Ajker Patrika

বোরো আবাদ অনিশ্চিত

কামরুজ্জামান রাজু, কেশবপুর (যশোর)
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ০৪
বোরো আবাদ অনিশ্চিত

কেশবপুরে চলতি বছর ১৬ বিলের ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ঘেরমালিকেরা বিলের পানি নিষ্কাশনের শর্তে ঘের লিজ নিলেও পানি নিষ্কাশনের নামে সময় ক্ষেপণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। সময়মতো বিলগুলোর পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ওই সব বিলে বোরো আবাদ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সংশয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিলখুকশিয়া, বেতিখোলা, গরালিয়া, টেপুর, বলধালী, বুড়ুলি, ডহুরী, বাগডাঙ্গা, ভায়না বিলসহ ১৬ বিলের ৪ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে গতবছর ২ হাজার ৬৮১ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। বিলের চারপাশের প্রায় ১৫ হাজার কৃষক পরিবার বেঁচে থাকার জন্য এবং গোখাদ্যের জোগান মেটাতে বছরের একমাত্র ফসল বোরো ধানের আবাদ করে থাকেন। ওই সব বিলে অপরিকল্পিতভাবে মাছের ঘের তৈরি হওয়ায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘের মালিকেরা বিলের পানি নিষ্কাশনের শর্তে শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে বিল ভরাট করে মাছ চাষ করেন। অভিযোগ উঠেছে, বিলের পানি নিষ্কাশনের নামে ঘের মালিকেরা এখন সময় ক্ষেপণ করছেন। পাশাপাশি শ্রীহরি নদী পলিতে ভরাট হওয়ায় বিল খুকশিয়ার ডায়ের খাল দিয়েও সুষ্ঠুভাবে পানি প্রবাহিত হতে না পরে বিলসমূহে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।

উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের সারুটিয়া গ্রামের কৃষক মো. মনি বলেন, ‘বিল খুকশিয়া, বেতিখোলা, নারায়ণপুর বিলসহ ১৬ বিলে জলাবদ্ধতার কারণে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গড়ভাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, প্রতি বছর ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে বিলের পানি নিষ্কাশনের শর্ত থাকলেও এবার ঘের মালিকেরা এখনো বিল থেকে পানি নিষ্কাশন করেননি। কিছু ঘের মালিক পানি নিষ্কাশন শুরু করলেও বোরো আবাদের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।’

একাধিক কৃষত বলেন, ‘প্রতি বছর ঘের মালিকেরা বিল ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেন। প্রতিবার তাঁরা বোরো আবাদের আগে বিলের পানি নিষ্কাশন করলেও এবার এখন পর্যন্ত পানি সরাননি। এমনিতেই জলাবদ্ধতার কারণে ধানের চাষ ঠিকমতো করতে পারি না। তার ওপর ঘের মালিকদের এমন করার কারণে এবার আর বোরোর চাষই করতে পারব না।

উপজেলা ২৭ বিল পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক বাবর আলী গোলদার বলেন, ‘ভবদহ এলাকার ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায় এবারও কৃষকেরা প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করতে পারবেন না বলে সংশয় রয়েছে।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘চলতি বছর ১৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর। গত বছর ভবদহ সংলগ্ন ১৬ বিলের ১ হাজার ৫৫৪ হেক্টর জমি পতিত ছিল। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় চলতি বছর প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমি পতিত থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এরপরও মনিরামপুরের পূর্ব এলাকার বিলের পানি কেশবপুরের ২৭ বিল এলাকায় ফেলা হচ্ছে। তারপরও কৃষকেরা বোরো আবাদ করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, ‘ঘের এলাকায় আবাদ কম হলেও অন্য এলাকায় বোরো আবাদ বাড়ছে। ঘের এলাকার সমস্যা সমাধানের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুন্সি আছাদুল্লাহ বলেন, ‘ভবদহ সংলগ্ন ২৭ বিলের পানি কাটাখালির স্লুইস গেট হয়ে ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড স্লুইস গেট দিয়ে শ্রী নদীতে যায়। কিন্তু শ্রীহরি নদী পলিতে ভরাট হওয়ার কারণে পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নদী খনন না হলে এ সমস্যার সমাধান হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন বদরুদ্দীন উমর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত