Ajker Patrika

আলু ও পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ

আজিজুর রহমান, চৌগাছা (যশোর)
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৫০
আলু ও পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ

যশোরের চৌগাছায় আলু ও পেঁয়াজসহ প্রায় সব সবজির দাম বেড়েছে। ভোক্তারা বলছেন, ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে আলু, মরিচ ও পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। পাশাপাশি সব সবজির দাম ৫-১০ টাকা বেড়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে।

হঠাৎ করে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের ভোক্তারা। বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শিগগির সবকিছুর বাজারমূল্য সাধ্যের মধ্যে আনতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাঁরা।

গতকাল শনিবার চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠের পাইকারি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা, মরিচ ৪০-৫০, আলু ১২-১৩ এবং উচ্ছে ৮৫-১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ফুলকপি ৩৫-৪০ টাকা, শিম ১৩-১৫, শসা ৪০-৪৫, টমেটো ২৫-৩০, মেটে আলু ৩০-৩৫, কাঁচকলা ২০-২৫, বেগুন ৩৫-৪০, রসুন ১০-১৫, পুঁইশাকের ফুল ৩০-৩৫, আকারভেদে লাউ প্রতিটি ২৫-৩০, পেঁপে ১০-১২, বাঁধাকপি আকারভেদে ১৫-২০, মানকচু ২০-২৫ বিক্রি হচ্ছে, প্রতি আঁটি পালংশাক ৮-১০, লাল শাক ৮-১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

৬ ফেব্রুয়ারি এই পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৫-১৬ টাকা, মরিচ ৩০-৩৫, আলু ৭-৮ এবং উচ্ছে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তা ছাড়া অধিকাংশ সবজির দাম ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল।

এদিকে কাঁচা বাজারের ভেতরের খুচরা বাজার এবং অন্যান্য খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫-৬৫ টাকা, মরিচ ৬৫-৭৫, আলু ৩০-৩৫ ও উচ্ছে ১৩০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারগুলোতে অধিকাংশ সবজিরই দাম পাইকারি বাজারের থেকে দ্বিগুণ-আড়াই গুন, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষ তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা, শিম ২৫-৩০, শসা ৬০-৬৫ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, মেটে আলু ৫০-৬০ টাকা, কাঁচকলা ৩০-৩৫ টাকা, বেগুন ৪৫-৬৫ টাকা, পেঁপে ২০-৩০ টাকা, পুঁইশাকের ফুল (মেচড়ি) ৪৫-৬৫ টাকা, গাজর ২৫-৩০ টাকা, রসুন ২২-৩০ টাকা, আকারভেদে বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা, লাউ ৪০-৫৫ টাকা, মানকচু ৩৫-৫০ টাকা, প্রতি আঁটি লাল শাক ১৫-২০ টাকা, পালংশাক ১৫-২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারের ক্রেতা একটি বেসরকারি সংস্থার চাকরিজীবী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এই সময়ে শিম কেউ খেতেই চান না। সেই শিম বাজারে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। রোজা শুরুর আগেই যেভাবে সবজি, মরিচ ও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে তাতে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের সংসার চালানো দায় হয়ে পড়ছে। তেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সবকিছুর দাম বাড়ছে।

চৌগাছা পাইকারি কাঁচা বাজারের আড়তদার মুকুল হোসেন বলেন, ‘বাজারে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম। এ জন্য সবকিছুর দাম একটু বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম দিকের অতি বর্ষণে সবজির যে ক্ষতি হয়েছে, তার প্রভাব পড়ছে বাজারে। প্রতি দিনই পেঁয়াজ, মরিচ, আলুসহ অন্যান্য সবজির দাম বাড়ছে। শীতকালীন সবজি বাজারে ওঠা শুরু করলে দাম কমবে বলে আশা করছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে অসময়ের বৃষ্টিতে উপজেলার বিপুল পরিমাণ জমির সবজি নষ্ট হয়ে যায়। বাজারে এর প্রভাব কিছুটা পড়েছে। কৃষকেরা আবার সবজি চাষ করেছেন, যা শিগগিরই বাজারে এসে যাবে। নতুন সবজি উঠতে শুরু করলেই দাম কমে যাবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে মূল্য তালিকা টাঙানোর জন্য ব্যবসায়ীদের বলছি। ভোক্তারা যাতে না ঠকেন সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি, রমজানে সবজিসহ কোনো দ্রব্যেরই দাম বাড়বে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত