Ajker Patrika

আত্মসমর্পণের আহ্বান বিধ্বস্ত পাকিস্তানকে

এ আর চন্দন, ঢাকা
আত্মসমর্পণের আহ্বান বিধ্বস্ত পাকিস্তানকে

‘৭ই ডিসেম্বরের মধ্যে পাকিস্তানীদের জন্য পরিস্থিতি অনিবার্য পরিণতির দিকে মোড় নেয়। নিয়াজী দিশেহারা হয়ে পড়েন। অধিকাংশ এলাকা থেকেই তাঁর বাহিনী পিঠটান দিতে আরম্ভ করেছে।’ রণাঙ্গণের এমন বর্ণনা মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের। (সূত্র: লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে)

একাত্তরে পাকিস্তান বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজির এক গোপন বার্তায়ও এমন চিত্র দেখা যায়। আগের দিন নিয়াজি সদর দপ্তরকে গোপন বার্তায় জানিয়েছিলেন, ‘গত ১৭ দিনের সব খণ্ডযুদ্ধে আমাদের জনবল ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে গেছে। রাজাকারদের অস্ত্রসহ সটকে পড়ার হার বাড়ছে।

আমাদের নিজস্ব ট্যাংক, ভারি কামান ও বিমান সমর্থন না থাকায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে।’ নিয়াজির সঙ্গে আলোচনার বরাত দিয়ে দালাল গভর্নর মালিকও ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে আরেক বার্তায় উভয় রণাঙ্গনে বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরেন। (সূত্র: হামুদুর রহমান কমিশন রিপোর্ট)

এ দিন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে আর্জেন্টিনার উত্থাপিত এক প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সংঘাত নিরসনে দুই দেশকেই (ভারত ও পাকিস্তান) আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে আসতে হবে এবং অতিসত্বর সীমান্ত থেকে সৈন্য সরাতে হবে।’ নিরাপত্তা পরিষদে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটোতে সেটিও বাতিল হয়ে যায়।

রাত ১০টায় রেডিও আকাশবাণী থেকে ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মানেকশ হিন্দি, উর্দু ও পশতু ভাষায় পাকিস্তানি বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাদের বাঁচার কোনো পথ নেই। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এদেশের মানুষের ওপর যে পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছে তার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত হচ্ছে। এখন পাকিস্তানি বাহিনীর সামনে একটি মাত্র পথ খোলা আছে; সেটি হলো আত্মসমর্পণ করা।’ (সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, ৮ ডিসেম্বর, ১৯৭১)

অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ দিন বেতার ভাষণে বলেন, ‘ঢাকা হানাদারমুক্ত হতে আর সময়ের প্রয়োজন হবে না। খুব শিগগির ঢাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে আসবে।’ বাংলাদেশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই মুজিবনগর থেকে বাংলাদেশ সরকারের দপ্তর ঢাকায় স্থানান্তর করা হবে।’

মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখী আক্রমণে এ দিন কুমিল্লা বিমানবন্দরের ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যায় হানাদাররা। মেজর শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বাধীন বাহিনী সিলেটের রাধানগর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সালুটিকরে বিমানবন্দরের দিকে অগ্রসর হয়। ভোরে সিলেট বিমানবন্দরে ছত্রীসেনা নামায় মিত্রবাহিনী। ফলে বিমানবন্দরসহ আশপাশের এলাকা হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর থেকে হটিয়ে দেয় হানাদারদের। এ দিন আরও মুক্ত হয় কুড়িগ্রাম, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, শেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও মোংলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পালানোর গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরলেন আবদুল হামিদ

মেঘালয়ে হানিমুনের সময় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যা, উত্তর প্রদেশে নববধূর আত্মসমর্পণ

কানাডার লেকে বোট উল্টে বাংলাদেশের পাইলট ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

এআই যুগে চাকরি পেতে যে দক্ষতা লাগবেই, জানালেন মাইক্রোসফটের সিইও

ঈদের ছুটির সুযোগে মাদ্রাসার গাছ বেচে দিলেন সুপার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত