Ajker Patrika

পুলিশের এসআইয়ের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১২: ৪০
পুলিশের এসআইয়ের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

চান্দিনা থানায় কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সুলতানকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় চান্দিনা থানার সামনে এই মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। ওই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি অনুযায়ী ঘুষের টাকা দিতে না পারায় ভিকটিম নূরুল আমিন সোহাগ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করার অভিযোগ এনে এ মানববন্ধন করেন তাঁরা। এ সময় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে দ্রুত অপসরণসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানানো হয়।

জানা যায়, গত ২৫ জুলাই চান্দিনার তুলাতলী গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় মারাত্মক আহত হয় নূরুল আমিন সোহাগ, তাঁর পিতা রুহুল আমিন ও ছোট ভাই নাঈম। ঘটনার পর সোহাগের স্ত্রী রোজিনা আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ওই সময় প্রতিপক্ষের লোকেরা থানায় উল্টো মামলা করতে গেলে থানার ওসিসহ তদন্ত কর্মকর্তাগণ তাঁদের অভিযোগের কোনো সত্যতা না পাওয়ায় মামলা নেননি। পরে প্রতিপক্ষের লোকেরা আদালতে পৃথক ২টি মামলা করেন। ওই ২টি মামলাই চান্দিনা থানাকে তদন্ত দেন আদালত। এর মধ্যে একটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সুলতান সঠিক রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ভিকটিম সোহাগের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। সোহাগ এক লাখ টাকা দিতে না পারলে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ভিকটিমের বিরুদ্ধেই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

আহত নূরুল আমিন সোহাগ বলেন, ‘আমার মাথায় ৪টি কোপ লাগে। আমাকে রাজধানীর শেখ হাসিনার বার্ন ইউনিটে ২১২টি সেলাই দিয়ে প্রাণ বাঁচায়। এ পর্যন্ত আমার মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে পরপর ২টি মিথ্যা মামলা করেন। ওই মামলায় সঠিক রিপোর্ট দেওয়ার জন্য এসআই সুলতান আমার কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। আমি গত ১৪ অক্টোবর ২০ হাজার টাকা দিই। তখন এসআই সুলতান বলেন, ‘‘প্রতিপক্ষতো দুই লাখ দিতে রাজি’’। আমি আর কোনো টাকা দিতে পারবো না বলে থানা থেকে চলে আসি। গত ১৯ অক্টোবর তিনি বলেন, ‘‘সঠিক রিপোর্ট দিয়েছি, আরও টাকা দিতে হবে’’। আমি বাধ্য হয়ে ২০ অক্টোবর সকালে আরও ৫ হাজার টাকা দিই। পরে আদালত থেকে ওই রিপোর্ট এনে দেখি এসআই সুলতান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট রিপোর্ট দেওয়ায় আদালত আমার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও এসআই সুলতানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানাই।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সুলতান জানান, ‘উভয় পক্ষের মারামারিতে সোহাগ মারাত্মক আহত হয়েছে সেটা সত্য। তবে প্রতিপক্ষের লোকেরাও আহত হয়। রিপোর্টটি তাঁদের পক্ষে যায়নি বলেই তাঁরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।’

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘এসআই সুলতানের বিরুদ্ধে ভিকটিম সোহাগের অভিযোগটি জেনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত