ফেরিঘাটের দুর্ভোগ কাটছে না

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের দুর্ভোগ কমছে না। দীর্ঘ দিন ধরে ঘাটে লেগে আছে যানজট। পদ্মা পাড়ি দিতে লাগছে দিনের পর দিন। যদিও মাঝে দুদিন ঘাট ফাঁকা ছিল। ছিল না কোনো যানবাহনের সারি। অনেকে ভেবেছিলেন ভোগান্তি হয়তো এবার কমছে। কিন্তু না। স্বরূপে ফিরেছে দৌলতদিয়া।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই  দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ ছিল আগের মতো। ঘাট ও ফেরি স্বল্পতার কারণে সকাল থেকেই ঘাটে ছিল ঢাকামুখী যানবাহনসহ অন্যান্য জেলামুখী যানবাহনের দীর্ঘ সারি।

নদী পাড়ি দিতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী এসব গাড়িকে ফেরিতে উঠতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ২ থেকে ৩ দিন করে অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে জানান চালক ও তাঁদের সহকারীরা।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার জিরো পয়েন্ট (৩ নম্বর ফেরি ঘাট) থেকে ওয়াজেদ চৌধুরী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পর্যন্ত প্রায় ৬ শতাধিক দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকের সারি। সঙ্গে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় আরও অন্তত ৪ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক পদ্মা পাড়ির অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকে আছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়তে দেখা গেছে।

বিআইডাব্লিউটিসি সূত্র জানায়, দৌলতদিয়া–পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি ফেরি থাকলেও কয়েকটি ফেরি অন্য ঘাটে নেওয়া হয়েছে এবং কয়েকটি ফেরি মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল করছে ১৫টি। ঘাট এলাকায় বেশ কিছুদিন যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ দেখা দিয়েছে। ঘাট এবং ফেরি বৃদ্ধি পেলে খুব শিগগিরই এই চাপ কমবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

কথা হয় বরিশাল থেকে ভাঙারি বোঝাই করে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়া ট্রাকচালক মো. মিলন হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত বুধবার দুপুর ২টায় গোয়ালন্দ মোড়ে এসে সিরিয়ালে আটকা পড়ি। সেখান থেকে শুক্রবার ভোর ৫টায় ছেড়ে দিলে ঘাটে দিকে আসি। এখানে এসে ৫ ঘণ্টা ধরে সিরিয়াল ঠেলে দৌলতদিয়া মডেল হাই স্কুল পর্যন্ত আসতে পেরেছি। ঘাট পেতে সন্ধ্যা পার হয়ে যাবে।

দীর্ঘ লাইনে আটকে থাকা ঢাকাগামী রাবেয়া পরিবহনের এক যাত্রী জানান, সকাল ৯টায় রাজবাড়ী থেকে রওনা হন ঢাকার উদ্দেশে। কিন্তু প্রায় ২ ঘণ্টা হয়ে গেলেও এখনো ফেরি ঘাটে যেতে পারেনি। আরও কত দেরি হতে পারে জানেন না। স্ত্রী–সন্তান নিয়ে নেমে লঞ্চে পার হবেন তাও পারছেন না। কারণ গাড়িতে কয়েকটা ব্যাগ আছে, সেই সঙ্গে নেমে গেলে ভাড়ার টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়ায় ৪টি ফেরিঘাট আছে। ৪টি ঘাটে ৪টি পন্টুন আছে এবং ৯টি পকেট রয়েছে। নাব্য সংকটের কারণে ৪ নম্বর ফেরি ঘাট বন্ধ রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দ্রুতই ৮ নম্বর ঘাট করা হবে। সেই সঙ্গে ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারলে যানজট অনেকটাই কমবে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট বড় মিলিয়ে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে বলে জানান তিনি।