Ajker Patrika

দ্বিগুণ দামে সার কিনছেন চাষি

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২২, ১৩: ৫৯
Thumbnail image

পঞ্চগড়ে বিভিন্ন সার প্রতি বস্তায় ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। অনেক সার দ্বিগুণ দামে কিনে জমিতে দিতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা। জেলায় কয়েক মাস সারের সংকট থাকলেও কৃষি বিভাগের তদারকি কম।

কৃষকেরা জানান, ডিলারদের গুদামে সার মিলছে না। তবে বেচাকেনা বন্ধ নেই। বিভিন্ন গ্রামে তাঁরা গুদাম স্থাপন করে সেখান থেকে গোপনে চওড়া দামে সার বিক্রি করছেন। সরকার নির্ধারিত ইউরিয়ার মূল্য বস্তাপ্রতি ৮০০ টাকা থাকলেও বিক্রি করা হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়, টিএসপির ১ হাজার ১০০ হলেও শ্রেণিভেদে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এমওপি ৭৫০ করে ধরা হলেও বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা, ডিএপি ৮০০ হলেও বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা। নিরুপায় হয়ে কৃষকেরা চড়া দামে সার কিনে খেতে ছিটাচ্ছেন। অনেকে পরিমাণমতো সার দিতে পারছেন না।

জানা গেছে, জুলাই মাসে ইউরিয়া ৩ হাজার ৪৩৭ টন, টিএসপি ১ হাজার ৮৬ টন, ডিএপি ১ হাজার ১৫০ টন ও এমওপি ১ হাজার ২০৬ টন জেলার ১৬০ ডিলারকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা এলাকার শরিফ মিঞা বলেন, ‘আমরা যখনি আমন চাষ শুরু করি তখনি শুরু হয় সার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। বস্তাপ্রতি ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা বেশি দিয়েও সার পাওয়া যাচ্ছে না। তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সার পাইনি। তবে বেশি দাম দিলেই রাতারাতি সার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর প্রতিবাদ করতে গেলেই বলে সার নেই। নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত দাম দিয়ে সার কিনে জমিতে দিতে হচ্ছে।’

অমরখানা এলাকার মহসিন আলী বলেন, ‘প্রতি বছর সারের সংকট তৈরি হলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বারবার হয়রানির শিকার হচ্ছি আমরা। তাই এবার আমন চাষাবাদ বন্ধ করে দিয়েছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা সার বিক্রেতা বলেন, ‘পঞ্চগড়ের বড় কয়েকজন ডিলার এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা। তাঁরা নিজেদের আত্মীয়স্বজনের নামে একাধিক লাইসেন্স করে সার উত্তোলন করে বেশি দরে বিক্রি করছেন। আমরা তাদের কাছে কিনে বস্তায় মাত্র ৫০ টাকা লাভে বিক্রি করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিলার বলেন, ‘পঞ্চগড়ে চাহিদার অর্ধেকও সার পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে বিষয়টি কৃষি বিভাগ গোপন করছে। তারা সঠিক জায়গায় এই সংকটের কথা তুলে ধরছে না।’

পঞ্চগড় ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম রেজাউল করিম বলেন, ‘জেলায় আমনের সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ সার চলে যাচ্ছে চা চাষিদের কাছে। চায়ের জন্য সারের বরাদ্দ নেই। তাই এই সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা ডিলাররা যে পরিমাণ বরাদ্দ পাচ্ছি তা সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করা হচ্ছে। বাইরে থেকে যারা কিনে এনে বিক্রি করছেন, তাঁরা বেশি দাম নিচ্ছেন।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছি। আশা করি সারের সংকট হবে না। আমাদের কর্মকর্তারা মনিটরিং করছেন। কেউ অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত