Ajker Patrika

চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং হত্যা মামলার আসামি ফের সক্রিয়

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ০৭
চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং হত্যা মামলার আসামি ফের সক্রিয়

চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জিয়াউল হক ওরফে ফয়সাল ফের এলাকায় উৎপাত শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়ানহাট এলাকায় চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ীদের মারধর, ছিনতাই ও মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ দিনের ব্যবধানে তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদার দাবিতে পৃথক দুটি ঘটনায় তিনজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে একটি ঘটনায় পুলিশের সামনেই দলবল নিয়ে দুজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। পৃথক দুটি ঘটনায় ডবলমুরিং থানায় হত্যাচেষ্টার দুটি মামলা হয়েছে।

জানতে চাইলে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া গতকাল রোববার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফয়সালের বিরুদ্ধে আমাদের থানায় সম্প্রতি দুটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গত কয়েক দিনে ১২ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ফয়সালকে এখানো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এলাকায় ট্রাক ও টেম্পো স্ট্যান্ড নিয়ে চাঁদাবাজির কথা এলাকার লোকজনের মুখে থেকে শুনেছি। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেননি। তবে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। শিগগিরই এ বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডবলমুরিং থানাধীন দেওয়ানহাট মোড় কেন্দ্রিক চাঁদাবাজিতে সক্রিয় ফয়সাল ও তাঁর সহযোগীরা। ফুটপাত-সড়কে ভাসমান দোকান ও বিভিন্ন পরিবহন স্ট্যান্ড বসিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকার চাঁদা তুলছে গ্রুপটি।

সর্বশেষ গত ১৭ এপ্রিল চাঁদা না পেয়ে এক ব্যক্তিকে দলবল নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন ফয়সাল ও তাঁর লোকজন। দেওয়ানহাট মোড়ে টেম্পোস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি নিয়ে শাহ আলম নামের ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে আহত করেন সন্ত্রাসীরা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শাহ আলম জিয়াউল হক ফয়সালকে প্রধান আসামি করে কয়েকজনের নামে একটি মামলা করেন। এর আগে গত ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে পুলিশের সামনে দুই যুবককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন ফয়সাল। এ ঘটনাতেও ডবলমুরিং থানায় মামলা হয়েছিল।

পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় চট্টগ্রাম সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ও নগর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে। এই হত্যাকাণ্ডে ভাড়াটে হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন ফয়সাল। সদরঘাট থানার চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির চার্জশিটভুক্ত আসামি করা হয় তাঁকে।

ওই মামলাটির তদন্ত সম্পন্ন করা তৎকালীন পিবিআইয়ের কর্মকর্তা ও বর্তমানে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, সুদীপ্ত হত্যা মামলাটি তদন্তের সময় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তৎপরতা পাওয়া যায়। ওই মামলায় পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

জানা যায়, সুদীপ্ত হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর কিছুদিন কারাগারে থেকে পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন ফয়সাল। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন গ্যাং। তাঁর গ্যাংয়ের অধিকাংশ সদস্য কিশোর-তরুণ। তাঁর নেতৃত্বে নগরীর দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা, স্টেশন রোড, লালখানবাজার, খুলশীসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দীর্ঘদিন ছিনতাইকারীরা সক্রিয় থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফয়সালের সহযোগী দিঘির পাড় এলাকার আব্দুন নূর তুষার ও রাকিব চক্রটির নিয়ন্ত্রণ করছেন। ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সিআরবি এলাকা থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলি ও ছুরিসহ ছিনতাইয়ের সময় ডিবি পুলিশের হাতে আটক হন তাঁরা। পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত