Ajker Patrika

দাম শুনে বিরক্ত ক্রেতা, বিপাকে ক্ষুদ্র মুদিদোকানিরা

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
দাম শুনে বিরক্ত ক্রেতা, বিপাকে ক্ষুদ্র মুদিদোকানিরা

দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ীর মুদিদোকানিরা। ক্রেতারা দাম শুনে বিরক্ত হয়ে পণ্য না কিনেই চলে যাচ্ছেন।

প্রায় সব পণ্য সপ্তাহের পর সপ্তাহ দোকানের তাকে পড়ে থাকছে, বিক্রি হচ্ছে না। এমন অবস্থায় রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন বিক্রেতারা। পণ্য বিক্রি না হওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের।

১০ টাকা মূল্যের বিস্কুটের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা। ১৫ টাকার বিস্কুট ২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কেকের আকার ঠিক রেখে শুধু  মোড়ক পাল্টে ৫ টাকা মূল্যের কেকের দাম করা হয়েছে ১০ টাকা। প্রতিটি বোতলজাত পানীয় ও প্যাকেটজাত দ্রব্যেরও দাম বেড়েছে।

সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসংলগ্ন প্রধান সড়কে চা-দোকানি বানেছা বেগম এমনটিই জানালেন।

বানেছা বেগম বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী মিলে দুজনের সংসার। কয়েক বছর ধরে আমার স্বামী জটিল রোগে আক্রান্ত। তিনি এখন আর রিকশা চালাতে পারেন না। দুজনে মিলে ছোট একটি মুদিদোকান চালিয়ে কোনোরকম সংসার চালাই; কিন্তু দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো বিক্রি হয় না।’

উৎপাদনকারী প্রতিটি প্রতিষ্ঠান পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিটি পণ্যে কমপক্ষে ৫ টাকা বেড়েছে। নিয়মিত ক্রেতারা পণ্যের দাম শুনে আঁতকে ওঠেন। অনেকে কোনো পণ্য না কিনেই চলে যান—যুক্ত করেন বানেছা বেগম।

তাঁর স্বামী ফজর আলী বলেন, ‘আগে দোকানের আয় দিয়ে সংসারের সব প্রয়োজন মেটানো যেত, এখন আর চলে না।

আরেক দোকানি লিটন মিয়া। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁর দোকানে ক্রেতা কমে যায়। এ কারণে তিনি আগের ব্যবসা ছেড়ে পাখির ব্যবসা শুরু করেছেন। নানা প্রজাতির পাখির সঙ্গে পাখির খাদ্যও বিক্রি করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমার ছয়জনের সংসার। এক দোকানের কামাই দিয়ে সংসার চালাতে হয়। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। দোকানে আগের মতো ক্রেতা না আসায় বিক্রি কমে গেছে।’

লিটন মিয়া আরও বলেন, ‘মুদিদোকান ছেড়েও সুবিধা করতে পারিনি। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন খরচও বেড়েছে। ফলে পাখির খাদ্যের দাম বেড়েছে। বেশি দামে পণ্য কিনে আগের মতো লাভ করা যাচ্ছে না। তার মধ্যে বেড়ে গেছে সংসারের ব্যয়। সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।’

উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া বাজারের পোলট্রি খাদ্য বিক্রেতা মোতালেব মিয়া বলেন, ‘পোলট্রি খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছি। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংকট আরও বেড়েছে।

খামারিদের কাছে পড়ে থাকা বকেয়া টাকা আদায় করতে পারছি না।’ সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমালেও দ্রব্যমূল্যে এর কোনো প্রভাব পড়েনি বলেও জানান এ বিক্রেতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত