Ajker Patrika

বিএম কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগ: বিভাগীয় প্রধান ঢাকায়, অন্য দুজনও অনিয়মিত

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৪, ১১: ৫১
Thumbnail image

বরিশালের ঐতিহ্যবাহী বিএম কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. ইফতেকার আলী। পরিবারসহ থাকেন রাজধানীতে। সেখান থেকেই ক্লাসে আসেন। তবে সেটা নিয়মিত নয়, মাঝেমধ্যে। একাডেমিক কাউন্সিলেও উপস্থিত থাকেন না এই অধ্যাপক। নিয়ম অনুযায়ী, কর্মস্থল থেকে ২০ মাইলের বেশি দূরে যেতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়; কিন্তু ইফতেকার তা করেননি। 

এ ছাড়া এই বিভাগে আরও দুজন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁরাও নিয়মিত ক্লাসে আসেন না। দুজনেই ব্যস্ত থাকেন প্রাইভেট নিয়ে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিভাগীয় প্রধান নিয়মিত না আসায় অনেক শিক্ষার্থী তাঁকে চেনেনই না। 

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের বিজ্ঞান ভবনে গিয়ে দেখা যায়, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ক্লাস চলছে; কিন্তু পরিসংখ্যান বিভাগ সুনসান। 

পরিসংখ্যান বিভাগের সিফাত নামের এক শিক্ষার্থী জানান, তাঁরা বসে আছেন; কিন্তু ক্লাস হচ্ছে না। 

পরে শিক্ষক মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, প্রভাষক সুভাষ চন্দ্র দৈরী ঝিমুচ্ছেন। বিভাগীয় প্রধান ইফতেকার আলী ও সহকারী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার পালের চেয়ার ফাঁকা। 

প্রভাষক সুভাষ চন্দ্র জানান, বিভাগীয় প্রধান ইফতেকার আলী ও সহকারী অধ্যাপক উজ্জ্বল ছুটিতে আছেন। বিভাগে চারটি পদে শিক্ষক রয়েছেন তিনজন। বিভাগীয় প্রধান ইফতেকার ঢাকা থেকে এসে অফিস করেন। বিভাগে মোট শিক্ষার্থী ২৫০ জন। 

বিভাগীয় প্রধান ইফতেকার গত সোমবার কলেজে এসেছিলেন জানিয়ে প্রভাষক সুভাষ চন্দ্র বলেন, ‘নিয়মিত ক্লাস হয়। দুজন ছুটিতে আছেন। এখন তিনি একাই ক্লাস নেন।’ 

তবে অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে ওই দুজনের ছুটির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিভাগীয় প্রধানকে অনেকেই চেনেন না। কারণ তিনি জাতীয় দিবসগুলো ছাড়া অধিকাংশ সময়েই ঢাকা থাকেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, তাঁদের সবচেয়ে কষ্ট পরিসংখ্যানে মাস্টার্স নেই। দুজন শিক্ষক আছেন; তাঁরা কলেজের আশপাশে কোর্স অনুযায়ী প্রাইভেট পড়ান। তাই তাঁরা মনে করেন, ক্লাসে গিয়ে কোনো লাভ নেই। 

অভিযোগের বিষয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইফতেকার আলী বলেন, ‘যে কদিন ক্লাস না থাকে, সে কদিন কলেজে থাকি না। জরুরি কাজ থাকলে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উপস্থিত থাকা সম্ভব হয় না।’ 

অন্য শিক্ষকদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকেরা প্রাইভেট পড়ান এটা ঠিক। কিন্তু এ জন্য বিভাগটি প্রাইভেটনির্ভর হয়ে গেছে, এটা 
সঠিক নয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ থাকলে তিনি তাঁদের নিয়ে বসবেন; কিন্তু ছাত্রছাত্রীই তো আসে ১৫ থেকে ২০ জন।’ 

সার্বিক বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আমিনুল হক বলেন, তিনি গত মার্চের শুরুতে এখানে যোগদান করেন। অথচ তাঁর সঙ্গে দেখা করতেও আসেননি পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইফতেকার। তিনি যে কলেজে আসেন না, তা জানতেন না। 

অধ্যক্ষ আরও বলেন, কোরবানির আগে হঠাৎ পরিসংখ্যান বিভাগ পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন ইফতেকার নেই। ওই সময় তাঁকে ফোন দিয়ে সতর্ক করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী, কর্মস্থল থেকে ২০ মাইলের বেশি দূরে যেতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু ইফতেকার কোনো ছুটি নেননি। বিভাগীয় প্রধান ও বাকি দুই শিক্ষককে ডেকে ফের সতর্ক করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত