মাসুদ উর রহমান
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, প্রাণ অতিষ্ঠ! সেই কাকডাকা ভোরে রবিকিরণ তির্যকভাবে ভূপৃষ্ঠে আপতিত হয়ে অস্তাচল যাওয়া অবধি সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর অর্ধ-আবর্তনে বিরামহীন তাপীয় বিকিরণ সম্পন্ন করে চলেছে। কয়েক দিন ধরে অবশ্য কোথাও কোথাও হঠাৎ বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু গরম কমছে না। প্রকৃতি আজ রুষ্ট খড়খড়ে! একটু সজীব-সতেজ অনুভূতি এই ইট-কংক্রিটের শহরে পাব কই?
মনে পড়ে গেল কোয়ান্টাম মেথডের শহীদ আল বুখারি মহাজাতকের মেডিটেশনের কথা—যেখানে, যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, মনের বাড়িতে গিয়ে সহজেই আপনি শিথিলায়নের গভীর স্তরে পৌঁছে যেতে পারেন। লম্বা দম নিন, অনুভব করুন শিথিলতা স্রোতের মতো, বরফ গলা পানির মতো আপনার মাথা থেকে শরীর বেয়ে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। শিথিলায়নের গভীর স্তরে পৌঁছে যাচ্ছেন আপনি।
মনে করুন, মনের বাড়ির পথে আপনি এখন আলফা স্টেশনে এসে পৌঁছেছেন। এবার ধীরে ধীরে দম নিন। দম নিতে নিতে ভাবুন প্রকৃতি থেকে অফুরন্ত প্রাণশক্তি আপনার দেহে প্রবেশ করছে। আর দম ছাড়তে ছাড়তে ভাবুন শরীরের সব দূষিত পদার্থ বাতাসের সঙ্গে বেরিয়ে যাচ্ছে।
আরাম, আরাম, আরাম! মনের বাড়ি হচ্ছে আপনার স্বর্গ, আপনার প্রিয় প্রাকৃতিক পরিবেশ দিয়ে এই বাড়ির পরিমণ্ডল সাজানো। ঘন সবুজে আচ্ছাদিত এই বাড়ির একপাশে আছে একটি বড়সড় পুকুর এবং অন্য পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মাঝারি খালটি গিয়ে মিশেছে নদীতে। কল্পনা করুন, আপনি সেই খালের পাড়ে একটি হিজলগাছের নিচে বসে আছেন। কেমন সুশীতল চারপাশ! মৃদুমন্দ বাতাস এসে আপনার হাত-মুখ স্পর্শ করছে, কিশলয়ের মতো কাঁপিয়ে তুলছে মস্তকের সামনের দিকে ঝুলে থাকা ক্ষীণকায় কেশরাজিকে!
বর্ষার আগমনে নতুন টলটলে জোয়ারের পানি সেই হিজলতলায় পৌঁছে গেছে। হিজলের ফুলে ফুলে ডাঙার পুরো হিজলতলা যেমন ভরে উঠেছে, তেমনি স্থির পানিপৃষ্ঠের ওপর পড়া হিজল ফুলের আস্তরণ ঠেকিয়ে দিচ্ছে তপ্ত সূর্যরশ্মিকে। কল্পনা করুন, স্বচ্ছ আর বরফশীতল সেই টলটলে পানিতে পা ডুবিয়ে আপনি বসে আছেন। দারুণ মিষ্টি গন্ধে সুবাসিত হয়ে উঠেছে চারপাশ। নেচে বেড়াচ্ছে নিত্যমনের সুখে জোনাকিরা। কালচে সবুজ ডাল-পাতার ফাঁকে গোল গোল বড় চোখ মেলে তাকিয়ে আছে লক্ষ্মী প্যাঁচা!
মনে করতে চেষ্টা করুন, নজরুলের সেই পঙ্ক্তি, ‘হিজল বিছানো বন পথ দিয়া রাঙায়ে চরণ আসিবে গো প্রিয়া...’। সময় করে আপনার সংগ্রহে থাকা বইয়ের ভুবনে চোখ বুলিয়ে সেখান থেকে কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতাসমগ্রটি হাতে নিতে পারেন, যেখানে কবি হিজলগাছের সৌন্দর্য নিয়ে একাধিক কবিতা রচনা করেছেন। শুধু এক ‘রূপসী বাংলা’তেই বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি নয়বার হিজলগাছের নাম নিয়েছেন।
কেমন লাগছে বলুন তো? আমি নিশ্চিত, আপনার দেহ-মন এখন পুরোপুরি শিথিল। আপনি অভিনিবেশী মনে হিজলের মোহনীয় রূপ পর্যবেক্ষণ করে চলেছেন—কেমন করে ফুল ফোটার শুরুতে গাছের শাখা-প্রশাখায় সবুজ রঙের অসংখ্য ঝুলন্ত মঞ্জরি থেকে গুটি গুটি ফুলকলি এবং নির্দিষ্ট সময় পর রং পরিবর্তন হয়ে একসময় তা গোলাপি লাল রং ধারণ করে!
এবার নিশ্চয়ই আপনি আপন মনে আওড়ে চলেছেন কবি জীবনানন্দ দাশের রূপসী বাংলার সেই পঙ্ক্তি—
‘এমনই হিজল-বট-তমালের
নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ!’
লেখক: কলেজশিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, প্রাণ অতিষ্ঠ! সেই কাকডাকা ভোরে রবিকিরণ তির্যকভাবে ভূপৃষ্ঠে আপতিত হয়ে অস্তাচল যাওয়া অবধি সমোষ্ণ প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর অর্ধ-আবর্তনে বিরামহীন তাপীয় বিকিরণ সম্পন্ন করে চলেছে। কয়েক দিন ধরে অবশ্য কোথাও কোথাও হঠাৎ বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু গরম কমছে না। প্রকৃতি আজ রুষ্ট খড়খড়ে! একটু সজীব-সতেজ অনুভূতি এই ইট-কংক্রিটের শহরে পাব কই?
মনে পড়ে গেল কোয়ান্টাম মেথডের শহীদ আল বুখারি মহাজাতকের মেডিটেশনের কথা—যেখানে, যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, মনের বাড়িতে গিয়ে সহজেই আপনি শিথিলায়নের গভীর স্তরে পৌঁছে যেতে পারেন। লম্বা দম নিন, অনুভব করুন শিথিলতা স্রোতের মতো, বরফ গলা পানির মতো আপনার মাথা থেকে শরীর বেয়ে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। শিথিলায়নের গভীর স্তরে পৌঁছে যাচ্ছেন আপনি।
মনে করুন, মনের বাড়ির পথে আপনি এখন আলফা স্টেশনে এসে পৌঁছেছেন। এবার ধীরে ধীরে দম নিন। দম নিতে নিতে ভাবুন প্রকৃতি থেকে অফুরন্ত প্রাণশক্তি আপনার দেহে প্রবেশ করছে। আর দম ছাড়তে ছাড়তে ভাবুন শরীরের সব দূষিত পদার্থ বাতাসের সঙ্গে বেরিয়ে যাচ্ছে।
আরাম, আরাম, আরাম! মনের বাড়ি হচ্ছে আপনার স্বর্গ, আপনার প্রিয় প্রাকৃতিক পরিবেশ দিয়ে এই বাড়ির পরিমণ্ডল সাজানো। ঘন সবুজে আচ্ছাদিত এই বাড়ির একপাশে আছে একটি বড়সড় পুকুর এবং অন্য পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মাঝারি খালটি গিয়ে মিশেছে নদীতে। কল্পনা করুন, আপনি সেই খালের পাড়ে একটি হিজলগাছের নিচে বসে আছেন। কেমন সুশীতল চারপাশ! মৃদুমন্দ বাতাস এসে আপনার হাত-মুখ স্পর্শ করছে, কিশলয়ের মতো কাঁপিয়ে তুলছে মস্তকের সামনের দিকে ঝুলে থাকা ক্ষীণকায় কেশরাজিকে!
বর্ষার আগমনে নতুন টলটলে জোয়ারের পানি সেই হিজলতলায় পৌঁছে গেছে। হিজলের ফুলে ফুলে ডাঙার পুরো হিজলতলা যেমন ভরে উঠেছে, তেমনি স্থির পানিপৃষ্ঠের ওপর পড়া হিজল ফুলের আস্তরণ ঠেকিয়ে দিচ্ছে তপ্ত সূর্যরশ্মিকে। কল্পনা করুন, স্বচ্ছ আর বরফশীতল সেই টলটলে পানিতে পা ডুবিয়ে আপনি বসে আছেন। দারুণ মিষ্টি গন্ধে সুবাসিত হয়ে উঠেছে চারপাশ। নেচে বেড়াচ্ছে নিত্যমনের সুখে জোনাকিরা। কালচে সবুজ ডাল-পাতার ফাঁকে গোল গোল বড় চোখ মেলে তাকিয়ে আছে লক্ষ্মী প্যাঁচা!
মনে করতে চেষ্টা করুন, নজরুলের সেই পঙ্ক্তি, ‘হিজল বিছানো বন পথ দিয়া রাঙায়ে চরণ আসিবে গো প্রিয়া...’। সময় করে আপনার সংগ্রহে থাকা বইয়ের ভুবনে চোখ বুলিয়ে সেখান থেকে কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতাসমগ্রটি হাতে নিতে পারেন, যেখানে কবি হিজলগাছের সৌন্দর্য নিয়ে একাধিক কবিতা রচনা করেছেন। শুধু এক ‘রূপসী বাংলা’তেই বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি নয়বার হিজলগাছের নাম নিয়েছেন।
কেমন লাগছে বলুন তো? আমি নিশ্চিত, আপনার দেহ-মন এখন পুরোপুরি শিথিল। আপনি অভিনিবেশী মনে হিজলের মোহনীয় রূপ পর্যবেক্ষণ করে চলেছেন—কেমন করে ফুল ফোটার শুরুতে গাছের শাখা-প্রশাখায় সবুজ রঙের অসংখ্য ঝুলন্ত মঞ্জরি থেকে গুটি গুটি ফুলকলি এবং নির্দিষ্ট সময় পর রং পরিবর্তন হয়ে একসময় তা গোলাপি লাল রং ধারণ করে!
এবার নিশ্চয়ই আপনি আপন মনে আওড়ে চলেছেন কবি জীবনানন্দ দাশের রূপসী বাংলার সেই পঙ্ক্তি—
‘এমনই হিজল-বট-তমালের
নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ!’
লেখক: কলেজশিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
২০ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫