Ajker Patrika

লভ্যাংশের লোভে আসল হাওয়া

চৌগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ০৩
Thumbnail image

চৌগাছায় ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড নামের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অর্ধশত গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন কয়েক যুবক। গতকাল মঙ্গলবার প্রেসক্লাব চৌগাছায় সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাড়ীয়ালী গ্রামের বাসিন্দা ও চৌগাছা বাজারের ফটোকপি দোকান ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ রাজু। তিনি জানান, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড অ্যাপসের মাধ্যমে আইডি খুলে এবং সুপার শপ ইউনিক মার্ট ও ইউনিক রেস্টুরেন্ট খুলে উপজেলার প্রায় অর্ধশত গ্রাহকের প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড নামের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় ঢাকার মালিবাগ রেল গেট (আয়েশা কমপ্লেক্স-৩য় তলা) এলাকায়। প্রতিষ্ঠানটি দেশের ৬৪ জেলায় সুপার শপ, রেস্টুরেন্ট, কোমলপানীয় প্রতিষ্ঠান, জুতার কারখানা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করে সেখান থেকে আমাদের লভ্যাংশ দেওয়ার নাম করে গ্রাহক সংগ্রহ করে। গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ভিন্ন ভিন্ন অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২১ সালের অক্টোবরে তাঁরা চৌগাছা সদরের মূল বাসস্ট্যান্ডে এলাকায় ইউনিক মার্ট ও ইউনিক রেস্টুরেন্ট নামে দুটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। পরে তিন মাসের মাথায় প্রতিষ্ঠান দুটি বন্ধ হয়ে যায়। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ চৌগাছা উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষ ও চৌগাছার ডিভাইন কফি শপে ইউনিক মার্ট সুপার শপের বিভিন্ন সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের উদ্বুদ্ধ করেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তাঁরা মূলত চৌগাছার স্থানীয় কিছু অসাধু মানুষকে দিয়ে তাঁদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তাঁদের সমন্বয়ে ইউনিক ওয়ার্ল্ডের গ্রাহককে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা তুলেছেন। আমরা চৌগাছার মাড়ুয়া গ্রামের রাজু আহাম্মেদ ওরফে সোহাগ (কোম্পানির উপপরিচালক), আন্দারকোটা গ্রামের আক্তারুল ইসলাম (সুপার শপ তত্বাবধায়ক ও উপজেলা কর্মকর্তা), সদরের শাহারিয়া নাফিস (বিপণন কর্মকর্তা), পৌরসভার কারিগরপাড়ার বাসিন্দা ও চৌগাছা বাজারের ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া (বিপণন কর্মকর্তা), তাঁর ছেলে আল মাসুদ (বিপণন কর্মকর্তা), মিন্টুর মেয়ে জুলেখা জামান (বিপণন কর্মকর্তা) এবং মিন্টুর মেয়ের জামাই ও বরিশালের কুয়াকাটার বাসিন্দা মনিরুজ্জামানদের (সমন্বয়ক) কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হই। তাঁরাই আমাদের টাকা নিয়ে দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পরে জানতে পেরেছি, এ প্রতারকেরাও কোম্পানির বিভিন্ন পদের কর্মকর্তা ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, তাঁদের এ কার্যক্রম অনলাইন ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড অ্যাপসের মাধ্যমে ১২শ টাকা নেয় আইডি খোলার জন্য। পরে আইডি খুলে বিজ্ঞাপন দেখার মাধ্যমে ১০ টাকা করে ইউনিক ওয়ার্ল্ডের অ্যাপসের আইডিতে জমা হতো।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে রহমত আলী সেতু, ফয়সাল আহমেদ, হাসিবুল হাসান শান্ত, নাজমুল কবীর, জিহাদ হোসেন, আমীর হামজা, রেজওয়ান ইসালমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এসব টাকার বিপরীতে তাঁদের কারও কাছে বিভিন্ন অঙ্কের টাকার চেক দিয়েছিলেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা। সেসব হিসাবে টাকা না থাকায় ইতিমধ্যেই চেক ডিজ-অনারের মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন কয়েকজন। এরই মধ্যে উকিল নোটিশ পাঠানো হলেও তাঁদের স্থায়ী ঠিকানায়ও কাউকে পাওয়া যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, এখন আমরা চৌগাছার যারা কোম্পানিটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। এ ছাড়া কোম্পানিটির ঢাকা কার্যালয়ে কোম্পানির চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হীরা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদ রানা, চৌগাছা উপজেলা কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সাড়া মিলছে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন কল করা হলেও তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত