এনামুল হক, কাউখালী (পিরোজপুর)
একাত্তরে কলেজছাত্র ছিলেন মহিউদ্দিন পান্না। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ তাঁর শরীর-মন জ্বালিয়ে দেয়। এর মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ল নিরপরাধ মানুষের ওপর। সেই নির্মমতা আর নিতে পারলেন না মহিউদ্দিন। চলে গেলেন যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে। প্রশিক্ষণ শেষ করে রণাঙ্গনে একের পর এক যুদ্ধ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন পান্নার বাড়ি পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার কেউন্দিয়া গ্রামে। বয়স হলো ৭০ বছর। স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়েই তাঁর সংসার। বাবার ভিটায় পুরোনো কাঠের ঘরেই তাঁর বসবাস। মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে চাইলে খুলে দিলেন ঝাঁপি।
মহিউদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের পরদিন ৮ মার্চ চলে আসি গ্রামের বাড়ি। যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করি যুবসমাজকে। আড়াই হাত বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রথম মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শুরু করি। সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে যুদ্ধের রণকৌশল প্রশিক্ষণ দেন আমাদের। ১৪ মার্চ কাউখালী থানা আক্রমণ করি। কোথ ভেঙে ৩৭টি রাইফেল ও এক বক্স গুলি লুট করি। এরপর সিও অফিসের হলরুমে থাকা অনেক সেনা, ইপিআর, আনসার সদস্যরা যুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়ান, শুরু করি রাইফেল ট্রেনিং।’
একাত্তরের ২২ মে পাকিস্তানি সেনারা কেউন্দিয়া গ্রামে ঢুকে হাবিব কমান্ডারের বাড়িসহ ১৬-১৭টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ৪ জুন পুলিশ বাহিনী মুক্তাদির উল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেনকে ধরে নিয়ে কাউখালী লঞ্চঘাটে মেরে ফেলে। কেউন্দিয়ায় যোদ্ধা হাবিবুর রহমানকে হত্যার চেষ্টা চালায় রাজাকার বাহিনী।
এসব ঘটনার পর ২৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে সুন্দরবনে লে. মধুর কাছে চলে যান মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন পরই সুন্দরবন থেকে ফিরে আক্রমণ করি বানারীপাড়া থানা। এ সময় ৩২ জন পুলিশ ও ১১ জন রাজাকারকে ধরে নিয়ে আসি আটঘর কুড়িয়ানা ক্যাম্পে। বানারীপাড়া থানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। মারা যায় অনেক পুলিশ ও রাজাকার।’
ওই ঘটনার পর পাকিস্তানি বাহিনী আবার আক্রমণ করে জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, ‘শুরু হয় গুলি, পাল্টা গুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপ। কেঁপে ওঠে সমস্ত এলাকা। তুমুল যুদ্ধ। ততক্ষণে গোলাগুলির শব্দ শুনে সেহাংগল ও শেখেরহাট থেকে অন্য মুক্তিযোদ্ধারাও চলে আসেন। পাকিস্তানি এক সেনাকে গুলি করে হত্যা করেন এক মুক্তিযোদ্ধা। ছত্রভঙ্গ হওয়া ৫ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করি আমরা ও স্থানীয় গ্রামবাসী মিলে। পরদিন আরও দুই পাকিস্তানি সেনা আটক হয়। নৌকার সঙ্গে বেঁধে তাদের সুন্দরবনে নেওয়া হয়। পরে আটক পাকিস্তানি সেনাদের ভারতে নিয়ে মেজর আবদুল জলিলের কাছে সোপর্দ করি।’
মহিউদ্দিন বলে চলেন, ‘তখনই স্বাধীন বাংলা বেতার, বিবিসি ও আকাশবাণী বেতার কেন্দ্রে প্রচার হয় ৯ নম্বর সেক্টরে পাকসেনাদের গ্রেপ্তারের খবর। ২৭ সেপ্টেম্বর আয়রন জয়কুলে আমরা অবস্থানকালে কাউখালী লঞ্চঘাট থেকে ১৫টি গানবোট ও লঞ্চ নিয়ে আমাদের ঘিরে ফেলে পাকিস্তানি বাহিনী। সন্ধ্যার পরই শুরু হয় যুদ্ধ। ১১ থেকে ১২ জন পাকসেনার লাশ পাওয়া যায়। আমাদের সাথি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ শহীদ হন এই যুদ্ধে।’
চূড়ান্ত বিজয় মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। লেফটেন্যান্ট কবির আহমেদ মধুর বাহিনী, কমান্ডার হাবিবুর রহমানের বাহিনী, নুরু মিয়ার বাহিনী ও কমান্ডার আমজাদ হোসেনের বাহিনী মিলে আমরা যৌথভাবে মোরেলগঞ্জ থানা আক্রমণ করি। লড়াই শেষে সকাল ৮টার দিকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি।’
একাত্তরে কলেজছাত্র ছিলেন মহিউদ্দিন পান্না। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ তাঁর শরীর-মন জ্বালিয়ে দেয়। এর মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ল নিরপরাধ মানুষের ওপর। সেই নির্মমতা আর নিতে পারলেন না মহিউদ্দিন। চলে গেলেন যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে। প্রশিক্ষণ শেষ করে রণাঙ্গনে একের পর এক যুদ্ধ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন পান্নার বাড়ি পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার কেউন্দিয়া গ্রামে। বয়স হলো ৭০ বছর। স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়েই তাঁর সংসার। বাবার ভিটায় পুরোনো কাঠের ঘরেই তাঁর বসবাস। মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে চাইলে খুলে দিলেন ঝাঁপি।
মহিউদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের পরদিন ৮ মার্চ চলে আসি গ্রামের বাড়ি। যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করি যুবসমাজকে। আড়াই হাত বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রথম মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং শুরু করি। সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে যুদ্ধের রণকৌশল প্রশিক্ষণ দেন আমাদের। ১৪ মার্চ কাউখালী থানা আক্রমণ করি। কোথ ভেঙে ৩৭টি রাইফেল ও এক বক্স গুলি লুট করি। এরপর সিও অফিসের হলরুমে থাকা অনেক সেনা, ইপিআর, আনসার সদস্যরা যুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়ান, শুরু করি রাইফেল ট্রেনিং।’
একাত্তরের ২২ মে পাকিস্তানি সেনারা কেউন্দিয়া গ্রামে ঢুকে হাবিব কমান্ডারের বাড়িসহ ১৬-১৭টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ৪ জুন পুলিশ বাহিনী মুক্তাদির উল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেনকে ধরে নিয়ে কাউখালী লঞ্চঘাটে মেরে ফেলে। কেউন্দিয়ায় যোদ্ধা হাবিবুর রহমানকে হত্যার চেষ্টা চালায় রাজাকার বাহিনী।
এসব ঘটনার পর ২৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে সুন্দরবনে লে. মধুর কাছে চলে যান মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন পরই সুন্দরবন থেকে ফিরে আক্রমণ করি বানারীপাড়া থানা। এ সময় ৩২ জন পুলিশ ও ১১ জন রাজাকারকে ধরে নিয়ে আসি আটঘর কুড়িয়ানা ক্যাম্পে। বানারীপাড়া থানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। মারা যায় অনেক পুলিশ ও রাজাকার।’
ওই ঘটনার পর পাকিস্তানি বাহিনী আবার আক্রমণ করে জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, ‘শুরু হয় গুলি, পাল্টা গুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপ। কেঁপে ওঠে সমস্ত এলাকা। তুমুল যুদ্ধ। ততক্ষণে গোলাগুলির শব্দ শুনে সেহাংগল ও শেখেরহাট থেকে অন্য মুক্তিযোদ্ধারাও চলে আসেন। পাকিস্তানি এক সেনাকে গুলি করে হত্যা করেন এক মুক্তিযোদ্ধা। ছত্রভঙ্গ হওয়া ৫ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করি আমরা ও স্থানীয় গ্রামবাসী মিলে। পরদিন আরও দুই পাকিস্তানি সেনা আটক হয়। নৌকার সঙ্গে বেঁধে তাদের সুন্দরবনে নেওয়া হয়। পরে আটক পাকিস্তানি সেনাদের ভারতে নিয়ে মেজর আবদুল জলিলের কাছে সোপর্দ করি।’
মহিউদ্দিন বলে চলেন, ‘তখনই স্বাধীন বাংলা বেতার, বিবিসি ও আকাশবাণী বেতার কেন্দ্রে প্রচার হয় ৯ নম্বর সেক্টরে পাকসেনাদের গ্রেপ্তারের খবর। ২৭ সেপ্টেম্বর আয়রন জয়কুলে আমরা অবস্থানকালে কাউখালী লঞ্চঘাট থেকে ১৫টি গানবোট ও লঞ্চ নিয়ে আমাদের ঘিরে ফেলে পাকিস্তানি বাহিনী। সন্ধ্যার পরই শুরু হয় যুদ্ধ। ১১ থেকে ১২ জন পাকসেনার লাশ পাওয়া যায়। আমাদের সাথি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ শহীদ হন এই যুদ্ধে।’
চূড়ান্ত বিজয় মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। লেফটেন্যান্ট কবির আহমেদ মধুর বাহিনী, কমান্ডার হাবিবুর রহমানের বাহিনী, নুরু মিয়ার বাহিনী ও কমান্ডার আমজাদ হোসেনের বাহিনী মিলে আমরা যৌথভাবে মোরেলগঞ্জ থানা আক্রমণ করি। লড়াই শেষে সকাল ৮টার দিকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি।’
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫