Ajker Patrika

মৌলিক অধিকারের প্রশ্নে কঠোর অবস্থানে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

কলকাতা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১১: ২২
মৌলিক অধিকারের প্রশ্নে কঠোর অবস্থানে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনে কঠোর হতে পারে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল বুধবার ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে পেগাসাস মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে যেন সেটিই প্রমাণ হলো। ফোনে আড়ি পাতা-কাণ্ডে এদিন সরকারের যাবতীয় বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত, গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিশন। সেই সঙ্গে আদালত বলেছেন, শুধু জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার খর্ব করা সংবিধান বরদাশত করে না। গণতন্ত্রে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার সুরক্ষিত রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান হচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি আরবি রবীন্দ্রণ। কমিটির বাকি দুই সদস্য অলোক জোশি ও সন্দীপ ওবেরয়। দুজনই সাইবার বিশেষজ্ঞ।

পেগাসাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি, বিচারপতি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার তিন শতাধিক নাগরিকের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথা জানিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, সরকারের বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ শুনে আদালত কখনো নীরব দর্শক থাকতে পারে না। তাই সরকারের বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হয়ে আদালত নিজেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার তদন্ত করতে চাইলেও সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমন বলেন, ‘গণতন্ত্রে নাগরিকদের ওপর নজরদারির কোনো অধিকার সরকারের থাকতে পারে না। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর আক্রমণে সাংবিধানিক বৈধতা নেই। প্রযুক্তির ব্যবহার জীবনযাপন সুন্দর করে তোলার জন্যই ব্যবহার করা উচিত।’ ৮ সপ্তাহ পর শীর্ষ আদালতে পেগাসাস মামলার ফের শুনানি হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, পেগাসাস মামলা নিয়ে গতকালের রায়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা অনেকটাই বাড়ল বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের এদিনের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার মতে, ‘ছদ্ম জাতীয়তাবাদ সর্বত্র কাপুরুষ স্বৈরতন্ত্রীদের শেষ ভরসা।’

সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়ে বিরোধীরা উজ্জীবিত হলেও পেগাসাস নিয়ে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে অস্বীকার-সম্পর্কিত হলফনামায় অস্পষ্টতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। ২০১৯ সাল থেকে ১৭টি দেশের সংবাদমাধ্যম মিলে ‘পেগাসাস প্রজেক্ট’ নামে একটি তদন্ত করছিল। সেই তদন্ত থেকেই ভারতে বিভিন্নজনের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠে আসে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত