জয়া আহসানের এই সংলাপে হলজুড়ে অনেকক্ষণ হাততালির শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়। এর আগে অনেক কিছুই ঘটে গেছে বিউটির জীবনে।
বানিয়াশান্তায় সার্কাস দেখাতে এসে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনৈতিক আবদার, কাফনের কাপড়ে রক্তের হরফে লেখা সার্কাস বন্ধের হুমকি দেওয়া চিঠি, ক্রমাগত আক্রমণ, মাঝরাতে তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন, বিউটি যাকে নিজের ভাইয়ের চেয়ে বেশি ভালোবাসত, সেই স্যামের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া, সার্কাসের তাঁবুতে সন্ত্রাসীদের আগুন, অবশেষে পুড়ে সব শেষ। বিউটি তখন পরাজয়ের কিনারায়। সব হারিয়ে প্রায় নিঃসঙ্গ। এই পরিস্থিতিতে কেউ যখন নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ায় নিজের সীমিত অবলম্বন নিয়ে, সেই দৃশ্য মহাকাব্যের চেয়ে কম কিছু!
‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমাটি এমন এক সময়ে মুক্তি পেল, যখন দেশজুড়ে নারীদের অর্জনের জয়গান। শত প্রতিবন্ধকতা তাচ্ছিল্য করে যেভাবে সাফ শিরোপা জয় করে আনলেন দেশের নারী ফুটবলাররা, নির্মাতা মাহমুদ দিদার তাঁর প্রথম সিনেমায় বুঝিয়ে দিলেন, একই রকম অদম্য মানসিকতা নিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরে এ দেশের নারীরা তাঁদের লড়াই জারি রেখেছেন যুগ যুগ ধরে। বিউটি সার্কাস তাই কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই সংগ্রামের বীজ পোঁতা আছে এ দেশেরই জমিনে। এই জনপদে আছে অসংখ্য নারীর অর্জনের গল্প। ফলে বিউটি সার্কাস শুধু সিনেমা নয়, হয়ে উঠেছে নারী সংগ্রামের আশ্চর্য দলিল।
সিনেমার প্রতি ফ্রেমে, সংলাপে, দৃশ্যায়নে যেভাবে সার্কাস উঠে এসেছে গল্পের অনুষঙ্গ হিসেবে, তা এককথায় অনবদ্য। তবে শুধু সার্কাসের ডকুমেন্টেশন নয়, নির্মাতা যেতে চেয়েছেন আরও গভীরে। দেখাতে চেয়েছেন সার্কাস, যাত্রা কিংবা পুতুলনাচের মতো ঐতিহ্যবাহী বিনোদনমাধ্যম কীভাবে ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়। কীভাবে সব সাংস্কৃতিক বনিয়াদ উপড়ে ফেলা হয়। এর পেছনে মৌলবাদীদের আস্ফালন যেমন আছে, স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশ কিংবা ক্ষমতাশালীদের ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রবণতাও কম দায়ী নয়। গল্পে সব প্রসঙ্গই ছুঁয়ে গেছেন মাহমুদ দিদার।
এসেছে মুক্তিযুদ্ধও। পুরো গল্পের প্রাণভোমরা আসলে লুকানো সেখানে। বিউটির বাবা, যিনি দ্য বেঙ্গল সার্কাসের দল নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতেন, যার কাছে বিউটি শিখেছে সার্কাসের প্রথম সবক, মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে আলবদর বাহিনীর নাদের মোল্লা। সিনেমার একটি বড় অংশজুড়ে বিউটি খুঁজে চলে হত্যাকারীকে। তবে মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পর এসে বাবার হত্যাকারীকে খোঁজার মিশনে কেন নামল বিউটি, গল্পে সেটি পরিষ্কার নয়।
একইভাবে অসম্পূর্ণ ফেরদৌসের চরিত্রটি (মির্জা মোহাম্মদ বখতিয়ার)। গল্পজুড়ে তাঁকে শুধুই দেখা গেল নারীলিপ্সু হিসেবে। যতবার স্ক্রিনে আসে চরিত্রটি, ততবারই কিছুটা বিরক্তির উদ্রেক হয়। জমিদারের নাতি হিসেবে তাঁর আরও কিছু কর্মকাণ্ড দেখানো গেলে এ চরিত্র হয়তো আরও বৈচিত্র্যময় হতে পারত।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫