Ajker Patrika

পাওয়ার টিলার মেরামতে ব্যস্ত কৃষক ও কারিগর

মধুপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ১০
Thumbnail image

শ্রম ও সময় সাশ্রয়ের কারণে কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কৃষি যন্ত্রপাতি। কদিন গেলেই গর্জন করে উঠবে জমি চাষের যন্ত্র পাওয়ার টিলার। বিঘার পর বিঘা জমি প্রস্তুত করা হবে এ মেশিন দিয়ে। এর পরেই শুরু হবে কৃষকের ব্যস্ততা। কেউ আইলের ঘাস উপড়ে দেবে। কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা সংগ্রহ ও রোপণ করবে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের আগেই ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন পাওয়ার টিলার মেশিনের কারিগরেরা। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বিরামহীনভাবে পুরোনো পাওয়ার টিলার মেশিন মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা।

কেউ ইঞ্জিন ডাউন দিচ্ছেন। কেউ গিয়ার সেরে নিচ্ছেন। কেউ পাল্টে নিচ্ছেন মেশিনের চাকা। আবার কেউ পুরো মেশিনটিই সার্ভিসিং করাচ্ছেন। অনেকে মেশিন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন অন্যত্র বিক্রির জন্য। নিত্যদিন এমন ব্যস্ততা চোখে পড়ে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ মহাসড়কের মধুপুর পৌরশহরের মালাউড়ি কাজীবাড়ি এলাকায়।

জানা গেছে, উপজেলায় ধান আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর। এই জমি চাষের জন্য ডিজেল ইঞ্জিনচালিত পাওয়ার টিলার রয়েছে দুই হাজারের অধিক। দক্ষ কারিগর রয়েছেন দুই শতাধিক। অপরদিকে নতুন-পুরোনো ডিজেল ইঞ্জিন ও পাওয়ার টিলার বিক্রির প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২২টি। বর্তমান সময়ে ডিজেল ইঞ্জিন ও পাওয়ার টিলার বিক্রির দোকান ঘিরেই চলছে কর্মযজ্ঞ। আমন এবং বোরো মৌসুম শুরুর আগের দুই মাস ব্যস্ততার শেষ থাকে না এসব কারিগরের। একদিকে কৃষকের চাপ, অপরদিকে বিভিন্ন জেলার পাইকারদের তাগাদা।

পাওয়ার টিলারের মালিক আবুল কাশেন জানান, ‘খুব তাড়াতাড়ি আমন মৌসুমের চাষাবাদ শুরু হয়ে যাবে। তখন সারা দিন জমি চাষ করতে হবে। তখন মেশিন বিকল হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই মেশিন চেকআপ করে নিচ্ছি।’

মিস্ত্রি শাকিল মিয়া বলেন, ‘অনেকে মেশিন মেরামতের জন্য দোকানে আসছেন। আবার গ্রামে গিয়েও মেশিন মেরামত করতে হচ্ছে। ফলে খুব ভালো সময় পার করতে হচ্ছে। প্রতিটি মেশিন মেরামতে ৭০০ থেকে ১ হাজর ৫০০ টাকা পর্যন্ত পাচ্ছি।’

ব্যবসায়ী ফরমান আলী বলেন, ‘আমরা গ্রামগঞ্জ থেকে পুরোনো মেশিন কিনে আনি। তারপর ওই মেশিনগুলো ভালো করে সার্ভিসিং করে আবার বিক্রি করি।’

ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন জানান, মেশিনের গুণগত মান অনুসারের দামেরও তফাৎ রয়েছে। বর্তমানে একটি নতুন পাওয়ার টিলার কিনতে এক লাখ ৪৬ হাজার টাকা লাগে।

পাওয়ার টিলার কিনতে আশা উল্লাপাড়ার শাহজাহান মিয়া বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষেরা নতুন পাওয়ার টিলার কিনতে পারেন না। তাই তাঁরা পুরোনো পাওয়ার টিলার কিনে থাকেন জমি চাষের জন্য।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মাহমুদুল হাসান জানান, শ্রম, সময় ও ব্যয় কমিয়ে কৃষিকে লাভজনক করার জন্য সরকার যান্ত্রিকীকরণে বেশি জোর দিয়েছে। মধুপুর অন্যতম বাণিজ্যিক শহর হওয়ায় কৃষি যন্ত্রপাতির বড় বাজারও গড়ে উঠেছে এখানে। নতুন-পুরোনো মেশিন সমান তালে বিক্রি হয়ে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত