Ajker Patrika

২৫ হাজার হেক্টর ফসলহানির শঙ্কা

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৬
২৫ হাজার হেক্টর ফসলহানির শঙ্কা

যশোরে অসময়ের টানা বৃষ্টিতে ২৪ হাজার ৮৮২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ ছাড়া আমন ও বোরোর বীজতলাসহ অন্যান্য ফসলও ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার আট উপজেলা থেকে সংগৃহীত এই তথ্য দিয়েছে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

তাঁরা বলছেন, গত তিন দিনে টানা প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে খেতে থাকা ফসলের ৫০ ভাগ রবিশস্য নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। আরও তিন–চার দিন পর ক্ষতির পুরো তথ্য নিশ্চিত হওয়া যাবে।

আগের দিন সোমবার জেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল, কৃষিনির্ভর জেলাটির ৪০ ভাগ ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে।

যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাস মঙ্গলবার সকাল ১০টার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে জানান, জেলায় ২৪ হাজার ৮৮২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ১৬৮ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া সরিষা ৯ হাজার ৯১০ হেক্টর, মসুর ৪ হাজার ১৬৩, ফুল কপি, বাঁধা কপি, শিম, বেগুন, কুমড়াসহ শীতকালীন সবজি ৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর, বোরোর বীজতলা ২৫৩ হেক্টর, মরিচ ৩০০ হেক্টর, আলু ২৫৬ হেক্টর, পেঁয়াজ ২১৬, গম ২০৬, মটরশুঁটি ২০০, খেসারি ১৫০, ভুট্টা ১৫০ হেক্টর জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে। তা ছাড়া পানিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে পান, বাদাম, ধনে, আখ, রসুন, মিষ্টি আলু, সূর্যমুখীসহ অন্যান্য ফসলও।

প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাস জানান, মসুরের ৬০ ভাগ ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ ছাড়া সরিষার ৫০ ভাগ, আলু ৬০ থেকে ৭০ ভাগ, ফুল কপি, বাঁধা কপিসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজি ৫০ ভাগ, মরিচ ২০ ভাগ, গম ৪০ ভাগের মতো ক্ষতির মুখে পড়েছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে।

যদি দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা না যায় তাহলে আখ ও পানসহ আরও কিছু ফসল গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

সদর উপজেলার কৃষক আফসার আলী জানান, তাঁর দেড় বিঘা জমির পুরো আলুই পানিতে তলিয়ে রয়েছে। সেচ দিয়ে পানি সরানোর মতো অবস্থা নেই। এ অবস্থা দুই–একদিন থাকলে পুরো আলু খেতই নষ্ট হয়ে যাবে।

ইলিয়াস হোসেন নামের আরেক কৃষক ২ বিঘা জমিতে সরিষা বুনেছিল। তাঁর পুরো খেতই এখন পানির নিচে। আরেক কৃষক শুভ রায়ের ১২ কাঠা জমির মসুরও তলিয়ে রয়েছে পানিতে। তাঁরা জানিয়েছেন, পানি সরানোর জন্য চেষ্টা করছেন, কিন্তু এত পানি যে তা কোনো কাজে আসছে না। কিন্তু মাঠের পর মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাস জানিয়েছেন, গত তিন দিনে টানা প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে যশোরে। সম্প্রতি এমন টানা বৃষ্টির মুখে পড়েনি যশোর। যে কারণে মাঠে পানি জমে গেছে। পানির চাপ বেশি থাকায় নিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। এতে জেলার মাঠে থাকা সব ধরনের ফসলই ক্ষতির মুখে পড়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, দুই–একদিনের মধ্যে খেতের পানি অপসারণ করা সম্ভব না হলে এতে গাছগুলোতে পচন ধরবে। তা ছাড়া বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধিও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেটি হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

উপপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের সব উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ চলছে। অভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবীদেরও নামানো হয়েছে এই কাজে সহায়তার জন্য। ক্ষতির পরিমাণ কমের মধ্যে রাখতে কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শও দিচ্ছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

জর্ডান-মিসরকে নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে চান নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত