Ajker Patrika

ভাটায় ইট তৈরি বন্ধ

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ৩০
ভাটায় ইট তৈরি বন্ধ

জ্বালানি কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে ইট তৈরির কাজ বন্ধ রেখেছে নীলফামারীর ৬৪টি ইটভাটা। এতে সব শ্রেণির ইটের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি সংকটের মুখে পড়েছে আবাসন খাতসহ উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারেরা।

ভাটার মালিকদের অভিযোগ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও রাশিয়া থেকে আমদানি করা কয়লার বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে দফায় দফায় দাম বাড়ছে। তাই এ খাতে বিনিয়োগে ঝুঁকির আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা।

সূত্রমতে, গত বছর প্রতি টন কয়লা ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দফায় দফায় দাম বেড়ে প্রতি টন কয়লা বিক্রয় হয়েছে ১৩ হাজার টাকায়। অক্টোবর মাসে আবারও দাম বেড়ে তা ১৮ হাজার এবং বর্তমানে ওই কয়লা ২৩ থেকে সাড়ে ২৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলার বিভিন্ন ভাটায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত অক্টোবর মাসে প্রথম শ্রেণির ইটের দাম হাজারপ্রতি ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে ইটের সংকটের মুখে তা সাড়ে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির ইট ৭ থেকে ৯ হাজার, তৃতীয় শ্রেণির ইট সাড়ে ৫ থেকে সাড়ে ৮ হাজার এবং পিকেট ইটের দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুসা ব্রিকস সৈয়দপুরের মালিক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘সাধারণত শীত মৌসুমে ইট উৎপাদনে যান ভাটার মালিকেরা। কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ইট তৈরির কাজেই হাত গুটিয়ে বসে আছি। সহস্রাধিক শ্রমিক বেকার অবস্থায় আছে। অথচ ওই সব শ্রমিককে অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কয়লার দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, এ অবস্থায় নতুন ইট তৈরি করলে তা হাজারপ্রতি ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হবে। এতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।

প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার নুরুল ইসলাম শাহ জানান, ভাটাগুলোতে উৎপাদন বন্ধ থাকায় ইটের সংকট দেখা দিয়েছে। গত বছরের যেসব ইট মজুত ছিল, তা বেশি দাম দিয়ে ক্রয় করে প্রকল্পের কাজ চলমান রাখা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ভাটার মালিকেরা ইট উৎপাদনে না যাওয়ায় সংকটের মুখে পড়তে হয়েছে। শিগগিরই এ পরিস্থিতির অবসান না ঘটলে ব্যাহত হতে পারে স্থানীয় আবাসন খাতসহ সব উন্নয়নকাজ।

বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারক সমিতি নীলফামারী শাখার সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ বলেন, ‘কয়লার লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির কারণে সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভাটার মালিকদের ইট উৎপাদনে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই সংগঠনের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমরা ইট উৎপাদনের প্রস্তুতিও নিতে পারছি না।’ তিনি আরও বলেন, ভাটাগুলো বন্ধ থাকায় মালিকেরা যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি কর্মহীন হয়ে বসে আছেন ভাটার শ্রমিকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত