Ajker Patrika

সড়ক যেন ট্রাকের স্ট্যান্ড ভোগান্তিতে পথচারীরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
সড়ক যেন ট্রাকের স্ট্যান্ড ভোগান্তিতে পথচারীরা

আলাদা স্ট্যান্ড থাকা সত্ত্বেও ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কের পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গড়ে উঠেছে ট্রাকস্ট্যান্ড। এখানে মহাসড়কের দুই পাশে লম্বা সারিতে সড়কে পার্ক করা হয় ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ ট্রাক। এতে সংকুচিত হয়ে পড়ে মূল সড়ক। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। কখনো কখনো সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দ্রুত এখানে ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ পার্কিং বন্ধ করা হোক। জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে, ভালো গ্যারেজ না থাকা, চালক ও সহকারীদের খাবারের সুবিধা না থাকাসহ অন্য সুবিধা না থাকায় বাধ্য হয়ে তাঁদের এখানে পার্ক করতে হচ্ছে। অন্যদিকে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা বলছে, শিগগিরই ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়ক থেকে গাড়ি সরিয়ে রাখার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কের পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের গোলচত্বর থেকে খাদ্য বিভাগের গুদাম পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে শতাধিক ট্রাকসহ অন্যান্য যান দাঁড় করানো। কিছু ট্রাক সরাসরি মহাসড়কের ওপরেই রয়েছে। এতে মূল সড়কে চলাচলের পথ সংকুচিত হয়ে গেছে। সংকুচিত সড়কেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।

জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই ট্রাকস্ট্যান্ড নির্মিত হয়। তবে নতুন স্ট্যান্ডে রাখা হচ্ছে না ট্রাক।

নিজস্ব টার্মিনাল থাকা সত্ত্বেও কেন মহাসড়কে গাড়ি পার্ক করা হচ্ছে জানতে চাইলে জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানা বলেন, নতুন টার্মিনালে গাড়ি মেরামতের জন্য ভালো কোনো গ্যারেজ নেই। এ ছাড়া চালক ও সহকারীদের খাবারের সুবিধা না থাকাসহ অন্য সুবিধা না থাকায় বাধ্য হয়ে তাঁরা এখানেই গাড়ি পার্ক করছেন। তবে খুব দ্রুত নতুন ট্রাক টার্মিনালে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। 
ট্রাকচালক মতিউর রহমান বলেন, ‘শহর থেকে নতুন ট্রাকস্ট্যান্ড বেশ দূরে। অনেক সময় শহরে মালামাল লোড-আনলোড করতে সময় লেগে যায়। সে জন্য রাস্তায় পার্ক করি। এ ছাড়া এ পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে সব সুযোগ-সুবিধা পাই। এ সুবিধাগুলো পেলে আমরা নতুন টার্মিনালে চলে যাব।’

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফি বিন সারোয়ার হোসেন জানায়, প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় তাকে এ পথ দিয়েই সাইকেল চালিয়ে যেতে হয়। দুপাশে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে সড়ক সরু হয়ে পড়ে। তাই দূরপাল্লার যানবাহনের সঙ্গে রিকশা, অটোরিকশা, সাইকেলসহ স্থানীয় যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। তাকেও ঝুঁকি নিয়ে রোজ স্কুলে যেতে হয়।

শহরের হাজিপাড়ার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, এভাবে মহাসড়কের দুই পাশে গাড়ি পার্ক করায় ফুটপাত দিয়েও হাঁটা দায় হয়ে পড়েছে। এখান থেকে ট্রাকসহ অন্য যানবাহনের স্ট্যান্ড সরানোটা খুবই প্রয়োজন।

ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে থাকা আবু তালহা নামের এক পথচারী বলেন, ‘মহাসড়ক দখল করে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকার কারণে পথচারীদের নিয়মিত হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনারও শিকার হতে হয়।

ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আমজাদ হোসেন বলেন, বেশ কয়েকবার সড়ক থেকে গাড়িগুলো সরানো হয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিগগিরই ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়ক থেকে গাড়ি সরিয়ে রাখার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত