Ajker Patrika

হাতপাখা তৈরির ধুম

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ২৮
Thumbnail image

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বেড়েছে হাতপাখার চাহিদা। গ্রামে লোডশেডিং ও তীব্র গরমে সাময়িক শান্তি দেয় হাতপাখা। আর এই চাহিদা মেটাতে পাখা তৈরির ধুম পড়েছে পাখাপল্লিতে। পাখার চাহিদা মেটাতে কারিগরেরা সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রাম অনেকের কাছে তালপাখাপল্লি নামেও পরিচিত। সেখানে অর্ধশত পরিবার তাঁদের পৈতৃক ব্যবসাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তালগাছের পাতা থেকে তৈরি এই হাতপাখার শীতল বাতাস, অনেকের ক্লান্ত মনকে শান্ত করে। বিদ্যুৎশূন্য পরিবারে হাত পাখা হয়ে ওঠে পরম বন্ধু। এ ছাড়া প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, ভ্যাপসা গরম ও লোডশেডিং বেশি হলে হাতপাখার কদর বাড়ে। এখান থেকে প্রতি গ্রীষ্ম মৌসুমে তিন লাখের অধিক পাখা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। ব্যবসায়ী ও কারিগরদের সংসার চলে স্বাচ্ছন্দ্যে।

কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাখা তৈরির উপকরণ এই এলাকায় পাওয়া যায় না। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলা থেকে আনতে হয়। ছোট তালগাছের পাতা সংগ্রহ করে সেগুলোকে রোদে শুকিয়ে পানিতে কিছুদিন ডুবিয়ে রাখতে হয়। এরপর এই ভেজা পাতা গোলাকার করে কেটে দুই খণ্ড করা হয়। প্রতিটি পাতা থেকে দুটি পাখা তৈরি হয়। আর পাতা সংগ্রহ থেকে তৈরি পর্যন্ত প্রতিটিতে খরচ হয় ১০-১১ টাকা। তৈরি পাখার পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয় ১৫-২০ টাকায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাখাপল্লির রবিউল ইসলামের বাড়িসহ অনেকের বাড়ির কক্ষে ও বারান্দায় স্তরে স্তরে সাজানো লাখ লাখ টাকা মূল্যের হাতপাখা। এগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।

পাখাশিল্পের কারিগর রবিউল ইসলাম বলেন, এই পল্লির নারী-পুরুষ উভয়েই পাখা তৈরির কাজ করেন। পুরুষেরা উপকরণ সংগ্রহ ও কাঠামো তৈরি করেন। আর নারীরা নিপুণ হাতে করেন পাখার কারুকার্য। আর এই পাখা বিক্রয় করেই চলে তাঁদের সংসার।

পাখাশিল্পী হুনুফা বেগম বলেন, তিনি সাংসারিক কাজের ফাঁকে হাতপাখার কারুকার্য করেন। ১০০ পাখা সেলাই ও রং করলে মজুরি পান ৭০ টাকা। তিনি এক দিনে ১৫০ থেকে ২০০ পাখার কাজ করতে পারেন।

জামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী বলেন, ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। ইউনিয়ন পরিষদ সব সময়ই তাঁদের পাশে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত