হাসান মামুন

এই সময়টায় কাঁচা মরিচের দাম বাড়া তো বিচিত্র নয়। প্রায় প্রতিবছর বৃষ্টিবাদলের সময়ে এর দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা সেটা মেনেও নেন। কেননা মূল্যবৃদ্ধিটা থাকে মাত্রার মধ্যে। আর বাজার সামগ্রিকভাবে অশান্ত না হলে দু-একটা নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়লেই বা কী! তবে পণ্যবাজার যখন সামগ্রিকভাবে অশান্ত, তখন কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়লে এবং বাড়তে বাড়তে রেকর্ড করে ফেললে, সেটা মেনে নেওয়া কঠিন, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের মনে
তা ক্ষোভের জন্ম দেয়। সম্প্রতি ফেসবুকে মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে কাঁচা মরিচের কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ হয়ে দেশের কোথাও কোথাও ১ হাজার টাকা হয়ে যাওয়ায়।
এটা আবার ঘটেছে ঈদের সময়ে, যখন মানুষ মোকাবিলা করছিল প্রায় সব ধরনের মসলার বড় মূল্যবৃদ্ধি এবং কোরবানির গরু-ছাগলের দাম নিয়ে অস্থিরতা। কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়ছে দেখে সরকার অবশ্য এটি আমদানির সুযোগ করে দেয়। এর আমদানি গত বছরের আগস্ট থেকে বন্ধ ছিল। জরুরি না হলে এবং দেশীয় উৎপাদকদের জন্য লাভজনক দাম নিশ্চিতের প্রশ্ন থাকলে কৃষিপণ্যের আমদানি বন্ধ রাখাই উচিত। কিন্তু সরকারকে তো বিপুলসংখ্যক ভোক্তার স্বার্থও দেখতে হয়। তাই কোনো পণ্যের দাম মাত্রাছাড়া হয়ে গেলে সেটির আমদানি উন্মুক্ত করাটাও কাম্য।
এখানে সময়োচিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বেশি দেরি করে ফেললে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে সময় লাগে না। কাঁচা মরিচের বেলায় সেটাই ঘটেছে। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও আমদানির সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করে ফেলেছিল কৃষি মন্ত্রণালয় তথা সরকার। তাতে এর দাম ৩০-৩৫ থেকে বাড়তে বাড়তে কেজি ৯০-১০০ টাকা হয়ে যায়। আর কাঁচা মরিচের ক্ষেত্রে যা ঘটল, তা বোধ হয় সরকারকেও বিস্মিত করেছে। এর দাম ৮০০-১০০০ টাকা অবশ্য হতো না যদি ঈদের ছুটিতে পড়ে না যেত আমদানি কার্যক্রমটি। ২৫ জুন ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তাতে ছুটি শুরুর আগে সম্ভবত জুনের ২৬ তারিখেই কেবল কিছু কাঁচা মরিচ আনা গেছে উত্তরবঙ্গের স্থলসীমান্ত দিয়ে। এতে ভোক্তার কোনো লাভ হয়নি। এ পরিস্থিতিতে এমনও হয়ে থাকে, দেশব্যাপী অব্যাহত আলোচনার কারণেও পণ্যের দাম বেড়ে যায় অবিশ্বাস্যভাবে। যেসব এলাকা কাঁচা মরিচ উৎপাদনের জন্য খ্যাত, সেখানেও দেখা গেল দাম, এমনকি বড় শহরের চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। ঘটেছে ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ার ঘটনাও।
সবচেয়ে বড় কথা, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার কাঁচা মরিচ উৎপাদন বেশি মার খেয়েছিল। বর্ষা শুরুর আগে দফায় দফায় তাপপ্রবাহের চাপেও এর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশ্ন হলো, কৃষি মন্ত্রণালয় কি সময়মতো এটা জানতে পারেনি? বাণিজ্যমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, কাঁচা মরিচের উৎপাদন পরিস্থিতি দেখভাল ও জানার কথা কৃষি মন্ত্রণালয়ের। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সেল রয়েছে, যার কাজ দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও এর পূর্বাভাস দেওয়া। কথা হলো, তারাও কি সর্বসাধারণের নিত্যব্যবহার্য পণ্য কাঁচা মরিচের উৎপাদন, চাহিদা, দাম ইত্যাদির দিকে নজর রাখেনি?
বর্ষা শুরুর আগে তাপপ্রবাহের কারণেও যে কাঁচা মরিচ উৎপাদন ব্যাহত—এ খবর তো তাদের পাওয়ার কথা। যেসব এলাকায় কাঁচা মরিচ বেশি ফলে, সেখানকার কৃষি কর্মকর্তারা কী করেছেন? তাঁরা কৃষকের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেননি হয়তো; এর সুযোগও হয়তো ছিল না। কিন্তু উৎপাদন মার খাওয়ার খবর তো জায়গামতো পৌঁছাতে পারতেন। জানি না তাঁরা কী করেছেন। আন্দাজে কোনো পক্ষকে অভিযুক্ত করা ঠিক হবে না। তবে কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়তে থাকার সময়, এমনকি ঠিক ঈদের ছুটির আগে আমদানির অনুমতি দেওয়ার ঘটনায় বোঝা যায় কোথাও একটা সমন্বয়হীনতা ছিল। এর সপ্তাহখানেক আগেও সিদ্ধান্তটি নেওয়া গেলে মনে হয় পরিস্থিতির এতটা অবনতি হতো না।
২০০-২৫০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৮০০ টাকা হয়ে যাওয়াটা তো কোনো কাজের কথা নয়। এটা স্বাভাবিকও নয়, বিশেষ করে যখন পাশের দেশ থেকে দ্রুত আমদানির সুযোগ রয়েছে। আমাদের পাশে শুধু ভারত নয়, মিয়ানমারও আছে এবং এ তিনটি দেশ ‘কমন’ বেশ কিছু কৃষিপণ্য ব্যাপকভাবে উৎপাদন ও ভোগ করে। সংকটের সময় পরস্পরের কাছ থেকে তারা এগুলো সহজে আমদানি করতে পারে। আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কও জোরালো। পাশের দেশ থেকে আমদানিতে পরিবহন খরচও পড়ে কম। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ার পর পরিবহন খরচ পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে, এটাও সত্য।
সরকার কি পারত না ঈদের ছুটিতে বিশেষ ব্যবস্থায় কাঁচা মরিচ আমদানি অব্যাহত রাখতে? একটিমাত্র পণ্য আমদানির জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ অবশ্য কঠিন। আসলে উচিত ছিল কাঁচা মরিচ উৎপাদনের দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে এর বাজার স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগী হওয়া। আমরা তো প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁচা মরিচ উৎপাদন করতে পারি না। সময়ে-সময়ে এটা আমদানি করতে হয় প্রধানত ভারত থেকে।
দেশটির অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে আমাদের পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গেও প্রচুর কাঁচা মরিচ ফলে। বিশাল ভারতের সব জায়গায় এ মুহূর্তে কাঁচা মরিচের দাম নিশ্চয়ই এক নয়। তবে কোনোখানেই পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো নয়। সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ থাকার সময় একটি সহযোগী দৈনিকের অনলাইন সংস্করণের খবরে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও কাঁচা মরিচের বাজারে নেই কোনো অস্থিরতা। বাংলাদেশেও অস্থিরতা রোখা বোধ হয় যেত সময়মতো আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা গেলে।
ভারতের যে রাজ্য থেকেই কাঁচা মরিচ আনা হোক, তাতে দাম অনেক কম পড়ার কথা। চেষ্টা থাকতে হবে যত কম দামে আর দ্রুত আমদানি করা যায়। মানসম্মত পণ্য আমদানির ব্যবস্থাও করতে হবে। পেঁয়াজের বেলায় কিন্তু দেখা গেছে, অনেক আমদানিকারক মানসম্মত পণ্য আনেননি। সেই সব পেঁয়াজে সরবরাহসংকট দূর হলেও তা পারেনি ক্রেতা আকর্ষণ করতে। এতে দামের ওপর প্রভাব ফেলাও ততটা সম্ভব হয়নি।
মানসম্মত দেশি পেঁয়াজের দাম খুব একটা কমেনি, এর মধ্যে বেশ কিছুদিন চলে গেলেও। তবে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা গেছে। কাঁচা মরিচের বেলায়ও প্রথম কর্তব্য হলো অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি থামানো। এরপর দাম কমিয়ে আনা। এ সময়টায় ঘরে ঘরে কোরবানি দেওয়া পশুর মাংস। যাঁদের মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাঁরাও কম-বেশি এর ভাগ পেয়েছেন। কিন্তু মাংস রান্নার প্রায় সব উপকরণের দামই তো বাড়তি। এ অবস্থায় কাঁচা মরিচের দাম কয়েক দিনেই চার গুণ হয়ে যাওয়াটা সামান্য ঘটনা নয়। সে জন্য এতে জনপ্রতিক্রিয়াও হয়েছে তীব্র।
অধিকাংশ সময় কাঁচা মরিচের দাম কিন্তু কমই থাকে। বাড়লেও অসহনীয় হতে সাধারণত দেখা যায় না। তাতে উৎপাদকদের ভেতর থেকে এ অভিযোগ বরং থাকে যে তাঁরা ভালো দাম পাচ্ছেন না। নানান হাত ঘুরে চূড়ান্ত ক্রেতার কাছে পণ্যটি যে দামে বিক্রি হয়, মাঠের কৃষক তো পান এর চেয়ে অনেক কম। এ কারণে কৃষক কাঁচা মরিচ ফলাতে নিরুৎসাহিতও হন। এক মৌসুমে ভালো দাম না পেলে পরের মৌসুমে এটা বেশি ঘটে থাকে। সে জন্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে কৃষককে লাভজনক দাম দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় চোরাপথে আসা কাঁচা মরিচও উৎপাদকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থায় ভারসাম্য রেখে চলা নিশ্চয়ই সহজ নয়। কিন্তু সরকারকে তো সেটা করতে হবে এবং এটাই তার কাজ। এ জায়গাটায় আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ও জরুরি। তাদের অধীন প্রতিষ্ঠান ও সেলগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি না, সে প্রশ্ন তোলার অবকাশও তৈরি হলো কাঁচা মরিচের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধিতে।
কাঁচা মরিচকে যদি মসলা বিবেচনা করি, তবে এ ক্ষেত্রে একটা সুখবর তৈরি করেছিল মসলা গবেষণা কেন্দ্র। কাঁচা মরিচ গুঁড়া করে দুই বছর ঘরে রেখে ব্যবহারের উপায় এর একজন কৃষিবিজ্ঞানী উদ্ভাবন করেছেন বলে জানা গিয়েছিল। এতে কাঁচা মরিচের সরবরাহ বেশি থাকার সময় শুকিয়ে গুঁড়া করে রেখে সংকটকালে তা ব্যবহারের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাতে এর মানও নাকি অটুট থাকে। উত্তোলন, বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণের সংকটে কাঁচা মরিচের একটা বড় অংশ তো নষ্টও হয়। সব কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রেই আমাদের ‘অবচয়ের হার’ বেশি। যা-ই হোক, আশা জাগালেও কাঁচা মরিচ সংরক্ষণের ওই পদ্ধতির প্রয়োগ লক্ষ করা যায়নি।
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেরও তো এই সুযোগ লুফে নেওয়ার কথা। সেটা সম্ভব হলে কাঁচা মরিচের বাজারে অস্থিরতা কমে; কৃষক ভালো দাম পান এবং বিদেশি মুদ্রাও সাশ্রয় হয়। আমাদের রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন এমন, যেখান থেকে যতটা সম্ভব আমদানি কমানো প্রয়োজন। রুপিতে ভারত থেকে আমদানির একটা উদ্যোগ অবশ্য রয়েছে। সেই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে কাঁচা মরিচের মতো পণ্যের আমদানি সীমিত রেখে তাতে রুপি ব্যবহারের চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

এই সময়টায় কাঁচা মরিচের দাম বাড়া তো বিচিত্র নয়। প্রায় প্রতিবছর বৃষ্টিবাদলের সময়ে এর দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা সেটা মেনেও নেন। কেননা মূল্যবৃদ্ধিটা থাকে মাত্রার মধ্যে। আর বাজার সামগ্রিকভাবে অশান্ত না হলে দু-একটা নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়লেই বা কী! তবে পণ্যবাজার যখন সামগ্রিকভাবে অশান্ত, তখন কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়লে এবং বাড়তে বাড়তে রেকর্ড করে ফেললে, সেটা মেনে নেওয়া কঠিন, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের মনে
তা ক্ষোভের জন্ম দেয়। সম্প্রতি ফেসবুকে মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে কাঁচা মরিচের কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ হয়ে দেশের কোথাও কোথাও ১ হাজার টাকা হয়ে যাওয়ায়।
এটা আবার ঘটেছে ঈদের সময়ে, যখন মানুষ মোকাবিলা করছিল প্রায় সব ধরনের মসলার বড় মূল্যবৃদ্ধি এবং কোরবানির গরু-ছাগলের দাম নিয়ে অস্থিরতা। কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়ছে দেখে সরকার অবশ্য এটি আমদানির সুযোগ করে দেয়। এর আমদানি গত বছরের আগস্ট থেকে বন্ধ ছিল। জরুরি না হলে এবং দেশীয় উৎপাদকদের জন্য লাভজনক দাম নিশ্চিতের প্রশ্ন থাকলে কৃষিপণ্যের আমদানি বন্ধ রাখাই উচিত। কিন্তু সরকারকে তো বিপুলসংখ্যক ভোক্তার স্বার্থও দেখতে হয়। তাই কোনো পণ্যের দাম মাত্রাছাড়া হয়ে গেলে সেটির আমদানি উন্মুক্ত করাটাও কাম্য।
এখানে সময়োচিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বেশি দেরি করে ফেললে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে সময় লাগে না। কাঁচা মরিচের বেলায় সেটাই ঘটেছে। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও আমদানির সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করে ফেলেছিল কৃষি মন্ত্রণালয় তথা সরকার। তাতে এর দাম ৩০-৩৫ থেকে বাড়তে বাড়তে কেজি ৯০-১০০ টাকা হয়ে যায়। আর কাঁচা মরিচের ক্ষেত্রে যা ঘটল, তা বোধ হয় সরকারকেও বিস্মিত করেছে। এর দাম ৮০০-১০০০ টাকা অবশ্য হতো না যদি ঈদের ছুটিতে পড়ে না যেত আমদানি কার্যক্রমটি। ২৫ জুন ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তাতে ছুটি শুরুর আগে সম্ভবত জুনের ২৬ তারিখেই কেবল কিছু কাঁচা মরিচ আনা গেছে উত্তরবঙ্গের স্থলসীমান্ত দিয়ে। এতে ভোক্তার কোনো লাভ হয়নি। এ পরিস্থিতিতে এমনও হয়ে থাকে, দেশব্যাপী অব্যাহত আলোচনার কারণেও পণ্যের দাম বেড়ে যায় অবিশ্বাস্যভাবে। যেসব এলাকা কাঁচা মরিচ উৎপাদনের জন্য খ্যাত, সেখানেও দেখা গেল দাম, এমনকি বড় শহরের চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। ঘটেছে ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ার ঘটনাও।
সবচেয়ে বড় কথা, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার কাঁচা মরিচ উৎপাদন বেশি মার খেয়েছিল। বর্ষা শুরুর আগে দফায় দফায় তাপপ্রবাহের চাপেও এর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশ্ন হলো, কৃষি মন্ত্রণালয় কি সময়মতো এটা জানতে পারেনি? বাণিজ্যমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, কাঁচা মরিচের উৎপাদন পরিস্থিতি দেখভাল ও জানার কথা কৃষি মন্ত্রণালয়ের। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সেল রয়েছে, যার কাজ দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও এর পূর্বাভাস দেওয়া। কথা হলো, তারাও কি সর্বসাধারণের নিত্যব্যবহার্য পণ্য কাঁচা মরিচের উৎপাদন, চাহিদা, দাম ইত্যাদির দিকে নজর রাখেনি?
বর্ষা শুরুর আগে তাপপ্রবাহের কারণেও যে কাঁচা মরিচ উৎপাদন ব্যাহত—এ খবর তো তাদের পাওয়ার কথা। যেসব এলাকায় কাঁচা মরিচ বেশি ফলে, সেখানকার কৃষি কর্মকর্তারা কী করেছেন? তাঁরা কৃষকের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেননি হয়তো; এর সুযোগও হয়তো ছিল না। কিন্তু উৎপাদন মার খাওয়ার খবর তো জায়গামতো পৌঁছাতে পারতেন। জানি না তাঁরা কী করেছেন। আন্দাজে কোনো পক্ষকে অভিযুক্ত করা ঠিক হবে না। তবে কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়তে থাকার সময়, এমনকি ঠিক ঈদের ছুটির আগে আমদানির অনুমতি দেওয়ার ঘটনায় বোঝা যায় কোথাও একটা সমন্বয়হীনতা ছিল। এর সপ্তাহখানেক আগেও সিদ্ধান্তটি নেওয়া গেলে মনে হয় পরিস্থিতির এতটা অবনতি হতো না।
২০০-২৫০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৮০০ টাকা হয়ে যাওয়াটা তো কোনো কাজের কথা নয়। এটা স্বাভাবিকও নয়, বিশেষ করে যখন পাশের দেশ থেকে দ্রুত আমদানির সুযোগ রয়েছে। আমাদের পাশে শুধু ভারত নয়, মিয়ানমারও আছে এবং এ তিনটি দেশ ‘কমন’ বেশ কিছু কৃষিপণ্য ব্যাপকভাবে উৎপাদন ও ভোগ করে। সংকটের সময় পরস্পরের কাছ থেকে তারা এগুলো সহজে আমদানি করতে পারে। আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কও জোরালো। পাশের দেশ থেকে আমদানিতে পরিবহন খরচও পড়ে কম। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ার পর পরিবহন খরচ পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে, এটাও সত্য।
সরকার কি পারত না ঈদের ছুটিতে বিশেষ ব্যবস্থায় কাঁচা মরিচ আমদানি অব্যাহত রাখতে? একটিমাত্র পণ্য আমদানির জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ অবশ্য কঠিন। আসলে উচিত ছিল কাঁচা মরিচ উৎপাদনের দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে এর বাজার স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগী হওয়া। আমরা তো প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁচা মরিচ উৎপাদন করতে পারি না। সময়ে-সময়ে এটা আমদানি করতে হয় প্রধানত ভারত থেকে।
দেশটির অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে আমাদের পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গেও প্রচুর কাঁচা মরিচ ফলে। বিশাল ভারতের সব জায়গায় এ মুহূর্তে কাঁচা মরিচের দাম নিশ্চয়ই এক নয়। তবে কোনোখানেই পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো নয়। সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ থাকার সময় একটি সহযোগী দৈনিকের অনলাইন সংস্করণের খবরে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও কাঁচা মরিচের বাজারে নেই কোনো অস্থিরতা। বাংলাদেশেও অস্থিরতা রোখা বোধ হয় যেত সময়মতো আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা গেলে।
ভারতের যে রাজ্য থেকেই কাঁচা মরিচ আনা হোক, তাতে দাম অনেক কম পড়ার কথা। চেষ্টা থাকতে হবে যত কম দামে আর দ্রুত আমদানি করা যায়। মানসম্মত পণ্য আমদানির ব্যবস্থাও করতে হবে। পেঁয়াজের বেলায় কিন্তু দেখা গেছে, অনেক আমদানিকারক মানসম্মত পণ্য আনেননি। সেই সব পেঁয়াজে সরবরাহসংকট দূর হলেও তা পারেনি ক্রেতা আকর্ষণ করতে। এতে দামের ওপর প্রভাব ফেলাও ততটা সম্ভব হয়নি।
মানসম্মত দেশি পেঁয়াজের দাম খুব একটা কমেনি, এর মধ্যে বেশ কিছুদিন চলে গেলেও। তবে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা গেছে। কাঁচা মরিচের বেলায়ও প্রথম কর্তব্য হলো অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি থামানো। এরপর দাম কমিয়ে আনা। এ সময়টায় ঘরে ঘরে কোরবানি দেওয়া পশুর মাংস। যাঁদের মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাঁরাও কম-বেশি এর ভাগ পেয়েছেন। কিন্তু মাংস রান্নার প্রায় সব উপকরণের দামই তো বাড়তি। এ অবস্থায় কাঁচা মরিচের দাম কয়েক দিনেই চার গুণ হয়ে যাওয়াটা সামান্য ঘটনা নয়। সে জন্য এতে জনপ্রতিক্রিয়াও হয়েছে তীব্র।
অধিকাংশ সময় কাঁচা মরিচের দাম কিন্তু কমই থাকে। বাড়লেও অসহনীয় হতে সাধারণত দেখা যায় না। তাতে উৎপাদকদের ভেতর থেকে এ অভিযোগ বরং থাকে যে তাঁরা ভালো দাম পাচ্ছেন না। নানান হাত ঘুরে চূড়ান্ত ক্রেতার কাছে পণ্যটি যে দামে বিক্রি হয়, মাঠের কৃষক তো পান এর চেয়ে অনেক কম। এ কারণে কৃষক কাঁচা মরিচ ফলাতে নিরুৎসাহিতও হন। এক মৌসুমে ভালো দাম না পেলে পরের মৌসুমে এটা বেশি ঘটে থাকে। সে জন্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে কৃষককে লাভজনক দাম দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় চোরাপথে আসা কাঁচা মরিচও উৎপাদকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থায় ভারসাম্য রেখে চলা নিশ্চয়ই সহজ নয়। কিন্তু সরকারকে তো সেটা করতে হবে এবং এটাই তার কাজ। এ জায়গাটায় আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ও জরুরি। তাদের অধীন প্রতিষ্ঠান ও সেলগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি না, সে প্রশ্ন তোলার অবকাশও তৈরি হলো কাঁচা মরিচের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধিতে।
কাঁচা মরিচকে যদি মসলা বিবেচনা করি, তবে এ ক্ষেত্রে একটা সুখবর তৈরি করেছিল মসলা গবেষণা কেন্দ্র। কাঁচা মরিচ গুঁড়া করে দুই বছর ঘরে রেখে ব্যবহারের উপায় এর একজন কৃষিবিজ্ঞানী উদ্ভাবন করেছেন বলে জানা গিয়েছিল। এতে কাঁচা মরিচের সরবরাহ বেশি থাকার সময় শুকিয়ে গুঁড়া করে রেখে সংকটকালে তা ব্যবহারের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাতে এর মানও নাকি অটুট থাকে। উত্তোলন, বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণের সংকটে কাঁচা মরিচের একটা বড় অংশ তো নষ্টও হয়। সব কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রেই আমাদের ‘অবচয়ের হার’ বেশি। যা-ই হোক, আশা জাগালেও কাঁচা মরিচ সংরক্ষণের ওই পদ্ধতির প্রয়োগ লক্ষ করা যায়নি।
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেরও তো এই সুযোগ লুফে নেওয়ার কথা। সেটা সম্ভব হলে কাঁচা মরিচের বাজারে অস্থিরতা কমে; কৃষক ভালো দাম পান এবং বিদেশি মুদ্রাও সাশ্রয় হয়। আমাদের রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন এমন, যেখান থেকে যতটা সম্ভব আমদানি কমানো প্রয়োজন। রুপিতে ভারত থেকে আমদানির একটা উদ্যোগ অবশ্য রয়েছে। সেই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে কাঁচা মরিচের মতো পণ্যের আমদানি সীমিত রেখে তাতে রুপি ব্যবহারের চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক
হাসান মামুন

এই সময়টায় কাঁচা মরিচের দাম বাড়া তো বিচিত্র নয়। প্রায় প্রতিবছর বৃষ্টিবাদলের সময়ে এর দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা সেটা মেনেও নেন। কেননা মূল্যবৃদ্ধিটা থাকে মাত্রার মধ্যে। আর বাজার সামগ্রিকভাবে অশান্ত না হলে দু-একটা নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়লেই বা কী! তবে পণ্যবাজার যখন সামগ্রিকভাবে অশান্ত, তখন কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়লে এবং বাড়তে বাড়তে রেকর্ড করে ফেললে, সেটা মেনে নেওয়া কঠিন, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের মনে
তা ক্ষোভের জন্ম দেয়। সম্প্রতি ফেসবুকে মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে কাঁচা মরিচের কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ হয়ে দেশের কোথাও কোথাও ১ হাজার টাকা হয়ে যাওয়ায়।
এটা আবার ঘটেছে ঈদের সময়ে, যখন মানুষ মোকাবিলা করছিল প্রায় সব ধরনের মসলার বড় মূল্যবৃদ্ধি এবং কোরবানির গরু-ছাগলের দাম নিয়ে অস্থিরতা। কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়ছে দেখে সরকার অবশ্য এটি আমদানির সুযোগ করে দেয়। এর আমদানি গত বছরের আগস্ট থেকে বন্ধ ছিল। জরুরি না হলে এবং দেশীয় উৎপাদকদের জন্য লাভজনক দাম নিশ্চিতের প্রশ্ন থাকলে কৃষিপণ্যের আমদানি বন্ধ রাখাই উচিত। কিন্তু সরকারকে তো বিপুলসংখ্যক ভোক্তার স্বার্থও দেখতে হয়। তাই কোনো পণ্যের দাম মাত্রাছাড়া হয়ে গেলে সেটির আমদানি উন্মুক্ত করাটাও কাম্য।
এখানে সময়োচিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বেশি দেরি করে ফেললে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে সময় লাগে না। কাঁচা মরিচের বেলায় সেটাই ঘটেছে। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও আমদানির সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করে ফেলেছিল কৃষি মন্ত্রণালয় তথা সরকার। তাতে এর দাম ৩০-৩৫ থেকে বাড়তে বাড়তে কেজি ৯০-১০০ টাকা হয়ে যায়। আর কাঁচা মরিচের ক্ষেত্রে যা ঘটল, তা বোধ হয় সরকারকেও বিস্মিত করেছে। এর দাম ৮০০-১০০০ টাকা অবশ্য হতো না যদি ঈদের ছুটিতে পড়ে না যেত আমদানি কার্যক্রমটি। ২৫ জুন ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তাতে ছুটি শুরুর আগে সম্ভবত জুনের ২৬ তারিখেই কেবল কিছু কাঁচা মরিচ আনা গেছে উত্তরবঙ্গের স্থলসীমান্ত দিয়ে। এতে ভোক্তার কোনো লাভ হয়নি। এ পরিস্থিতিতে এমনও হয়ে থাকে, দেশব্যাপী অব্যাহত আলোচনার কারণেও পণ্যের দাম বেড়ে যায় অবিশ্বাস্যভাবে। যেসব এলাকা কাঁচা মরিচ উৎপাদনের জন্য খ্যাত, সেখানেও দেখা গেল দাম, এমনকি বড় শহরের চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। ঘটেছে ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ার ঘটনাও।
সবচেয়ে বড় কথা, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার কাঁচা মরিচ উৎপাদন বেশি মার খেয়েছিল। বর্ষা শুরুর আগে দফায় দফায় তাপপ্রবাহের চাপেও এর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশ্ন হলো, কৃষি মন্ত্রণালয় কি সময়মতো এটা জানতে পারেনি? বাণিজ্যমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, কাঁচা মরিচের উৎপাদন পরিস্থিতি দেখভাল ও জানার কথা কৃষি মন্ত্রণালয়ের। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সেল রয়েছে, যার কাজ দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও এর পূর্বাভাস দেওয়া। কথা হলো, তারাও কি সর্বসাধারণের নিত্যব্যবহার্য পণ্য কাঁচা মরিচের উৎপাদন, চাহিদা, দাম ইত্যাদির দিকে নজর রাখেনি?
বর্ষা শুরুর আগে তাপপ্রবাহের কারণেও যে কাঁচা মরিচ উৎপাদন ব্যাহত—এ খবর তো তাদের পাওয়ার কথা। যেসব এলাকায় কাঁচা মরিচ বেশি ফলে, সেখানকার কৃষি কর্মকর্তারা কী করেছেন? তাঁরা কৃষকের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেননি হয়তো; এর সুযোগও হয়তো ছিল না। কিন্তু উৎপাদন মার খাওয়ার খবর তো জায়গামতো পৌঁছাতে পারতেন। জানি না তাঁরা কী করেছেন। আন্দাজে কোনো পক্ষকে অভিযুক্ত করা ঠিক হবে না। তবে কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়তে থাকার সময়, এমনকি ঠিক ঈদের ছুটির আগে আমদানির অনুমতি দেওয়ার ঘটনায় বোঝা যায় কোথাও একটা সমন্বয়হীনতা ছিল। এর সপ্তাহখানেক আগেও সিদ্ধান্তটি নেওয়া গেলে মনে হয় পরিস্থিতির এতটা অবনতি হতো না।
২০০-২৫০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৮০০ টাকা হয়ে যাওয়াটা তো কোনো কাজের কথা নয়। এটা স্বাভাবিকও নয়, বিশেষ করে যখন পাশের দেশ থেকে দ্রুত আমদানির সুযোগ রয়েছে। আমাদের পাশে শুধু ভারত নয়, মিয়ানমারও আছে এবং এ তিনটি দেশ ‘কমন’ বেশ কিছু কৃষিপণ্য ব্যাপকভাবে উৎপাদন ও ভোগ করে। সংকটের সময় পরস্পরের কাছ থেকে তারা এগুলো সহজে আমদানি করতে পারে। আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কও জোরালো। পাশের দেশ থেকে আমদানিতে পরিবহন খরচও পড়ে কম। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ার পর পরিবহন খরচ পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে, এটাও সত্য।
সরকার কি পারত না ঈদের ছুটিতে বিশেষ ব্যবস্থায় কাঁচা মরিচ আমদানি অব্যাহত রাখতে? একটিমাত্র পণ্য আমদানির জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ অবশ্য কঠিন। আসলে উচিত ছিল কাঁচা মরিচ উৎপাদনের দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে এর বাজার স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগী হওয়া। আমরা তো প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁচা মরিচ উৎপাদন করতে পারি না। সময়ে-সময়ে এটা আমদানি করতে হয় প্রধানত ভারত থেকে।
দেশটির অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে আমাদের পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গেও প্রচুর কাঁচা মরিচ ফলে। বিশাল ভারতের সব জায়গায় এ মুহূর্তে কাঁচা মরিচের দাম নিশ্চয়ই এক নয়। তবে কোনোখানেই পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো নয়। সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ থাকার সময় একটি সহযোগী দৈনিকের অনলাইন সংস্করণের খবরে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও কাঁচা মরিচের বাজারে নেই কোনো অস্থিরতা। বাংলাদেশেও অস্থিরতা রোখা বোধ হয় যেত সময়মতো আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা গেলে।
ভারতের যে রাজ্য থেকেই কাঁচা মরিচ আনা হোক, তাতে দাম অনেক কম পড়ার কথা। চেষ্টা থাকতে হবে যত কম দামে আর দ্রুত আমদানি করা যায়। মানসম্মত পণ্য আমদানির ব্যবস্থাও করতে হবে। পেঁয়াজের বেলায় কিন্তু দেখা গেছে, অনেক আমদানিকারক মানসম্মত পণ্য আনেননি। সেই সব পেঁয়াজে সরবরাহসংকট দূর হলেও তা পারেনি ক্রেতা আকর্ষণ করতে। এতে দামের ওপর প্রভাব ফেলাও ততটা সম্ভব হয়নি।
মানসম্মত দেশি পেঁয়াজের দাম খুব একটা কমেনি, এর মধ্যে বেশ কিছুদিন চলে গেলেও। তবে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা গেছে। কাঁচা মরিচের বেলায়ও প্রথম কর্তব্য হলো অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি থামানো। এরপর দাম কমিয়ে আনা। এ সময়টায় ঘরে ঘরে কোরবানি দেওয়া পশুর মাংস। যাঁদের মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাঁরাও কম-বেশি এর ভাগ পেয়েছেন। কিন্তু মাংস রান্নার প্রায় সব উপকরণের দামই তো বাড়তি। এ অবস্থায় কাঁচা মরিচের দাম কয়েক দিনেই চার গুণ হয়ে যাওয়াটা সামান্য ঘটনা নয়। সে জন্য এতে জনপ্রতিক্রিয়াও হয়েছে তীব্র।
অধিকাংশ সময় কাঁচা মরিচের দাম কিন্তু কমই থাকে। বাড়লেও অসহনীয় হতে সাধারণত দেখা যায় না। তাতে উৎপাদকদের ভেতর থেকে এ অভিযোগ বরং থাকে যে তাঁরা ভালো দাম পাচ্ছেন না। নানান হাত ঘুরে চূড়ান্ত ক্রেতার কাছে পণ্যটি যে দামে বিক্রি হয়, মাঠের কৃষক তো পান এর চেয়ে অনেক কম। এ কারণে কৃষক কাঁচা মরিচ ফলাতে নিরুৎসাহিতও হন। এক মৌসুমে ভালো দাম না পেলে পরের মৌসুমে এটা বেশি ঘটে থাকে। সে জন্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে কৃষককে লাভজনক দাম দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় চোরাপথে আসা কাঁচা মরিচও উৎপাদকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থায় ভারসাম্য রেখে চলা নিশ্চয়ই সহজ নয়। কিন্তু সরকারকে তো সেটা করতে হবে এবং এটাই তার কাজ। এ জায়গাটায় আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ও জরুরি। তাদের অধীন প্রতিষ্ঠান ও সেলগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি না, সে প্রশ্ন তোলার অবকাশও তৈরি হলো কাঁচা মরিচের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধিতে।
কাঁচা মরিচকে যদি মসলা বিবেচনা করি, তবে এ ক্ষেত্রে একটা সুখবর তৈরি করেছিল মসলা গবেষণা কেন্দ্র। কাঁচা মরিচ গুঁড়া করে দুই বছর ঘরে রেখে ব্যবহারের উপায় এর একজন কৃষিবিজ্ঞানী উদ্ভাবন করেছেন বলে জানা গিয়েছিল। এতে কাঁচা মরিচের সরবরাহ বেশি থাকার সময় শুকিয়ে গুঁড়া করে রেখে সংকটকালে তা ব্যবহারের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাতে এর মানও নাকি অটুট থাকে। উত্তোলন, বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণের সংকটে কাঁচা মরিচের একটা বড় অংশ তো নষ্টও হয়। সব কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রেই আমাদের ‘অবচয়ের হার’ বেশি। যা-ই হোক, আশা জাগালেও কাঁচা মরিচ সংরক্ষণের ওই পদ্ধতির প্রয়োগ লক্ষ করা যায়নি।
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেরও তো এই সুযোগ লুফে নেওয়ার কথা। সেটা সম্ভব হলে কাঁচা মরিচের বাজারে অস্থিরতা কমে; কৃষক ভালো দাম পান এবং বিদেশি মুদ্রাও সাশ্রয় হয়। আমাদের রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন এমন, যেখান থেকে যতটা সম্ভব আমদানি কমানো প্রয়োজন। রুপিতে ভারত থেকে আমদানির একটা উদ্যোগ অবশ্য রয়েছে। সেই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে কাঁচা মরিচের মতো পণ্যের আমদানি সীমিত রেখে তাতে রুপি ব্যবহারের চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

এই সময়টায় কাঁচা মরিচের দাম বাড়া তো বিচিত্র নয়। প্রায় প্রতিবছর বৃষ্টিবাদলের সময়ে এর দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা সেটা মেনেও নেন। কেননা মূল্যবৃদ্ধিটা থাকে মাত্রার মধ্যে। আর বাজার সামগ্রিকভাবে অশান্ত না হলে দু-একটা নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়লেই বা কী! তবে পণ্যবাজার যখন সামগ্রিকভাবে অশান্ত, তখন কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়লে এবং বাড়তে বাড়তে রেকর্ড করে ফেললে, সেটা মেনে নেওয়া কঠিন, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের মনে
তা ক্ষোভের জন্ম দেয়। সম্প্রতি ফেসবুকে মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে কাঁচা মরিচের কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ হয়ে দেশের কোথাও কোথাও ১ হাজার টাকা হয়ে যাওয়ায়।
এটা আবার ঘটেছে ঈদের সময়ে, যখন মানুষ মোকাবিলা করছিল প্রায় সব ধরনের মসলার বড় মূল্যবৃদ্ধি এবং কোরবানির গরু-ছাগলের দাম নিয়ে অস্থিরতা। কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়ছে দেখে সরকার অবশ্য এটি আমদানির সুযোগ করে দেয়। এর আমদানি গত বছরের আগস্ট থেকে বন্ধ ছিল। জরুরি না হলে এবং দেশীয় উৎপাদকদের জন্য লাভজনক দাম নিশ্চিতের প্রশ্ন থাকলে কৃষিপণ্যের আমদানি বন্ধ রাখাই উচিত। কিন্তু সরকারকে তো বিপুলসংখ্যক ভোক্তার স্বার্থও দেখতে হয়। তাই কোনো পণ্যের দাম মাত্রাছাড়া হয়ে গেলে সেটির আমদানি উন্মুক্ত করাটাও কাম্য।
এখানে সময়োচিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বেশি দেরি করে ফেললে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে সময় লাগে না। কাঁচা মরিচের বেলায় সেটাই ঘটেছে। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও আমদানির সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করে ফেলেছিল কৃষি মন্ত্রণালয় তথা সরকার। তাতে এর দাম ৩০-৩৫ থেকে বাড়তে বাড়তে কেজি ৯০-১০০ টাকা হয়ে যায়। আর কাঁচা মরিচের ক্ষেত্রে যা ঘটল, তা বোধ হয় সরকারকেও বিস্মিত করেছে। এর দাম ৮০০-১০০০ টাকা অবশ্য হতো না যদি ঈদের ছুটিতে পড়ে না যেত আমদানি কার্যক্রমটি। ২৫ জুন ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তাতে ছুটি শুরুর আগে সম্ভবত জুনের ২৬ তারিখেই কেবল কিছু কাঁচা মরিচ আনা গেছে উত্তরবঙ্গের স্থলসীমান্ত দিয়ে। এতে ভোক্তার কোনো লাভ হয়নি। এ পরিস্থিতিতে এমনও হয়ে থাকে, দেশব্যাপী অব্যাহত আলোচনার কারণেও পণ্যের দাম বেড়ে যায় অবিশ্বাস্যভাবে। যেসব এলাকা কাঁচা মরিচ উৎপাদনের জন্য খ্যাত, সেখানেও দেখা গেল দাম, এমনকি বড় শহরের চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। ঘটেছে ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ার ঘটনাও।
সবচেয়ে বড় কথা, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার কাঁচা মরিচ উৎপাদন বেশি মার খেয়েছিল। বর্ষা শুরুর আগে দফায় দফায় তাপপ্রবাহের চাপেও এর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশ্ন হলো, কৃষি মন্ত্রণালয় কি সময়মতো এটা জানতে পারেনি? বাণিজ্যমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, কাঁচা মরিচের উৎপাদন পরিস্থিতি দেখভাল ও জানার কথা কৃষি মন্ত্রণালয়ের। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সেল রয়েছে, যার কাজ দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও এর পূর্বাভাস দেওয়া। কথা হলো, তারাও কি সর্বসাধারণের নিত্যব্যবহার্য পণ্য কাঁচা মরিচের উৎপাদন, চাহিদা, দাম ইত্যাদির দিকে নজর রাখেনি?
বর্ষা শুরুর আগে তাপপ্রবাহের কারণেও যে কাঁচা মরিচ উৎপাদন ব্যাহত—এ খবর তো তাদের পাওয়ার কথা। যেসব এলাকায় কাঁচা মরিচ বেশি ফলে, সেখানকার কৃষি কর্মকর্তারা কী করেছেন? তাঁরা কৃষকের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেননি হয়তো; এর সুযোগও হয়তো ছিল না। কিন্তু উৎপাদন মার খাওয়ার খবর তো জায়গামতো পৌঁছাতে পারতেন। জানি না তাঁরা কী করেছেন। আন্দাজে কোনো পক্ষকে অভিযুক্ত করা ঠিক হবে না। তবে কাঁচা মরিচের দাম লাফিয়ে বাড়তে থাকার সময়, এমনকি ঠিক ঈদের ছুটির আগে আমদানির অনুমতি দেওয়ার ঘটনায় বোঝা যায় কোথাও একটা সমন্বয়হীনতা ছিল। এর সপ্তাহখানেক আগেও সিদ্ধান্তটি নেওয়া গেলে মনে হয় পরিস্থিতির এতটা অবনতি হতো না।
২০০-২৫০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৮০০ টাকা হয়ে যাওয়াটা তো কোনো কাজের কথা নয়। এটা স্বাভাবিকও নয়, বিশেষ করে যখন পাশের দেশ থেকে দ্রুত আমদানির সুযোগ রয়েছে। আমাদের পাশে শুধু ভারত নয়, মিয়ানমারও আছে এবং এ তিনটি দেশ ‘কমন’ বেশ কিছু কৃষিপণ্য ব্যাপকভাবে উৎপাদন ও ভোগ করে। সংকটের সময় পরস্পরের কাছ থেকে তারা এগুলো সহজে আমদানি করতে পারে। আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কও জোরালো। পাশের দেশ থেকে আমদানিতে পরিবহন খরচও পড়ে কম। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ার পর পরিবহন খরচ পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে, এটাও সত্য।
সরকার কি পারত না ঈদের ছুটিতে বিশেষ ব্যবস্থায় কাঁচা মরিচ আমদানি অব্যাহত রাখতে? একটিমাত্র পণ্য আমদানির জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ অবশ্য কঠিন। আসলে উচিত ছিল কাঁচা মরিচ উৎপাদনের দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে এর বাজার স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগী হওয়া। আমরা তো প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁচা মরিচ উৎপাদন করতে পারি না। সময়ে-সময়ে এটা আমদানি করতে হয় প্রধানত ভারত থেকে।
দেশটির অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে আমাদের পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গেও প্রচুর কাঁচা মরিচ ফলে। বিশাল ভারতের সব জায়গায় এ মুহূর্তে কাঁচা মরিচের দাম নিশ্চয়ই এক নয়। তবে কোনোখানেই পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো নয়। সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ থাকার সময় একটি সহযোগী দৈনিকের অনলাইন সংস্করণের খবরে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও কাঁচা মরিচের বাজারে নেই কোনো অস্থিরতা। বাংলাদেশেও অস্থিরতা রোখা বোধ হয় যেত সময়মতো আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা গেলে।
ভারতের যে রাজ্য থেকেই কাঁচা মরিচ আনা হোক, তাতে দাম অনেক কম পড়ার কথা। চেষ্টা থাকতে হবে যত কম দামে আর দ্রুত আমদানি করা যায়। মানসম্মত পণ্য আমদানির ব্যবস্থাও করতে হবে। পেঁয়াজের বেলায় কিন্তু দেখা গেছে, অনেক আমদানিকারক মানসম্মত পণ্য আনেননি। সেই সব পেঁয়াজে সরবরাহসংকট দূর হলেও তা পারেনি ক্রেতা আকর্ষণ করতে। এতে দামের ওপর প্রভাব ফেলাও ততটা সম্ভব হয়নি।
মানসম্মত দেশি পেঁয়াজের দাম খুব একটা কমেনি, এর মধ্যে বেশ কিছুদিন চলে গেলেও। তবে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা গেছে। কাঁচা মরিচের বেলায়ও প্রথম কর্তব্য হলো অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি থামানো। এরপর দাম কমিয়ে আনা। এ সময়টায় ঘরে ঘরে কোরবানি দেওয়া পশুর মাংস। যাঁদের মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাঁরাও কম-বেশি এর ভাগ পেয়েছেন। কিন্তু মাংস রান্নার প্রায় সব উপকরণের দামই তো বাড়তি। এ অবস্থায় কাঁচা মরিচের দাম কয়েক দিনেই চার গুণ হয়ে যাওয়াটা সামান্য ঘটনা নয়। সে জন্য এতে জনপ্রতিক্রিয়াও হয়েছে তীব্র।
অধিকাংশ সময় কাঁচা মরিচের দাম কিন্তু কমই থাকে। বাড়লেও অসহনীয় হতে সাধারণত দেখা যায় না। তাতে উৎপাদকদের ভেতর থেকে এ অভিযোগ বরং থাকে যে তাঁরা ভালো দাম পাচ্ছেন না। নানান হাত ঘুরে চূড়ান্ত ক্রেতার কাছে পণ্যটি যে দামে বিক্রি হয়, মাঠের কৃষক তো পান এর চেয়ে অনেক কম। এ কারণে কৃষক কাঁচা মরিচ ফলাতে নিরুৎসাহিতও হন। এক মৌসুমে ভালো দাম না পেলে পরের মৌসুমে এটা বেশি ঘটে থাকে। সে জন্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে কৃষককে লাভজনক দাম দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় চোরাপথে আসা কাঁচা মরিচও উৎপাদকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থায় ভারসাম্য রেখে চলা নিশ্চয়ই সহজ নয়। কিন্তু সরকারকে তো সেটা করতে হবে এবং এটাই তার কাজ। এ জায়গাটায় আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ও জরুরি। তাদের অধীন প্রতিষ্ঠান ও সেলগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি না, সে প্রশ্ন তোলার অবকাশও তৈরি হলো কাঁচা মরিচের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধিতে।
কাঁচা মরিচকে যদি মসলা বিবেচনা করি, তবে এ ক্ষেত্রে একটা সুখবর তৈরি করেছিল মসলা গবেষণা কেন্দ্র। কাঁচা মরিচ গুঁড়া করে দুই বছর ঘরে রেখে ব্যবহারের উপায় এর একজন কৃষিবিজ্ঞানী উদ্ভাবন করেছেন বলে জানা গিয়েছিল। এতে কাঁচা মরিচের সরবরাহ বেশি থাকার সময় শুকিয়ে গুঁড়া করে রেখে সংকটকালে তা ব্যবহারের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাতে এর মানও নাকি অটুট থাকে। উত্তোলন, বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণের সংকটে কাঁচা মরিচের একটা বড় অংশ তো নষ্টও হয়। সব কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রেই আমাদের ‘অবচয়ের হার’ বেশি। যা-ই হোক, আশা জাগালেও কাঁচা মরিচ সংরক্ষণের ওই পদ্ধতির প্রয়োগ লক্ষ করা যায়নি।
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেরও তো এই সুযোগ লুফে নেওয়ার কথা। সেটা সম্ভব হলে কাঁচা মরিচের বাজারে অস্থিরতা কমে; কৃষক ভালো দাম পান এবং বিদেশি মুদ্রাও সাশ্রয় হয়। আমাদের রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন এমন, যেখান থেকে যতটা সম্ভব আমদানি কমানো প্রয়োজন। রুপিতে ভারত থেকে আমদানির একটা উদ্যোগ অবশ্য রয়েছে। সেই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে কাঁচা মরিচের মতো পণ্যের আমদানি সীমিত রেখে তাতে রুপি ব্যবহারের চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এই সময়টায় কাঁচা মরিচের দাম বাড়া তো বিচিত্র নয়। প্রায় প্রতিবছর বৃষ্টিবাদলের সময়ে এর দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা সেটা মেনেও নেন। কেননা মূল্যবৃদ্ধিটা থাকে মাত্রার মধ্যে।
০৩ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এই সময়টায় কাঁচা মরিচের দাম বাড়া তো বিচিত্র নয়। প্রায় প্রতিবছর বৃষ্টিবাদলের সময়ে এর দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা সেটা মেনেও নেন। কেননা মূল্যবৃদ্ধিটা থাকে মাত্রার মধ্যে।
০৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এই সময়টায় কাঁচা মরিচের দাম বাড়া তো বিচিত্র নয়। প্রায় প্রতিবছর বৃষ্টিবাদলের সময়ে এর দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা সেটা মেনেও নেন। কেননা মূল্যবৃদ্ধিটা থাকে মাত্রার মধ্যে।
০৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এই সময়টায় কাঁচা মরিচের দাম বাড়া তো বিচিত্র নয়। প্রায় প্রতিবছর বৃষ্টিবাদলের সময়ে এর দাম বেড়ে যায়। ক্রেতারা সেটা মেনেও নেন। কেননা মূল্যবৃদ্ধিটা থাকে মাত্রার মধ্যে।
০৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫