Ajker Patrika

সুন্দরবনে নিষেধ অমান্য করে মাছ শিকার

কামাল হোসেন, কয়রা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জুন ২০২২, ১৪: ৪০
Thumbnail image

সুন্দরবনে মাছ শিকারসহ সব ধরনের বনজ দ্রব্য আহরণে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ। এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার কয়রায় কিছু মাছ ব্যবসায়ীর ইন্ধনে বিভিন্ন খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার চলছে। তাদের এ কাজে বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবনে প্রবেশ করে মাছ ধরার অপরাধে গত ৪ জুন চার জেলেকে আটক করেছে বন বিভাগ। এদিকে গতকাল বন বিভাগের অভিযানে কোন জেলেকে আটক করতে না পারলেও ৭০ কেজি মাছ জব্দ করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে অবৈধ কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এসব সিন্ডিকেটের নেতারা বন বিভাগকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন তাদের অবৈধ ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছে। এদের অনেকেই বনদস্যুদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত এবং একাধিক মামলার আসামি। আবার অনেকেই অবৈধ ব্যবসা ঠিক রাখতে সুন্দরবনকেন্দ্রিক সিএমসি কমিটিতে নাম লিখিয়েছেন। কোম্পানি নামধারী এ সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন সুন্দরবনকেন্দ্রিক সব অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা থাকায় কোনো সাধারণ জেলে বাওয়ালি সুন্দরবনে প্রবেশ করতে না পারলেও কোম্পানি নামধারী ব্যবসায়ীরা তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালু রেখেছেন।

আরও জানা গেছে,, পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের বানিয়াখালি, কাশিয়াবাদ, কোবাদাক স্টেশনের অসাধু বনরক্ষীদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় চলছে মৎস্য আহরণ। অভিযোগ রয়েছে সিন্ডিকেটের বাইরে কোন জেলে মাছ ধরতে সুন্দরবনে গেলে তাদের বন বিভাগের কর্মকর্তা ও পুলিশ দিয়ে মাছসহ ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যারা মাছ ধরছে তারা নির্দ্বিধায় মাছ ধরছে কোন ঝুঁকি ছাড়া। ­

কয়রার মহেশ্বরীপুরের শেখেরকোনা, কালিবাড়ি, তেঁতুলতলাসহ এলাকার অসাধু জেলেরা প্রতিনিয়ত নিষিদ্ধ ঘন ফাঁসের ভেষালি জাল ও কর্ড বিষ নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে মাছ শিকার করছে। গহিন বনের নলবুনি, খড়খুড়ি, মার্কি, আদাচাকি, দুধমুখ, পিনমারা, চালকি, গেড়া, নাটুয়া ভারানি, মোল্লাখালি, জোলাখালি, বজবজা, খাসিটানা, গেওয়াখালি, ভোমরখালি, পাথকষ্টা সহ অন্যান্য খাল ও ভারানিতে চিংড়িসহ অন্য প্রজাতির মাছ শিকার করছে তারা। অবৈধ জেলেরা তাদের আহরণ করা চিংড়ি ভোররাতে উপজেলা সদরের দেউলিয়া মৎস্য আড়ত, চাঁদালি মৎস্য সেটে বেচাবিক্রি করছে বলে সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। স্থানীয় শুঁটকির ফড়িয়ারা এ সব চিংড়ি মাছ জেলেদের কাছ থেকে ক্রয় করে সুন্দরবনের সন্নিকটে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কয়েকটি খটিঘরে নিয়ে আগুনে শুকিয়ে উচ্চমূল্যে বেচাবিক্রি করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত