Ajker Patrika

স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ০৬
স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই

আবার বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কাই করছেন না বরিশালের সাধারণ মানুষ। এ অঞ্চলে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নৌপথে বিধিনিষেধ চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা-বরিশাল রুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলোতে লোক দেখানো স্বাস্থ্যবিধি লক্ষ্য করা গেছে। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই। এতে আতঙ্কিত নৌযানের স্টাফরাও।

সরকারের জারি করার ১১ দফা নির্দেশনার ছিটেফোঁটাও নেই নৌপথে। যদিও প্রতিদিনই বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রশাসন মাঠে না নামলে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলবে। কিন্তু বরিশাল নগর এবং নৌপথে প্রশাসনের পদক্ষেপে হতাশ সংশ্লিষ্টরা।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহিন খান জানান, গতকাল রোববার বরিশাল বিভাগে ২৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০ জনের। আক্রান্তের হার ৭.৭৫ শতাংশ। এর আগের দিন শনিবার ৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮ জনের। আক্রান্তের হার ৯ শতাংশ। অথচ জানুয়ারির শুরুতে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১-২ জন। তিনি বলেন, করোনা বেড়েই চলছে। তাঁরা সরকারের ১১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। এখন প্রশাসন মাঠে না নামলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যাবে।

গতকাল রোববার বিকেল ৩টায় বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে গ্রীন লাইন-৩। নাদিয়া আফরিন নামে লঞ্চের এক যাত্রী জানান, গ্রীন লাইনের ভেতরে ও বাইরে মাস্কবিহীন অসচেতন মানুষের ভিড়। পন্টুনে কোনো স্বাস্থ্য সচেতনতার নেই। যে যার মতো চলাফেরা করছে করছেন। গ্রীন লাইন-৩ এর স্টাফ কামাল হোসেন বলেন স্বাস্থ্যবাধির ব্যাপারে তাঁর কিছু করার নেই। এ ব্যাপারে তিনি জানেনও না।

গতকাল রোববার বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ৭টি লঞ্চ ছেড়েছে। এগুলো হচ্ছে এমভি সুন্দরবন-১০, মানামী, অ্যাডভেঞ্চার-১, পারাবাত-১৮,১১, কীর্তনখোলা-১০, সুরভী-৯। যাত্রীরা জানিয়েছেন, লঞ্চের ডেকের যাত্রী অধিকাংশেই মাস্ক পড়েন না। সামাজিক দূরত্ব নেই।

সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, মাস্কসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার যাত্রী খুবই কম। তাঁরা যদিও লঞ্চে হ্যান্ডওয়াশ ও মাস্ক পড়াতে তাগিদ দিচ্ছেন। নিজেরাও আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কায় আছেন। তিনি অবশ্য দাবি করেছেন, এখন যাত্রী খুবই কম হয়। ডেকে ৪০০ জনও হয় না।

এমভি মানামীর যাত্রী মেহেদী হাসান জানান, লঞ্চে দৃশ্যত স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে নামমাত্র। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এবং বিআইডব্লিউটিএর এ বিষয়ে তদারকি লোক দেখানো। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেহাল অবস্থা ডেকে।

এ প্রসঙ্গে লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, তাঁদের যাত্রী সংখ্যা কম হচ্ছে। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে স্টাফদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

লঞ্চে স্বাস্থ্যবাধি মানানোর ব্যাপারে বরিশাল নৌবন্দর কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সরকারি নির্দেশনার কোনো অফিস আদেশ তাঁরা এখনো পাননি। অবশ্য নৌযানে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে তাদের টিম কাজ করছে।

এদিকে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে সরকারের জারি করা ১১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন শনিবার নগরে ৩ জনকে জরিমানা করেছে।

করোনাকালীন স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত সংগঠন মৈত্রী ভলান্টিয়ার্সের বরিশালের সমন্বয়ক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, প্রশাসন তৎপর না নামলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হবে। নগরের হাট-বাজার, রাস্তায়, লঞ্চে যেভাবে মানুষের মুভমেন্ট তাতে ওমিক্রন ঠেকানো দুষ্কর। এ অবস্থায় তাঁরা সংগঠনের পক্ষ থেকে রোববার নগরে মাস্ক বিতরণ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

একটি খনি ঘিরে সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান, কিন্তু চাবিকাঠি চীনের কাছে

আমরা দখল করি লঞ্চঘাট-বাসস্ট্যান্ড, জামায়াত করে বিশ্ববিদ্যালয়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত