Ajker Patrika

ছাগলে দিনবদল বাদশার

সাহাদত জামান, সারিয়াকান্দি (বগুড়া)
ছাগলে দিনবদল বাদশার

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের খামার করে লাভবান হয়েছেন জামাল বাদশা। উপজেলার নারচী ইউনিয়নের নারচী উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। চাকরির পাশাপাশি কিছু করা দরকার। এ চিন্তা থেকে ১৪ মাস আগে ৬টি মাদি ছাগল কেনেন। এখন তাঁর খামারে ছাগলের সংখ্যা ৪৭। তিনি বলেন, খামারে ৫০টি মাদি ছাগল থাকলে বছরে ৬-৭ লাখ টাকা লাভ করা সম্ভব।

১৪ মাসের মধ্যে ৮টি ছাগল তিনি বিক্রিও করেন। ৬টি মাদি ছাগল ৩৬ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলেন। ৮টি ছাগলের বাচ্চা ৩৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এখন তাঁর খামারে ২ থেকে ১৫ দিন বয়সী ছাগলের বাচ্চার সংখ্যা ১৭। তাঁর খামারে ১৮টি ছাগি রয়েছে। তিনি মনে করেন, প্রতি ৭ মাসের ছাগিগুলো থেকে ৩৬ থেকে ৫৪টি পর্যন্ত ছাগলের বাচ্চা পাবেন। জামাল বাদশা এখন তাঁর খামারে উন্নত তোতাপুরি জাতের ছাগল পালনেরও উদ্যোগ নিয়েছেন।

জামাল তাঁর ছাগলগুলোকে খাওয়ানোর জন্য দেড় বিঘা জমিতে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেছেন। এ জমি থেকে ঘাস কেটে ছাগলগুলোকে খাওয়ান। ছাগলের জন্য বাড়তি কোনো কাঁচা ঘাস কিনতে হয় না।

খামারি জামাল বলেন, ‘চাকরির পাশাপাশি ছাগলের খামার করে সফল হয়েছি। যাঁদের নিজের ঘাসের জমি আছে; তাঁরা অনায়াসেই ছাগলের খামার করতে পারেন। খামারে ৫০টি মাদি ছাগল থাকলে বছরে খরচ বাদে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। আমাকে খামারে মা-বাবা প্রচুর সহযোগিতা করেন। সে জন্য আমাকে কোনো কর্মচারী রাখতে হয় না।’

জামালের বাবা আমছার আলী বলেন, ‘অলস হয়ে বসে না থেকে খামারে কাজ করে মোটামুটি ভালোই আনন্দ পাই। এতে আমরা ভালোই লাভবান হচ্ছি।’ 
সারিয়াকান্দি প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় বিশালাকার চরাভূমি রয়েছে। এসব চরাভূমিতে ছাগলের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁচা ঘাস রয়েছে। প্রায় পরিবারেই দু-একটি ছাগল রয়েছে। এ উপজেলায় ব্ল্যাক বেঙ্গল, যমুনাপাড়ি ও তোতাপুরি তিন জাতের ছাগল রয়েছে।

এদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগই ব্ল্যাক বেঙ্গল। সাধারণত যাঁদের ৯টির বেশি ছাগল রয়েছে, তাঁদের ছাগল খামারি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ হিসাবে সারা উপজেলায় ১ হাজার ২০০টি ছাগল খামারি রয়েছেন।

চরাঞ্চলগুলোতে ছাগলের খামার সবচেয়ে বেশি। এ হিসাবে উপজেলায় মোট ছাগলের সংখ্যা ৭৩ হাজার ৫০০। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, সাধারণত ছাগল গাছের লতাপাতা, কাঁচা ঘাস প্রভৃতি খায়। এ উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে ছাগলের চারণভূমিসহ গাছপালা রয়েছে। সে জন্য প্রায় পরিবারেই দু-একটি বা তার বেশি ছাগল রয়েছে। বাজারেও ছাগলের মাংসের ভালো দাম রয়েছে। ছাগলের খামার করে বেকার যুবকেরা তাঁদের বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারেন এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চাকরির প্রতি চাপ কমবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত