Ajker Patrika

যৌতুক না পেয়ে নির্যাতনের অভিযোগ

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ১৯
Thumbnail image

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক বিচারকের বিরুদ্ধে। রংপুর জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালত-২-এর বিচারক দেবাংশু কুমারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনে মামলার আবেদন করেছেন তাঁর স্ত্রী চিকিৎসক হৃদিতা সরকার।

মামলার আবেদনে বিচারক ছাড়াও আরও তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২-এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামানের আদালতে আবেদনটি করেন হৃদিতা।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) খন্দকার রফিক হাসনাইন সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার আবেদনের ওপর শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।

একজন বিচারকের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রীর মামলার আবেদনের ঘটনায় আদালতপাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন দেবাংশু কুমার সরকার (৩২), তাঁর বাবা সুধাংশু কুমার সরকার চয়ন (৬০), ফুপাতো ভাই নিলয় দে সরকার (২৭) ও চাচা রঞ্জন সরকার (৫০)। সবার ঠিকানা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১১ মে হালুয়াঘাট পূর্ব বাজার এলাকার দেবাংশুর সঙ্গে একই উপজেলার উত্তর খয়রাকুড়ি গ্রামের নারায়ণ সরকারের মেয়ে হৃদিতার বিয়ে হয়। বিয়ের আসরে বর দেবাংশু ও তাঁর পরিবার কনেপক্ষের কাছে নগদ ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করলে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। পরে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় হিন্দু আইনে বিয়ে সম্পন্ন হয়।

অভিযোগে বলা হয়, কনের বাবা বিয়ের অনুষ্ঠানে ৫০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল (উপহার সামগ্রী) বরপক্ষকে দেন। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পার না হতেই দেবাংশু নেশাগ্রস্ত হয়ে নতুন একটি গাড়ি কেনার জন্য তাঁর স্ত্রী হৃদিতাকে ৩০ লাখ টাকা এনে দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু হৃদিতা তাঁর বাবার অক্ষমতার কথা জানালে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকেন।

আবেদনে আরও বলা হয়, দেবাংশু এরই মধ্যে ঠাকুরগাঁও থেকে নেত্রকোনা হয়ে রংপুর জজশিপে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু তিনি যৌতুকের জন্য নির্যাতন, পরকীয়া ও মাদক সেবনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন। স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে সন্তানের প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে দিন দিন অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন।

অবশেষে প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে দাবি করা যৌতুকের টাকা না পেয়ে দেবাংশু গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি ৩০ লাখ টাকা ছাড়া হৃদিতার সঙ্গে সংসার না করার সিদ্ধান্ত জানান। এ নিয়ে ২৮ মার্চ হৃদিতা তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে উপস্থিত হলে অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করাসহ তাঁর ওপর হামলা চালান। এ ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হয়ে ২১ দিন চিকিৎসা নেন। শেষে ১৭ এপ্রিল রংপুর কোতোয়ালি থানায় এজাহার করতে গেলে আসামি বিচারক হওয়ায় থানা থেকে মামলা নথিভুক্ত করতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। তাই আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি।

পিপি রফিক হাসনাইন সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার মামলার আবেদনের শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত। অভিযোগকারী চিকিৎসক হৃদিতা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত