Ajker Patrika

চুরির মামলা নেয় না পুলিশ জিডিতে আগ্রহ

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২২, ১২: ৩০
Thumbnail image

রাজশাহীতে মাঝেমধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু বেশির ভাগ চুরির ঘটনার ক্ষেত্রেই চোরের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। চুরির ঘটনার পর কোনো কোনো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চুরির মামলা নিতে চান না। ভুক্তভোগীকে দিয়ে জিনিসপত্র হারানোর জিডি করানো হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।

নগরীর চন্দ্রিমা থানার ওসি এমরান হোসেন এমন কাজ করিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গত ২৯ জুলাই রাতে নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকার ৭ নম্বর রোডে এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতেই হানা দেন চোর। বাড়ির দুটি ফ্ল্যাটে ঢুকে জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায় চোর। দুই ফ্ল্যাটের মধ্যে একটির ভাড়াটে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক ছাত্র। ঘটনার পর তিনি মামলা করতে গিয়েছিলেন নগরীর চন্দ্রিমা থানায়। কিন্তু থানার ওসি তাঁর মামলা নেননি। তবে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নেওয়া হয়েছে। আর এই চুরির ঘটনা জিডিতে করা হয়েছে মালামাল হারানোর ঘটনা।

ভুক্তভোগী রুয়েট শিক্ষার্থী বলেন, চুরির ঘটনায় তিনি মামলা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ মামলা নিতে চায়নি। চোর অচেনা। মামলা করলে আসামির নাম দিতে হবে তাই। তা না হলে মামলা হবে না। তবে পুলিশ আমাকে দিয়ে একটি জিডি করিয়েছে। সেই জিডিতে লিখতে হয়েছে যে রাস্তা থেকে ফোন, মানিব্যাগ ও ল্যাপটপ হারিয়েছে। এখনো কিছুই উদ্ধার হয়নি।’

এক সপ্তাহের মধ্যে এলাকায় কোনো চুরির ঘটনা ঘটেছে কি না জানতে চাইলে বুধবার দুপুরে চন্দ্রিমা থানার ওসি এমরান হোসেন বলেন, ‘না না না। কোনো চুরি-টুরি হয় না। আপনাদের দোয়ায়, আল্লাহর রহমতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব ভালো। চুরির ঘটনা ঘটলে তো মামলা হবে। এ ব্যাপারে থানায় কোনো মামলা হয় না। চুরির কোনো ঘটনাও ঘটে না।’

রুয়েট শিক্ষার্থীর চুরির ঘটনায় মামলা না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো এখন মনে পড়ছে না।’ মামলা না নিয়ে জিডি করানোর বিষয়ে ওসি বলেন, ‘জিডি তো করতেই পারে। রাস্তাঘাটে কোনো কিছু হারিয়ে গেলে জিডি করবে না? এমন জিডি তো হয়ই।’

চুরির ঘটনায় হারানোর জিডি করানোর বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ ভাবতে পারে চুরির মামলা হলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ বোঝাবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে হবে। তাই চুরির মামলা না নিয়ে হারানোর জিডি করানো হতে পারে। চুরির মামলা হলে তো তা উদ্ধার করা পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেই দায়িত্বটা এড়িয়ে যেতেই চুরির মামলা অনেক সময় নেওয়া হয় না।’

রাজশাহী মহানগর দায়রা ও জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুসাব্বিরুল ইসলাম বলেন, ‘চুরির ঘটনা ঘটলে চুরিরই মামলা হতে হবে। জিডি হবে কেন? আসামির নাম ছাড়াও তো মামলা হয়। যাঁর বাসায় চুরি তিনি সবক্ষেত্রেই চোর চিনবেন ব্যাপারটা এমন না। চোর খুঁজে আনার দায়িত্ব পুলিশের। এই দায়িত্বটা সঠিকভাবে অনেকে পালন করতে চান না।’

চন্দ্রিমা থানার ওসির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী নগর পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চুরির ঘটনায় চুরিরই মামলা করা হয়। হারানোর জিডি করার সুযোগ নেই। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটলে এবং ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত