Ajker Patrika

৩১ বার নিলাম, তবু বিক্রি হয় না পণ্য

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
Thumbnail image

চট্টগ্রাম কাস্টমসে ৩১ বার নিলামে তুলেও কোনো কোনো পণ্য বিক্রি হয় না। আবার কিছু পণ্যের চালানে কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেলেও এক-দুই নিলামেই সেগুলো বিক্রি হয়ে যায়। এ রকম ৩৫ হাজার কেজি ওজনের পোলট্রি ফিড শিল্পকারখানার মেশিনারির ২৪টি কনটেইনার দুই দিনেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সরবরাহ পর্যন্ত হয়ে গেছে। এটাকে ‘ভাগ্যবান পণ্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ৩১ বার নিলামে তুলেও বিক্রির ভাগ্য খোলেনি ২০ প্যাকেজের প্রায় দুই মেট্রিক টন টেক্সটাইল রাসায়নিক পদার্থ। ২০১১ সালে পণ্যের চালানটি বিদেশ থেকে বন্দরে আসে। সেই থেকে বন্দরের সিএফএস শেডে চালানটি পড়ে আছে। আমদানিকারক পণ্যগুলো খালাস না করায় নিয়ম অনুযায়ী নিলামে চলে যায়। কিন্তু এই চালান কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ৩১ বার নিলামে তুলেও বিক্রি করতে পারেনি।

২০১৩ সাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩ নম্বর শেডে আছে এক কার্টুনে ২২টি (৩০ কেজি ওজনের) ল্যাবরেটরি সেলাইয়ের পণ্য।আমদানিকারক সেগুলো খালাস না করায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তা ২৩ বার নিলামে তোলে; কিন্তু তারপরও সেই পণ্যগুলো বিক্রি করা যায়নি। এভাবে দুই ক্যান (১৭ কেজি) ঘাম ২৯ বার নিলামে তুলেও বিক্রি করা যায়নি। ২০১৮ সাল থেকে এনসিটি ইয়ার্ডে ১৫০ (সাত প্যাকেজ) কেজি সালফিউরিক অ্যাসিড পড়ে আছে। আমদানিকারক খালাস না করায় কাস্টমস ২০১৯ সাল থেকে ২২ বার নিলামে তোলেও বিক্রি করতে পারেনি। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিলামে ২৪ কনটেইনার ৫৬৪ প্যাকেজের প্রায় ৩৫ হাজার কেজি ওজনের পোলট্রি ফিড ও শিল্পকারখানার মেশিনারিজ দ্বিতীয়বার নিলামেই বিক্রি হয়ে যায়।

কাস্টমস সূত্র জানায়, নিলাম শাখার একটি লটের (নম্বর ১/২১২৭/১৮, ক্যাটালগ নম্বর ৮৬) নিলামে অংশ নেয় চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার মেসার্স এসএ ট্রেডিং অ্যান্ড কোম্পানি ক্রয় করে। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ২ কোটি ৪৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় পণ্যগুলো কিনে নেয়। ট্রেজারি শাখা থেকে যাচাইসহ দুই দিনেই আধা সরকারি পত্র (ডিও) ইস্যু করে এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক দিনেই সেই পণ্য সরবরাহ করা হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার উপকমিশনার অনুপম চাকমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিলাম-সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা বক্তব্য কমিশনারের অনুমতি ছাড়া দেওয়া যাবে না।’ তিনি এর বেশি কোনো মন্তব্য না করে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন করলেও তিনি আর ধরেননি।

দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলামে অংশগ্রহণ করেন মো. ইয়াকুব চৌধুরী। তাঁর মতে, প্রথম নিলামে সরকারি সংরক্ষিত মূল্যের ৬০ শতাংশের বেশি দাম পেলে পণ্যটি বিক্রি করার নিয়ম আছে। ৬০ শতাংশের কম মূল্য পেলে পণ্যটি দ্বিতীয়বার নিলামে যাবে। কেন বারবার নিলাম ডাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম কাস্টমসে পণ্য বিক্রি হয় হচ্ছে না, এই প্রসঙ্গে ইয়াকুব চৌধুরী মনে করেন ‘অনেক সময় পণ্যের গুণগত মান খারাপ থাকায় এবং সংরক্ষিত মূল্য বেশি থাকায় বিক্রি হয় না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত