নাসিরউদ্দিন ইউসুফ
ফর্মুলা সিনেমার বাইরে সিনেমা তৈরির একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবার। বহুদিন ধরেই চলছিল এই চেষ্টা, কিন্তু গত তিন বছরে এটা একটি সংগঠিত রূপ নিচ্ছে। এমন সময়ে ‘হাওয়া’র সাফল্যে নতুন নির্মাতারা যেটা করতে পারেন, সেটা হচ্ছে নিজের মতো করে গল্প বলা, নিজের মতো করে নির্মাণশৈলীটা নির্মাণ করা এবং বিষয়-বৈচিত্র্যে ভিন্নতা আনা। দর্শক তো হলে ফেরার চেষ্টা করছে, আমাদের তরুণেরাও ভিন্ন ধরনের সিনেমা বানানোর চেষ্টা করছে—এই দুইয়ের একটা সংযোগ ঘটতে হবে। আমি সাম্প্রতিক কিছু সিনেমার কথা বলতে চাই ‘হাসিনা: ডটার্স টেল’, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’, ‘নোনাজলের কাব্য’, ‘চন্দ্রাবতী কথা’ এবং সবশেষ ‘হাওয়া’।
মাত্র তিন বছরে বদলে গেল বাংলা চলচ্চিত্রের ভাষা। সবাই এক ভাষায় কথা বলছে না কিন্তু সবাই তার নিজস্ব ভাষায় পর্দায় বয়ান করছে তার কথা। একই আঙ্গিক ও নির্মাণকৌশল নয়, ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে চিত্রময় হয়ে উঠছে আমাদের রুপালি পর্দা। আমি প্রবলভাবে আশাবাদী হয়ে উঠেছি। কিন্তু সব কটি সিনেমাই কি দর্শক একভাবে নিয়েছে? নেয়নি, নেওয়ার দরকারও নেই। এভাবেই সিনেমা হওয়া উচিত, এর মাঝে কিছু সিনেমা অসাধারণভাবে দর্শক দ্বারা গৃহীত হবে, আবার যে সিনেমাগুলো ব্যাপকভাবে গৃহীত হলো না কিন্তু নতুন একটি আঙ্গিক, ভাষা, নির্মাণরীতি নিয়ে হাজির হলো, সেটার ওপর নির্ভর করে আগামী দিন হয়তো আবার এ ধরনের জনপ্রিয় একটা সিনেমা হয়েও যেতে পারে। এই চেষ্টাটা জারি রাখতে হবে। ফর্মুলায় ফেরত যাওয়া ঠিক হবে না।
১৭ কোটি মানুষের দেশে যদি ১২ কোটিও প্রাপ্তবয়স্ক ধরে নিই, তাহলেও তো ১২ কোটি গল্প আছে আমাদের। কিন্তু আমরা তো সেদিকে হাত বাড়াচ্ছি না। এই যে মেজবাউর রহমান সুমন সমুদ্রের দিকে হাত বাড়িয়েছে, আমি একে সাধুবাদ জানাই। একটা এপিক স্ট্রাকচার নিয়েছে সুমন, এটা গুরুত্বপূর্ণ, আঙ্গিকের জায়গা থেকে। মহাকাব্যিক একটা জীবন। এই জীবনে শুধু প্রেম এবং দুজন মানুষের হানাহানি না, এখানে সমুদ্রের একটা ভূমিকা আছে, সমুদ্রের নিচের প্রাণিকুলের ভূমিকা আছে। ম্যাজিক রিয়েলিজমের যে জায়গাটা—একটা নারী মাছ হয়ে যাচ্ছে, আবার সাপ হয়ে দংশন করছে। আমাদের মিথে সাপ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটাকে আধুনিক জীবনে সুমন প্রয়োগ করেছে অন্য রকমভাবে।
আমাদের শতবর্ষের যে ফোক রয়েছে, যে মিথ রয়েছে তাতে ম্যাজিক রিয়েলিজমের উপস্থিতি আছে। সেটাকে সুমন আধুনিক প্রেক্ষাপটে, বর্তমান অর্থনৈতিক জায়গায় একটা ইঞ্জিন নৌকায় নিয়ে গিয়ে স্থাপন করতে পেরেছে এবং তার নিচে যে বঙ্গোপসাগর, তার তলদেশেরও অনেকের সাক্ষাৎ আমরা পেয়েছি। সেখানে দিনরাত্রির কাব্যও তৈরি হয়েছে। দিনের বেলায় আকাশটা এক রকম, আবার রাতের বেলায় অন্য রকম। দিনের বেলায় সমুদ্রের জল এক রকম, আবার রাতের বেলায় সমুদ্রের জল ও শব্দ পরিবর্তন হয়ে যায়। এই যে বৈচিত্র্যটা সুমন তৈরি করতে পেরেছে, এটা আমার কাছে বৈপ্লবিক মনে হয়েছে। সে যা ভেবেছে তা করার চেষ্টা করেছে।
কোথাও কোনো সেট তৈরি করে নয়, ৪৫ দিনের শুটিংটা সমুদ্রের মাঝেই করেছে। এবং এই পুরো কাজটা অসম্ভব কঠিন মনে হয়েছে আমার কাছে। একটা ফ্লোটিং বোটে সমুদ্রের মাঝখানে শুটিং করা চাট্টিখানি কথা নয়। শিল্প যে শ্রম দাবি করে, ঘাম দাবি করে—এই সিনেমাটি সেটা প্রমাণ করে। সিনেমার গান তো এরই মধ্যে মানুষের মনে গেঁথে গেছে। তবে সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকটা আমার কাছে স্থানিক মনে হয়নি। আমি জলটা দেখছি বঙ্গোপসাগরের, মানুষগুলো দেখছি বঙ্গোপসাগরের, তাদের পোশাক-আশাক দেখছি বঙ্গোপসাগরের, কিন্তু সংগীতের যে ডিজাইনটা, সেটা বঙ্গোপসাগরের কি না বা বাংলার সংগীত অনুষঙ্গটা ঠিকভাবে হলো কি না, সেটা আমি আরেকবার সিনেমাটা না দেখে বলতে পারব না। কারণ, আমি অনেক তাড়িত হয়ে গিয়েছিলাম ভিজুয়াল দ্বারা।
আরেকটা বিষয়, ম্যাজিক রিয়েলিজম বা জাদু বাস্তবতার যে জায়গাটা, সেটা সুমন যেভাবে করেছে সেটা তার বিষয়, যদিও একটা ডিজাইনে সে করেছে সবাইকে একটা ধাক্কা দেওয়ার জন্য শেষে এসে। আমাদের চোখে সে দ্বিধা লাগিয়ে দেয়—এটা মাছ নাকি নারী? একজন তো শুরুতেই বলছিল এটা মাছ, কিন্তু অন্যরা সবাই নারী দেখছে। পরে আমরা সমুদ্রের নিচে দেখি সেই মাছটা কিংবা একই রকম দেখতে একটা মাছ নৌকাটাকে অনুসরণ করছে। আবার মেয়েটা যখন হারিয়ে যায়, তখন দেখি সে জলের নিচে মাছ হয়ে ঘুরছে। পরে আবার সাপ হয়ে আসছে। এই ট্রান্সফরমেশনগুলো খুবই উল্লেখযোগ্য ও জটিল। তবে এটা মূল গল্পের সঙ্গে কানেক্ট করতে পেরেছে এটা নির্মাতার সফলতা। এই যে জাদু এবং বাস্তবতা—এই প্যারালাল জায়গাটা হয়তো আরও নানাভাবে ভাবা যেত, যদিও এই সিনেমায় ম্যাজিক রিয়েলিজমের প্রয়োগ অত্যন্ত সুন্দর।
ফর্মুলা সিনেমার বাইরে সিনেমা তৈরির একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবার। বহুদিন ধরেই চলছিল এই চেষ্টা, কিন্তু গত তিন বছরে এটা একটি সংগঠিত রূপ নিচ্ছে। এমন সময়ে ‘হাওয়া’র সাফল্যে নতুন নির্মাতারা যেটা করতে পারেন, সেটা হচ্ছে নিজের মতো করে গল্প বলা, নিজের মতো করে নির্মাণশৈলীটা নির্মাণ করা এবং বিষয়-বৈচিত্র্যে ভিন্নতা আনা। দর্শক তো হলে ফেরার চেষ্টা করছে, আমাদের তরুণেরাও ভিন্ন ধরনের সিনেমা বানানোর চেষ্টা করছে—এই দুইয়ের একটা সংযোগ ঘটতে হবে। আমি সাম্প্রতিক কিছু সিনেমার কথা বলতে চাই ‘হাসিনা: ডটার্স টেল’, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’, ‘নোনাজলের কাব্য’, ‘চন্দ্রাবতী কথা’ এবং সবশেষ ‘হাওয়া’।
মাত্র তিন বছরে বদলে গেল বাংলা চলচ্চিত্রের ভাষা। সবাই এক ভাষায় কথা বলছে না কিন্তু সবাই তার নিজস্ব ভাষায় পর্দায় বয়ান করছে তার কথা। একই আঙ্গিক ও নির্মাণকৌশল নয়, ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে চিত্রময় হয়ে উঠছে আমাদের রুপালি পর্দা। আমি প্রবলভাবে আশাবাদী হয়ে উঠেছি। কিন্তু সব কটি সিনেমাই কি দর্শক একভাবে নিয়েছে? নেয়নি, নেওয়ার দরকারও নেই। এভাবেই সিনেমা হওয়া উচিত, এর মাঝে কিছু সিনেমা অসাধারণভাবে দর্শক দ্বারা গৃহীত হবে, আবার যে সিনেমাগুলো ব্যাপকভাবে গৃহীত হলো না কিন্তু নতুন একটি আঙ্গিক, ভাষা, নির্মাণরীতি নিয়ে হাজির হলো, সেটার ওপর নির্ভর করে আগামী দিন হয়তো আবার এ ধরনের জনপ্রিয় একটা সিনেমা হয়েও যেতে পারে। এই চেষ্টাটা জারি রাখতে হবে। ফর্মুলায় ফেরত যাওয়া ঠিক হবে না।
১৭ কোটি মানুষের দেশে যদি ১২ কোটিও প্রাপ্তবয়স্ক ধরে নিই, তাহলেও তো ১২ কোটি গল্প আছে আমাদের। কিন্তু আমরা তো সেদিকে হাত বাড়াচ্ছি না। এই যে মেজবাউর রহমান সুমন সমুদ্রের দিকে হাত বাড়িয়েছে, আমি একে সাধুবাদ জানাই। একটা এপিক স্ট্রাকচার নিয়েছে সুমন, এটা গুরুত্বপূর্ণ, আঙ্গিকের জায়গা থেকে। মহাকাব্যিক একটা জীবন। এই জীবনে শুধু প্রেম এবং দুজন মানুষের হানাহানি না, এখানে সমুদ্রের একটা ভূমিকা আছে, সমুদ্রের নিচের প্রাণিকুলের ভূমিকা আছে। ম্যাজিক রিয়েলিজমের যে জায়গাটা—একটা নারী মাছ হয়ে যাচ্ছে, আবার সাপ হয়ে দংশন করছে। আমাদের মিথে সাপ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটাকে আধুনিক জীবনে সুমন প্রয়োগ করেছে অন্য রকমভাবে।
আমাদের শতবর্ষের যে ফোক রয়েছে, যে মিথ রয়েছে তাতে ম্যাজিক রিয়েলিজমের উপস্থিতি আছে। সেটাকে সুমন আধুনিক প্রেক্ষাপটে, বর্তমান অর্থনৈতিক জায়গায় একটা ইঞ্জিন নৌকায় নিয়ে গিয়ে স্থাপন করতে পেরেছে এবং তার নিচে যে বঙ্গোপসাগর, তার তলদেশেরও অনেকের সাক্ষাৎ আমরা পেয়েছি। সেখানে দিনরাত্রির কাব্যও তৈরি হয়েছে। দিনের বেলায় আকাশটা এক রকম, আবার রাতের বেলায় অন্য রকম। দিনের বেলায় সমুদ্রের জল এক রকম, আবার রাতের বেলায় সমুদ্রের জল ও শব্দ পরিবর্তন হয়ে যায়। এই যে বৈচিত্র্যটা সুমন তৈরি করতে পেরেছে, এটা আমার কাছে বৈপ্লবিক মনে হয়েছে। সে যা ভেবেছে তা করার চেষ্টা করেছে।
কোথাও কোনো সেট তৈরি করে নয়, ৪৫ দিনের শুটিংটা সমুদ্রের মাঝেই করেছে। এবং এই পুরো কাজটা অসম্ভব কঠিন মনে হয়েছে আমার কাছে। একটা ফ্লোটিং বোটে সমুদ্রের মাঝখানে শুটিং করা চাট্টিখানি কথা নয়। শিল্প যে শ্রম দাবি করে, ঘাম দাবি করে—এই সিনেমাটি সেটা প্রমাণ করে। সিনেমার গান তো এরই মধ্যে মানুষের মনে গেঁথে গেছে। তবে সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকটা আমার কাছে স্থানিক মনে হয়নি। আমি জলটা দেখছি বঙ্গোপসাগরের, মানুষগুলো দেখছি বঙ্গোপসাগরের, তাদের পোশাক-আশাক দেখছি বঙ্গোপসাগরের, কিন্তু সংগীতের যে ডিজাইনটা, সেটা বঙ্গোপসাগরের কি না বা বাংলার সংগীত অনুষঙ্গটা ঠিকভাবে হলো কি না, সেটা আমি আরেকবার সিনেমাটা না দেখে বলতে পারব না। কারণ, আমি অনেক তাড়িত হয়ে গিয়েছিলাম ভিজুয়াল দ্বারা।
আরেকটা বিষয়, ম্যাজিক রিয়েলিজম বা জাদু বাস্তবতার যে জায়গাটা, সেটা সুমন যেভাবে করেছে সেটা তার বিষয়, যদিও একটা ডিজাইনে সে করেছে সবাইকে একটা ধাক্কা দেওয়ার জন্য শেষে এসে। আমাদের চোখে সে দ্বিধা লাগিয়ে দেয়—এটা মাছ নাকি নারী? একজন তো শুরুতেই বলছিল এটা মাছ, কিন্তু অন্যরা সবাই নারী দেখছে। পরে আমরা সমুদ্রের নিচে দেখি সেই মাছটা কিংবা একই রকম দেখতে একটা মাছ নৌকাটাকে অনুসরণ করছে। আবার মেয়েটা যখন হারিয়ে যায়, তখন দেখি সে জলের নিচে মাছ হয়ে ঘুরছে। পরে আবার সাপ হয়ে আসছে। এই ট্রান্সফরমেশনগুলো খুবই উল্লেখযোগ্য ও জটিল। তবে এটা মূল গল্পের সঙ্গে কানেক্ট করতে পেরেছে এটা নির্মাতার সফলতা। এই যে জাদু এবং বাস্তবতা—এই প্যারালাল জায়গাটা হয়তো আরও নানাভাবে ভাবা যেত, যদিও এই সিনেমায় ম্যাজিক রিয়েলিজমের প্রয়োগ অত্যন্ত সুন্দর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
২০ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫