Ajker Patrika

উপহারের ঘরে অনিয়ম

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৮: ৩০
উপহারের ঘরে অনিয়ম

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের উপহারের ঘর তৈরিতে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের কাজে ভিত্তি ছাড়াই ঘর নির্মাণ, নিম্নমানের ইট-খোয়া সরবরাহ ও নির্মাণসামগ্রী পরিবহনে সংশ্লিষ্টরা খরচ নিয়েছে বলে দাবি করেছেন সুবিধাভোগীরা।

জানা গেছে, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় দুই দফায় ৪২০টি ঘরের বরাদ্দ আসে। এতে প্রথম দফায় প্রতিটি ঘরের ব্যয় ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে ১২০টি ঘরের জন্য ২ কোটি ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। দ্বিতীয় দফার প্রতিটি ঘরের ব্যয় মালামাল পরিবহনসহ ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা করে ৩০০টি ঘরের জন্য ৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে।

এসব ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর। প্রথম দফার ১২০টি ঘর গত ২৩ জানুয়ারি সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং দ্বিতীয় দফার বরাদ্দ পাওয়া ঘরগুলোর মধ্যে ২৫০টি ঘর গত ২০ জুন নির্বাচিত গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৫০টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া ও তেলিপাড়া এলাকায় ১৪টি ঘর নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা বাঁধ এলাকায় ঘর নির্মাণের ভিত্তি হিসেবে ১৫ ইঞ্চি ইটের গাঁথুনির পরিবর্তে ১০ ইঞ্চির ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। ফলে ঘরে কোনো ভিত্তি থাকছে না। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত নিম্নমানের ইট বিভিন্ন ভাটা থেকে সংগ্রহ করায় ছোট-বড় ইটের কারণে ঘরের কাজের মান খারাপ হচ্ছে।

সরেজমিনে রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা বাঁধ এলাকায় সাজেদা বেগম নামের এক সুবিধাভোগীর ঘরের বারান্দায় ১৯ বস্তা নষ্ট সিমেন্ট পড়ে থাকতে দেখা যায়। এই সিমেন্টের কোনো মালিক নেই বলে তিনি জানান। পার্শ্ববর্তী ওসমান গনি নামের এক ব্যক্তির ঘর নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে, যা নিতে তাঁকে পরিবহন খরচ দিতে হয়েছে ২৩ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরের মালামাল পরিবহনের জন্য পৃথক ৭ হাজার টাকা পরিবহন ব্যয় ধরা হলেও পাত্রখাতা বাঁধ এলাকার সুবিধাভোগীরা ব্যক্তিগতভাবে পরিবহন ব্যয় দিচ্ছেন বলে তাঁরা দাবি করেন।

রমনা ইউনিয়নের বাঁধ এলাকার সুবিধাভোগী জহুরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আ. জবার, আমজাদ হোসেন, আমিনুল ইসলাম ও দুখু মিয়া জানান, ঘর নির্মাণের জন্য মালামাল পরিবহন বাবদ তাঁরা প্রত্যকে ২১ থেকে ২২ হাজার টাকা সংশ্লিষ্টদের দিয়েছেন। পরিবহন ব্যয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গেলে তাঁদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।

ঘর নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কোহিনুর রহমান বলেন, ‘ঘরের মালামাল ক্রয় সম্পর্কে আমি অবহিত না।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ভাটায় ইট না থাকায় নিম্নমানের ইট পাঠিয়েছিল। ইটগুলো পরিবর্তন করে দিতে বলা হয়েছে।’ পরিবহন ব্যয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় সুবিধাভোগীদের কিছু পরিবহন ব্যয় দেওয়ার বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে আলাচনা করা হয়েছ। কাজ শেষে বরাদ্দকৃত পরিবহন ব্যয় সুবিধাভোগীদের দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘালয়ে হানিমুনের সময় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যা, উত্তর প্রদেশে নববধূর আত্মসমর্পণ

ভিকারুননিসার ছাত্রী মেয়েকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা, ডুবে প্রাণ গেল দুজনেরই

মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় খুন—কীভাবে এক নববধূ হয়ে উঠলেন হত্যাকারী

কানাডার লেকে বোট উল্টে বাংলাদেশের পাইলট ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

হাসিনার মতো মাফিয়াকে বিতাড়িত করেছি, এখন আমরাই বড় মাফিয়া: এনসিপি নেতা জুবাইরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত