Ajker Patrika

সার্ভারের তথ্য ছাড়াই নিরীক্ষা প্রতিবেদন

অর্চি হক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২২, ১০: ৩২
সার্ভারের তথ্য ছাড়াই নিরীক্ষা প্রতিবেদন

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির নিরীক্ষা প্রতিবেদনের খসড়া দুই-তিন দিনের মধ্যেই পরিচালনা পর্ষদের হাতে আসবে। তবে ইভ্যালির সার্ভারের পাসওয়ার্ড উদ্ধার করতে না পারায় সার্ভারে জমা থাকা তথ্য ছাড়াই এ প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। সার্ভারের বিকল্প পাসওয়ার্ড পেতে ইভ্যালির পরিচালনা পর্ষদ আদালতে যাবে বলে জানা গেছে।

পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আজকের পত্রিকাকে এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলকে যেন আমাজন থেকে সার্ভারের বিকল্প পাসওয়ার্ড গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়। আমরা আদালতে এমন আবেদন করব।’

ইভ্যালির সার্ভার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান হলো আমাজন। পরিচালনা পর্ষদ ইভ্যালির গ্রাহকসংখ্যা এবং তাদের পাওনা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে কয়েক দফায় আমাজনের কাছে পাসওয়ার্ড চাইলেও তারা তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর পরিচালনা পর্ষদ পাসওয়ার্ড উদ্ধারের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি এবং এটুআইয়ের (অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন) সাহায্য চায়। কিন্তু তারাও কয়েক দিন আগে চিঠি দিয়ে পরিচালনা পর্ষদকে জানায়, মোহাম্মদ রাসেল ছাড়া পাসওয়ার্ড উদ্ধার সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘কারাবন্দী মোহাম্মদ রাসেল বলেছেন, সার্ভারের পাসওয়ার্ড তিনি ভুলে গেছেন। যে ডায়েরিতে তিনি পাসওয়ার্ড লিখে রেখেছেন, সেটার হদিসও তিনি দিতে পারেননি। আমরা পাসওয়ার্ড পেতে সিআইডি এবং এটুআইয়ের সাহায্য চেয়েছিলাম। তবে তারাও তিন-চার দিন আগে জানিয়ে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, তারা এটা পারেনি। এ অবস্থায় আমরা আমাজন থেকে বিকল্প পাসওয়ার্ড গ্রহণের জন্য রাসেলকে বাধ্য করতে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই আমরা আদালতে আবেদন করব।’

ইভ্যালির আইনজীবী মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, ‘পরিচালনা পর্ষদ চাইলে আদালতে যেকোনো বিষয়ে আবেদন করতেই পারে। তবে আমরা এখনো এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমরা চাই, রাসেলকে মুক্তি দিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হোক। তিনি মুক্তি পেলে পুনরায় ব্যবসা করে গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ করতে পারবেন।’ গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল এবং তাঁর স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। এরপর ১৮ অক্টোবর ইভ্যালির পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেন উচ্চ আদালত। ইভ্যালি পুনরায় ব্যবসা শুরু করবে নাকি অবসায়নে যাবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয় এই পর্ষদকে ৷

পর্ষদ বলছে, পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষা ছাড়া ইভ্যালির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য ইভ্যালির হিসাব নিরীক্ষার জন্য হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোংকে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিরীক্ষার কাজ তাঁরা গুছিয়ে এনেছেন। খসড়া প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যেই পরিচালনা পর্ষদকে দেওয়া হবে। কিন্তু সার্ভারের তথ্য না পাওয়ায় অপূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনই তাঁদের জমা দিতে হবে।

মোহাম্মদ রাসেল গ্রেপ্তারের পর থেকে ইভ্যালির ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাদের ওয়্যার হাউসে আটকে আছে প্রায় ২৬ কোটি টাকার পণ্য। আর পেমেন্ট গেটওয়েতে ২৫ কোটি টাকা জমা আছে বলে পরিচালনা বোর্ড জানিয়েছে। সার্ভারের পাসওয়ার্ড উদ্ধার ছাড়া এসব মালামাল ও অর্থ ছাড় সম্ভব নয়। শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘গ্রাহকের সংখ্যা জানা এবং দায়দেনা শোধ করতেই সার্ভারের পাসওয়ার্ডটা আমাদের দরকার। এটা ছাড়া আমরা ইভ্যালি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত