Ajker Patrika

মোমবাতির আলোই ভরসা

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২২, ১২: ৫৩
মোমবাতির আলোই ভরসা

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। চলমান বিদ্যুৎবিভ্রাটের মধ্যে জেনারেটর না থাকায় বিপাকে পড়েছেন রোগী ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা। রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে চিকিৎসক ও নার্সদের টর্চ, মোবাইল ফোনের আলো কিংবা মোমবাতি জ্বালিয়ে সেবা দিতে হচ্ছে।

তবে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হলেও ব্যাটারির ক্ষমতা কম থাকায় বেশিক্ষণ আলো জ্বলে না। এ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী রোগী ও স্বজনেরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে জ্বালানি তেলের বরাদ্দ না থাকায় জেনারেটর চালানো যাচ্ছে না। এমনকি জেনারেটর চালানোর লোকবলও নেই। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় জেনারেটরটির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে গেছে। তবে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যাটারি পাওয়ার কমে যাওয়ায় এখন আর তেমন কাজে লাগে না।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ চলে গেলে রোগীদের দুর্ভোগের চিত্র। বেশির ভাগ শয্যার পাশে মোবাইল ফোনের লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। নারী ওয়ার্ডে সৌরবিদ্যুতের একটি এলইডি লাইটের আলো, তা-ও নিভু নিভু। পুরুষ ওয়ার্ডে একটি এলইডি এসি ডিসি বাল্ব থাকলেও কিছুক্ষণ পরপর আলো জ্বলছে আর নিভছে। এ কারণে অন্ধকারেই রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা বসে আছেন। আবার অনেকে মোমবাতি বা মোবাইল ফোনের লাইট জ্বালিয়ে খাবার খাচ্ছেন।

জরুরি বিভাগের কক্ষেও প্রায় একই অবস্থা। সৌরবিদ্যুতের ব্যাটারির পাওয়ার কমে এসেছে। ১ ঘণ্টা লোডশেডিং হলে জরুরি বিভাগের রুমেও আলো বন্ধ হয়ে। নার্স-স্টাফদের ওয়ার্ডেও একই অবস্থা। সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলেও বেশিক্ষণ আলো জ্বলে না।

হাসপাতালে আসা দুদু মিয়া নামের এক রোগী বলেন, ‘ডায়রিয়া ওয়ার্ডে একটুও আলো জ্বলে না। বিদ্যুৎ গেলে রাতে অন্ধকারেই ওষুধ খেতে হয়। এই গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকলে রোগীরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালের অবস্থা খুবই খারাপ। পরিবেশ একটুও ভালো না।’

নারী ওয়ার্ডের নাসিমা নামে রোগীর এক স্বজন বলেন, ‘দুদিন আগে হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করিয়েছি। প্রতিদিনই রাত করে বিদ্যুৎ চলে যায়। এই সময়ের মধ্যে ছোট একটা মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হয়। মোবাইলের লাইট ধরে রোগীকে খাবার খাওয়াইছি কাল।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যুৎ চলে গেলে চিকিৎসাসেবা দিতে একটু কঠিন হয়ে পড়ে। সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যাটারির পাওয়ার কমে যাওয়ায় আলো কম হয়।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে একটি জেনারেটর রয়েছে তবে তা বন্ধ। সৌরবিদ্যুৎ আছে, যা ব্যাটারি সমস্যার কারণে অনেক সময় জ্বলে না। আবার ব্যাটারির পাওয়ার কম থাকায় অল্প সময় জ্বলার পর বন্ধ হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, এসি ডিসি বাল্ব বেশ কয়েকবার লাগানো হয়েছিল। সেগুলো থাকে না, চুরি হয়ে যায়। আর জেনারেটর চালাতে গেলে তো তেলের প্রয়োজন। জেনারেটর চালানোর লোকবলও নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত