Ajker Patrika

বিপিএলে প্রশংসিত মিরপুরের উইকেট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ১২: ১৫
বিপিএলে প্রশংসিত মিরপুরের উইকেট

শুরু থেকেই অব্যবস্থাপনা, বিশৃঙ্খলায় বারবার সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। মাঠের খেলায়ও বিতর্কের আগুন ছড়াচ্ছে। সাকিব আল হাসান তেড়ে যাচ্ছেন আম্পায়ারের দিকে। প্রশ্নবিদ্ধ আম্পায়ারিংও উসকে দিচ্ছে খেলোয়াড়দের তর্ক-বিতর্কে জড়াতে।

নেতিবাচক খবরের ভিড়ে একটা ইতিবাচক খবর কিছুটা স্বস্তি দেবে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। যে মিরপুরের উইকেট সব সময়ই হয় সমালোচিত, এবার বিপিএলে সেটিই বেশি প্রশংসা কুড়াচ্ছে। অনেকেই মিরপুরের উইকেটকে এবার ‘ভালো’ বলেই সনদ দিচ্ছেন।

অবশ্য এবার মিরপুরে বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৮৯ রানে আটকে দিয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। চট্টগ্রামের ইনিংস শেষ না হতেই কাঠগড়ায় উঠে গেল মিরপুরের উইকেট। ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের মতো বাস্তবতা ছিল। কিন্তু ম্যাচের পর দুই দলের খেলোয়াড়েরা যা বলেছিলেন, তাতে উইকেটকে খুব বেশি দায়ী করার সুযোগ ছিল না। সিলেটের রেজাউর রহমান রাজা বলছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়নি উইকেট বোলিংসহায়ক ছিল। আমাদের বোলাররা ভালো জায়গায় বোলিং করেছে।’ সিলেটের ব্যাটিং ইনিংসে অবশ্য উইকেটের আসল চিত্র দেখা যায়। ২ উইকেটে হারিয়ে ১২.৩ ওভারে জিতে যায় সিলেট। ম্যাচের পর চট্টগ্রামের মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী বলেছেন, ‘উইকেট অতটা বাজে ছিল না, আমাদেরই ব্যর্থতা। আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি।’

এর পরের অধিকাংশ ইনিংসই ১৫০ পেরিয়েছে। প্রথম দুই-তিন দিন ঘন কুয়াশার প্রভাব ছিল কিছুটা। তবু রান উঠছে অনায়াসে। এই বিপিএলে ৮ ম্যাচের ১৬ ইনিংসের গড় ১৫২। অথচ গত টুর্নামেন্টে ঢাকার প্রথম পর্বে ৮ ম্যাচের ইনিংস গড় ছিল ১৩৫.৮১। গতবারের চেয়ে এবার গড়ে ইনিংসপ্রতি বেড়েছে ১৭ রান। আবহাওয়া ভালো থাকলে পরের পর্বে দেখা যেতে পারে আরও রানবন্যা। মিরপুরে গত বছর ২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওই সিরিজে ইনিংস গড় ছিল ১২১.২৫।

গত টুর্নামেন্টে সব মিলিয়ে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ৩৬ ইনিংসের গড় ছিল ১৪৭.১১। সে তুলনায় এবার শুরুতেই রানের ফোয়ারা ছুটছে মিরপুরে। এরই মধ্যে ২০১ রানের ইনিংসও দেখা গেছে একটি। ঢাকার বিপক্ষে সিলেট করেছিল এই রান। মিরপুরে ১৭৮ কিংবা ১৯৪ রানও নিরাপদ নয়, অনায়াসে তাড়া করে ফেলছে পরের দল। খুলনা-চট্টগ্রাম ম্যাচে তো জোড়া সেঞ্চুরিও দেখা গেল।

গত পরশু সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা প্রশংসায় ভাসালেন মিরপুরের উইকেটকে, ‘উইকেট তো চট্টগ্রামে গেলেই শুধু ভালো পাওয়া যায়। এ রকম উইকেট তো পাওয়া যায় না (মিরপুরে)। গত তিন দিন যে উইকেট আমরা দেখলাম, দারুণ উইকেট। এ রকম উইকেট হলে কিছু ক্রিকেটার আমরা তৈরি করতে পারব। এত সমালোচনার মধ্যেও মাঠের খেলা ঠিক আছে। উইকেট ভালো।’

গতকাল ইয়ামাহার অনুষ্ঠানে ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও বলেছেন প্রায় একই কথা, ‘এ বছর (মিরপুরের) পিচটা অনেক ভালো। খুবই অভাবনীয় যে এত ভালো পিচ পাই।

কিউরেটরকে কৃতিত্ব দিতেই হয়, সে কারণে এত বেশি রান হচ্ছে। স্থানীয় ব্যাটাররা ভালো রান করছে, যেটা আমাদের জন্য খুবই ভালো দিক।’

রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩৪ রানে হেরেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। এমন উইকেটে রংপুরের দেওয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্য খুব কঠিন হওয়ার কথা নয়। হারের ব্যাখ্যায় কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেছিলেন, ‘উইকেট (মিরপুরের) খুবই ভালো ছিল। দিনের প্রথম ম্যাচেও উইকেট ভালো ছিল। আমি মনে করি, এই উইকেটে আমাদের ১৭৬ তাড়া করা উচিত ছিল।’

কাল থেকে শুরু চট্টগ্রামে রানবন্যা দেখা গেলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বরং সেটিই স্বাভাবিক। কিন্তু এবার মিরপুরের উইকেট একটু চমকেই দিয়েছে বটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত