এম আর খায়রুল উমাম

ব্যক্তি, পরিবার, গোষ্ঠী থেকে দেশ—আজ সবার মুখে উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের কথা। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে দেশে কিছু মানুষের উন্নতি হচ্ছে। একজন যখন মাত্র কয়েক বছরে তাঁর সম্পদ ১০ লাখ টাকা থেকে ৭৭ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে সমর্থ হচ্ছেন, তখন এটাকেই উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্য মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞজনেরা মনে করেন, উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। বিজ্ঞজনের মতে, উন্নতির সঙ্গে যখন নৈতিক জীবনবোধ অর্থাৎ শৃঙ্খলা, সততা ও আদর্শ যোগ করা হবে, তখন তা হবে অগ্রগতি এবং অগ্রগতির সঙ্গে যখন মানবতা, সদাচরণ ও আধ্যাত্মিকতা যোগ হবে, তখন তা সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
যদিও আমাদের দেশে বিজ্ঞজনেরা কী বলেন তা বিবেচ্য বিষয় হয় না; তাই উন্নতি, অগ্রগতি ও সাফল্য সব এক কাতারে মিলেমিশে গেছে। দেশে এখন উন্নতির জন্য নৈতিক শৃঙ্খলা, সততা, আদর্শ, মানবতা, সদাচরণ ও আধ্যাত্মিকতার কোনো স্থান নেই। সবাই নিজের উন্নতি, মানে সম্পদের পাহাড়ে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করার বুদ্ধি ব্যয়ে নিবেদিত। ব্যক্তি থেকে দেশ কোনোখানেই এর ব্যতিক্রম নেই। ‘দেশটা চিরকালের’—এই মতে বিশ্বাসী একটা গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়েছে, যারা জনকল্যাণের আস্ফালনে আমজনতার ভাগ্য পরিবর্তনের কথা বলে নিজেদের অভিজাত জীবনভাবনায় ব্যস্ত। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে কোনো কথা বলার সুযোগ আছে—এমন ভাবনা মনে আনার কেউ নেই বললেই চলে।
দেশ আজ তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উন্নত দেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত। সরকার জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন এনেছে। তাতে গড় আয়ু আর আয় বেড়েছে, শিক্ষার হার আর জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে, অর্থনীতির পরিধির সঙ্গে বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা, মেগা প্রকল্প বেড়েছে, শাসকশ্রেণির সেকেন্ড হোম-ব্যক্তিগত সম্পদ-বিদেশে পরিবার স্থানান্তর বেড়েছে, স্ব-অর্থায়নে প্রকল্প সম্পন্ন করার সক্ষমতা বেড়েছে। বিশ্বে অনেক বিষয়ে রোল মডেল হয়েছি আমরা, সামাজিক নিরাপত্তাবলয় সৃষ্টি করা হয়েছে, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক হয়েছে, শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েক শ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পরিচালনার অনুমতিদানের মধ্য দিয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরির কার্যক্রম চলছে।
দেশের যে বিপুল উন্নতি হয়েছে, তাতে মৌলিক মূল্যবোধের দ্রবণের অনুপস্থিতির কারণে জনগণের জীবনমানের যে উন্নতি হওয়ার কথা ছিল, তার সিংহভাগও অর্জিত হয়নি, সেটাই সবচেয়ে অনুতাপের। স্বাধীনতা আমজনতাকে স্বজাতির শাসনের মধ্যে সীমিত করে রেখেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আংশিক বাস্তবায়নে শাসকশ্রেণি নিবেদিত থাকছে। জনপ্রতিনিধি, আমলা, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী সবাই সম্মিলিত উদ্যোগে আমজনতাকে একপাশে সরিয়ে শুধু নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তনে ব্রতী হওয়ার ফলে জনকল্যাণ, জনস্বার্থ, জনসেবা সোনার হরিণ হয়ে আছে।
বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু গড় আয়, যা স্বাধীনতার সময়কালে ছিল ৯৪ ডলার, তা আজ ২ হাজার ৯৬১ ডলার হয়েছে। যদিও গড় আয়ের পরিসংখ্যানটা বড়ই মজার। ধরা যাক, একজনের আয় যদি ১ লাখ টাকা হয় আর অন্যজনের আয় যদি ১০০ টাকা হয়, তবে তাদের গড় আয় ৫০ হাজার ৫০ টাকা। অথচ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের পরিধি দেখে মনে হয়, দেশের মানুষের গড় আয়ের হিসাব একেবারে ওপরের দুজনের মতো। অর্থনীতি সমিতি যদি দেশের ভাগ্যবান বিত্তশালী ১০ হাজার জনকে বাদ রেখে বাকি ১৭ কোটি আমজনতার গড় আয়ের হিসাব প্রকাশ করার দায়িত্ব নিত, তবে জনগণ সমিতির প্রতি কৃতজ্ঞ থেকে দেখতে পেত গড় আয় বৃদ্ধির সরকারি হিসাবের প্রকৃত চিত্র।
স্বাধীনতার পর থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৬৬ কোটি থেকে ৫ লাখ কোটি টাকা। বাজেটের আকার বেড়েছে ৭৮৬ কোটি থেকে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। জিডিপির আকার বেড়েছে ৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪২৬ বিলিয়ন ডলার। কৃষি ও শিল্প উৎপাদন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। এত সব উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের পাশাপাশি সমানভাবে প্রতিযোগিতা করে বেড়েছে বিশাল আয়বৈষম্য।
দেশের অর্থনৈতিক গণ্ডি পেরিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও বৈষম্য লক্ষণীয়। রাজনীতিতে আমজনতার কণ্ঠস্বর ও প্রতিনিধিত্ব নিতান্ত প্রান্তিক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের সভাপতির অনুমতি নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মোট আসনের ২০ ভাগের বেশিতে বিজয়ী হয়ে প্রমাণ করেছে রাজনীতিতে আমজনতার সংশ্লিষ্টতা। আমজনতার চাওয়া-পাওয়াকে উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা কীভাবে মূল্যায়ন করেন, তার একটা জ্বলন্ত প্রমাণও এই নির্বাচন। যদিও আমজনতার জন্য ‘যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ’, তাই বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যে জনগণের কথা মনে রাখবেন, সেই বিশ্বাস রাখা কঠিন।
দেশের উন্নতির জন্য ইতিমধ্যে ঘোষিত মেগা প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বুলেট ট্রেন, দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পূর্বাচলে ১১০ তলা বঙ্গবন্ধু বহুতল ভবন কমপ্লেক্স, শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নোয়াখালীতে বিমানবন্দর, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ইত্যাদি। জনকল্যাণে এসব মেগা প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনার কথা পুনঃক্ষমতাসীনদের মনে আসে বলে মনে হয় না। জনপ্রতিনিধিরা দেশকে একজন প্যারিসের মতো দেখেন তো অন্যজন ভেনাসরূপে দেখেন। দেশ ও দেশের মানুষ উপযোগী উন্নতি-অগ্রগতি পরিকল্পনায় এঁদের কারোরই আগ্রহ নেই।
এসব জনপ্রতিনিধি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে আগুন লাগলেও সিন্ডিকেট ভাঙার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেন না, মানবসম্পদ পরিকল্পনা করেন না, প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে ও ব্যয়ে শেষ করেন না। ব্যাংক জালিয়াতি, শেয়ারবাজারে ধস, মানি লন্ডারিংয়ের সহযোগী হতে দেখা যায় এঁদের। ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং করে বিদেশে অর্থ পাচারও বন্ধ হয় না। রাজনৈতিক ক্ষেত্রের মতোই সামাজিক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ সমাজের প্রান্তসীমায় অবস্থান করছে। রাজধানীর বিত্তবান এলাকার জীবনযাত্রার সঙ্গে দরিদ্র এলাকার জীবনযাত্রার চিত্রে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না বহুদিন। দিনে দিনে এই অসম চিত্র বেড়েই চলেছে, যেখানে সামাজিক সুরক্ষাবলয় ন্যূনতম মিল আনতে পারছে না।
রাজনীতিবিদদের চিন্তার দৈন্য ও ক্ষমতালিপ্সার ফলস্বরূপ সমাজে মানুষের মধ্যে ধারাবাহিক আত্মকেন্দ্রিকতা সৃষ্টি হয়েছে; ঘুষ-দুর্নীতি-সন্ত্রাস-সহিংসতার বিস্তার ঘটেছে; সহনশীলতা-পরমতসহিষ্ণুতা-পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কমেছে; আমলাতন্ত্রের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নতার সঙ্গে স্বার্থোদ্ধার বেড়েছে; ব্যবসায়ীরা লুটেরা মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন; রাজনৈতিক মতাদর্শে বিভক্ত হয়ে লেজুড়বৃত্তিতে পেশাজীবীদের আত্মা সমর্পিত; জ্ঞানীগুণীরা আত্মসম্মানে নিজেদের লুকিয়ে রাখার মানসিকতায় ঘরবদ্ধ। জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিবাদী চেতনা লুপ্ত হয়েছে ক্রমান্বয়ে। ফলে রাজনৈতিক স্বাধীনতালাভের পরও সার্বিক মুক্তি আসেনি।
জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারপ্রাপ্তসহ ক্ষমতার বলয়ে থাকা মানুষ মনে করেন—দেশটা যখন স্বাধীন, তখন বিত্তবানদের সুখে আর আমজনতার দুঃখেও দেশ স্বাধীনই থাকবে। তাই বিত্তবান মানুষ আরও বিত্তের মালিক হয়ে সমাজে কোটিপতি হিসেবে সংখ্যা বৃদ্ধি করে বিশ্বের রোল মডেলের খেরোখাতায় নাম লেখান। এতে দেশের কোনো ক্ষতি হয় না, বরং শত শত কোটিপতি দেশ বা সমাজের শোভা বৃদ্ধি করেন নিয়ত। আর নাগরিক কবিয়ালেরা আমজনতাকে স্বপ্নাতুর করতে গেয়ে চলেন—‘সুখে আছ যারা সুখে থাকো, এ সুখ সইবে না, দুঃখে আছ যারা বেঁচে থাকো, এ দুঃখ রইবে না।’
সদ্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশে নতুন মোড়কে পুরোনো সরকার পথচলা শুরু করেছে। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে ক্ষমতাসীনেরা ইশতেহার বাস্তবায়নে কতটা আন্তরিকতা দেখাবেন, সেটাই জনগণের কাছে লক্ষণীয় বিষয়। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্য অতীতের স্বসংজ্ঞায়নের ধারাবাহিকতায় চলমান থাকবে, নাকি প্রকৃত সংজ্ঞায়নের পথ বেয়ে জনকল্যাণের পথে অগ্রসর হবে, সেটাই দেখার বিষয়।
লেখক: এম আর খায়রুল উমাম, সাবেক সভাপতি, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ

ব্যক্তি, পরিবার, গোষ্ঠী থেকে দেশ—আজ সবার মুখে উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের কথা। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে দেশে কিছু মানুষের উন্নতি হচ্ছে। একজন যখন মাত্র কয়েক বছরে তাঁর সম্পদ ১০ লাখ টাকা থেকে ৭৭ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে সমর্থ হচ্ছেন, তখন এটাকেই উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্য মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞজনেরা মনে করেন, উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। বিজ্ঞজনের মতে, উন্নতির সঙ্গে যখন নৈতিক জীবনবোধ অর্থাৎ শৃঙ্খলা, সততা ও আদর্শ যোগ করা হবে, তখন তা হবে অগ্রগতি এবং অগ্রগতির সঙ্গে যখন মানবতা, সদাচরণ ও আধ্যাত্মিকতা যোগ হবে, তখন তা সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
যদিও আমাদের দেশে বিজ্ঞজনেরা কী বলেন তা বিবেচ্য বিষয় হয় না; তাই উন্নতি, অগ্রগতি ও সাফল্য সব এক কাতারে মিলেমিশে গেছে। দেশে এখন উন্নতির জন্য নৈতিক শৃঙ্খলা, সততা, আদর্শ, মানবতা, সদাচরণ ও আধ্যাত্মিকতার কোনো স্থান নেই। সবাই নিজের উন্নতি, মানে সম্পদের পাহাড়ে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করার বুদ্ধি ব্যয়ে নিবেদিত। ব্যক্তি থেকে দেশ কোনোখানেই এর ব্যতিক্রম নেই। ‘দেশটা চিরকালের’—এই মতে বিশ্বাসী একটা গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়েছে, যারা জনকল্যাণের আস্ফালনে আমজনতার ভাগ্য পরিবর্তনের কথা বলে নিজেদের অভিজাত জীবনভাবনায় ব্যস্ত। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে কোনো কথা বলার সুযোগ আছে—এমন ভাবনা মনে আনার কেউ নেই বললেই চলে।
দেশ আজ তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উন্নত দেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত। সরকার জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন এনেছে। তাতে গড় আয়ু আর আয় বেড়েছে, শিক্ষার হার আর জনশক্তি রপ্তানি বেড়েছে, অর্থনীতির পরিধির সঙ্গে বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা, মেগা প্রকল্প বেড়েছে, শাসকশ্রেণির সেকেন্ড হোম-ব্যক্তিগত সম্পদ-বিদেশে পরিবার স্থানান্তর বেড়েছে, স্ব-অর্থায়নে প্রকল্প সম্পন্ন করার সক্ষমতা বেড়েছে। বিশ্বে অনেক বিষয়ে রোল মডেল হয়েছি আমরা, সামাজিক নিরাপত্তাবলয় সৃষ্টি করা হয়েছে, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক হয়েছে, শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েক শ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পরিচালনার অনুমতিদানের মধ্য দিয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরির কার্যক্রম চলছে।
দেশের যে বিপুল উন্নতি হয়েছে, তাতে মৌলিক মূল্যবোধের দ্রবণের অনুপস্থিতির কারণে জনগণের জীবনমানের যে উন্নতি হওয়ার কথা ছিল, তার সিংহভাগও অর্জিত হয়নি, সেটাই সবচেয়ে অনুতাপের। স্বাধীনতা আমজনতাকে স্বজাতির শাসনের মধ্যে সীমিত করে রেখেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আংশিক বাস্তবায়নে শাসকশ্রেণি নিবেদিত থাকছে। জনপ্রতিনিধি, আমলা, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী সবাই সম্মিলিত উদ্যোগে আমজনতাকে একপাশে সরিয়ে শুধু নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তনে ব্রতী হওয়ার ফলে জনকল্যাণ, জনস্বার্থ, জনসেবা সোনার হরিণ হয়ে আছে।
বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু গড় আয়, যা স্বাধীনতার সময়কালে ছিল ৯৪ ডলার, তা আজ ২ হাজার ৯৬১ ডলার হয়েছে। যদিও গড় আয়ের পরিসংখ্যানটা বড়ই মজার। ধরা যাক, একজনের আয় যদি ১ লাখ টাকা হয় আর অন্যজনের আয় যদি ১০০ টাকা হয়, তবে তাদের গড় আয় ৫০ হাজার ৫০ টাকা। অথচ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের পরিধি দেখে মনে হয়, দেশের মানুষের গড় আয়ের হিসাব একেবারে ওপরের দুজনের মতো। অর্থনীতি সমিতি যদি দেশের ভাগ্যবান বিত্তশালী ১০ হাজার জনকে বাদ রেখে বাকি ১৭ কোটি আমজনতার গড় আয়ের হিসাব প্রকাশ করার দায়িত্ব নিত, তবে জনগণ সমিতির প্রতি কৃতজ্ঞ থেকে দেখতে পেত গড় আয় বৃদ্ধির সরকারি হিসাবের প্রকৃত চিত্র।
স্বাধীনতার পর থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৬৬ কোটি থেকে ৫ লাখ কোটি টাকা। বাজেটের আকার বেড়েছে ৭৮৬ কোটি থেকে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। জিডিপির আকার বেড়েছে ৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪২৬ বিলিয়ন ডলার। কৃষি ও শিল্প উৎপাদন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। এত সব উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের পাশাপাশি সমানভাবে প্রতিযোগিতা করে বেড়েছে বিশাল আয়বৈষম্য।
দেশের অর্থনৈতিক গণ্ডি পেরিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও বৈষম্য লক্ষণীয়। রাজনীতিতে আমজনতার কণ্ঠস্বর ও প্রতিনিধিত্ব নিতান্ত প্রান্তিক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের সভাপতির অনুমতি নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মোট আসনের ২০ ভাগের বেশিতে বিজয়ী হয়ে প্রমাণ করেছে রাজনীতিতে আমজনতার সংশ্লিষ্টতা। আমজনতার চাওয়া-পাওয়াকে উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা কীভাবে মূল্যায়ন করেন, তার একটা জ্বলন্ত প্রমাণও এই নির্বাচন। যদিও আমজনতার জন্য ‘যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ’, তাই বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যে জনগণের কথা মনে রাখবেন, সেই বিশ্বাস রাখা কঠিন।
দেশের উন্নতির জন্য ইতিমধ্যে ঘোষিত মেগা প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বুলেট ট্রেন, দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পূর্বাচলে ১১০ তলা বঙ্গবন্ধু বহুতল ভবন কমপ্লেক্স, শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নোয়াখালীতে বিমানবন্দর, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ইত্যাদি। জনকল্যাণে এসব মেগা প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনার কথা পুনঃক্ষমতাসীনদের মনে আসে বলে মনে হয় না। জনপ্রতিনিধিরা দেশকে একজন প্যারিসের মতো দেখেন তো অন্যজন ভেনাসরূপে দেখেন। দেশ ও দেশের মানুষ উপযোগী উন্নতি-অগ্রগতি পরিকল্পনায় এঁদের কারোরই আগ্রহ নেই।
এসব জনপ্রতিনিধি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে আগুন লাগলেও সিন্ডিকেট ভাঙার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেন না, মানবসম্পদ পরিকল্পনা করেন না, প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে ও ব্যয়ে শেষ করেন না। ব্যাংক জালিয়াতি, শেয়ারবাজারে ধস, মানি লন্ডারিংয়ের সহযোগী হতে দেখা যায় এঁদের। ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং করে বিদেশে অর্থ পাচারও বন্ধ হয় না। রাজনৈতিক ক্ষেত্রের মতোই সামাজিক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ সমাজের প্রান্তসীমায় অবস্থান করছে। রাজধানীর বিত্তবান এলাকার জীবনযাত্রার সঙ্গে দরিদ্র এলাকার জীবনযাত্রার চিত্রে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না বহুদিন। দিনে দিনে এই অসম চিত্র বেড়েই চলেছে, যেখানে সামাজিক সুরক্ষাবলয় ন্যূনতম মিল আনতে পারছে না।
রাজনীতিবিদদের চিন্তার দৈন্য ও ক্ষমতালিপ্সার ফলস্বরূপ সমাজে মানুষের মধ্যে ধারাবাহিক আত্মকেন্দ্রিকতা সৃষ্টি হয়েছে; ঘুষ-দুর্নীতি-সন্ত্রাস-সহিংসতার বিস্তার ঘটেছে; সহনশীলতা-পরমতসহিষ্ণুতা-পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কমেছে; আমলাতন্ত্রের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নতার সঙ্গে স্বার্থোদ্ধার বেড়েছে; ব্যবসায়ীরা লুটেরা মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন; রাজনৈতিক মতাদর্শে বিভক্ত হয়ে লেজুড়বৃত্তিতে পেশাজীবীদের আত্মা সমর্পিত; জ্ঞানীগুণীরা আত্মসম্মানে নিজেদের লুকিয়ে রাখার মানসিকতায় ঘরবদ্ধ। জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিবাদী চেতনা লুপ্ত হয়েছে ক্রমান্বয়ে। ফলে রাজনৈতিক স্বাধীনতালাভের পরও সার্বিক মুক্তি আসেনি।
জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারপ্রাপ্তসহ ক্ষমতার বলয়ে থাকা মানুষ মনে করেন—দেশটা যখন স্বাধীন, তখন বিত্তবানদের সুখে আর আমজনতার দুঃখেও দেশ স্বাধীনই থাকবে। তাই বিত্তবান মানুষ আরও বিত্তের মালিক হয়ে সমাজে কোটিপতি হিসেবে সংখ্যা বৃদ্ধি করে বিশ্বের রোল মডেলের খেরোখাতায় নাম লেখান। এতে দেশের কোনো ক্ষতি হয় না, বরং শত শত কোটিপতি দেশ বা সমাজের শোভা বৃদ্ধি করেন নিয়ত। আর নাগরিক কবিয়ালেরা আমজনতাকে স্বপ্নাতুর করতে গেয়ে চলেন—‘সুখে আছ যারা সুখে থাকো, এ সুখ সইবে না, দুঃখে আছ যারা বেঁচে থাকো, এ দুঃখ রইবে না।’
সদ্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশে নতুন মোড়কে পুরোনো সরকার পথচলা শুরু করেছে। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে ক্ষমতাসীনেরা ইশতেহার বাস্তবায়নে কতটা আন্তরিকতা দেখাবেন, সেটাই জনগণের কাছে লক্ষণীয় বিষয়। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্য অতীতের স্বসংজ্ঞায়নের ধারাবাহিকতায় চলমান থাকবে, নাকি প্রকৃত সংজ্ঞায়নের পথ বেয়ে জনকল্যাণের পথে অগ্রসর হবে, সেটাই দেখার বিষয়।
লেখক: এম আর খায়রুল উমাম, সাবেক সভাপতি, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ব্যক্তি, পরিবার, গোষ্ঠী থেকে দেশ—আজ সবার মুখে উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের কথা। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে দেশে কিছু মানুষের উন্নতি হচ্ছে। একজন যখন মাত্র কয়েক বছরে তাঁর সম্পদ ১০ লাখ টাকা থেকে ৭৭ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে সমর্থ
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ব্যক্তি, পরিবার, গোষ্ঠী থেকে দেশ—আজ সবার মুখে উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের কথা। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে দেশে কিছু মানুষের উন্নতি হচ্ছে। একজন যখন মাত্র কয়েক বছরে তাঁর সম্পদ ১০ লাখ টাকা থেকে ৭৭ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে সমর্থ
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ব্যক্তি, পরিবার, গোষ্ঠী থেকে দেশ—আজ সবার মুখে উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের কথা। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে দেশে কিছু মানুষের উন্নতি হচ্ছে। একজন যখন মাত্র কয়েক বছরে তাঁর সম্পদ ১০ লাখ টাকা থেকে ৭৭ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে সমর্থ
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ব্যক্তি, পরিবার, গোষ্ঠী থেকে দেশ—আজ সবার মুখে উন্নতি, অগ্রগতি আর সাফল্যের কথা। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে দেশে কিছু মানুষের উন্নতি হচ্ছে। একজন যখন মাত্র কয়েক বছরে তাঁর সম্পদ ১০ লাখ টাকা থেকে ৭৭ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে সমর্থ
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫