Ajker Patrika

ঢাকা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৪
ঢাকা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট-ঢাকা লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একটি লঞ্চ প্রতিদিন ঢাকার সদরঘাট থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মজুচৌধুরীরহাট ঘাটের উদ্দেশে এবং প্রতিদিন সকাল ৭টায় মজুচৌধুরীরহাট ঘাট থেকে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হবে।

গত সোমবার বিকেলে ঢাকার সদরঘাটে এই লঞ্চ সার্ভিসের উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) প্রিন্স অব রাসেল-৩ নামের একটি লঞ্চ দিয়ে নতুন এ নৌপথের উদ্বোধন করেন নৌ-ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন লঞ্চের মালিক জামাল হোসেন এবং নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘ঢাকা-লক্ষ্মীপুর লঞ্চ চাই’ পরিষদের আহ্বায়ক আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সদস্য আফজাল হোসেন অনিক এবং রেদওয়ান উল্লাহ খান।

লক্ষ্মীপুর-ঢাকা লঞ্চ চালু করতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল জেলার বাসিন্দারা। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২৭ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুরে তৎকালীন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামালের লঞ্চ সার্ভিস উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।

২০১৯ সালের ৩ মার্চ বিআইডব্লিউটিএ চিঠি দিয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত এমভি বোগদাদিয়া-৮ লঞ্চ চালুর অনুমতি দেয়। সেখানে বলা হয়, পরীক্ষামূলকভাবে এটি চলবে। এর মধ্যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। কিন্তু নাব্যতা সংকটে লঞ্চ চালু করা সম্ভব হয়নি।

তবে ইতিমধ্যে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা নৌপথে মেঘনা নদীর নাব্যতা সংকট নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ পথের লক্ষ্মীপুর অংশে প্রায় ১০ কিলোমিটার নদী খননের জন্য ৪৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারি একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-লক্ষ্মীপুরে নৌযান চলাচল উন্মুক্ত করতে সদর উপজেলার চর রমণী মোহন থেকে চর মেঘা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার অংশ খনন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ-ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও মেঘনা হয়ে ঢাকা-লক্ষ্মীপুর নৌপথ চালু করা সম্ভব। তাতে যাত্রীরা সড়কপথের তুলনায় কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। মেঘনা নদী দিয়ে ভোলা-লক্ষ্মীপুর, লক্ষ্মীপুর-ঢাকা নৌপথ সচল থাকলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে পূর্বাঞ্চল ও রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। দিন দিন আরও লঞ্চের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, গত ২৫ বছর নদী খনন না করায় লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে নদীর তীব্র স্রোতে উপকূলীয় জনপদ ভাঙছে। ভিটামাটিসহ সরকারি-বেসরকারি বহু স্থাপনা নদীতে তলিয়ে গেছে।

ঢাকা-লক্ষ্মীপুর লঞ্চ চাই আন্দোলনের আহ্বায়ক আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে লঞ্চ চালুর দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিলাম। অবশেষে সে দাবি বাস্তবায়ন হয়েছে। লক্ষ্মীপুর-ঢাকা লঞ্চ সার্ভিস চালু হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের আনন্দের শেষ নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত