Ajker Patrika

পরোপকার ও সাম্যের শিক্ষা

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন
পরোপকার ও সাম্যের শিক্ষা

মহানবী (সা.) ইসলামের আলোকে যে সমাজ গড়ে তুলেছিলেন, তার ভিত্তি ছিল সততা, ন্যায়বিচার, পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও মানবিকতা বোধ। ইসলামে পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম প্রধান হলো নামাজ, আর সেই নামাজের মাধ্যমে আমরা মানবিকতা আর সাম্যের এক প্রকৃষ্ট নজির দেখতে পাই। একই কাতারে আমির-ফকির, সেখানে মানুষ হিসেবে কোনো ভেদাভেদ থাকে না।

মহানবী (সা.) মক্কা বিজয়ের পর যারা তাঁর সঙ্গে অতীতে চরম দুর্ব্যবহার করেছিল, নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছিল, তাদের সবার প্রতি তিনি মানবিক আচরণ করেন। চরম দুঃসময়ে, যুদ্ধের ময়দানে এমনকি শত্রুর সঙ্গেও তিনি মানবিক আচরণের ধারা বজায় রেখেছেন। মহানবী (সা.) তাঁর এক বাণীতে বলেছেন, ‘মানুষের প্রতি যে ব্যক্তি দয়া বা অনুগ্রহ প্রদর্শন করে না, মহান আল্লাহ তার প্রতিও করুণা প্রদর্শন করবেন না।’

মক্কা বিজয়ের পর এক বৃদ্ধাকে তিনি দেখতে পেলেন ভারী এক বোঝা বহন করে দূর পাহাড়ের দিকে যাচ্ছেন। দয়ার নবী বুড়ির কাছে থেকে বোঝাটি স্বীয় মাথায় উঠিয়ে নিলেন এবং তাঁর গন্তব্যে পৌঁছে দিলেন। বিদায়বেলায় বুড়ি অবাক বিস্ময়ে মক্কার পাশবিক ও রুক্ষ সমাজে এমন বিনয়ী, পরোপকারী মানুষের সন্ধান পেয়ে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। কৌতূহলভরে জিজ্ঞেস করে যখন দয়াল নবীর পরিচয় পেলেন, বুড়ি তখন আর চোখের পানি সংবরণ করতে পারেননি। বুকভরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলেন, ‘এই যদি হয় মুহাম্মদ (সা.)-এর মানবিক চরিত্র, তবে তিনি কোনো মানুষেরই ক্ষতি করতে পারেন না।’

আর হ্যাঁ, তিনি কারও ক্ষতি করতে আসেননি, তিনি এসেছেন মানবিকতা, সম্প্রীতি আর পরোপকারের মাধ্যমে সর্বোন্নত ও মহত্তম এক মানবিক বিশ্ব গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে, যেখানে তিনি সর্বতোভাবে সফল হয়েছেন। 

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, চেয়ারম্যান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত