Ajker Patrika

দামের ধাক্কা গোখাদ্যে চরম বিপাকে খামারিরা

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ১২: ১৪
Thumbnail image

ঈশ্বরগঞ্জে গোখাদ্যের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় গবাদিপশু পালনে হিমশিম খাচ্ছেন ছোট-বড় খামারিসহ কৃষকেরা। এ অবস্থায় প্রান্তিক কৃষকসহ খামারিদের টিকে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তাঁদের দাবি, দুই মাস আগেও গোখাদ্যের দাম সহনীয় ছিল। সম্প্রতি সেই দাম অনেক বেড়েছে।

একাধিক খামারি ও দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই থেকে আড়াই মাস আগে এক কেজি গমের ভুসির দাম ছিল ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। বর্তমানে সেটি বেড়ে হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। দুই মাসের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১২ টাকার বেশি। এদিকে প্রতি কেজি পালিশ-কুঁড়োর দাম ছিল ২০-২২ টাকা, যা বর্তমানে ৩০-৩২ টাকা।

এক টিন ধানের কুঁড়োর দাম ছিল ৪০ থেকে টাকা, যা বর্তমানে ৬০ টাকা। প্রতি কেজি খৈল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, প্রতি কেজি চালের খুদ ৩৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি দানাদার খাদ্য বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। দুই মাস আগের তুলনায় দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা।

সোহাগী ইউনিয়নের খামারি মো. আমির উদ্দিন বলেন, ‘বিভিন্ন পণ্যের দাম ওঠানামা করে। কিন্তু গোখাদ্যের দাম একবার বাড়লে আর কমে না। এভাবে প্রতিনিয়ত গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বাড়তে থাকলে গরু পালন ছেড়ে দিতে হবে।’

গোখাদ্যে কিনতে আসা উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের মো. আব্দুল খালেক মিয়া বলেন, ‘কৃষিকাজের পাশাপাশি বাড়িতে গরু পালন করে বাড়তি কিছু উপার্জনের চেষ্টা করি। কিন্তু সম্প্রতি খৈল, ভুসি, কুঁড়োসহ গোখাদ্যের দাম যে হারে বেড়েছে, আমাদের মতো গরিব মানুষের গরু পালন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।’

খামারিদের দাবি, গোখাদ্যের যে হারে দাম বেড়েছে, সেই অনুযায়ী দাম বাড়েনি পশুর। যে কারণে ভালো দামে পশু বিক্রি নিয়েও শঙ্কায় আছেন প্রান্তিক কৃষকসহ খামারিরা।

পৌর এলাকার খামারি সামী উসমান গণি বলেন, ‘এমনিতেই নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে নাভিশ্বাস উঠছে। তার মধ্যে গোখাদ্যের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে আছি। গোখাদ্যের দাম বাড়ানোর পেছনে এক শ্রেণির অসাধু চক্র জড়িত। সরকার এদের লাগাম টেনে না ধরলে খামার টেকানোই দায় হয়ে পড়বে।’

গোখাদ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে একাধিক ব্যবসায়ী দাবি করেন, ‘কোম্পানি যদি বেশি দামে বিক্রি করে, সে ক্ষেত্রে আমাদের কী কিছু করার আছে? আমরা তো আর আমাদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়াইনি। কোম্পানি দাম কমালে আমরাও কমাতে পারব।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম বলেন, ‘আমি খামারিসহ প্রান্তিক কৃষকদের বলব, তাঁরা যেন শুধুমাত্র খৈল, ভুসি, দানাদার খাদ্যের প্রতি নির্ভরশীল না হয়ে কাঁচা ঘাস চাষ করে। এ ছাড়া তাঁরা যদি ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র এবং ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক ইত্যাদি প্রযুক্তি গ্রহণ করে, তাহলে দানাদারসহ অন্যান্য গোখাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত