শরিফুল হাসান, কলামিস্ট

চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশে এক সরকার ক্ষমতা শেষ করে আরেক মেয়াদ আসে। চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশ তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক শেষ করা যায়। কিন্তু চার বছরেও একটা বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয় না বাংলাদেশে!
এই যেমন চার বছরেও ৪০ তম বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। আরেক বিসিএস ৪১-এর প্রক্রিয়াও তিন বছর ধরে ঝুলে আছে। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হতেই প্রায় তিন বছর লেগে যাচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়। কিন্তু নয় মাসেও ফল প্রকাশ করতে পারেনি পিএসসি।
পিএসসি বলছে, তিন শতাধিক পরীক্ষকের অবহেলার জন্য ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই দায় কেন পরীক্ষার্থীরা নেবেন? এই যে তিন বছরেও লিখিত পরীক্ষার ফল হলো না, তাহলে কবে মৌখিক হবে আর কবে চূড়ান্ত ফল?
৪৩ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে জুলাই মাসে। ৪৪ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা এখনো শুরু হয়নি। এর মধ্যেই আবার ৪৫ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কথা। সব মিলিয়ে বিসিএসজটে পড়েছে পিএসসি। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো প্রার্থী। এর মধ্যে আবার বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগ-প্রক্রিয়া নিয়েও জটিলতা শুরু হয়েছে। ফলে সেখানেও দুশ্চিন্তায় আছেন প্রার্থীরা।
২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল ৪০ তম বিসিএসের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্মকমিশনে (পিএসসি) চাহিদাপত্র পাঠিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। আবেদন করেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। প্রায় চার বছর পর এ বছরের ৩০ মার্চ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে পিএসসি। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তাঁদের গেজেট হয়নি। ফলে কবে তাঁরা চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন, জানেন না।
অন্যদিকে ৪০ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশ পাননি এমন আট হাজারেরও বেশি প্রার্থী পড়েছেন নতুন দুশ্চিন্তায়। এত দিন একটি বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর নন-ক্যাডারের আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেখান থেকে নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু পিএসসি এখন ৪০ বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ শুরুর আগেই অন্যান্য বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদ সংরক্ষণ করতে চাইছে—এমন আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রার্থীরা।
সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা দুটো বাড়ার পাশাপাশি নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকে বলে চাকরিপ্রার্থীদের বিসিএস নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। একেকটা বিসিএস পরীক্ষায় এখন চার লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু একটা বিসিএসে সাধারণভাবে গড়ে দুই হাজার ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও বিপুলসংখ্যক প্রার্থী চাকরি থেকে বঞ্চিত হতেন। এই প্রার্থীদের প্রথম শ্রেণির অন্যান্য পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্যই ২০১০ সালে নন-ক্যাডার নিয়োগে বিশেষ বিধিমালা করার উদ্যোগ নেন সেই সময়ের চেয়ারম্যান প্রয়াত সা’দত হুসাইন।
রিপোর্টার হিসেবে আমি তখন পিএসসির নানা বিষয়ে সংবাদ করি। নন-ক্যাডারের এই নিয়োগ বিধিমালা করার কারণ হিসেবে সা’দত হুসাইন আমাকে বলেছিলেন, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকেই যদি প্রথম শ্রেণির বিভিন্ন পদে সুপারিশ করা যায়, তাহলে নিয়োগে দুর্নীতি ও সময় কমবে। এ ছাড়া একেকটি বিসিএসে আট থেকে দশ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হলেও বেশির ভাগ চাকরি পেতেন না। নন-ক্যাডারে নিয়োগ দিতে পারলে চাকরি পাওয়ার সংখ্যা বাড়বে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরও মেধাবী কর্মকর্তা পাবে।
২০১০ সালে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা করার পর ২৮ তম বিসিএস থেকে ২৯৯ জন, ২৯ তম বিসিএস থেকে ১৯৩ জন, ৩০ তম বিসিএস থেকে ৩৬৩ জন, ৩১ তম বিসিএস থেকে ১২০ এবং ৩২ তম বিসিএস থেকে মাত্র ৬৬ জন নন-ক্যাডারের প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ পান।
নন-ক্যাডারে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি ছিল ইতিবাচক। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো খুব বেশিসংখ্যক চাহিদা না দেওয়ার কারণে দেখা গেল, ২৮ থেকে ৩৩ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ এমন প্রায় ১৯ হাজার প্রার্থী কোনো চাকরি পাননি। দীর্ঘ একটা প্রক্রিয়া ও মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়েও পদ না থাকার কারণে চাকরি না পাওয়াটা প্রার্থীদের জন্য ছিল হতাশার। সমস্যার কিছুটা সমাধানে ২০১৪ সালে বিসিএসের মাধ্যমে দ্বিতীয় শ্রেণির পদেও নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সময় পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ইকরাম আহমেদ।
দীর্ঘ দুই দশকের সাংবাদিকতা এবং এই সময়ে পিএসসি নিয়ে কাজ করার সুবাদে বলতে পারি, গত কয়েক বছরে বিসিএসের অনিয়ম অনেকটা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা (বর্তমানে ৯ম থেকে ১২ গ্রেড) নিয়োগের জন্য নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা তৈরি ও সংশোধন ইতিবাচক কাজ ছিল। প্রত্যাশা ছিল, এর ফলে মন্ত্রণালয়গুলো শূন্য পদে মেধাবী লোক নিয়োগে আগ্রহী হবে এবং পিএসসিতে যথেষ্ট চাহিদাপত্র পাঠাবে। কিন্তু চাহিদাপত্র বেশি না আসায় খুব বেশিসংখ্যক প্রার্থী চাকরি পাননি।
২০১৬ সালে পিএসসির চেয়ারম্যান হন মোহাম্মদ সাদিক। তাঁকে বলেছিলাম পিএসসির ভেতরে-বাইরে অনেকেই চান না বিসিএস উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নন-ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হোক। এতে নিয়োগ-বাণিজ্যসহ অনেক কিছু কমে গেছে। বেশিসংখ্যক প্রার্থী নিয়োগ দিতে পারলে রাষ্ট্রই উপকৃত হবে। প্রার্থীবান্ধব এই চেয়ারম্যান সব সময় চাইতেন বেশি বেশি ছেলেমেয়ে চাকরি পাক। মূলত তাঁর উদ্যোগেই ৩৪ তম বিসিএস থেকে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী নন-ক্যাডারে চাকরি পেতে থাকেন।
৩৪ বিসিএসে নন-ক্যাডার থেকে ২ হাজার ২৫৭ জন নিয়োগ পান, যেটি অতীতে হয়নি। এরপর ৩৫ বিসিএস থেকে ২ হাজার, ৩৬ বিসিএস থেকে ১ হাজার ২৮৭ জন, ৩৭ বিসিএস থেকে ১ হাজার ৭৪৩ জন এবং ৩৮ তম বিসিএস থেকে ২ হাজার ৭৫১ জন নন-ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন, যা এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে পিএসসিতে ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগের জন্য প্রার্থীরা অপেক্ষা করছেন।
দীর্ঘ চার বছরের প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের মার্চে ৪০ তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৮ হাজার ১৬৬ প্রার্থী নন-ক্যাডারের জন্য অপেক্ষায় আছেন। গত ২ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত তাঁরা নন-ক্যাডারের জন্য আবেদন করেছেন।
সুপারিশের অপেক্ষায় থাকা এই প্রার্থীরা বলছেন, নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রতিটি বিসিএসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেই অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ দেওয়ার আগেই ৪১,৪৩ ও ৪৪ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির তারিখ অনুযায়ী শূন্য পদ আলাদা করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এমনকি বিজ্ঞপ্তি না হলেও ৪৫ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদের চাহিদা চেয়েছে।
প্রার্থীরা বলছেন, এই চিঠির ফলে যেদিন যেই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি হয়েছে, সেই তারিখ পর্যন্ত যত আবেদন আসবে শুধু ততসংখ্যক পদেই ওই বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। যেহেতু ৪০ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেওয়া হয়েছে, কাজেই ওই তারিখের মধ্যে যেই পদের চাহিদা শুধু সেই পদই ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের জন্য থাকবে।
এই প্রার্থীরা বলছেন, ২০১৮ সালের পর যেহেতু ৩৭ ও ৩৮ তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়ে গেছে, কাজেই তাঁদের জন্য খুব বেশি পদ থাকবে না। পিএসসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ৪০ তম এবং পরবর্তী ৪১,৪৩ ও ৪৪ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রার্থীদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। এই চার বিসিএসের ৩০-৩৫ হাজার প্রার্থীকে তখন শূন্য হাতে ফিরতে হবে।
একটি বিষয় না বললেই নয়। বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার ফলে দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে। পিএসসির পরীক্ষা জটিলতাও কমেছে। কাজেই ৯ম থেকে ১২ তম গ্রেড পর্যন্ত যত বেশিসংখ্যক পদ বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া উচিত।
পাশাপাশি বিসিএসের নিয়োগের দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনা খুব জরুরি। একটা বিসিএসের নিয়োগে চার বছর লেগে যাওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। এই যে পিএসসির হাতে ৪১,৪৩ ও ৪৪ তিনটি বিসিএস ঝুলছে, এই দীর্ঘসূত্রতা কমবে কীভাবে?
পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন কিন্তু দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে বিসিএস শেষ করতে চান তিনি। এ জন্য রোডম্যাপ করার কথাও বলেছিলেন। ৪৩ বিসিএস থেকেই তিনি এই পরিকল্পনা শুরুর কথা বলেছিলেন। বাস্তবে কিন্তু এর ছাপ দেখা যাচ্ছে না। করোনা মহামারি একটা কারণ, কিন্তু এখানে পিএসসির অদক্ষতাও আছে। ফলাফল দীর্ঘসূত্রতা।
সামাজিক নিরাপত্তা, ভালো বেতনকাঠামো ও এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে স্বচ্ছ নিয়োগ-প্রক্রিয়ার কারণে সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে লাখো তরুণের। ফলে দেখা যাচ্ছে একেকটি বিসিএসে এখন চার লাখ থেকে পাঁচ লাখ তরুণ অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু পরীক্ষা, চূড়ান্ত ফল, পুলিশ যাচাই, যোগদান—সব মিলিয়ে নিয়োগে লেগে যাচ্ছে তিন থেকে চার বছর। এই দীর্ঘসূত্রতার কারণে লেখাপড়া শেষে পরীক্ষা ও চাকরি পেতেই তারুণ্যের গুরুত্বপূর্ণ সময় চলে যাচ্ছে জীবন থেকে।
উন্নত দেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশেই সরকারি নিয়োগে এত সময় লাগে না। প্রতিবেশী ভারতের কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা নেয় ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন। প্রতিবছরের জুনে তারা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেয় এবং আগস্টে ফল প্রকাশ করে। এরপর অক্টোবরে লিখিত পরীক্ষা ও জানুয়ারিতে ফল প্রকাশ হয়। উত্তীর্ণদের মার্চে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে মে মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়। যাঁরা চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন, সেপ্টেম্বর থেকেই তাঁদের চাকরির মূল প্রশিক্ষণ শুরু হয়। অথচ বাংলাদেশে একেকটা বিসিএসের প্রক্রিয়া শেষ করতেই চার বছর লেগে যায়। এই দীর্ঘসূত্রতা কমানো জরুরি।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
বিসিএস সম্পর্কিত আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন

চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশে এক সরকার ক্ষমতা শেষ করে আরেক মেয়াদ আসে। চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশ তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক শেষ করা যায়। কিন্তু চার বছরেও একটা বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয় না বাংলাদেশে!
এই যেমন চার বছরেও ৪০ তম বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। আরেক বিসিএস ৪১-এর প্রক্রিয়াও তিন বছর ধরে ঝুলে আছে। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হতেই প্রায় তিন বছর লেগে যাচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়। কিন্তু নয় মাসেও ফল প্রকাশ করতে পারেনি পিএসসি।
পিএসসি বলছে, তিন শতাধিক পরীক্ষকের অবহেলার জন্য ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই দায় কেন পরীক্ষার্থীরা নেবেন? এই যে তিন বছরেও লিখিত পরীক্ষার ফল হলো না, তাহলে কবে মৌখিক হবে আর কবে চূড়ান্ত ফল?
৪৩ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে জুলাই মাসে। ৪৪ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা এখনো শুরু হয়নি। এর মধ্যেই আবার ৪৫ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কথা। সব মিলিয়ে বিসিএসজটে পড়েছে পিএসসি। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো প্রার্থী। এর মধ্যে আবার বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগ-প্রক্রিয়া নিয়েও জটিলতা শুরু হয়েছে। ফলে সেখানেও দুশ্চিন্তায় আছেন প্রার্থীরা।
২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল ৪০ তম বিসিএসের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্মকমিশনে (পিএসসি) চাহিদাপত্র পাঠিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। আবেদন করেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। প্রায় চার বছর পর এ বছরের ৩০ মার্চ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে পিএসসি। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তাঁদের গেজেট হয়নি। ফলে কবে তাঁরা চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন, জানেন না।
অন্যদিকে ৪০ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশ পাননি এমন আট হাজারেরও বেশি প্রার্থী পড়েছেন নতুন দুশ্চিন্তায়। এত দিন একটি বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর নন-ক্যাডারের আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেখান থেকে নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু পিএসসি এখন ৪০ বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ শুরুর আগেই অন্যান্য বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদ সংরক্ষণ করতে চাইছে—এমন আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রার্থীরা।
সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা দুটো বাড়ার পাশাপাশি নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকে বলে চাকরিপ্রার্থীদের বিসিএস নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। একেকটা বিসিএস পরীক্ষায় এখন চার লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু একটা বিসিএসে সাধারণভাবে গড়ে দুই হাজার ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও বিপুলসংখ্যক প্রার্থী চাকরি থেকে বঞ্চিত হতেন। এই প্রার্থীদের প্রথম শ্রেণির অন্যান্য পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্যই ২০১০ সালে নন-ক্যাডার নিয়োগে বিশেষ বিধিমালা করার উদ্যোগ নেন সেই সময়ের চেয়ারম্যান প্রয়াত সা’দত হুসাইন।
রিপোর্টার হিসেবে আমি তখন পিএসসির নানা বিষয়ে সংবাদ করি। নন-ক্যাডারের এই নিয়োগ বিধিমালা করার কারণ হিসেবে সা’দত হুসাইন আমাকে বলেছিলেন, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকেই যদি প্রথম শ্রেণির বিভিন্ন পদে সুপারিশ করা যায়, তাহলে নিয়োগে দুর্নীতি ও সময় কমবে। এ ছাড়া একেকটি বিসিএসে আট থেকে দশ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হলেও বেশির ভাগ চাকরি পেতেন না। নন-ক্যাডারে নিয়োগ দিতে পারলে চাকরি পাওয়ার সংখ্যা বাড়বে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরও মেধাবী কর্মকর্তা পাবে।
২০১০ সালে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা করার পর ২৮ তম বিসিএস থেকে ২৯৯ জন, ২৯ তম বিসিএস থেকে ১৯৩ জন, ৩০ তম বিসিএস থেকে ৩৬৩ জন, ৩১ তম বিসিএস থেকে ১২০ এবং ৩২ তম বিসিএস থেকে মাত্র ৬৬ জন নন-ক্যাডারের প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ পান।
নন-ক্যাডারে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি ছিল ইতিবাচক। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো খুব বেশিসংখ্যক চাহিদা না দেওয়ার কারণে দেখা গেল, ২৮ থেকে ৩৩ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ এমন প্রায় ১৯ হাজার প্রার্থী কোনো চাকরি পাননি। দীর্ঘ একটা প্রক্রিয়া ও মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়েও পদ না থাকার কারণে চাকরি না পাওয়াটা প্রার্থীদের জন্য ছিল হতাশার। সমস্যার কিছুটা সমাধানে ২০১৪ সালে বিসিএসের মাধ্যমে দ্বিতীয় শ্রেণির পদেও নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সময় পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ইকরাম আহমেদ।
দীর্ঘ দুই দশকের সাংবাদিকতা এবং এই সময়ে পিএসসি নিয়ে কাজ করার সুবাদে বলতে পারি, গত কয়েক বছরে বিসিএসের অনিয়ম অনেকটা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা (বর্তমানে ৯ম থেকে ১২ গ্রেড) নিয়োগের জন্য নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা তৈরি ও সংশোধন ইতিবাচক কাজ ছিল। প্রত্যাশা ছিল, এর ফলে মন্ত্রণালয়গুলো শূন্য পদে মেধাবী লোক নিয়োগে আগ্রহী হবে এবং পিএসসিতে যথেষ্ট চাহিদাপত্র পাঠাবে। কিন্তু চাহিদাপত্র বেশি না আসায় খুব বেশিসংখ্যক প্রার্থী চাকরি পাননি।
২০১৬ সালে পিএসসির চেয়ারম্যান হন মোহাম্মদ সাদিক। তাঁকে বলেছিলাম পিএসসির ভেতরে-বাইরে অনেকেই চান না বিসিএস উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নন-ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হোক। এতে নিয়োগ-বাণিজ্যসহ অনেক কিছু কমে গেছে। বেশিসংখ্যক প্রার্থী নিয়োগ দিতে পারলে রাষ্ট্রই উপকৃত হবে। প্রার্থীবান্ধব এই চেয়ারম্যান সব সময় চাইতেন বেশি বেশি ছেলেমেয়ে চাকরি পাক। মূলত তাঁর উদ্যোগেই ৩৪ তম বিসিএস থেকে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী নন-ক্যাডারে চাকরি পেতে থাকেন।
৩৪ বিসিএসে নন-ক্যাডার থেকে ২ হাজার ২৫৭ জন নিয়োগ পান, যেটি অতীতে হয়নি। এরপর ৩৫ বিসিএস থেকে ২ হাজার, ৩৬ বিসিএস থেকে ১ হাজার ২৮৭ জন, ৩৭ বিসিএস থেকে ১ হাজার ৭৪৩ জন এবং ৩৮ তম বিসিএস থেকে ২ হাজার ৭৫১ জন নন-ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন, যা এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে পিএসসিতে ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগের জন্য প্রার্থীরা অপেক্ষা করছেন।
দীর্ঘ চার বছরের প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের মার্চে ৪০ তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৮ হাজার ১৬৬ প্রার্থী নন-ক্যাডারের জন্য অপেক্ষায় আছেন। গত ২ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত তাঁরা নন-ক্যাডারের জন্য আবেদন করেছেন।
সুপারিশের অপেক্ষায় থাকা এই প্রার্থীরা বলছেন, নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রতিটি বিসিএসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেই অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ দেওয়ার আগেই ৪১,৪৩ ও ৪৪ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির তারিখ অনুযায়ী শূন্য পদ আলাদা করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এমনকি বিজ্ঞপ্তি না হলেও ৪৫ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদের চাহিদা চেয়েছে।
প্রার্থীরা বলছেন, এই চিঠির ফলে যেদিন যেই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি হয়েছে, সেই তারিখ পর্যন্ত যত আবেদন আসবে শুধু ততসংখ্যক পদেই ওই বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। যেহেতু ৪০ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেওয়া হয়েছে, কাজেই ওই তারিখের মধ্যে যেই পদের চাহিদা শুধু সেই পদই ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের জন্য থাকবে।
এই প্রার্থীরা বলছেন, ২০১৮ সালের পর যেহেতু ৩৭ ও ৩৮ তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়ে গেছে, কাজেই তাঁদের জন্য খুব বেশি পদ থাকবে না। পিএসসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ৪০ তম এবং পরবর্তী ৪১,৪৩ ও ৪৪ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রার্থীদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। এই চার বিসিএসের ৩০-৩৫ হাজার প্রার্থীকে তখন শূন্য হাতে ফিরতে হবে।
একটি বিষয় না বললেই নয়। বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার ফলে দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে। পিএসসির পরীক্ষা জটিলতাও কমেছে। কাজেই ৯ম থেকে ১২ তম গ্রেড পর্যন্ত যত বেশিসংখ্যক পদ বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া উচিত।
পাশাপাশি বিসিএসের নিয়োগের দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনা খুব জরুরি। একটা বিসিএসের নিয়োগে চার বছর লেগে যাওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। এই যে পিএসসির হাতে ৪১,৪৩ ও ৪৪ তিনটি বিসিএস ঝুলছে, এই দীর্ঘসূত্রতা কমবে কীভাবে?
পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন কিন্তু দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে বিসিএস শেষ করতে চান তিনি। এ জন্য রোডম্যাপ করার কথাও বলেছিলেন। ৪৩ বিসিএস থেকেই তিনি এই পরিকল্পনা শুরুর কথা বলেছিলেন। বাস্তবে কিন্তু এর ছাপ দেখা যাচ্ছে না। করোনা মহামারি একটা কারণ, কিন্তু এখানে পিএসসির অদক্ষতাও আছে। ফলাফল দীর্ঘসূত্রতা।
সামাজিক নিরাপত্তা, ভালো বেতনকাঠামো ও এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে স্বচ্ছ নিয়োগ-প্রক্রিয়ার কারণে সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে লাখো তরুণের। ফলে দেখা যাচ্ছে একেকটি বিসিএসে এখন চার লাখ থেকে পাঁচ লাখ তরুণ অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু পরীক্ষা, চূড়ান্ত ফল, পুলিশ যাচাই, যোগদান—সব মিলিয়ে নিয়োগে লেগে যাচ্ছে তিন থেকে চার বছর। এই দীর্ঘসূত্রতার কারণে লেখাপড়া শেষে পরীক্ষা ও চাকরি পেতেই তারুণ্যের গুরুত্বপূর্ণ সময় চলে যাচ্ছে জীবন থেকে।
উন্নত দেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশেই সরকারি নিয়োগে এত সময় লাগে না। প্রতিবেশী ভারতের কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা নেয় ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন। প্রতিবছরের জুনে তারা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেয় এবং আগস্টে ফল প্রকাশ করে। এরপর অক্টোবরে লিখিত পরীক্ষা ও জানুয়ারিতে ফল প্রকাশ হয়। উত্তীর্ণদের মার্চে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে মে মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়। যাঁরা চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন, সেপ্টেম্বর থেকেই তাঁদের চাকরির মূল প্রশিক্ষণ শুরু হয়। অথচ বাংলাদেশে একেকটা বিসিএসের প্রক্রিয়া শেষ করতেই চার বছর লেগে যায়। এই দীর্ঘসূত্রতা কমানো জরুরি।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
বিসিএস সম্পর্কিত আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন
শরিফুল হাসান, কলামিস্ট

চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশে এক সরকার ক্ষমতা শেষ করে আরেক মেয়াদ আসে। চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশ তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক শেষ করা যায়। কিন্তু চার বছরেও একটা বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয় না বাংলাদেশে!
এই যেমন চার বছরেও ৪০ তম বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। আরেক বিসিএস ৪১-এর প্রক্রিয়াও তিন বছর ধরে ঝুলে আছে। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হতেই প্রায় তিন বছর লেগে যাচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়। কিন্তু নয় মাসেও ফল প্রকাশ করতে পারেনি পিএসসি।
পিএসসি বলছে, তিন শতাধিক পরীক্ষকের অবহেলার জন্য ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই দায় কেন পরীক্ষার্থীরা নেবেন? এই যে তিন বছরেও লিখিত পরীক্ষার ফল হলো না, তাহলে কবে মৌখিক হবে আর কবে চূড়ান্ত ফল?
৪৩ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে জুলাই মাসে। ৪৪ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা এখনো শুরু হয়নি। এর মধ্যেই আবার ৪৫ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কথা। সব মিলিয়ে বিসিএসজটে পড়েছে পিএসসি। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো প্রার্থী। এর মধ্যে আবার বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগ-প্রক্রিয়া নিয়েও জটিলতা শুরু হয়েছে। ফলে সেখানেও দুশ্চিন্তায় আছেন প্রার্থীরা।
২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল ৪০ তম বিসিএসের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্মকমিশনে (পিএসসি) চাহিদাপত্র পাঠিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। আবেদন করেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। প্রায় চার বছর পর এ বছরের ৩০ মার্চ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে পিএসসি। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তাঁদের গেজেট হয়নি। ফলে কবে তাঁরা চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন, জানেন না।
অন্যদিকে ৪০ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশ পাননি এমন আট হাজারেরও বেশি প্রার্থী পড়েছেন নতুন দুশ্চিন্তায়। এত দিন একটি বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর নন-ক্যাডারের আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেখান থেকে নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু পিএসসি এখন ৪০ বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ শুরুর আগেই অন্যান্য বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদ সংরক্ষণ করতে চাইছে—এমন আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রার্থীরা।
সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা দুটো বাড়ার পাশাপাশি নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকে বলে চাকরিপ্রার্থীদের বিসিএস নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। একেকটা বিসিএস পরীক্ষায় এখন চার লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু একটা বিসিএসে সাধারণভাবে গড়ে দুই হাজার ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও বিপুলসংখ্যক প্রার্থী চাকরি থেকে বঞ্চিত হতেন। এই প্রার্থীদের প্রথম শ্রেণির অন্যান্য পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্যই ২০১০ সালে নন-ক্যাডার নিয়োগে বিশেষ বিধিমালা করার উদ্যোগ নেন সেই সময়ের চেয়ারম্যান প্রয়াত সা’দত হুসাইন।
রিপোর্টার হিসেবে আমি তখন পিএসসির নানা বিষয়ে সংবাদ করি। নন-ক্যাডারের এই নিয়োগ বিধিমালা করার কারণ হিসেবে সা’দত হুসাইন আমাকে বলেছিলেন, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকেই যদি প্রথম শ্রেণির বিভিন্ন পদে সুপারিশ করা যায়, তাহলে নিয়োগে দুর্নীতি ও সময় কমবে। এ ছাড়া একেকটি বিসিএসে আট থেকে দশ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হলেও বেশির ভাগ চাকরি পেতেন না। নন-ক্যাডারে নিয়োগ দিতে পারলে চাকরি পাওয়ার সংখ্যা বাড়বে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরও মেধাবী কর্মকর্তা পাবে।
২০১০ সালে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা করার পর ২৮ তম বিসিএস থেকে ২৯৯ জন, ২৯ তম বিসিএস থেকে ১৯৩ জন, ৩০ তম বিসিএস থেকে ৩৬৩ জন, ৩১ তম বিসিএস থেকে ১২০ এবং ৩২ তম বিসিএস থেকে মাত্র ৬৬ জন নন-ক্যাডারের প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ পান।
নন-ক্যাডারে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি ছিল ইতিবাচক। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো খুব বেশিসংখ্যক চাহিদা না দেওয়ার কারণে দেখা গেল, ২৮ থেকে ৩৩ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ এমন প্রায় ১৯ হাজার প্রার্থী কোনো চাকরি পাননি। দীর্ঘ একটা প্রক্রিয়া ও মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়েও পদ না থাকার কারণে চাকরি না পাওয়াটা প্রার্থীদের জন্য ছিল হতাশার। সমস্যার কিছুটা সমাধানে ২০১৪ সালে বিসিএসের মাধ্যমে দ্বিতীয় শ্রেণির পদেও নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সময় পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ইকরাম আহমেদ।
দীর্ঘ দুই দশকের সাংবাদিকতা এবং এই সময়ে পিএসসি নিয়ে কাজ করার সুবাদে বলতে পারি, গত কয়েক বছরে বিসিএসের অনিয়ম অনেকটা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা (বর্তমানে ৯ম থেকে ১২ গ্রেড) নিয়োগের জন্য নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা তৈরি ও সংশোধন ইতিবাচক কাজ ছিল। প্রত্যাশা ছিল, এর ফলে মন্ত্রণালয়গুলো শূন্য পদে মেধাবী লোক নিয়োগে আগ্রহী হবে এবং পিএসসিতে যথেষ্ট চাহিদাপত্র পাঠাবে। কিন্তু চাহিদাপত্র বেশি না আসায় খুব বেশিসংখ্যক প্রার্থী চাকরি পাননি।
২০১৬ সালে পিএসসির চেয়ারম্যান হন মোহাম্মদ সাদিক। তাঁকে বলেছিলাম পিএসসির ভেতরে-বাইরে অনেকেই চান না বিসিএস উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নন-ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হোক। এতে নিয়োগ-বাণিজ্যসহ অনেক কিছু কমে গেছে। বেশিসংখ্যক প্রার্থী নিয়োগ দিতে পারলে রাষ্ট্রই উপকৃত হবে। প্রার্থীবান্ধব এই চেয়ারম্যান সব সময় চাইতেন বেশি বেশি ছেলেমেয়ে চাকরি পাক। মূলত তাঁর উদ্যোগেই ৩৪ তম বিসিএস থেকে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী নন-ক্যাডারে চাকরি পেতে থাকেন।
৩৪ বিসিএসে নন-ক্যাডার থেকে ২ হাজার ২৫৭ জন নিয়োগ পান, যেটি অতীতে হয়নি। এরপর ৩৫ বিসিএস থেকে ২ হাজার, ৩৬ বিসিএস থেকে ১ হাজার ২৮৭ জন, ৩৭ বিসিএস থেকে ১ হাজার ৭৪৩ জন এবং ৩৮ তম বিসিএস থেকে ২ হাজার ৭৫১ জন নন-ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন, যা এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে পিএসসিতে ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগের জন্য প্রার্থীরা অপেক্ষা করছেন।
দীর্ঘ চার বছরের প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের মার্চে ৪০ তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৮ হাজার ১৬৬ প্রার্থী নন-ক্যাডারের জন্য অপেক্ষায় আছেন। গত ২ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত তাঁরা নন-ক্যাডারের জন্য আবেদন করেছেন।
সুপারিশের অপেক্ষায় থাকা এই প্রার্থীরা বলছেন, নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রতিটি বিসিএসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেই অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ দেওয়ার আগেই ৪১,৪৩ ও ৪৪ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির তারিখ অনুযায়ী শূন্য পদ আলাদা করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এমনকি বিজ্ঞপ্তি না হলেও ৪৫ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদের চাহিদা চেয়েছে।
প্রার্থীরা বলছেন, এই চিঠির ফলে যেদিন যেই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি হয়েছে, সেই তারিখ পর্যন্ত যত আবেদন আসবে শুধু ততসংখ্যক পদেই ওই বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। যেহেতু ৪০ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেওয়া হয়েছে, কাজেই ওই তারিখের মধ্যে যেই পদের চাহিদা শুধু সেই পদই ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের জন্য থাকবে।
এই প্রার্থীরা বলছেন, ২০১৮ সালের পর যেহেতু ৩৭ ও ৩৮ তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়ে গেছে, কাজেই তাঁদের জন্য খুব বেশি পদ থাকবে না। পিএসসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ৪০ তম এবং পরবর্তী ৪১,৪৩ ও ৪৪ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রার্থীদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। এই চার বিসিএসের ৩০-৩৫ হাজার প্রার্থীকে তখন শূন্য হাতে ফিরতে হবে।
একটি বিষয় না বললেই নয়। বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার ফলে দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে। পিএসসির পরীক্ষা জটিলতাও কমেছে। কাজেই ৯ম থেকে ১২ তম গ্রেড পর্যন্ত যত বেশিসংখ্যক পদ বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া উচিত।
পাশাপাশি বিসিএসের নিয়োগের দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনা খুব জরুরি। একটা বিসিএসের নিয়োগে চার বছর লেগে যাওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। এই যে পিএসসির হাতে ৪১,৪৩ ও ৪৪ তিনটি বিসিএস ঝুলছে, এই দীর্ঘসূত্রতা কমবে কীভাবে?
পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন কিন্তু দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে বিসিএস শেষ করতে চান তিনি। এ জন্য রোডম্যাপ করার কথাও বলেছিলেন। ৪৩ বিসিএস থেকেই তিনি এই পরিকল্পনা শুরুর কথা বলেছিলেন। বাস্তবে কিন্তু এর ছাপ দেখা যাচ্ছে না। করোনা মহামারি একটা কারণ, কিন্তু এখানে পিএসসির অদক্ষতাও আছে। ফলাফল দীর্ঘসূত্রতা।
সামাজিক নিরাপত্তা, ভালো বেতনকাঠামো ও এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে স্বচ্ছ নিয়োগ-প্রক্রিয়ার কারণে সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে লাখো তরুণের। ফলে দেখা যাচ্ছে একেকটি বিসিএসে এখন চার লাখ থেকে পাঁচ লাখ তরুণ অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু পরীক্ষা, চূড়ান্ত ফল, পুলিশ যাচাই, যোগদান—সব মিলিয়ে নিয়োগে লেগে যাচ্ছে তিন থেকে চার বছর। এই দীর্ঘসূত্রতার কারণে লেখাপড়া শেষে পরীক্ষা ও চাকরি পেতেই তারুণ্যের গুরুত্বপূর্ণ সময় চলে যাচ্ছে জীবন থেকে।
উন্নত দেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশেই সরকারি নিয়োগে এত সময় লাগে না। প্রতিবেশী ভারতের কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা নেয় ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন। প্রতিবছরের জুনে তারা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেয় এবং আগস্টে ফল প্রকাশ করে। এরপর অক্টোবরে লিখিত পরীক্ষা ও জানুয়ারিতে ফল প্রকাশ হয়। উত্তীর্ণদের মার্চে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে মে মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়। যাঁরা চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন, সেপ্টেম্বর থেকেই তাঁদের চাকরির মূল প্রশিক্ষণ শুরু হয়। অথচ বাংলাদেশে একেকটা বিসিএসের প্রক্রিয়া শেষ করতেই চার বছর লেগে যায়। এই দীর্ঘসূত্রতা কমানো জরুরি।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
বিসিএস সম্পর্কিত আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন

চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশে এক সরকার ক্ষমতা শেষ করে আরেক মেয়াদ আসে। চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশ তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক শেষ করা যায়। কিন্তু চার বছরেও একটা বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয় না বাংলাদেশে!
এই যেমন চার বছরেও ৪০ তম বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। আরেক বিসিএস ৪১-এর প্রক্রিয়াও তিন বছর ধরে ঝুলে আছে। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হতেই প্রায় তিন বছর লেগে যাচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়। কিন্তু নয় মাসেও ফল প্রকাশ করতে পারেনি পিএসসি।
পিএসসি বলছে, তিন শতাধিক পরীক্ষকের অবহেলার জন্য ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই দায় কেন পরীক্ষার্থীরা নেবেন? এই যে তিন বছরেও লিখিত পরীক্ষার ফল হলো না, তাহলে কবে মৌখিক হবে আর কবে চূড়ান্ত ফল?
৪৩ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে জুলাই মাসে। ৪৪ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা এখনো শুরু হয়নি। এর মধ্যেই আবার ৪৫ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কথা। সব মিলিয়ে বিসিএসজটে পড়েছে পিএসসি। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো প্রার্থী। এর মধ্যে আবার বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগ-প্রক্রিয়া নিয়েও জটিলতা শুরু হয়েছে। ফলে সেখানেও দুশ্চিন্তায় আছেন প্রার্থীরা।
২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল ৪০ তম বিসিএসের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্মকমিশনে (পিএসসি) চাহিদাপত্র পাঠিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। আবেদন করেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। প্রায় চার বছর পর এ বছরের ৩০ মার্চ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে পিএসসি। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তাঁদের গেজেট হয়নি। ফলে কবে তাঁরা চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন, জানেন না।
অন্যদিকে ৪০ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশ পাননি এমন আট হাজারেরও বেশি প্রার্থী পড়েছেন নতুন দুশ্চিন্তায়। এত দিন একটি বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর নন-ক্যাডারের আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেখান থেকে নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু পিএসসি এখন ৪০ বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ শুরুর আগেই অন্যান্য বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদ সংরক্ষণ করতে চাইছে—এমন আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রার্থীরা।
সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা দুটো বাড়ার পাশাপাশি নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকে বলে চাকরিপ্রার্থীদের বিসিএস নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। একেকটা বিসিএস পরীক্ষায় এখন চার লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু একটা বিসিএসে সাধারণভাবে গড়ে দুই হাজার ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও বিপুলসংখ্যক প্রার্থী চাকরি থেকে বঞ্চিত হতেন। এই প্রার্থীদের প্রথম শ্রেণির অন্যান্য পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্যই ২০১০ সালে নন-ক্যাডার নিয়োগে বিশেষ বিধিমালা করার উদ্যোগ নেন সেই সময়ের চেয়ারম্যান প্রয়াত সা’দত হুসাইন।
রিপোর্টার হিসেবে আমি তখন পিএসসির নানা বিষয়ে সংবাদ করি। নন-ক্যাডারের এই নিয়োগ বিধিমালা করার কারণ হিসেবে সা’দত হুসাইন আমাকে বলেছিলেন, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকেই যদি প্রথম শ্রেণির বিভিন্ন পদে সুপারিশ করা যায়, তাহলে নিয়োগে দুর্নীতি ও সময় কমবে। এ ছাড়া একেকটি বিসিএসে আট থেকে দশ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হলেও বেশির ভাগ চাকরি পেতেন না। নন-ক্যাডারে নিয়োগ দিতে পারলে চাকরি পাওয়ার সংখ্যা বাড়বে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরও মেধাবী কর্মকর্তা পাবে।
২০১০ সালে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা করার পর ২৮ তম বিসিএস থেকে ২৯৯ জন, ২৯ তম বিসিএস থেকে ১৯৩ জন, ৩০ তম বিসিএস থেকে ৩৬৩ জন, ৩১ তম বিসিএস থেকে ১২০ এবং ৩২ তম বিসিএস থেকে মাত্র ৬৬ জন নন-ক্যাডারের প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ পান।
নন-ক্যাডারে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি ছিল ইতিবাচক। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলো খুব বেশিসংখ্যক চাহিদা না দেওয়ার কারণে দেখা গেল, ২৮ থেকে ৩৩ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ এমন প্রায় ১৯ হাজার প্রার্থী কোনো চাকরি পাননি। দীর্ঘ একটা প্রক্রিয়া ও মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়েও পদ না থাকার কারণে চাকরি না পাওয়াটা প্রার্থীদের জন্য ছিল হতাশার। সমস্যার কিছুটা সমাধানে ২০১৪ সালে বিসিএসের মাধ্যমে দ্বিতীয় শ্রেণির পদেও নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সময় পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ইকরাম আহমেদ।
দীর্ঘ দুই দশকের সাংবাদিকতা এবং এই সময়ে পিএসসি নিয়ে কাজ করার সুবাদে বলতে পারি, গত কয়েক বছরে বিসিএসের অনিয়ম অনেকটা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা (বর্তমানে ৯ম থেকে ১২ গ্রেড) নিয়োগের জন্য নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা তৈরি ও সংশোধন ইতিবাচক কাজ ছিল। প্রত্যাশা ছিল, এর ফলে মন্ত্রণালয়গুলো শূন্য পদে মেধাবী লোক নিয়োগে আগ্রহী হবে এবং পিএসসিতে যথেষ্ট চাহিদাপত্র পাঠাবে। কিন্তু চাহিদাপত্র বেশি না আসায় খুব বেশিসংখ্যক প্রার্থী চাকরি পাননি।
২০১৬ সালে পিএসসির চেয়ারম্যান হন মোহাম্মদ সাদিক। তাঁকে বলেছিলাম পিএসসির ভেতরে-বাইরে অনেকেই চান না বিসিএস উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নন-ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হোক। এতে নিয়োগ-বাণিজ্যসহ অনেক কিছু কমে গেছে। বেশিসংখ্যক প্রার্থী নিয়োগ দিতে পারলে রাষ্ট্রই উপকৃত হবে। প্রার্থীবান্ধব এই চেয়ারম্যান সব সময় চাইতেন বেশি বেশি ছেলেমেয়ে চাকরি পাক। মূলত তাঁর উদ্যোগেই ৩৪ তম বিসিএস থেকে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী নন-ক্যাডারে চাকরি পেতে থাকেন।
৩৪ বিসিএসে নন-ক্যাডার থেকে ২ হাজার ২৫৭ জন নিয়োগ পান, যেটি অতীতে হয়নি। এরপর ৩৫ বিসিএস থেকে ২ হাজার, ৩৬ বিসিএস থেকে ১ হাজার ২৮৭ জন, ৩৭ বিসিএস থেকে ১ হাজার ৭৪৩ জন এবং ৩৮ তম বিসিএস থেকে ২ হাজার ৭৫১ জন নন-ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন, যা এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে পিএসসিতে ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারে নিয়োগের জন্য প্রার্থীরা অপেক্ষা করছেন।
দীর্ঘ চার বছরের প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের মার্চে ৪০ তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৮ হাজার ১৬৬ প্রার্থী নন-ক্যাডারের জন্য অপেক্ষায় আছেন। গত ২ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত তাঁরা নন-ক্যাডারের জন্য আবেদন করেছেন।
সুপারিশের অপেক্ষায় থাকা এই প্রার্থীরা বলছেন, নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রতিটি বিসিএসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়া হতো এবং পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত, সেই অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হতো। কিন্তু ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ দেওয়ার আগেই ৪১,৪৩ ও ৪৪ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তির তারিখ অনুযায়ী শূন্য পদ আলাদা করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এমনকি বিজ্ঞপ্তি না হলেও ৪৫ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদের চাহিদা চেয়েছে।
প্রার্থীরা বলছেন, এই চিঠির ফলে যেদিন যেই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি হয়েছে, সেই তারিখ পর্যন্ত যত আবেদন আসবে শুধু ততসংখ্যক পদেই ওই বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। যেহেতু ৪০ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেওয়া হয়েছে, কাজেই ওই তারিখের মধ্যে যেই পদের চাহিদা শুধু সেই পদই ৪০ তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের জন্য থাকবে।
এই প্রার্থীরা বলছেন, ২০১৮ সালের পর যেহেতু ৩৭ ও ৩৮ তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়ে গেছে, কাজেই তাঁদের জন্য খুব বেশি পদ থাকবে না। পিএসসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ৪০ তম এবং পরবর্তী ৪১,৪৩ ও ৪৪ তম বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রার্থীদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। এই চার বিসিএসের ৩০-৩৫ হাজার প্রার্থীকে তখন শূন্য হাতে ফিরতে হবে।
একটি বিষয় না বললেই নয়। বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ার ফলে দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে। পিএসসির পরীক্ষা জটিলতাও কমেছে। কাজেই ৯ম থেকে ১২ তম গ্রেড পর্যন্ত যত বেশিসংখ্যক পদ বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া উচিত।
পাশাপাশি বিসিএসের নিয়োগের দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনা খুব জরুরি। একটা বিসিএসের নিয়োগে চার বছর লেগে যাওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। এই যে পিএসসির হাতে ৪১,৪৩ ও ৪৪ তিনটি বিসিএস ঝুলছে, এই দীর্ঘসূত্রতা কমবে কীভাবে?
পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন কিন্তু দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে বিসিএস শেষ করতে চান তিনি। এ জন্য রোডম্যাপ করার কথাও বলেছিলেন। ৪৩ বিসিএস থেকেই তিনি এই পরিকল্পনা শুরুর কথা বলেছিলেন। বাস্তবে কিন্তু এর ছাপ দেখা যাচ্ছে না। করোনা মহামারি একটা কারণ, কিন্তু এখানে পিএসসির অদক্ষতাও আছে। ফলাফল দীর্ঘসূত্রতা।
সামাজিক নিরাপত্তা, ভালো বেতনকাঠামো ও এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে স্বচ্ছ নিয়োগ-প্রক্রিয়ার কারণে সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে লাখো তরুণের। ফলে দেখা যাচ্ছে একেকটি বিসিএসে এখন চার লাখ থেকে পাঁচ লাখ তরুণ অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু পরীক্ষা, চূড়ান্ত ফল, পুলিশ যাচাই, যোগদান—সব মিলিয়ে নিয়োগে লেগে যাচ্ছে তিন থেকে চার বছর। এই দীর্ঘসূত্রতার কারণে লেখাপড়া শেষে পরীক্ষা ও চাকরি পেতেই তারুণ্যের গুরুত্বপূর্ণ সময় চলে যাচ্ছে জীবন থেকে।
উন্নত দেশ এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশেই সরকারি নিয়োগে এত সময় লাগে না। প্রতিবেশী ভারতের কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা নেয় ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন। প্রতিবছরের জুনে তারা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেয় এবং আগস্টে ফল প্রকাশ করে। এরপর অক্টোবরে লিখিত পরীক্ষা ও জানুয়ারিতে ফল প্রকাশ হয়। উত্তীর্ণদের মার্চে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে মে মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়। যাঁরা চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন, সেপ্টেম্বর থেকেই তাঁদের চাকরির মূল প্রশিক্ষণ শুরু হয়। অথচ বাংলাদেশে একেকটা বিসিএসের প্রক্রিয়া শেষ করতেই চার বছর লেগে যায়। এই দীর্ঘসূত্রতা কমানো জরুরি।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
বিসিএস সম্পর্কিত আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশে এক সরকার ক্ষমতা শেষ করে আরেক মেয়াদ আসে। চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশ তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক শেষ করা যায়। কিন্তু চার বছরেও একটা বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয় না বাংলাদেশে!
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশে এক সরকার ক্ষমতা শেষ করে আরেক মেয়াদ আসে। চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশ তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক শেষ করা যায়। কিন্তু চার বছরেও একটা বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয় না বাংলাদেশে!
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশে এক সরকার ক্ষমতা শেষ করে আরেক মেয়াদ আসে। চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশ তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক শেষ করা যায়। কিন্তু চার বছরেও একটা বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয় না বাংলাদেশে!
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশে এক সরকার ক্ষমতা শেষ করে আরেক মেয়াদ আসে। চার বছরে পৃথিবীর বহু দেশ তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশেও যেকোনো বিষয়ে স্নাতক শেষ করা যায়। কিন্তু চার বছরেও একটা বিসিএসের নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয় না বাংলাদেশে!
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫