Ajker Patrika

ফুটপাত ঘিরে চাঁদাবাজ চক্র

শেখ ফরিদ, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৪১
ফুটপাত ঘিরে চাঁদাবাজ চক্র

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় কাঁচপুর চৌরাস্তা। ব্যস্ততম এই পয়েন্ট ঘিরে গড়ে উঠেছে সক্রিয় একটি চাঁদাবাজ চক্র। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পূর্ব পাশের ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন চক্রটির সদস্যরা। ফলে এই রাস্তায় প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এবং ফুটপাত দখল থাকায় পথচারীরা চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, চক্রের অন্যতম সদস্য শামীম। তিনি নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে লোকজন নিয়ে নিয়মিত চাঁদা তুলছেন। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদাবাজির টাকা ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন পাচ্ছে। এ কারণে সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা ফুটপাতের অবৈধ দোকানপাট স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ হয় না। বরং বছরের পর বছর ধরে ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলে উচ্ছেদের নামে। আর ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হচ্ছে পথচারীরা। চাঁদাবাজেরা গ্রেপ্তার বা আটক হলেও আর্থিক সুবিধা পাওয়া লোকজন তাঁদের জামিনে অথবা থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন।

সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সড়কটিতে যান চলাচলের ব্যবস্থা করলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ চাঁদাবাজদের প্রশ্রয়দাতারা প্রভাবশালী হওয়ায় নানাভাবে দেনদরবার করে পুনরায় সড়ক দখলে উৎসাহ পাচ্ছেন অবৈধ দখলদারেরা।

জানা গেছে, কাঁচপুর মোড় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পূর্বপাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ফুটপাতের সব দোকান উচ্ছেদ করে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। এসব দোকান থেকে দৈনিক ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করত সাবেক মেম্বার শাহ আলমের ভাই মাহাবুব। তিনি এই ফুটপাত ছেড়ে দেওয়ার পর চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে নেয় শামীম গং।

উচ্ছেদের পর এক মাস পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ ফুটপাত বসাতে দেয়নি। সম্প্রতি ওই ফুটপাতের চাঁদাবাজি বহাল রাখতে আবারও মাঠে নামে শামীম। তাঁর নেতৃত্বে ফের দখল হয়ে যায় ফুটপাত। অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা ও হাইওয়ে পুলিশকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আবার ফুটপাতে দোকান বসিয়েছেন।

জানা যায়, প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে শামীম গং। সে হিসাবে আড়াই শ দোকান থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে; যা মাসে দাঁড়ায় ১৫ লাখ টাকার ওপরে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ফুটপাতের দোকানি জানান, সওজ কর্মকর্তা ও হাইওয়ে পুলিশ ম্যানেজ করার কথা বলে শামীম প্রত্যেক দোকান থেকে এককালীন ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা নিয়েছেন। আগে দৈনিক ১০০ টাকা করে নিলেও এখন নিচ্ছেন ২০০ টাকা করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামীম বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের লোকজনের সঙ্গে পরামর্শ করেই দোকান বসানো হয়েছে। তবে ৫ হাজার টাকা করে নিয়ে কাকে দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি তা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ করিম খান জানান, ফুটপাতে দোকান বসানোর কোনো অনুমতি তিনি দেননি। শিগগির আবার ফুটপাত উচ্ছেদ করা হবে।

নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল জানান, মহাসড়কের পাশে দোকান বসার কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। দ্রুত এসব উচ্ছেদ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

রিটার্ন না দিলে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

উত্তরায় বকশীগঞ্জের সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত