Ajker Patrika

নারায়ণগঞ্জে মাছের আকাল মৎস্যজীবীদের পেশা বদল

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২, ১১: ৪৫
নারায়ণগঞ্জে মাছের আকাল মৎস্যজীবীদের পেশা বদল

নদীবেষ্টিত জেলা নারায়ণগঞ্জ। ছয়টি নদ-নদী বয়ে গেছে এই জেলার ওপর দিয়ে। তবু মাছের আকালে পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। দখল আর দূষণের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে মাছ।

নারায়ণগঞ্জ শহরের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে শীতলক্ষ্যা নদী। জেলার পশ্চিম অংশে রয়েছে বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী। পূর্ব দিকে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদ ও মেঘনা নদী। উত্তরে বালু নদ। তবে কলকারখানা আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে নদীর পানি। বালু, শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী আর ব্রহ্মপুত্র নদে মাছ নেই বললেই চলে। কেবল মেঘনা নদীই এখন একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠেছে জেলেদের কাছে। নারায়ণগঞ্জবাসীদের মাছের চাহিদা পূরণে এখন তাকিয়ে থাকতে হয় অন্যান্য জেলা থেকে আসা মাছ ব্যবসায়ীদের দিকে।

পরিবেশ আন্দোলনকর্মীরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলো এখন দূষণের কারণে মাছের বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। গৃহস্থালির বর্জ্য থেকে শুরু করে কলকারখানার তরল বর্জ্য খাল ও ড্রেন হয়ে মিশছে নদ-নদীতে। দখলদারদের কারণে নদ-নদী সরু হতে হতে খালের আকার ধারণ করেছে।

জেলা মৎস্য অফিস বলছে, নদীদূষণের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু প্রজাতির মাছ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ডারকানা, মলা, ঢেলা, ভাগ্না, সরপুঁটি, স্বর্ণপুঁটি, মহাশোল, মহাশের, কালা বাটা, শিলং, দেশি পাঙাশ, দেশি রিটা, চেউয়া, বাগাড়, দেশি চিতল, নেপতানি, খৈল, গজার, গুইচ্ছা, গইন্না, কাসখৈয়া, ভোল, খোকসা, কালবাউশ, কালিয়া, টাটকিনি, মধু পাবদা, কানি, বোয়ালি পাবদা, পাবদা, গাঙ মাগুর, কাজলি, ট্যাংরা, আইড়, খলশে, ফলি, মেনি, বেদা, চান্দা, লাল চান্দা, তিতপুঁটি, বইচ্চা মাছসহ অসংখ্য মাছ।

শহরের প্রবীণ বাসিন্দা হাজি নূর উদ্দিন বলেন, ‘২০ বছর আগেও জেলার সব কটি নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। পুকুর বা বিলে মাছ চাষের প্রবণতা তখন শুরুই হয়নি। খালে জাল ফেলে সারা বছর মাছ ধরা হতো। এখন সবই হারিয়ে গেছে। খাল তো দূরের কথা, নদীতেই মাছ পাওয়া যায় না। পানি শরীরে লাগলে চুলকায়। চর্মরোগ দেখা দেয়।’

বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বাড়লে কিছুটা পরিষ্কার হয় নদীর পানি। মেঘনা নদী থেকে কিছু মাছ আসে শীতলক্ষ্যায়। সেই চিন্তা করেই নদীতে জাল ফেলছিলেন মজিদ। তবে মাছের দেখা নেই বললেই চলে। মজিদ বলেন, ‘আগে বর্ষায় জাল ফেললে কিছু মাছ পাওয়া যেত। এখন সেটাও নাই। খালি চ্যাগাব্যাগা (সাকার ফিশ) ওঠে। খাওনের মাছ খুঁজেই পাওয়া যায় না।’

নারায়ণগঞ্জ মাছঘাট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সানি হোসেন বলেন, ‘আমাদের বাজারে নারায়ণগঞ্জের কোনো মাছ আসে না। শেষ কবে শীতলক্ষ্যার মাছ আমাদের বাজারে উঠেছে মনে নাই।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আয়নাল হক বলেন, ‘কারখানার মালিকেরা শিল্পবর্জ্য নদীতে ফেলেন। এসব কারণে দূষিত নদীতে মাছ আসা কমে গেছে। কারখানার উন্নয়নের পাশাপাশি মাছেরও প্রয়োজন আছে। বর্ষা মৌসুমে কিছুটা মাছের দেখা মিললেও সারা বছর মাছের আকাল থাকে। কারখানার মালিকেরা যদি ইটিপি ঠিকমতো ব্যবহার করতেন, তাহলেও মাছ বেঁচে থাকত। শিল্পবর্জ্যের কারণেই মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত