Ajker Patrika

দৌলতদিয়ায় ভোগান্তি বাড়ছে

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ১৪
দৌলতদিয়ায় ভোগান্তি বাড়ছে

ফেরি সংকট, ঘাট স্বল্পতা ও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে ফেরি বন্ধ থাকায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় যানজট পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দুই পারে ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক।

গতকাল রোববার সকালে সরেজমিনে জানা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী যানবাহনকে ফেরির নাগাল পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দুই থেকে তিন দিন। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ ফিডস মিল পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সারি। গত শনিবার রাতে পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়াবহ। ঘাটে যানবাহনের চাপ কমাতে প্রায় ১৪ কিলোমিটার পেছনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় আহ্লাদিপুর পণ্যবাহী গাড়ি আটকে রাখছে। সেখানেও প্রায় ৪ শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয় জানায়, যানবাহন এবং যাত্রী পারাপার নির্বিঘ্ন করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট বড় ২০টি ফেরি ছিল। গত বুধবার দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো (বড়) ফেরি আমানত শাহ পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে যানবাহন নিয়ে ডুবে যায়। পর দিন যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত করতে দুটি ফেরি ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়। অবশিষ্ট ১৭ টির মধ্যে আরেকটি রো রো ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটিতে বসে আছে। বর্তমানে বড় ৮টি, ছোট ৬টি ও মাঝারি আকারের ২টি ফেরি চলাচল করছে।

এদিকে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়ায় ৫টি করে মোট ১০টি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ফেরি ডুবির ঘটনায় পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাট বন্ধ রয়েছে। দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ঘাট থেকে ইউটিলিটি পন্টুন সরিয়ে নেওয়ায় শুক্রবার রাত থেকে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে দৌলতদিয়ায় ৪টি এবং পাটুরিয়ায় ৪টি ঘাট চালু রয়েছে। ফেরি স্বল্পতার পাশাপাশি ঘাট স্বল্পতার কারণে উভয় ঘাটে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার রাতে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার জট ছাড়িয়ে যায়। প্রশাসন বাধ্য হয়ে গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় থেকে ছোট, ব্যক্তিগত গাড়ি ঘুরিয়ে দিয়ে উজানচর-চর দৌলতদিয়া বাজার ঘুরে ঘাটে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।

গতকাল সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ ফিডস মিল পর্যন্ত যানবাহনের লম্বা লাইন। বেলা বাড়ার সঙ্গে লাইনও লম্বা হচ্ছে। লাইনে অধিকাংশই পণ্যবাহী গাড়ি। এসব গাড়ি আরও দুই দিন আগে এসেছে। কিছু গাড়ি গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় এসে আটকা পড়ে।

খুলনার পাইকগাছা থেকে ইটভাটা শ্রমিক মর্জিনা বেগম যাচ্ছেন ধামরাইয়ের কালামপুর। তিনি বলেন, ‘রাতভর এই গাড়িতে বসে ছিলাম। বাচ্চা-কাচ্চা সমানে কান্তাছে। কোথাও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নাই। এ ছাড়া আরও অনেক সমস্যা আছে। আমরা এভাবেই যাচ্ছি। কহন নদী পাড়ি দিত পারব বলতে পারছি না।’

ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা নদীর অববাহিকায় প্রচণ্ড বাতাস রয়েছে। বাতাসের মধ্যে ছোট খাটো নৌযান চলাচলে অনেক বেগ পোহাতে হচ্ছে। এমনকি ফেরিগুলো চলাচলে বেগ পোহাতে হচ্ছে। নদীতে স্রোতের পাশাপাশি বাতাসের কারণে পারাপারে আগের থেকে সময় লাগছে অনেক বেশি।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক জামাল হোসেন বলেন, বর্তমানে ২০ টির স্থানে ১৬টি ফেরি চলছে। উভয় ঘাটে একটি করে ঘাট বন্ধ। পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাট কবে চালু হবে বলা মুশকিল। দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ঘাটটি এক দুই দিনের মধ্যে চালু হবে। বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে ফেরি বন্ধ থাকায় এ রুটে বাড়তি চাপ পড়ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত