হাসান মামুন

ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটার পর পাকিস্তানে কেমন নির্বাচন হবে, সে ব্যাপারে রাজনীতিসচেতন সবার মধ্যেই মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা ছিল। দেশটির বিধান অনুযায়ী, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন হলেও তারা যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রতিষ্ঠা করতে পারছিলেন না, সেটাও ছিল স্পষ্ট।
কিছু বিতর্কিত মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে কারাগারে পাঠানোর পর তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা-কর্মীর ওপর ‘ক্র্যাকডাউন’ও হতে দেখেছে সবাই। সেটা প্রায় অব্যাহতভাবে চলেছে। নির্বাচনে তাঁদের অংশ নিতে হয় চাপের মুখে ও সুকৌশলে।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনও তাঁদের প্রতি সুবিচার করেনি বলে অভিযোগ ওঠে জোরালোভাবে। কেননা, পিটিআই সমর্থিতদের নির্বাচনে যেতে হয় ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে এবং দলের পরিচিত প্রতীক ছাড়া। প্রচারণা চালাতে গিয়েও পড়তে হয় বাধাবিপত্তির মুখে।
এ সময়টায় ইমরান ছিলেন কারাগারে এবং একাধিক মামলায় কারাদণ্ড হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনেও লড়তে পারছিলেন না। এ অবস্থায় মনে করা হচ্ছিল, জনপ্রিয়তা থাকলেও এবং রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়ার পর সহানুভূতি বাড়লেও ভোটের বাক্সে তাঁর দল এর প্রতিফলন ঘটাতে পারবে না। তাই ক্ষমতায় আসবে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। তাদের জিতিয়ে আনার জন্যই এ নির্বাচন, এমনটাই মনে করা হচ্ছিল দেশ-বিদেশে।
এমন একটা ‘নীলনকশা’ থাকলেও এর বাস্তবায়ন অবশ্য দেখা গেল না পাকিস্তানের নির্বাচনে। সব প্রতিকূলতার মুখেও দেখা গেল, ইমরান-সমর্থিত প্রার্থী, নেতা-কর্মী ও ভোটাররা মাঠ ছাড়লেন না। নজিরবিহীন ঐক্য আর নাছোড় মনোভাবের পরিচয় দিলেন তাঁরা এবং বিজয় ছিনিয়ে আনলেন।
এ নিবন্ধ লেখা পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সব আসনের ফল ঘোষণা না হলেও পিটিআই সমর্থিতরা এগিয়ে আছেন স্পষ্টভাবে। অফিশিয়ালি কোনো দল না হলেও ইমরান খানের নেতৃত্বে তাঁরা যে আস্থাশীল, তাতে এখন পর্যন্ত কোনো সন্দেহ নেই। ‘এখন পর্যন্ত’ কথাটি বলা ভালো; কেননা কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে শেষতক কী হয়, তা দেখার জন্য কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে।
ইমরান-সমর্থিতরা বেশির ভাগ আসনে জয়ী হয়ে এলেও দেশটির ক্ষমতার সবচেয়ে শক্তিশালী ও স্থায়ী অংশীদার সেনাবাহিনীর এবারের আস্থাভাজন ব্যক্তি নওয়াজ শরিফ ইতিমধ্যে তৎপর হয়ে উঠেছেন সরকার গঠনে। আলোচনা শুরু করা হয়েছে নির্বাচনে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে।
জোট সরকার গঠনে এ দুই পক্ষ একমত হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে তাদের অন্যান্য দলের বিজয়ীদের সমর্থন দেখাতে হবে। সে ক্ষেত্রে পিটিআইয়ের বাইরে থেকে বিজয়ী কজন স্বতন্ত্রকে পক্ষে টানার চেষ্টা হতে পারে। ইমরানের নেতৃত্বাধীন কিছু স্বতন্ত্রকেও ‘ভাগিয়ে আনা’র চেষ্টা চালানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইমরান সরকারের পতন ঘটানোর সময় তাঁর দলের একাংশ কিন্তু বিরোধীদের কাতারে এসে অনাস্থা জানিয়েছিল। এতে সরকারের প্রতি রুষ্ট হয়ে ওঠা সেনাবাহিনী শুধু নয়; পাকিস্তানে বরাবরই সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্রও কলকাঠি নাড়ে বলে খোলাখুলি অভিযোগ করেছিলেন ইমরান খান। তিনি নিজেও একসময় সেনাবাহিনীর আস্থাভাজন ছিলেন এবং তাদের সমর্থনেই রাজনীতিতে তাঁর দ্রুত উত্থান বলে মনে করা হয়।পাকিস্তানে এটি প্রায় নিয়মে পরিণত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেখা যাচ্ছে, আগেকার মতো বাঁধা ছক ধরে সবকিছু এগোচ্ছে না। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনের ‘চমকপ্রদ ফল’ তার একটি প্রমাণ বলা যেতে পারে।
অবশ্য এমনটাও মনে করা হচ্ছে, প্রধান তিন দলের কোনোটিই যেন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়—এর ব্যবস্থা করেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। সেটাই ছিল ছক! বলা হয়ে থাকে, ‘সব দেশেরই সেনাবাহিনী রয়েছে; তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আছে একটি দেশ’।
পাকিস্তান তাই দীর্ঘদিন থেকেছে সেনাশাসনে এবং বেসামরিক শাসনামলেও রাজনীতিতে ছিল তার কমবেশি অপ্রতিরোধ্য প্রভাব। নির্বাচনের মাধ্যমে এলেও তাদের অসম্মতিতে কোনো দল সরকার গড়তে পারেনি এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছাড়া কোনো সরকার টিকে থাকতেও পারেনি। ইমরানসহ কোনো বেসামরিক সরকার এ পর্যন্ত দেশটিতে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।
এই বাস্তবতায় এবারের নির্বাচন যে বিশেষ প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হলো, তাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ‘প্ল্যান-বি’ও থাকতে পারে নাকি? পছন্দের দল পিএমএল-এনকে এককভাবে জেতানো না গেলে নির্বাচনী ফলে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হতেই পারে, যাতে ইমরান অনুগতরা ক্ষমতায় ফিরতে ব্যর্থ হন। সে অবস্থায় একটা ‘ঝুলন্ত পার্লামেন্ট’ তৈরি হয়ে ভিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ যেন অন্তত থাকে।
তেমন অবস্থায় পাকিস্তানে সরাসরি সেনা হস্তক্ষেপ ঘটার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যেভাবে অস্বাভাবিক দীর্ঘ সময় নিয়ে, থেমে থেমে ফল ঘোষণা হয়েছে এবং এ নিবন্ধ লেখা পর্যন্ত সব আসনের ফল ঘোষণাও করা হয়নি, তাতে পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হলেও ফলে কারচুপি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে জোরালোভাবে। পাকিস্তানের মিডিয়াও এ বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপনে কুণ্ঠিত হয়নি।
এ অবস্থায় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিয়োজিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচন যেহেতু একটি প্রক্রিয়ার ব্যাপার, তাই এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের ভূমিকা স্বচ্ছ থাকাটা নিশ্চয় জরুরি। পাকিস্তানের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচন ঘিরে এ অবস্থায় নতুন কিছু প্রশ্নও উঠবে, যার নিষ্পত্তি করেই এগোতে হবে তাদের। এগোতে চাইলে!
নির্বাচনটি পাকিস্তানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে—সেখান থেকে কী ধরনের সরকার আসবে এবং কে হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, তা এখনো অনিশ্চিত। পিপিপির সঙ্গে পিএমএল-এনের ঐক্য হলে এবং তারা শেষতক সরকার গড়তে পারলে বিলাওয়াল তাঁর ‘দর–কষাকষির ক্ষমতা’ ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর পদ চাইতে পারেন। তবে সেনাবাহিনী মনে হয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজকেই এগিয়ে রেখেছিল। তিনিও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর মতো আচরণ শুরু করেছিলেন।
কিন্তু ইমরান ও তাঁর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর ঐক্য আর জনসমর্থনকে তাঁরা বোধ হয় হিসাবে নেয়নি। ইমরান সরকার তার অঙ্গীকার অনুযায়ী, দুর্নীতি দমন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সফল হয়েছিল, তা কিন্তু বলা যাবে না। তাঁর সরকারের কিছু ‘ভুল নীতি’র কারণেও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সংকট বরং তীব্রতর হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এ অবস্থায় দেশটির সিংহভাগ মানুষকে অশেষ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এখনো।
তা সত্ত্বেও ইমরান খান ও পিটিআই সেভাবে জনপ্রিয়তা হারায়নি। ক্ষমতা হারানোর পর তাঁর ও দলটির প্রতি যা যা করা হয়েছে, তাতে বরং নতুন করে জনপ্রিয় হন ইমরান। ক্ষমতার বাইরে থেকে অংশ নেওয়া সিংহভাগ উপনির্বাচনে তাঁর দলের প্রার্থীদের জয়ী হওয়া সেটারই প্রমাণ দেয়। এটা আবার পাকিস্তানের নির্বাচন-প্রক্রিয়ার তুলনামূলক স্বচ্ছতার ব্যাপারে বিশ্বাস জাগিয়ে তোলে বিরোধীদের মনে।
তীব্র বাধাবিপত্তির মুখেও ইমরান অনুগতরা যে মাঠ ছাড়েননি, সেটা এ বিশ্বাসের কারণেও। ভোটার, বিশেষ করে বিপুলসংখ্যক তরুণ ভোটারের ওপরও তাঁদের আস্থা ছিল। এমনটিও মনে করা হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারলে পিটিআই এবার এককভাবেই জিতে ক্ষমতায় ফিরে আসত। ২০১৮ সালে কিন্তু অন্যদের সমর্থন নিয়ে তবেই তাদের সরকার গড়তে হয়েছিল।
যা-ই হোক, সরকার গড়তে না পারলেও ইমরান-সমর্থিতরা একটি প্রায় একতরফা নির্বাচনে দেশটির অত্যন্ত ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেভাবে লড়লেন, তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ইমরান খান তাঁকে ক্ষমতা থেকে হটানোর জন্য যাদের বিষয়ে অভিযোগ করে আসছিলেন–যুক্তরাষ্ট্রসহ সেই পশ্চিমারাও কিন্তু দেরি না করে নির্বাচনটির মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তদন্ত চেয়েছে নির্বাচনে হস্তক্ষেপসহ উত্থাপিত অভিযোগগুলোর। এর পেছনে তাদের কী স্বার্থ বা উদ্দেশ্য রয়েছে, কে জানে। এমন অবস্থান ‘মূল্যবোধভিত্তিক’, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তাদের অবস্থানে তো পরিবর্তনও ঘটে থাকে। একই সময়ে একেক দেশে একেক অবস্থানও নিতে দেখা যায়।
এখন সামনে দেখতে হবে, পশ্চিমা প্রভাবেও কোন দিকে মোড় নেয় পাকিস্তানের রাজনীতি। সেনাবাহিনীও বা নতুন কোনো অবস্থান নেয় কি না। এ অবস্থায় সংকট থেকে অধিকতর সংকটের দিকে যাত্রা করলে দেশটির অর্থনীতিও আরও বিপদগ্রস্ত হবে বলে ধারণা। শুধু বিদেশি ঋণদাতা, বিনিয়োগকারী আর বাণিজ্যিক অংশীদার নয়; দল-মতনির্বিশেষে জনগণেরও আস্থা কমবে দেশটির ওপর। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনকেন্দ্রিক ঘটনাবলিতে পাকিস্তানের শেয়ারবাজার এরই মধ্যে নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে বলে খবর মিলল। পড়ে গেছে সার্বভৌম বন্ডের দামও!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটার পর পাকিস্তানে কেমন নির্বাচন হবে, সে ব্যাপারে রাজনীতিসচেতন সবার মধ্যেই মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা ছিল। দেশটির বিধান অনুযায়ী, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন হলেও তারা যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রতিষ্ঠা করতে পারছিলেন না, সেটাও ছিল স্পষ্ট।
কিছু বিতর্কিত মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে কারাগারে পাঠানোর পর তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা-কর্মীর ওপর ‘ক্র্যাকডাউন’ও হতে দেখেছে সবাই। সেটা প্রায় অব্যাহতভাবে চলেছে। নির্বাচনে তাঁদের অংশ নিতে হয় চাপের মুখে ও সুকৌশলে।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনও তাঁদের প্রতি সুবিচার করেনি বলে অভিযোগ ওঠে জোরালোভাবে। কেননা, পিটিআই সমর্থিতদের নির্বাচনে যেতে হয় ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে এবং দলের পরিচিত প্রতীক ছাড়া। প্রচারণা চালাতে গিয়েও পড়তে হয় বাধাবিপত্তির মুখে।
এ সময়টায় ইমরান ছিলেন কারাগারে এবং একাধিক মামলায় কারাদণ্ড হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনেও লড়তে পারছিলেন না। এ অবস্থায় মনে করা হচ্ছিল, জনপ্রিয়তা থাকলেও এবং রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়ার পর সহানুভূতি বাড়লেও ভোটের বাক্সে তাঁর দল এর প্রতিফলন ঘটাতে পারবে না। তাই ক্ষমতায় আসবে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। তাদের জিতিয়ে আনার জন্যই এ নির্বাচন, এমনটাই মনে করা হচ্ছিল দেশ-বিদেশে।
এমন একটা ‘নীলনকশা’ থাকলেও এর বাস্তবায়ন অবশ্য দেখা গেল না পাকিস্তানের নির্বাচনে। সব প্রতিকূলতার মুখেও দেখা গেল, ইমরান-সমর্থিত প্রার্থী, নেতা-কর্মী ও ভোটাররা মাঠ ছাড়লেন না। নজিরবিহীন ঐক্য আর নাছোড় মনোভাবের পরিচয় দিলেন তাঁরা এবং বিজয় ছিনিয়ে আনলেন।
এ নিবন্ধ লেখা পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সব আসনের ফল ঘোষণা না হলেও পিটিআই সমর্থিতরা এগিয়ে আছেন স্পষ্টভাবে। অফিশিয়ালি কোনো দল না হলেও ইমরান খানের নেতৃত্বে তাঁরা যে আস্থাশীল, তাতে এখন পর্যন্ত কোনো সন্দেহ নেই। ‘এখন পর্যন্ত’ কথাটি বলা ভালো; কেননা কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে শেষতক কী হয়, তা দেখার জন্য কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে।
ইমরান-সমর্থিতরা বেশির ভাগ আসনে জয়ী হয়ে এলেও দেশটির ক্ষমতার সবচেয়ে শক্তিশালী ও স্থায়ী অংশীদার সেনাবাহিনীর এবারের আস্থাভাজন ব্যক্তি নওয়াজ শরিফ ইতিমধ্যে তৎপর হয়ে উঠেছেন সরকার গঠনে। আলোচনা শুরু করা হয়েছে নির্বাচনে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে।
জোট সরকার গঠনে এ দুই পক্ষ একমত হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে তাদের অন্যান্য দলের বিজয়ীদের সমর্থন দেখাতে হবে। সে ক্ষেত্রে পিটিআইয়ের বাইরে থেকে বিজয়ী কজন স্বতন্ত্রকে পক্ষে টানার চেষ্টা হতে পারে। ইমরানের নেতৃত্বাধীন কিছু স্বতন্ত্রকেও ‘ভাগিয়ে আনা’র চেষ্টা চালানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইমরান সরকারের পতন ঘটানোর সময় তাঁর দলের একাংশ কিন্তু বিরোধীদের কাতারে এসে অনাস্থা জানিয়েছিল। এতে সরকারের প্রতি রুষ্ট হয়ে ওঠা সেনাবাহিনী শুধু নয়; পাকিস্তানে বরাবরই সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্রও কলকাঠি নাড়ে বলে খোলাখুলি অভিযোগ করেছিলেন ইমরান খান। তিনি নিজেও একসময় সেনাবাহিনীর আস্থাভাজন ছিলেন এবং তাদের সমর্থনেই রাজনীতিতে তাঁর দ্রুত উত্থান বলে মনে করা হয়।পাকিস্তানে এটি প্রায় নিয়মে পরিণত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেখা যাচ্ছে, আগেকার মতো বাঁধা ছক ধরে সবকিছু এগোচ্ছে না। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনের ‘চমকপ্রদ ফল’ তার একটি প্রমাণ বলা যেতে পারে।
অবশ্য এমনটাও মনে করা হচ্ছে, প্রধান তিন দলের কোনোটিই যেন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়—এর ব্যবস্থা করেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। সেটাই ছিল ছক! বলা হয়ে থাকে, ‘সব দেশেরই সেনাবাহিনী রয়েছে; তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আছে একটি দেশ’।
পাকিস্তান তাই দীর্ঘদিন থেকেছে সেনাশাসনে এবং বেসামরিক শাসনামলেও রাজনীতিতে ছিল তার কমবেশি অপ্রতিরোধ্য প্রভাব। নির্বাচনের মাধ্যমে এলেও তাদের অসম্মতিতে কোনো দল সরকার গড়তে পারেনি এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছাড়া কোনো সরকার টিকে থাকতেও পারেনি। ইমরানসহ কোনো বেসামরিক সরকার এ পর্যন্ত দেশটিতে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।
এই বাস্তবতায় এবারের নির্বাচন যে বিশেষ প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হলো, তাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ‘প্ল্যান-বি’ও থাকতে পারে নাকি? পছন্দের দল পিএমএল-এনকে এককভাবে জেতানো না গেলে নির্বাচনী ফলে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হতেই পারে, যাতে ইমরান অনুগতরা ক্ষমতায় ফিরতে ব্যর্থ হন। সে অবস্থায় একটা ‘ঝুলন্ত পার্লামেন্ট’ তৈরি হয়ে ভিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ যেন অন্তত থাকে।
তেমন অবস্থায় পাকিস্তানে সরাসরি সেনা হস্তক্ষেপ ঘটার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যেভাবে অস্বাভাবিক দীর্ঘ সময় নিয়ে, থেমে থেমে ফল ঘোষণা হয়েছে এবং এ নিবন্ধ লেখা পর্যন্ত সব আসনের ফল ঘোষণাও করা হয়নি, তাতে পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হলেও ফলে কারচুপি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে জোরালোভাবে। পাকিস্তানের মিডিয়াও এ বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপনে কুণ্ঠিত হয়নি।
এ অবস্থায় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিয়োজিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচন যেহেতু একটি প্রক্রিয়ার ব্যাপার, তাই এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের ভূমিকা স্বচ্ছ থাকাটা নিশ্চয় জরুরি। পাকিস্তানের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচন ঘিরে এ অবস্থায় নতুন কিছু প্রশ্নও উঠবে, যার নিষ্পত্তি করেই এগোতে হবে তাদের। এগোতে চাইলে!
নির্বাচনটি পাকিস্তানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে—সেখান থেকে কী ধরনের সরকার আসবে এবং কে হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, তা এখনো অনিশ্চিত। পিপিপির সঙ্গে পিএমএল-এনের ঐক্য হলে এবং তারা শেষতক সরকার গড়তে পারলে বিলাওয়াল তাঁর ‘দর–কষাকষির ক্ষমতা’ ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর পদ চাইতে পারেন। তবে সেনাবাহিনী মনে হয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজকেই এগিয়ে রেখেছিল। তিনিও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর মতো আচরণ শুরু করেছিলেন।
কিন্তু ইমরান ও তাঁর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর ঐক্য আর জনসমর্থনকে তাঁরা বোধ হয় হিসাবে নেয়নি। ইমরান সরকার তার অঙ্গীকার অনুযায়ী, দুর্নীতি দমন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সফল হয়েছিল, তা কিন্তু বলা যাবে না। তাঁর সরকারের কিছু ‘ভুল নীতি’র কারণেও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সংকট বরং তীব্রতর হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এ অবস্থায় দেশটির সিংহভাগ মানুষকে অশেষ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এখনো।
তা সত্ত্বেও ইমরান খান ও পিটিআই সেভাবে জনপ্রিয়তা হারায়নি। ক্ষমতা হারানোর পর তাঁর ও দলটির প্রতি যা যা করা হয়েছে, তাতে বরং নতুন করে জনপ্রিয় হন ইমরান। ক্ষমতার বাইরে থেকে অংশ নেওয়া সিংহভাগ উপনির্বাচনে তাঁর দলের প্রার্থীদের জয়ী হওয়া সেটারই প্রমাণ দেয়। এটা আবার পাকিস্তানের নির্বাচন-প্রক্রিয়ার তুলনামূলক স্বচ্ছতার ব্যাপারে বিশ্বাস জাগিয়ে তোলে বিরোধীদের মনে।
তীব্র বাধাবিপত্তির মুখেও ইমরান অনুগতরা যে মাঠ ছাড়েননি, সেটা এ বিশ্বাসের কারণেও। ভোটার, বিশেষ করে বিপুলসংখ্যক তরুণ ভোটারের ওপরও তাঁদের আস্থা ছিল। এমনটিও মনে করা হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারলে পিটিআই এবার এককভাবেই জিতে ক্ষমতায় ফিরে আসত। ২০১৮ সালে কিন্তু অন্যদের সমর্থন নিয়ে তবেই তাদের সরকার গড়তে হয়েছিল।
যা-ই হোক, সরকার গড়তে না পারলেও ইমরান-সমর্থিতরা একটি প্রায় একতরফা নির্বাচনে দেশটির অত্যন্ত ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেভাবে লড়লেন, তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ইমরান খান তাঁকে ক্ষমতা থেকে হটানোর জন্য যাদের বিষয়ে অভিযোগ করে আসছিলেন–যুক্তরাষ্ট্রসহ সেই পশ্চিমারাও কিন্তু দেরি না করে নির্বাচনটির মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তদন্ত চেয়েছে নির্বাচনে হস্তক্ষেপসহ উত্থাপিত অভিযোগগুলোর। এর পেছনে তাদের কী স্বার্থ বা উদ্দেশ্য রয়েছে, কে জানে। এমন অবস্থান ‘মূল্যবোধভিত্তিক’, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তাদের অবস্থানে তো পরিবর্তনও ঘটে থাকে। একই সময়ে একেক দেশে একেক অবস্থানও নিতে দেখা যায়।
এখন সামনে দেখতে হবে, পশ্চিমা প্রভাবেও কোন দিকে মোড় নেয় পাকিস্তানের রাজনীতি। সেনাবাহিনীও বা নতুন কোনো অবস্থান নেয় কি না। এ অবস্থায় সংকট থেকে অধিকতর সংকটের দিকে যাত্রা করলে দেশটির অর্থনীতিও আরও বিপদগ্রস্ত হবে বলে ধারণা। শুধু বিদেশি ঋণদাতা, বিনিয়োগকারী আর বাণিজ্যিক অংশীদার নয়; দল-মতনির্বিশেষে জনগণেরও আস্থা কমবে দেশটির ওপর। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনকেন্দ্রিক ঘটনাবলিতে পাকিস্তানের শেয়ারবাজার এরই মধ্যে নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে বলে খবর মিলল। পড়ে গেছে সার্বভৌম বন্ডের দামও!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটার পর পাকিস্তানে কেমন নির্বাচন হবে, সে ব্যাপারে রাজনীতিসচেতন সবার মধ্যেই মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা ছিল। দেশটির বিধান অনুযায়ী, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন হলেও তারা যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রতিষ্ঠা করতে পারছিলেন না, সেটাও ছিল স্পষ্ট।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটার পর পাকিস্তানে কেমন নির্বাচন হবে, সে ব্যাপারে রাজনীতিসচেতন সবার মধ্যেই মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা ছিল। দেশটির বিধান অনুযায়ী, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন হলেও তারা যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রতিষ্ঠা করতে পারছিলেন না, সেটাও ছিল স্পষ্ট।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটার পর পাকিস্তানে কেমন নির্বাচন হবে, সে ব্যাপারে রাজনীতিসচেতন সবার মধ্যেই মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা ছিল। দেশটির বিধান অনুযায়ী, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন হলেও তারা যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রতিষ্ঠা করতে পারছিলেন না, সেটাও ছিল স্পষ্ট।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটার পর পাকিস্তানে কেমন নির্বাচন হবে, সে ব্যাপারে রাজনীতিসচেতন সবার মধ্যেই মোটামুটি স্পষ্ট ধারণা ছিল। দেশটির বিধান অনুযায়ী, একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন হলেও তারা যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রতিষ্ঠা করতে পারছিলেন না, সেটাও ছিল স্পষ্ট।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫