অরুণ কর্মকার
একাধিক কারণে বিদ্যুতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে। প্রথমত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠবে এবং দেশের অনেক জায়গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের আলাপ-আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আমদানি করা সব ধরনের জ্বালানির ওপর শুল্ক বসাতে এবং বাড়াতে চায় বলে একটি কথা শোনা যাচ্ছে। তৃতীয়ত, মার্কিন ডলারের সরকারনির্ধারিত দাম একলাফে সাত টাকা বাড়িয়ে দেওয়ায় টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়েছে, যার প্রভাব বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে অবধারিতভাবে পড়বে। চতুর্থত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসেবে এ খাতে সরকারের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এই কারণগুলো বিদ্যুৎ খাতে সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। আর সরকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় বিদ্যুতের গ্রাহকেরাও বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন। অবশ্য গ্রাহকেরা এখনো যে খুব স্বস্তিতে আছেন, তা নয়। কেননা ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বেড়েছে নয়বার। আর গত দেড় বছরে বেড়েছে চারবার। সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তারও অন্তর্নিহিত বিষয় দাম বৃদ্ধি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইতিমধ্যে গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ডলারের দাম এবং সরকারের ভর্তুকি সমন্বয় করতে গিয়ে বিদ্যুতের দাম বছরে চার-পাঁচবার সমন্বয় করা হতে পারে। এরই প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ খাতে সরকারের যে চ্যালেঞ্জগুলো গ্রাহকদেরও বিপাকে ফেলবে, সেগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করা প্রয়োজন।
সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন। এ জন্য প্রথমেই প্রয়োজন প্রকৃত চাহিদা নিরূপণ করা। এটি করা হয়নি বলেই রেকর্ডভাঙা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও বাস্তবে অনেক এলাকায় লোডশেডিং করা হয়। কিন্তু খাতাপত্রে কোনো লোডশেডিং থাকে না। চাহিদা অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত থাকে জ্বালানির প্রাপ্যতার ব্যাপারটিও। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে প্রয়োজনীয় জ্বালানির (বিশেষ করে গ্যাস) অভাবে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয় বলে এখন সবাই জানেন।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ। এ বিষয়টি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অংশ। সরকার এসডিজিতে স্বাক্ষর করে এই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সক্ষমতা। আমরা জানি, সঞ্চালনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার জন্য মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নয়ন হলেও গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র এখনো তা হয়নি। এটি না হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।
তৃতীয় চ্যালেঞ্জ, বিদ্যুতের দাম। দাম মানে সব শ্রেণির গ্রাহকের কাছে বহনযোগ্য দাম (অ্যাফোর্ডেবল প্রাইস)। এই অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসও এসডিজির অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আমাদের দেশে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা সব শ্রেণির গ্রাহকের কাছে বহনযোগ্য বলা যাবে না। এখানে ২০১০ সালে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় দাম ছিল ৩ টাকা ৭৩ পয়সা। ২০২৪ সালে তা হয়েছে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর উপরোল্লিখিত বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে প্রতিবছর বিদ্যুতের দাম আরও বাড়বে (সমন্বয় করা হলে)। তারপরও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির মতো অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দিয়ে হয়তো চেষ্টা করা হবে দাম বৃদ্ধি এবং অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসের যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার। কিন্তু বাস্তবতা হবে ভিন্নতর।
অবশ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে টাকার অবমূল্যায়নজনিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ বিদ্যুৎ ও জ্বালানির আমদানি ছাড়াও অবকাঠামো নির্মাণে যে বিনিয়োগ করা হয়, এর একটি বড় অংশ করা হয় মার্কিন ডলারে। কিন্তু গ্রাহকের কাছ থেকে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম নেওয়া হয় দেশীয় মুদ্রা টাকায়। ফলে টাকার অবমূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দামও পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন হয়। না হলে তো বিনিয়োগই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। এটিও এক বাস্তবতা, যা সরকারকে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
চতুর্থ চ্যালেঞ্জ, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবিলা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট অসহনীয় গরমে কেবল যে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে তা নয়; বিদ্যুৎ উৎপাদনব্যবস্থার দক্ষতাও কমিয়ে ফেলে। বিদ্যুতের উৎপাদন যন্ত্রাদি, ট্রান্সফরমার, তারসহ সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সামগ্রিক দক্ষতা প্রচণ্ড গরমে হ্রাস পায়। বিকল হওয়ার ঘটনাও বাড়ে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়; যার সঙ্গে জড়িত বাড়তি বিনিয়োগের বিষয়। বৈশ্বিক উষ্ণতা ক্রমাগতভাবে বাড়বে বলেই ধারণা করা হয়। অন্তত কমবে যে না, তা নিশ্চিত। কারণ উষ্ণতা কমানোর আন্তর্জাতিক উদ্যোগে বলার মতো সাফল্য নেই। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ এক বড় সমস্যা, যা সৃষ্টি করেছে তথাকথিত উন্নত বিশ্ব।
পঞ্চম চ্যালেঞ্জ, বৈদেশিক মুদ্রার প্রাপ্যতা। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্পর্শকাতর পর্যায়ে নেমে গেছে। ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারেরও কম। অথচ জ্বালানি (জ্বালানি তেল, এলএনজি, কয়লা এবং এলপি গ্যাস) আমদানি, বিদ্যুৎ আমদানি এবং বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আইপিপি) বিল পরিশোধের জন্য ডলারের প্রয়োজন ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। রপ্তানি আয় এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো ডলার (রেমিট্যান্স) দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করা বর্তমান বাস্তবতায় যথেষ্টই কঠিন একটি বিষয়। অথচ আমদানির এমন কোনো বিকল্প আমরা তৈরি করিনি, যাতে সংকটকালীন স্থবিরতা সৃষ্টি না হয়। দেশের নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ উন্নয়ন হতে পারত সেই বিকল্প, যা সংকটের সময় সুরক্ষা দিত।
ষষ্ঠ চ্যালেঞ্জ, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ। বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের যেকোনো বড় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়া সারা পৃথিবীতে গ্রহণযোগ্য একটি পন্থা। এই ঋণ দেশের ব্যাংক থেকেও নেওয়া হয়। বৈদেশিক ঋণও নেওয়া হয়। বিনিয়োগের জন্য নেওয়া এই ঋণ পরিশোধের পদ্ধতি হলো ক্যাপাসিটি পেমেন্ট। সরকারি-বেসরকারি দুই ধরনের প্রকল্পেই এই ক্যাপাসিটি পেমেন্টের ব্যবস্থা থাকে। ক্যাপাসিটি পেমেন্টের টাকা কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানির পকেটে যায় না। যায় ঋণদানকারী ব্যাংকে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দ্রুত এবং প্রয়োজনের তুলনায় কিছু বেশি (?) বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্যাপাসিটি পেমেন্টের অঙ্কটাও বেশ বড়। তা ছাড়া জ্বালানির অভাবে বন্ধ রাখতে হচ্ছে এমন কেন্দ্রের জন্যও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ বিদ্যুৎ খাতের ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছে। এরপর শুরু হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধের পালা। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের যে আর্থিক দায়-দেনা দাঁড়িয়েছে, তা এই খাতের পক্ষে বহন করা কঠিন।
ফলে সরকার সব সময় যেটা করে, ক্রমাগতভাবে দাম বাড়িয়ে গ্রাহকের কাঁধের বোঝাটা আরও বেশি ভারী করে তোলে। তাতে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পূরণ অবশ্য সম্ভব
হয় না। কিন্তু সেই ঘাটতি এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ এবং বড় দুশ্চিন্তার বিষয়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
একাধিক কারণে বিদ্যুতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে। প্রথমত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠবে এবং দেশের অনেক জায়গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের আলাপ-আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আমদানি করা সব ধরনের জ্বালানির ওপর শুল্ক বসাতে এবং বাড়াতে চায় বলে একটি কথা শোনা যাচ্ছে। তৃতীয়ত, মার্কিন ডলারের সরকারনির্ধারিত দাম একলাফে সাত টাকা বাড়িয়ে দেওয়ায় টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়েছে, যার প্রভাব বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে অবধারিতভাবে পড়বে। চতুর্থত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসেবে এ খাতে সরকারের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এই কারণগুলো বিদ্যুৎ খাতে সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। আর সরকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় বিদ্যুতের গ্রাহকেরাও বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন। অবশ্য গ্রাহকেরা এখনো যে খুব স্বস্তিতে আছেন, তা নয়। কেননা ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বেড়েছে নয়বার। আর গত দেড় বছরে বেড়েছে চারবার। সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তারও অন্তর্নিহিত বিষয় দাম বৃদ্ধি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইতিমধ্যে গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ডলারের দাম এবং সরকারের ভর্তুকি সমন্বয় করতে গিয়ে বিদ্যুতের দাম বছরে চার-পাঁচবার সমন্বয় করা হতে পারে। এরই প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ খাতে সরকারের যে চ্যালেঞ্জগুলো গ্রাহকদেরও বিপাকে ফেলবে, সেগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করা প্রয়োজন।
সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন। এ জন্য প্রথমেই প্রয়োজন প্রকৃত চাহিদা নিরূপণ করা। এটি করা হয়নি বলেই রেকর্ডভাঙা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও বাস্তবে অনেক এলাকায় লোডশেডিং করা হয়। কিন্তু খাতাপত্রে কোনো লোডশেডিং থাকে না। চাহিদা অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত থাকে জ্বালানির প্রাপ্যতার ব্যাপারটিও। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে প্রয়োজনীয় জ্বালানির (বিশেষ করে গ্যাস) অভাবে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয় বলে এখন সবাই জানেন।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ। এ বিষয়টি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অংশ। সরকার এসডিজিতে স্বাক্ষর করে এই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সক্ষমতা। আমরা জানি, সঞ্চালনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার জন্য মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নয়ন হলেও গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র এখনো তা হয়নি। এটি না হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।
তৃতীয় চ্যালেঞ্জ, বিদ্যুতের দাম। দাম মানে সব শ্রেণির গ্রাহকের কাছে বহনযোগ্য দাম (অ্যাফোর্ডেবল প্রাইস)। এই অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসও এসডিজির অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আমাদের দেশে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা সব শ্রেণির গ্রাহকের কাছে বহনযোগ্য বলা যাবে না। এখানে ২০১০ সালে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় দাম ছিল ৩ টাকা ৭৩ পয়সা। ২০২৪ সালে তা হয়েছে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর উপরোল্লিখিত বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে প্রতিবছর বিদ্যুতের দাম আরও বাড়বে (সমন্বয় করা হলে)। তারপরও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির মতো অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দিয়ে হয়তো চেষ্টা করা হবে দাম বৃদ্ধি এবং অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসের যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার। কিন্তু বাস্তবতা হবে ভিন্নতর।
অবশ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে টাকার অবমূল্যায়নজনিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ বিদ্যুৎ ও জ্বালানির আমদানি ছাড়াও অবকাঠামো নির্মাণে যে বিনিয়োগ করা হয়, এর একটি বড় অংশ করা হয় মার্কিন ডলারে। কিন্তু গ্রাহকের কাছ থেকে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম নেওয়া হয় দেশীয় মুদ্রা টাকায়। ফলে টাকার অবমূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দামও পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন হয়। না হলে তো বিনিয়োগই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। এটিও এক বাস্তবতা, যা সরকারকে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
চতুর্থ চ্যালেঞ্জ, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবিলা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট অসহনীয় গরমে কেবল যে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে তা নয়; বিদ্যুৎ উৎপাদনব্যবস্থার দক্ষতাও কমিয়ে ফেলে। বিদ্যুতের উৎপাদন যন্ত্রাদি, ট্রান্সফরমার, তারসহ সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সামগ্রিক দক্ষতা প্রচণ্ড গরমে হ্রাস পায়। বিকল হওয়ার ঘটনাও বাড়ে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়; যার সঙ্গে জড়িত বাড়তি বিনিয়োগের বিষয়। বৈশ্বিক উষ্ণতা ক্রমাগতভাবে বাড়বে বলেই ধারণা করা হয়। অন্তত কমবে যে না, তা নিশ্চিত। কারণ উষ্ণতা কমানোর আন্তর্জাতিক উদ্যোগে বলার মতো সাফল্য নেই। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ এক বড় সমস্যা, যা সৃষ্টি করেছে তথাকথিত উন্নত বিশ্ব।
পঞ্চম চ্যালেঞ্জ, বৈদেশিক মুদ্রার প্রাপ্যতা। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্পর্শকাতর পর্যায়ে নেমে গেছে। ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারেরও কম। অথচ জ্বালানি (জ্বালানি তেল, এলএনজি, কয়লা এবং এলপি গ্যাস) আমদানি, বিদ্যুৎ আমদানি এবং বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আইপিপি) বিল পরিশোধের জন্য ডলারের প্রয়োজন ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। রপ্তানি আয় এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো ডলার (রেমিট্যান্স) দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করা বর্তমান বাস্তবতায় যথেষ্টই কঠিন একটি বিষয়। অথচ আমদানির এমন কোনো বিকল্প আমরা তৈরি করিনি, যাতে সংকটকালীন স্থবিরতা সৃষ্টি না হয়। দেশের নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ উন্নয়ন হতে পারত সেই বিকল্প, যা সংকটের সময় সুরক্ষা দিত।
ষষ্ঠ চ্যালেঞ্জ, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ। বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের যেকোনো বড় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়া সারা পৃথিবীতে গ্রহণযোগ্য একটি পন্থা। এই ঋণ দেশের ব্যাংক থেকেও নেওয়া হয়। বৈদেশিক ঋণও নেওয়া হয়। বিনিয়োগের জন্য নেওয়া এই ঋণ পরিশোধের পদ্ধতি হলো ক্যাপাসিটি পেমেন্ট। সরকারি-বেসরকারি দুই ধরনের প্রকল্পেই এই ক্যাপাসিটি পেমেন্টের ব্যবস্থা থাকে। ক্যাপাসিটি পেমেন্টের টাকা কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানির পকেটে যায় না। যায় ঋণদানকারী ব্যাংকে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দ্রুত এবং প্রয়োজনের তুলনায় কিছু বেশি (?) বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্যাপাসিটি পেমেন্টের অঙ্কটাও বেশ বড়। তা ছাড়া জ্বালানির অভাবে বন্ধ রাখতে হচ্ছে এমন কেন্দ্রের জন্যও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ বিদ্যুৎ খাতের ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছে। এরপর শুরু হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধের পালা। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের যে আর্থিক দায়-দেনা দাঁড়িয়েছে, তা এই খাতের পক্ষে বহন করা কঠিন।
ফলে সরকার সব সময় যেটা করে, ক্রমাগতভাবে দাম বাড়িয়ে গ্রাহকের কাঁধের বোঝাটা আরও বেশি ভারী করে তোলে। তাতে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পূরণ অবশ্য সম্ভব
হয় না। কিন্তু সেই ঘাটতি এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ এবং বড় দুশ্চিন্তার বিষয়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
অরুণ কর্মকার
একাধিক কারণে বিদ্যুতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে। প্রথমত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠবে এবং দেশের অনেক জায়গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের আলাপ-আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আমদানি করা সব ধরনের জ্বালানির ওপর শুল্ক বসাতে এবং বাড়াতে চায় বলে একটি কথা শোনা যাচ্ছে। তৃতীয়ত, মার্কিন ডলারের সরকারনির্ধারিত দাম একলাফে সাত টাকা বাড়িয়ে দেওয়ায় টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়েছে, যার প্রভাব বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে অবধারিতভাবে পড়বে। চতুর্থত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসেবে এ খাতে সরকারের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এই কারণগুলো বিদ্যুৎ খাতে সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। আর সরকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় বিদ্যুতের গ্রাহকেরাও বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন। অবশ্য গ্রাহকেরা এখনো যে খুব স্বস্তিতে আছেন, তা নয়। কেননা ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বেড়েছে নয়বার। আর গত দেড় বছরে বেড়েছে চারবার। সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তারও অন্তর্নিহিত বিষয় দাম বৃদ্ধি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইতিমধ্যে গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ডলারের দাম এবং সরকারের ভর্তুকি সমন্বয় করতে গিয়ে বিদ্যুতের দাম বছরে চার-পাঁচবার সমন্বয় করা হতে পারে। এরই প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ খাতে সরকারের যে চ্যালেঞ্জগুলো গ্রাহকদেরও বিপাকে ফেলবে, সেগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করা প্রয়োজন।
সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন। এ জন্য প্রথমেই প্রয়োজন প্রকৃত চাহিদা নিরূপণ করা। এটি করা হয়নি বলেই রেকর্ডভাঙা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও বাস্তবে অনেক এলাকায় লোডশেডিং করা হয়। কিন্তু খাতাপত্রে কোনো লোডশেডিং থাকে না। চাহিদা অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত থাকে জ্বালানির প্রাপ্যতার ব্যাপারটিও। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে প্রয়োজনীয় জ্বালানির (বিশেষ করে গ্যাস) অভাবে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয় বলে এখন সবাই জানেন।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ। এ বিষয়টি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অংশ। সরকার এসডিজিতে স্বাক্ষর করে এই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সক্ষমতা। আমরা জানি, সঞ্চালনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার জন্য মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নয়ন হলেও গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র এখনো তা হয়নি। এটি না হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।
তৃতীয় চ্যালেঞ্জ, বিদ্যুতের দাম। দাম মানে সব শ্রেণির গ্রাহকের কাছে বহনযোগ্য দাম (অ্যাফোর্ডেবল প্রাইস)। এই অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসও এসডিজির অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আমাদের দেশে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা সব শ্রেণির গ্রাহকের কাছে বহনযোগ্য বলা যাবে না। এখানে ২০১০ সালে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় দাম ছিল ৩ টাকা ৭৩ পয়সা। ২০২৪ সালে তা হয়েছে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর উপরোল্লিখিত বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে প্রতিবছর বিদ্যুতের দাম আরও বাড়বে (সমন্বয় করা হলে)। তারপরও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির মতো অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দিয়ে হয়তো চেষ্টা করা হবে দাম বৃদ্ধি এবং অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসের যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার। কিন্তু বাস্তবতা হবে ভিন্নতর।
অবশ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে টাকার অবমূল্যায়নজনিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ বিদ্যুৎ ও জ্বালানির আমদানি ছাড়াও অবকাঠামো নির্মাণে যে বিনিয়োগ করা হয়, এর একটি বড় অংশ করা হয় মার্কিন ডলারে। কিন্তু গ্রাহকের কাছ থেকে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম নেওয়া হয় দেশীয় মুদ্রা টাকায়। ফলে টাকার অবমূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দামও পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন হয়। না হলে তো বিনিয়োগই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। এটিও এক বাস্তবতা, যা সরকারকে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
চতুর্থ চ্যালেঞ্জ, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবিলা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট অসহনীয় গরমে কেবল যে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে তা নয়; বিদ্যুৎ উৎপাদনব্যবস্থার দক্ষতাও কমিয়ে ফেলে। বিদ্যুতের উৎপাদন যন্ত্রাদি, ট্রান্সফরমার, তারসহ সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সামগ্রিক দক্ষতা প্রচণ্ড গরমে হ্রাস পায়। বিকল হওয়ার ঘটনাও বাড়ে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়; যার সঙ্গে জড়িত বাড়তি বিনিয়োগের বিষয়। বৈশ্বিক উষ্ণতা ক্রমাগতভাবে বাড়বে বলেই ধারণা করা হয়। অন্তত কমবে যে না, তা নিশ্চিত। কারণ উষ্ণতা কমানোর আন্তর্জাতিক উদ্যোগে বলার মতো সাফল্য নেই। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ এক বড় সমস্যা, যা সৃষ্টি করেছে তথাকথিত উন্নত বিশ্ব।
পঞ্চম চ্যালেঞ্জ, বৈদেশিক মুদ্রার প্রাপ্যতা। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্পর্শকাতর পর্যায়ে নেমে গেছে। ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারেরও কম। অথচ জ্বালানি (জ্বালানি তেল, এলএনজি, কয়লা এবং এলপি গ্যাস) আমদানি, বিদ্যুৎ আমদানি এবং বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আইপিপি) বিল পরিশোধের জন্য ডলারের প্রয়োজন ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। রপ্তানি আয় এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো ডলার (রেমিট্যান্স) দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করা বর্তমান বাস্তবতায় যথেষ্টই কঠিন একটি বিষয়। অথচ আমদানির এমন কোনো বিকল্প আমরা তৈরি করিনি, যাতে সংকটকালীন স্থবিরতা সৃষ্টি না হয়। দেশের নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ উন্নয়ন হতে পারত সেই বিকল্প, যা সংকটের সময় সুরক্ষা দিত।
ষষ্ঠ চ্যালেঞ্জ, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ। বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের যেকোনো বড় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়া সারা পৃথিবীতে গ্রহণযোগ্য একটি পন্থা। এই ঋণ দেশের ব্যাংক থেকেও নেওয়া হয়। বৈদেশিক ঋণও নেওয়া হয়। বিনিয়োগের জন্য নেওয়া এই ঋণ পরিশোধের পদ্ধতি হলো ক্যাপাসিটি পেমেন্ট। সরকারি-বেসরকারি দুই ধরনের প্রকল্পেই এই ক্যাপাসিটি পেমেন্টের ব্যবস্থা থাকে। ক্যাপাসিটি পেমেন্টের টাকা কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানির পকেটে যায় না। যায় ঋণদানকারী ব্যাংকে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দ্রুত এবং প্রয়োজনের তুলনায় কিছু বেশি (?) বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্যাপাসিটি পেমেন্টের অঙ্কটাও বেশ বড়। তা ছাড়া জ্বালানির অভাবে বন্ধ রাখতে হচ্ছে এমন কেন্দ্রের জন্যও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ বিদ্যুৎ খাতের ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছে। এরপর শুরু হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধের পালা। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের যে আর্থিক দায়-দেনা দাঁড়িয়েছে, তা এই খাতের পক্ষে বহন করা কঠিন।
ফলে সরকার সব সময় যেটা করে, ক্রমাগতভাবে দাম বাড়িয়ে গ্রাহকের কাঁধের বোঝাটা আরও বেশি ভারী করে তোলে। তাতে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পূরণ অবশ্য সম্ভব
হয় না। কিন্তু সেই ঘাটতি এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ এবং বড় দুশ্চিন্তার বিষয়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
একাধিক কারণে বিদ্যুতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে। প্রথমত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠবে এবং দেশের অনেক জায়গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের আলাপ-আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আমদানি করা সব ধরনের জ্বালানির ওপর শুল্ক বসাতে এবং বাড়াতে চায় বলে একটি কথা শোনা যাচ্ছে। তৃতীয়ত, মার্কিন ডলারের সরকারনির্ধারিত দাম একলাফে সাত টাকা বাড়িয়ে দেওয়ায় টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়েছে, যার প্রভাব বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে অবধারিতভাবে পড়বে। চতুর্থত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসেবে এ খাতে সরকারের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এই কারণগুলো বিদ্যুৎ খাতে সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। আর সরকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় বিদ্যুতের গ্রাহকেরাও বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন। অবশ্য গ্রাহকেরা এখনো যে খুব স্বস্তিতে আছেন, তা নয়। কেননা ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বেড়েছে নয়বার। আর গত দেড় বছরে বেড়েছে চারবার। সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তারও অন্তর্নিহিত বিষয় দাম বৃদ্ধি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইতিমধ্যে গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ডলারের দাম এবং সরকারের ভর্তুকি সমন্বয় করতে গিয়ে বিদ্যুতের দাম বছরে চার-পাঁচবার সমন্বয় করা হতে পারে। এরই প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ খাতে সরকারের যে চ্যালেঞ্জগুলো গ্রাহকদেরও বিপাকে ফেলবে, সেগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করা প্রয়োজন।
সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন। এ জন্য প্রথমেই প্রয়োজন প্রকৃত চাহিদা নিরূপণ করা। এটি করা হয়নি বলেই রেকর্ডভাঙা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও বাস্তবে অনেক এলাকায় লোডশেডিং করা হয়। কিন্তু খাতাপত্রে কোনো লোডশেডিং থাকে না। চাহিদা অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত থাকে জ্বালানির প্রাপ্যতার ব্যাপারটিও। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে প্রয়োজনীয় জ্বালানির (বিশেষ করে গ্যাস) অভাবে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয় বলে এখন সবাই জানেন।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ। এ বিষয়টি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অংশ। সরকার এসডিজিতে স্বাক্ষর করে এই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সক্ষমতা। আমরা জানি, সঞ্চালনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার জন্য মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর শহরাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নয়ন হলেও গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র এখনো তা হয়নি। এটি না হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।
তৃতীয় চ্যালেঞ্জ, বিদ্যুতের দাম। দাম মানে সব শ্রেণির গ্রাহকের কাছে বহনযোগ্য দাম (অ্যাফোর্ডেবল প্রাইস)। এই অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসও এসডিজির অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আমাদের দেশে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা সব শ্রেণির গ্রাহকের কাছে বহনযোগ্য বলা যাবে না। এখানে ২০১০ সালে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় দাম ছিল ৩ টাকা ৭৩ পয়সা। ২০২৪ সালে তা হয়েছে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর উপরোল্লিখিত বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে প্রতিবছর বিদ্যুতের দাম আরও বাড়বে (সমন্বয় করা হলে)। তারপরও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির মতো অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দিয়ে হয়তো চেষ্টা করা হবে দাম বৃদ্ধি এবং অ্যাফোর্ডেবল প্রাইসের যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার। কিন্তু বাস্তবতা হবে ভিন্নতর।
অবশ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে টাকার অবমূল্যায়নজনিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ বিদ্যুৎ ও জ্বালানির আমদানি ছাড়াও অবকাঠামো নির্মাণে যে বিনিয়োগ করা হয়, এর একটি বড় অংশ করা হয় মার্কিন ডলারে। কিন্তু গ্রাহকের কাছ থেকে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম নেওয়া হয় দেশীয় মুদ্রা টাকায়। ফলে টাকার অবমূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দামও পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন হয়। না হলে তো বিনিয়োগই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। এটিও এক বাস্তবতা, যা সরকারকে বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
চতুর্থ চ্যালেঞ্জ, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবিলা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট অসহনীয় গরমে কেবল যে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে তা নয়; বিদ্যুৎ উৎপাদনব্যবস্থার দক্ষতাও কমিয়ে ফেলে। বিদ্যুতের উৎপাদন যন্ত্রাদি, ট্রান্সফরমার, তারসহ সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার সামগ্রিক দক্ষতা প্রচণ্ড গরমে হ্রাস পায়। বিকল হওয়ার ঘটনাও বাড়ে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়; যার সঙ্গে জড়িত বাড়তি বিনিয়োগের বিষয়। বৈশ্বিক উষ্ণতা ক্রমাগতভাবে বাড়বে বলেই ধারণা করা হয়। অন্তত কমবে যে না, তা নিশ্চিত। কারণ উষ্ণতা কমানোর আন্তর্জাতিক উদ্যোগে বলার মতো সাফল্য নেই। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ এক বড় সমস্যা, যা সৃষ্টি করেছে তথাকথিত উন্নত বিশ্ব।
পঞ্চম চ্যালেঞ্জ, বৈদেশিক মুদ্রার প্রাপ্যতা। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্পর্শকাতর পর্যায়ে নেমে গেছে। ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারেরও কম। অথচ জ্বালানি (জ্বালানি তেল, এলএনজি, কয়লা এবং এলপি গ্যাস) আমদানি, বিদ্যুৎ আমদানি এবং বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আইপিপি) বিল পরিশোধের জন্য ডলারের প্রয়োজন ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। রপ্তানি আয় এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো ডলার (রেমিট্যান্স) দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করা বর্তমান বাস্তবতায় যথেষ্টই কঠিন একটি বিষয়। অথচ আমদানির এমন কোনো বিকল্প আমরা তৈরি করিনি, যাতে সংকটকালীন স্থবিরতা সৃষ্টি না হয়। দেশের নিজস্ব জ্বালানি সম্পদ উন্নয়ন হতে পারত সেই বিকল্প, যা সংকটের সময় সুরক্ষা দিত।
ষষ্ঠ চ্যালেঞ্জ, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ। বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের যেকোনো বড় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়া সারা পৃথিবীতে গ্রহণযোগ্য একটি পন্থা। এই ঋণ দেশের ব্যাংক থেকেও নেওয়া হয়। বৈদেশিক ঋণও নেওয়া হয়। বিনিয়োগের জন্য নেওয়া এই ঋণ পরিশোধের পদ্ধতি হলো ক্যাপাসিটি পেমেন্ট। সরকারি-বেসরকারি দুই ধরনের প্রকল্পেই এই ক্যাপাসিটি পেমেন্টের ব্যবস্থা থাকে। ক্যাপাসিটি পেমেন্টের টাকা কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানির পকেটে যায় না। যায় ঋণদানকারী ব্যাংকে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দ্রুত এবং প্রয়োজনের তুলনায় কিছু বেশি (?) বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্যাপাসিটি পেমেন্টের অঙ্কটাও বেশ বড়। তা ছাড়া জ্বালানির অভাবে বন্ধ রাখতে হচ্ছে এমন কেন্দ্রের জন্যও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ বিদ্যুৎ খাতের ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছে। এরপর শুরু হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধের পালা। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের যে আর্থিক দায়-দেনা দাঁড়িয়েছে, তা এই খাতের পক্ষে বহন করা কঠিন।
ফলে সরকার সব সময় যেটা করে, ক্রমাগতভাবে দাম বাড়িয়ে গ্রাহকের কাঁধের বোঝাটা আরও বেশি ভারী করে তোলে। তাতে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পূরণ অবশ্য সম্ভব
হয় না। কিন্তু সেই ঘাটতি এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ এবং বড় দুশ্চিন্তার বিষয়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
একাধিক কারণে বিদ্যুতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে। প্রথমত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠবে এবং দেশের অনেক জায়গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়
১৮ মে ২০২৪‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
একাধিক কারণে বিদ্যুতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে। প্রথমত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠবে এবং দেশের অনেক জায়গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়
১৮ মে ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
একাধিক কারণে বিদ্যুতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে। প্রথমত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠবে এবং দেশের অনেক জায়গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়
১৮ মে ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
একাধিক কারণে বিদ্যুতের বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসছে। প্রথমত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠবে এবং দেশের অনেক জায়গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আসন্ন জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়
১৮ মে ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫