সুমন আহসানুল ইসলাম

একটা সময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দুর্যোগ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হতো অসহায়, অরক্ষিত মানুষের দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এখনো দুর্যোগের যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম অবশ্যম্ভাবী—তবে সেটা সাফল্যের, অর্জনের। স্বাধীনতার অর্ধশতকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে রোল মডেল হয়ে ওঠা বাংলাদেশের অন্যতম সাফল্য।
গত ২৩ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার বালিতে হয়ে গেল জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসবিষয়ক সপ্তম গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম অধিবেশন। ১৮৫টি দেশের প্রায় চার হাজার প্রতিনিধির এই সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহ ছিল সবার। বাংলাদেশের সেশনগুলোয় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি, জানার জন্য প্রশ্ন দেখে গর্বিত হয়েছি বাংলাদেশি হিসেবে।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার এই সাফল্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যায়নি। এটা ছিল দুর্ভোগ আর হারানোর বেদনায় বেড়ে ওঠা অসংখ্য মানুষের বেঁচে থাকার এবং দুর্যোগ জয়ের এক ঐকান্তিক অভিযান। তৃণমূল পর্যায়ের দুর্যোগ স্বেচ্ছাসেবী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের ভিশন, যেটা শুরু হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে।
স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শুরুটাই ছিল দুটো বড় দুর্যোগের মানবিক সহায়তা এবং পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়ে। প্রথমত, যুদ্ধবিধ্বস্ত গৃহহীন, জীবিকাহীন কোটি মানুষের পুনর্বাসন এবং দ্বিতীয়ত, ১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়বিধ্বস্ত উপকূলীয় জীবন-জীবিকা এবং ভবিষ্যৎ দুর্যোগ ঝুঁকি থেকে তাদের সুরক্ষা। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর বিভীষিকাময় রাতের পর কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা, পুনর্বাসন দূরে থাক, মাত্র চার মাসের মধ্যেই পাকিস্তানি হানাদাররা শুরু করে বর্বর জেনোসাইড আর ধ্বংসলীলা।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত উপকুলীয় এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। উপকূলবর্তী মানুষ ও গবাদিপশু বাঁচাতে তিনি মাটির উঁচু ঢিবি বানাতে নির্দেশ দেন। উঁচু মাটির ঢিবিগুলোই ‘মুজিব কেল্লা’। সেই সময়ের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে নির্মিত এই মুজিব কেল্লাগুলোই বর্তমান সময়ের সাইক্লোন শেল্টারের আদি ধারণা। অবকাঠামোগত মুজিব কেল্লার পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলায় সামাজিক সামর্থ্য নির্মাণের ভিতটাও তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর দূরদর্শী দুর্যোগ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রাম (সিপিপি), যা বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম কমিউনিটি ভলান্টিয়ার মডেল হিসেবে পরিচিত। একই সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ বিনির্মাণে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন জাতির পিতা।
সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিটি দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ধাপে ধাপে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করেছে, এগিয়ে গেছে সাফল্যের দিকে। প্রায়ই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের বিস্ময়বোধক প্রশ্ন শুনতে হয়, ‘তোমরা নাকি চব্বিশ ঘণ্টার নোটিশে ৫-৭ মিলিয়ন মানুষকে ইভাকুয়েট করতে সক্ষম? হাউ পসিবল?’ বাংলাদেশ যখনই কোনো দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে, তা থেকে নতুন নতুন স্থানীয় ধারণা উদ্ভাবন এবং তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এখন আমরা গর্বের সঙ্গেই বলতে পারি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ একটি রোল মডেল।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারায় পরিবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশ। পরিবর্তন হচ্ছে দেশ, দেশের মানুষের দুর্যোগ-নাজুকতা, যোগ হচ্ছে নতুন নতুন বিপদ। বর্ধিষ্ণু বিপন্নতার কারণগুলোর মধ্যে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সবাই মোটামুটি ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হচ্ছে প্রতিদিন। অথচ কোনো ধরনের পুনঃপর্যালোচনা ছাড়াই ২০০৯ সালে প্রণীত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান বিবেচনায় রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জাতীয় পরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২০-২০২৫। ফলে অনেক সময়ই উন্নয়ন প্রকল্প এবং পরিকল্পনাগুলো প্রয়োজনানুগ হচ্ছে না; বরং কখনো কখনো উন্নয়নসৃষ্ট দুর্যোগ রূপে আবির্ভূত হচ্ছে।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের কারণেও বাংলাদেশে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন দুর্যোগ। অগ্নিকাণ্ড, ভবনধস, বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতা এবং বন্যা প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা কিংবা সম্প্রতি সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে আমাদের সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ, পরিকল্পনা কিংবা বিনিয়োগ নেই। যদিও শিল্পায়ন এবং নগরায়ণের এক বড় অংশীজন বা স্টেকহোল্ডার ব্যবসায়ী তথা করপোরেট সেক্টর, কিন্তু ব্যবসায়িক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তাদের সচেতনতা, আলোচনা কিংবা অংশগ্রহণ প্রায় নেই বললেই চলে। সাম্প্রতিক সময়ে বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান নিয়ে কিছু আলোচনা শোনা গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা তথ্যপ্রযুক্তির বিপত্তি-ব্যবস্থাপনাবিষয়ক। বড় দুর্যোগে ব্যবসা চালু রাখা, ক্ষয়ক্ষতি কমানো, বিনিয়োগ পুনরুদ্ধার করা ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তা ও চর্চা বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। যদিও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০২০ সালের এক গবেষণায় উত্তরদাতাদের ৩১ শতাংশ ব্যবসায়ী জলবায়ু প্রভাবিত অভিযোজনের ব্যর্থতাকে আগামী দশকে বাংলাদেশের প্রধান পাঁচটি ব্যবসাঝুঁকির অন্যতম বলে চিহ্নিত করেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের সাফল্য এবং খামতির বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। ১৯৭০ বা ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে যতসংখ্যক প্রাণহানি হয়েছিল, আমরা সাফল্যের সঙ্গে সেটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। অন্যদিকে, তিন বা পাঁচ দশক আগে উপকূলীয় অঞ্চলে যে পরিমাণ আর্থিক/ব্যবসায়িক বিনিয়োগ ছিল, বর্তমানে তা হাজার গুণ বেশি। সিডর, আইলা কিংবা পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলোতে প্রাণহানি কম হলেও রাতারাতি সর্বস্ব খুইয়েছেন বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দুর্যোগ শিল্প ও ব্যবসা তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আর্থিক এবং ব্যবসায়িক ঝুঁকি বিবেচনা করাটা এখন জরুরি।
দুর্যোগ-ঝুঁকি স্থানান্তর বা ডিস্ট্রিবিউশনের অন্যতম ইনস্ট্রুমেন্ট হলো ইনস্যুরেন্স বা বিমা। ১৯৯১ সালে জাতিসংঘের ৪৬তম অধিবেশনে জলবায়ু ঝুঁকি ইনস্যুরেন্সবিষয়ক সিদ্ধান্ত হলেও দু-একটি ছোটখাটো পরীক্ষামূলক কার্যক্রম ছাড়া বাংলাদেশে সিআরআই নিয়ে কোনো উদ্যোগই নেই। যদিও ২০১৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জলবায়ুভিত্তিক বিমা নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও বিমা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়জনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বিমাব্যবস্থা চালু করতে হবে।’
বাংলাদেশের বিমা কোম্পানি ও পেশাজীবীরা সিআরআই সম্পর্কে সামান্যই ধারণা রাখেন। ২০১৯ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ১৫ শতাংশ বিমা-পেশাজীবী সিআরআই সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন বা বোঝেন বলে দাবি করেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুর্যোগ এবং জলবায়ু ঝুঁকি বিমা নিয়ে কাজ করার সময় এখনই।
চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আরেকটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, যেখানে আমাদের সাফল্য এবং সীমাবদ্ধতার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। আমাদের সাফল্যের একটা বড় মাইলস্টোন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) এবং তার কর্মকাণ্ড। সুনামগঞ্জ-সিলেটে বন্যার বিষয়টি পাঁচ দিন আগে নিশ্চিত পূর্বাভাস দিয়েছিল এফএফডব্লিউসি। এটা আমাদের সাফল্য। সীমাবদ্ধতা হলো, কেউই এফএফডব্লিউসির পূর্বাভাস জেনে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। জনগণকে সচেতন করা হয়নি, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কোনো ধরনের তৎপরতা দেখায়নি। পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, সবাই নৌকা খুঁজতে শুরু করেছেন। অথচ এই কাজটা এফএফডব্লিউসির পূর্বাভাস পেয়েই করা যেত। গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে যে মানুষটি বিপদে পড়েছেন, আগে থেকে পূর্বাভাস তাঁকে জানালে তিনি আগেই চলে যেতেন হাসপাতালের কাছাকাছি নিরাপদ জায়গায়।
অন্যান্য অনেক খাতের মতোই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের প্রধানতম চ্যালেঞ্জ—বাস্তবায়নের নেতৃত্ব। নীতি, পরিকল্পনা ইত্যাদি বিবেচনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও বাস্তবায়নের সব পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের আধুনিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা বিষয়ে ধারণা ও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ব্যাপক।
গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তা একটা একাডেমিক এবং পেশাগত পারদর্শিতা হিসেবে উদীয়মান। আমাদের দেশে দশটি সরকারি এবং তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তরসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাক্রম চালু আছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট ও মাস্টার্স করা শিক্ষার্থীরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক পেশায় খুব একটা আসতে আগ্রহী হন না প্রধানত দুটি কারণে। প্রথমত, বাংলাদেশে দুর্যোগ এবং মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনাকে এখনো বিশেষজ্ঞ বা পেশাগত দক্ষতার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। ধরে নেওয়া হয়, কেউ কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ পেলেই দুর্যোগ এবং মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনার কাজ করতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, কর্মক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী কার্যক্রমের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির তেমন কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এসব শিক্ষাক্রম এবং সিলেবাস মানোত্তীর্ণ নয় বলে নানা মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেন। তাই সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে দক্ষ ও পেশাদার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা কর্মীর অভাব দেখা যায়।
আমাদের অভিজ্ঞতায় অনেক কিছুই টেস্ট-অ্যান্ড-ট্রাই করে ঠেকে ঠেকে অর্জন করছি। এসব অর্জন ধরে রেখে এগিয়ে যেতে নিয়মতান্ত্রিক ও ভবিষ্যৎমুখী চিন্তা এবং দক্ষতা ও পেশাদারত্বের বিকল্প নেই। সামনের দিনে অগ্রাধিকার তাই দক্ষ ও পেশাদারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার।
লেখক: দুর্যোগ ও মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ

একটা সময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দুর্যোগ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হতো অসহায়, অরক্ষিত মানুষের দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এখনো দুর্যোগের যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম অবশ্যম্ভাবী—তবে সেটা সাফল্যের, অর্জনের। স্বাধীনতার অর্ধশতকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে রোল মডেল হয়ে ওঠা বাংলাদেশের অন্যতম সাফল্য।
গত ২৩ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার বালিতে হয়ে গেল জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসবিষয়ক সপ্তম গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম অধিবেশন। ১৮৫টি দেশের প্রায় চার হাজার প্রতিনিধির এই সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহ ছিল সবার। বাংলাদেশের সেশনগুলোয় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি, জানার জন্য প্রশ্ন দেখে গর্বিত হয়েছি বাংলাদেশি হিসেবে।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার এই সাফল্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যায়নি। এটা ছিল দুর্ভোগ আর হারানোর বেদনায় বেড়ে ওঠা অসংখ্য মানুষের বেঁচে থাকার এবং দুর্যোগ জয়ের এক ঐকান্তিক অভিযান। তৃণমূল পর্যায়ের দুর্যোগ স্বেচ্ছাসেবী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের ভিশন, যেটা শুরু হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে।
স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শুরুটাই ছিল দুটো বড় দুর্যোগের মানবিক সহায়তা এবং পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়ে। প্রথমত, যুদ্ধবিধ্বস্ত গৃহহীন, জীবিকাহীন কোটি মানুষের পুনর্বাসন এবং দ্বিতীয়ত, ১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়বিধ্বস্ত উপকূলীয় জীবন-জীবিকা এবং ভবিষ্যৎ দুর্যোগ ঝুঁকি থেকে তাদের সুরক্ষা। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর বিভীষিকাময় রাতের পর কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা, পুনর্বাসন দূরে থাক, মাত্র চার মাসের মধ্যেই পাকিস্তানি হানাদাররা শুরু করে বর্বর জেনোসাইড আর ধ্বংসলীলা।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত উপকুলীয় এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। উপকূলবর্তী মানুষ ও গবাদিপশু বাঁচাতে তিনি মাটির উঁচু ঢিবি বানাতে নির্দেশ দেন। উঁচু মাটির ঢিবিগুলোই ‘মুজিব কেল্লা’। সেই সময়ের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে নির্মিত এই মুজিব কেল্লাগুলোই বর্তমান সময়ের সাইক্লোন শেল্টারের আদি ধারণা। অবকাঠামোগত মুজিব কেল্লার পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলায় সামাজিক সামর্থ্য নির্মাণের ভিতটাও তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর দূরদর্শী দুর্যোগ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রাম (সিপিপি), যা বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম কমিউনিটি ভলান্টিয়ার মডেল হিসেবে পরিচিত। একই সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ বিনির্মাণে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন জাতির পিতা।
সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিটি দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ধাপে ধাপে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করেছে, এগিয়ে গেছে সাফল্যের দিকে। প্রায়ই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের বিস্ময়বোধক প্রশ্ন শুনতে হয়, ‘তোমরা নাকি চব্বিশ ঘণ্টার নোটিশে ৫-৭ মিলিয়ন মানুষকে ইভাকুয়েট করতে সক্ষম? হাউ পসিবল?’ বাংলাদেশ যখনই কোনো দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে, তা থেকে নতুন নতুন স্থানীয় ধারণা উদ্ভাবন এবং তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এখন আমরা গর্বের সঙ্গেই বলতে পারি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ একটি রোল মডেল।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারায় পরিবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশ। পরিবর্তন হচ্ছে দেশ, দেশের মানুষের দুর্যোগ-নাজুকতা, যোগ হচ্ছে নতুন নতুন বিপদ। বর্ধিষ্ণু বিপন্নতার কারণগুলোর মধ্যে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সবাই মোটামুটি ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হচ্ছে প্রতিদিন। অথচ কোনো ধরনের পুনঃপর্যালোচনা ছাড়াই ২০০৯ সালে প্রণীত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান বিবেচনায় রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জাতীয় পরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২০-২০২৫। ফলে অনেক সময়ই উন্নয়ন প্রকল্প এবং পরিকল্পনাগুলো প্রয়োজনানুগ হচ্ছে না; বরং কখনো কখনো উন্নয়নসৃষ্ট দুর্যোগ রূপে আবির্ভূত হচ্ছে।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের কারণেও বাংলাদেশে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন দুর্যোগ। অগ্নিকাণ্ড, ভবনধস, বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতা এবং বন্যা প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা কিংবা সম্প্রতি সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে আমাদের সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ, পরিকল্পনা কিংবা বিনিয়োগ নেই। যদিও শিল্পায়ন এবং নগরায়ণের এক বড় অংশীজন বা স্টেকহোল্ডার ব্যবসায়ী তথা করপোরেট সেক্টর, কিন্তু ব্যবসায়িক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তাদের সচেতনতা, আলোচনা কিংবা অংশগ্রহণ প্রায় নেই বললেই চলে। সাম্প্রতিক সময়ে বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান নিয়ে কিছু আলোচনা শোনা গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা তথ্যপ্রযুক্তির বিপত্তি-ব্যবস্থাপনাবিষয়ক। বড় দুর্যোগে ব্যবসা চালু রাখা, ক্ষয়ক্ষতি কমানো, বিনিয়োগ পুনরুদ্ধার করা ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তা ও চর্চা বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। যদিও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০২০ সালের এক গবেষণায় উত্তরদাতাদের ৩১ শতাংশ ব্যবসায়ী জলবায়ু প্রভাবিত অভিযোজনের ব্যর্থতাকে আগামী দশকে বাংলাদেশের প্রধান পাঁচটি ব্যবসাঝুঁকির অন্যতম বলে চিহ্নিত করেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের সাফল্য এবং খামতির বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। ১৯৭০ বা ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে যতসংখ্যক প্রাণহানি হয়েছিল, আমরা সাফল্যের সঙ্গে সেটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। অন্যদিকে, তিন বা পাঁচ দশক আগে উপকূলীয় অঞ্চলে যে পরিমাণ আর্থিক/ব্যবসায়িক বিনিয়োগ ছিল, বর্তমানে তা হাজার গুণ বেশি। সিডর, আইলা কিংবা পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলোতে প্রাণহানি কম হলেও রাতারাতি সর্বস্ব খুইয়েছেন বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দুর্যোগ শিল্প ও ব্যবসা তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আর্থিক এবং ব্যবসায়িক ঝুঁকি বিবেচনা করাটা এখন জরুরি।
দুর্যোগ-ঝুঁকি স্থানান্তর বা ডিস্ট্রিবিউশনের অন্যতম ইনস্ট্রুমেন্ট হলো ইনস্যুরেন্স বা বিমা। ১৯৯১ সালে জাতিসংঘের ৪৬তম অধিবেশনে জলবায়ু ঝুঁকি ইনস্যুরেন্সবিষয়ক সিদ্ধান্ত হলেও দু-একটি ছোটখাটো পরীক্ষামূলক কার্যক্রম ছাড়া বাংলাদেশে সিআরআই নিয়ে কোনো উদ্যোগই নেই। যদিও ২০১৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জলবায়ুভিত্তিক বিমা নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও বিমা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়জনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বিমাব্যবস্থা চালু করতে হবে।’
বাংলাদেশের বিমা কোম্পানি ও পেশাজীবীরা সিআরআই সম্পর্কে সামান্যই ধারণা রাখেন। ২০১৯ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ১৫ শতাংশ বিমা-পেশাজীবী সিআরআই সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন বা বোঝেন বলে দাবি করেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুর্যোগ এবং জলবায়ু ঝুঁকি বিমা নিয়ে কাজ করার সময় এখনই।
চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আরেকটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, যেখানে আমাদের সাফল্য এবং সীমাবদ্ধতার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। আমাদের সাফল্যের একটা বড় মাইলস্টোন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) এবং তার কর্মকাণ্ড। সুনামগঞ্জ-সিলেটে বন্যার বিষয়টি পাঁচ দিন আগে নিশ্চিত পূর্বাভাস দিয়েছিল এফএফডব্লিউসি। এটা আমাদের সাফল্য। সীমাবদ্ধতা হলো, কেউই এফএফডব্লিউসির পূর্বাভাস জেনে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। জনগণকে সচেতন করা হয়নি, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কোনো ধরনের তৎপরতা দেখায়নি। পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, সবাই নৌকা খুঁজতে শুরু করেছেন। অথচ এই কাজটা এফএফডব্লিউসির পূর্বাভাস পেয়েই করা যেত। গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে যে মানুষটি বিপদে পড়েছেন, আগে থেকে পূর্বাভাস তাঁকে জানালে তিনি আগেই চলে যেতেন হাসপাতালের কাছাকাছি নিরাপদ জায়গায়।
অন্যান্য অনেক খাতের মতোই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের প্রধানতম চ্যালেঞ্জ—বাস্তবায়নের নেতৃত্ব। নীতি, পরিকল্পনা ইত্যাদি বিবেচনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও বাস্তবায়নের সব পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের আধুনিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা বিষয়ে ধারণা ও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ব্যাপক।
গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তা একটা একাডেমিক এবং পেশাগত পারদর্শিতা হিসেবে উদীয়মান। আমাদের দেশে দশটি সরকারি এবং তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তরসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাক্রম চালু আছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট ও মাস্টার্স করা শিক্ষার্থীরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক পেশায় খুব একটা আসতে আগ্রহী হন না প্রধানত দুটি কারণে। প্রথমত, বাংলাদেশে দুর্যোগ এবং মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনাকে এখনো বিশেষজ্ঞ বা পেশাগত দক্ষতার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। ধরে নেওয়া হয়, কেউ কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ পেলেই দুর্যোগ এবং মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনার কাজ করতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, কর্মক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী কার্যক্রমের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির তেমন কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এসব শিক্ষাক্রম এবং সিলেবাস মানোত্তীর্ণ নয় বলে নানা মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেন। তাই সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে দক্ষ ও পেশাদার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক সহায়তা কর্মীর অভাব দেখা যায়।
আমাদের অভিজ্ঞতায় অনেক কিছুই টেস্ট-অ্যান্ড-ট্রাই করে ঠেকে ঠেকে অর্জন করছি। এসব অর্জন ধরে রেখে এগিয়ে যেতে নিয়মতান্ত্রিক ও ভবিষ্যৎমুখী চিন্তা এবং দক্ষতা ও পেশাদারত্বের বিকল্প নেই। সামনের দিনে অগ্রাধিকার তাই দক্ষ ও পেশাদারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার।
লেখক: দুর্যোগ ও মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

একটা সময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দুর্যোগ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হতো অসহায়, অরক্ষিত মানুষের দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এখনো দুর্যোগের যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম অবশ্যম্ভাবী...
২৯ জুন ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

একটা সময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দুর্যোগ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হতো অসহায়, অরক্ষিত মানুষের দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এখনো দুর্যোগের যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম অবশ্যম্ভাবী...
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

একটা সময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দুর্যোগ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হতো অসহায়, অরক্ষিত মানুষের দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এখনো দুর্যোগের যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম অবশ্যম্ভাবী...
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

একটা সময় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, দুর্যোগ নিয়ে যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হতো অসহায়, অরক্ষিত মানুষের দুর্ভোগের প্রতিচ্ছবি হিসেবে। এখনো দুর্যোগের যেকোনো আলোচনায় বাংলাদেশের নাম অবশ্যম্ভাবী...
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫