ড. মইনুল ইসলাম

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত ভালো। যাঁরা অর্থনীতিতে সমস্যার কথা বলেন, তাঁরা অর্থনীতি জানেন না। এ রকম ‘গলাবাজি’ করে কি তিনি অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংকটকে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য হলো, দেড় বছর ধরে অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিমজ্জমান। সংকটগুলোর প্রায় প্রতিটিই গুরুতর।
কিন্তু আমাদের অর্থমন্ত্রীর কাছে এই সব সমস্যা সত্ত্বেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ‘কুসুমাস্তীর্ণ’ মনে হচ্ছে! কারণ, দুঃখজনক হলেও সত্য যে দেশের ইতিহাসে এমন অর্থমন্ত্রী অতীতে কখনোই আমরা পাইনি। এমন ধারণা করার কারণ রয়েছে যে তাঁকে অর্থমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়ে রেখে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব হয়তো অন্য কারও সহায়তায় এবং উচ্চতর পদের আমলাদের পরামর্শে অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণের দায়িত্বটি পালন করতেই বেশি পছন্দ করছেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে দেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বেশ কিছুদিন আগেই ‘অ্যাবসেন্ট ফিন্যান্স মিনিস্টার’ আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি দুই বছর ধরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সভায় অংশ নেননি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৪ সেপ্টেম্বরের পত্রপত্রিকায় দেখলাম জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রীকে ‘বোবা অর্থমন্ত্রী’ বলে গালমন্দ করলেন প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই, কিন্তু এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল না!
১৯৯৬-২০০১ সালে শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো মেধাবী অর্থমন্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়ায় এবং ২০০৯-১৮ পর্যায়ে মেধাবী ও দেশের অভিজ্ঞ সাবেক আমলা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দেশের দীর্ঘতম সময়ের অর্থমন্ত্রী বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে যে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, বিপরীতে বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়ে তিনি সবার কাছে হাস্যাস্পদ হয়ে চলেছেন। যদিও অর্থমন্ত্রী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পরীক্ষায় প্রথম স্থান দখল করেছিলেন। যদিও ম্যানপাওয়ার এক্সপোর্টের ব্যবসা করেই তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। মিডিয়ায় পারতপক্ষে বক্তব্য দেন না, সংসদে তিনি প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন। তিন বছর ধরে অর্থনীতি যে একাধিক সমস্যায় জর্জরিত, এর জন্য শুধু করোনাভাইরাস মহামারি কিংবা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করে পার পাওয়া যাবে না। এর জন্য অর্থমন্ত্রীর যোগ্যতার ঘাটতিকেই প্রধানত দায়ী করা যায়।
ভারত ২০২০-২১ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক ধারায় পতিত হওয়া সত্ত্বেও এ বছর প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ভারতের মূল্যস্ফীতিও ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এমনকি যে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ২০২১ সালে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছিল, তারাও এ বছর নিজেদের মূল্যস্ফীতির হারকে ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে; অথচ আমাদের মূল্যস্ফীতির হার সরকারের দাবি মোতাবেকই এখনো ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়ে গেছে! সাধারণ ক্রেতাদের জীবনকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যস্ফীতির লাগামহীন পাগলা ঘোড়া যেভাবে অসহনীয় করে তুলেছে, তাদের অভিজ্ঞতা সাক্ষ্য দেবে যে প্রকৃতপক্ষে মূল্যস্ফীতির হার আরও অনেক বেশি! বিশ্বের প্রায় সব দেশে মূল্যস্ফীতি এখন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে; অথচ বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতিকে দক্ষ হাতে নিয়ন্ত্রণের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর অদক্ষতা নিয়েও অহরহ অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন আমদানি করা পণ্যের বাজারে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হচ্ছে, যাদের গোপন যোগসাজশে দাম বাড়ানোর অপতৎপরতা পরিদৃষ্ট হলেও সরকারের বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা একেবারেই অকার্যকর হয়ে রয়েছে। এর প্রত্যক্ষ দায়ভার বাণিজ্যমন্ত্রীর ওপরেই এসে পড়ছে। বিদেশে পুঁজি পাচার এখন দেশের ‘এক নম্বর সমস্যায়’ পরিণত হওয়া সত্ত্বেও গত তিন বছরে এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। গত বছরের বাজেটে ৭ শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার যে ‘টোটকা দাওয়াই’ তিনি ঘোষণা করেছিলেন, সেই সুবিধা বছরজুড়ে একজনও গ্রহণ করেনি।
হুন্ডি ব্যবসা দমনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আজও নেওয়া হলো না। ফলে ফরমাল চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো দিন দিন কমছে। বিদেশে অভিবাসন-সম্পর্কিত সরকারি সংস্থা ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) দাবি করে চলেছে যে এখন প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে এক লাখের বেশি শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। এই তথ্য সত্য হলে রেমিট্যান্স প্রবাহে যে জোয়ার আসার কথা, সেটা দেখা যাচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলেই সত্যের সন্ধান মিলবে যে সিংহভাগ প্রবাসী এখন ফরমাল চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এই ‘হুন্ডি ডলারগুলো’ বিদেশে রয়ে যাচ্ছে, যেগুলো বেশি দামে কিনে নিচ্ছে দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীরা—মানে, যে ‘হুন্ডি ডলার’ (বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা) বিদেশেই রয়ে যাচ্ছে, সেগুলোর চাহিদা জোগাচ্ছে প্রধানত দেশের দুর্নীতিবাজ ও কালোটাকার মালিকেরা এবং ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার ‘কালচার’ সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ীরা। মার্জিনখোর রাজনীতিক বলুন, দুর্নীতিবাজ সিভিল আমলা-প্রকৌশলী বলুন, রাঘববোয়াল ঋণখেলাপি বলুন, ডাকসাইটে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি বলুন—হুন্ডি ডলারের সহায়তায় ক্রমেই গড়ে উঠছে বিদেশে ঘরবাড়ি, ব্যবসাপাতি, সিডনি-ফ্রেটারনিটি, টরন্টোর বেগমপাড়া কিংবা মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোমগুলো। দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচারের বহুল প্রচলিত পদ্ধতি আমদানির ওভার ইনভয়েসিং, রপ্তানির আন্ডার ইনভয়েসিং এবং রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না আনার পাশাপাশি এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের বহুল ব্যবহৃত হুন্ডি পদ্ধতিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর অভ্যাস বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীদের একটি সহজ বিকল্প উপহার দিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর কি কিছুই করণীয় নেই? কয়েকটি কলামে আমি পুঁজি পাচারকারীদের দমনে সরকারের করণীয় সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেছি। এগুলো কি সরকারের কর্তাব্যক্তিদের চোখে পড়ে না? নাকি সরকারের মধ্যেই পুঁজি পাচারকারীরা গেড়ে বসে আছে? পুঁজি পাচার কঠোরভাবে দমন না করলে ডলার সংকট কাটবে না, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের ধারা থামানো যাবে না, ব্যালেন্স অব পেমেন্টসের কারেন্ট অ্যাকাউন্টকে আবার উদ্বৃত্ত অবস্থানে ফেরানো যাবে না, কিংবা ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোকে গতিশীল করা যাবে না। এই সমস্যাগুলো পরস্পর সম্পর্কিত। অর্থমন্ত্রীর যোগ্যতার অভাব থাকায় এসব ব্যাপারে সরকারি নিষ্ক্রিয়তা গেড়ে বসেছে। ভারতেও হুন্ডি ব্যবসা খুবই সচল, ওটাকে তারা ‘হাওয়ালা’ বলে। কিন্তু হাওয়ালা ব্যবসা ভারত থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারের মারাত্মক কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেনি। এর প্রধান কারণ, ভারতে দুর্নীতি থাকলেও বাংলাদেশের মতো দুর্নীতিকে তারা দেশের ‘এক নম্বর সমস্যা’ হতে দেয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ভারতীয়রাই সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিবাসী, যে জন্য রেমিট্যান্সপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও ভারত এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু একজন ভারতীয় অভিবাসীর বিদেশে চাকরি পেতে গড়ে কত টাকা খরচ করতে হয়, তার পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে, ওই খরচ একজন বাংলাদেশি অভিবাসীর খরচের এক-পঞ্চমাংশেরও কম। ভারতের বাজারে ১ ডলারের দাম এখন ৮২-৮৩ রুপি, কিন্তু ওখানে ডলারের তিন-চার রকমের দাম তো সৃষ্টি হয়নি! ভারতে পুঁজি পাচারও বড় সমস্যা হয়ে ওঠেনি। আমরা কি ভারতের কাছ থেকে এ-সম্পর্কে জ্ঞান নিতে পারি না?
ড. মইনুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত ভালো। যাঁরা অর্থনীতিতে সমস্যার কথা বলেন, তাঁরা অর্থনীতি জানেন না। এ রকম ‘গলাবাজি’ করে কি তিনি অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংকটকে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য হলো, দেড় বছর ধরে অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিমজ্জমান। সংকটগুলোর প্রায় প্রতিটিই গুরুতর।
কিন্তু আমাদের অর্থমন্ত্রীর কাছে এই সব সমস্যা সত্ত্বেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ‘কুসুমাস্তীর্ণ’ মনে হচ্ছে! কারণ, দুঃখজনক হলেও সত্য যে দেশের ইতিহাসে এমন অর্থমন্ত্রী অতীতে কখনোই আমরা পাইনি। এমন ধারণা করার কারণ রয়েছে যে তাঁকে অর্থমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়ে রেখে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব হয়তো অন্য কারও সহায়তায় এবং উচ্চতর পদের আমলাদের পরামর্শে অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণের দায়িত্বটি পালন করতেই বেশি পছন্দ করছেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে দেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বেশ কিছুদিন আগেই ‘অ্যাবসেন্ট ফিন্যান্স মিনিস্টার’ আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি দুই বছর ধরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সভায় অংশ নেননি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৪ সেপ্টেম্বরের পত্রপত্রিকায় দেখলাম জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রীকে ‘বোবা অর্থমন্ত্রী’ বলে গালমন্দ করলেন প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই, কিন্তু এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল না!
১৯৯৬-২০০১ সালে শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো মেধাবী অর্থমন্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়ায় এবং ২০০৯-১৮ পর্যায়ে মেধাবী ও দেশের অভিজ্ঞ সাবেক আমলা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দেশের দীর্ঘতম সময়ের অর্থমন্ত্রী বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে যে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, বিপরীতে বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়ে তিনি সবার কাছে হাস্যাস্পদ হয়ে চলেছেন। যদিও অর্থমন্ত্রী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পরীক্ষায় প্রথম স্থান দখল করেছিলেন। যদিও ম্যানপাওয়ার এক্সপোর্টের ব্যবসা করেই তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। মিডিয়ায় পারতপক্ষে বক্তব্য দেন না, সংসদে তিনি প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন। তিন বছর ধরে অর্থনীতি যে একাধিক সমস্যায় জর্জরিত, এর জন্য শুধু করোনাভাইরাস মহামারি কিংবা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করে পার পাওয়া যাবে না। এর জন্য অর্থমন্ত্রীর যোগ্যতার ঘাটতিকেই প্রধানত দায়ী করা যায়।
ভারত ২০২০-২১ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক ধারায় পতিত হওয়া সত্ত্বেও এ বছর প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ভারতের মূল্যস্ফীতিও ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এমনকি যে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ২০২১ সালে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছিল, তারাও এ বছর নিজেদের মূল্যস্ফীতির হারকে ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে; অথচ আমাদের মূল্যস্ফীতির হার সরকারের দাবি মোতাবেকই এখনো ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়ে গেছে! সাধারণ ক্রেতাদের জীবনকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যস্ফীতির লাগামহীন পাগলা ঘোড়া যেভাবে অসহনীয় করে তুলেছে, তাদের অভিজ্ঞতা সাক্ষ্য দেবে যে প্রকৃতপক্ষে মূল্যস্ফীতির হার আরও অনেক বেশি! বিশ্বের প্রায় সব দেশে মূল্যস্ফীতি এখন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে; অথচ বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতিকে দক্ষ হাতে নিয়ন্ত্রণের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর অদক্ষতা নিয়েও অহরহ অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন আমদানি করা পণ্যের বাজারে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হচ্ছে, যাদের গোপন যোগসাজশে দাম বাড়ানোর অপতৎপরতা পরিদৃষ্ট হলেও সরকারের বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা একেবারেই অকার্যকর হয়ে রয়েছে। এর প্রত্যক্ষ দায়ভার বাণিজ্যমন্ত্রীর ওপরেই এসে পড়ছে। বিদেশে পুঁজি পাচার এখন দেশের ‘এক নম্বর সমস্যায়’ পরিণত হওয়া সত্ত্বেও গত তিন বছরে এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। গত বছরের বাজেটে ৭ শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার যে ‘টোটকা দাওয়াই’ তিনি ঘোষণা করেছিলেন, সেই সুবিধা বছরজুড়ে একজনও গ্রহণ করেনি।
হুন্ডি ব্যবসা দমনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আজও নেওয়া হলো না। ফলে ফরমাল চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো দিন দিন কমছে। বিদেশে অভিবাসন-সম্পর্কিত সরকারি সংস্থা ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) দাবি করে চলেছে যে এখন প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে এক লাখের বেশি শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। এই তথ্য সত্য হলে রেমিট্যান্স প্রবাহে যে জোয়ার আসার কথা, সেটা দেখা যাচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলেই সত্যের সন্ধান মিলবে যে সিংহভাগ প্রবাসী এখন ফরমাল চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এই ‘হুন্ডি ডলারগুলো’ বিদেশে রয়ে যাচ্ছে, যেগুলো বেশি দামে কিনে নিচ্ছে দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীরা—মানে, যে ‘হুন্ডি ডলার’ (বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা) বিদেশেই রয়ে যাচ্ছে, সেগুলোর চাহিদা জোগাচ্ছে প্রধানত দেশের দুর্নীতিবাজ ও কালোটাকার মালিকেরা এবং ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার ‘কালচার’ সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ীরা। মার্জিনখোর রাজনীতিক বলুন, দুর্নীতিবাজ সিভিল আমলা-প্রকৌশলী বলুন, রাঘববোয়াল ঋণখেলাপি বলুন, ডাকসাইটে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি বলুন—হুন্ডি ডলারের সহায়তায় ক্রমেই গড়ে উঠছে বিদেশে ঘরবাড়ি, ব্যবসাপাতি, সিডনি-ফ্রেটারনিটি, টরন্টোর বেগমপাড়া কিংবা মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোমগুলো। দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচারের বহুল প্রচলিত পদ্ধতি আমদানির ওভার ইনভয়েসিং, রপ্তানির আন্ডার ইনভয়েসিং এবং রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না আনার পাশাপাশি এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের বহুল ব্যবহৃত হুন্ডি পদ্ধতিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর অভ্যাস বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীদের একটি সহজ বিকল্প উপহার দিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর কি কিছুই করণীয় নেই? কয়েকটি কলামে আমি পুঁজি পাচারকারীদের দমনে সরকারের করণীয় সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেছি। এগুলো কি সরকারের কর্তাব্যক্তিদের চোখে পড়ে না? নাকি সরকারের মধ্যেই পুঁজি পাচারকারীরা গেড়ে বসে আছে? পুঁজি পাচার কঠোরভাবে দমন না করলে ডলার সংকট কাটবে না, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের ধারা থামানো যাবে না, ব্যালেন্স অব পেমেন্টসের কারেন্ট অ্যাকাউন্টকে আবার উদ্বৃত্ত অবস্থানে ফেরানো যাবে না, কিংবা ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোকে গতিশীল করা যাবে না। এই সমস্যাগুলো পরস্পর সম্পর্কিত। অর্থমন্ত্রীর যোগ্যতার অভাব থাকায় এসব ব্যাপারে সরকারি নিষ্ক্রিয়তা গেড়ে বসেছে। ভারতেও হুন্ডি ব্যবসা খুবই সচল, ওটাকে তারা ‘হাওয়ালা’ বলে। কিন্তু হাওয়ালা ব্যবসা ভারত থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারের মারাত্মক কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেনি। এর প্রধান কারণ, ভারতে দুর্নীতি থাকলেও বাংলাদেশের মতো দুর্নীতিকে তারা দেশের ‘এক নম্বর সমস্যা’ হতে দেয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ভারতীয়রাই সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিবাসী, যে জন্য রেমিট্যান্সপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও ভারত এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু একজন ভারতীয় অভিবাসীর বিদেশে চাকরি পেতে গড়ে কত টাকা খরচ করতে হয়, তার পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে, ওই খরচ একজন বাংলাদেশি অভিবাসীর খরচের এক-পঞ্চমাংশেরও কম। ভারতের বাজারে ১ ডলারের দাম এখন ৮২-৮৩ রুপি, কিন্তু ওখানে ডলারের তিন-চার রকমের দাম তো সৃষ্টি হয়নি! ভারতে পুঁজি পাচারও বড় সমস্যা হয়ে ওঠেনি। আমরা কি ভারতের কাছ থেকে এ-সম্পর্কে জ্ঞান নিতে পারি না?
ড. মইনুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ড. মইনুল ইসলাম

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত ভালো। যাঁরা অর্থনীতিতে সমস্যার কথা বলেন, তাঁরা অর্থনীতি জানেন না। এ রকম ‘গলাবাজি’ করে কি তিনি অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংকটকে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য হলো, দেড় বছর ধরে অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিমজ্জমান। সংকটগুলোর প্রায় প্রতিটিই গুরুতর।
কিন্তু আমাদের অর্থমন্ত্রীর কাছে এই সব সমস্যা সত্ত্বেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ‘কুসুমাস্তীর্ণ’ মনে হচ্ছে! কারণ, দুঃখজনক হলেও সত্য যে দেশের ইতিহাসে এমন অর্থমন্ত্রী অতীতে কখনোই আমরা পাইনি। এমন ধারণা করার কারণ রয়েছে যে তাঁকে অর্থমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়ে রেখে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব হয়তো অন্য কারও সহায়তায় এবং উচ্চতর পদের আমলাদের পরামর্শে অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণের দায়িত্বটি পালন করতেই বেশি পছন্দ করছেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে দেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বেশ কিছুদিন আগেই ‘অ্যাবসেন্ট ফিন্যান্স মিনিস্টার’ আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি দুই বছর ধরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সভায় অংশ নেননি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৪ সেপ্টেম্বরের পত্রপত্রিকায় দেখলাম জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রীকে ‘বোবা অর্থমন্ত্রী’ বলে গালমন্দ করলেন প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই, কিন্তু এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল না!
১৯৯৬-২০০১ সালে শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো মেধাবী অর্থমন্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়ায় এবং ২০০৯-১৮ পর্যায়ে মেধাবী ও দেশের অভিজ্ঞ সাবেক আমলা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দেশের দীর্ঘতম সময়ের অর্থমন্ত্রী বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে যে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, বিপরীতে বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়ে তিনি সবার কাছে হাস্যাস্পদ হয়ে চলেছেন। যদিও অর্থমন্ত্রী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পরীক্ষায় প্রথম স্থান দখল করেছিলেন। যদিও ম্যানপাওয়ার এক্সপোর্টের ব্যবসা করেই তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। মিডিয়ায় পারতপক্ষে বক্তব্য দেন না, সংসদে তিনি প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন। তিন বছর ধরে অর্থনীতি যে একাধিক সমস্যায় জর্জরিত, এর জন্য শুধু করোনাভাইরাস মহামারি কিংবা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করে পার পাওয়া যাবে না। এর জন্য অর্থমন্ত্রীর যোগ্যতার ঘাটতিকেই প্রধানত দায়ী করা যায়।
ভারত ২০২০-২১ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক ধারায় পতিত হওয়া সত্ত্বেও এ বছর প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ভারতের মূল্যস্ফীতিও ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এমনকি যে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ২০২১ সালে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছিল, তারাও এ বছর নিজেদের মূল্যস্ফীতির হারকে ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে; অথচ আমাদের মূল্যস্ফীতির হার সরকারের দাবি মোতাবেকই এখনো ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়ে গেছে! সাধারণ ক্রেতাদের জীবনকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যস্ফীতির লাগামহীন পাগলা ঘোড়া যেভাবে অসহনীয় করে তুলেছে, তাদের অভিজ্ঞতা সাক্ষ্য দেবে যে প্রকৃতপক্ষে মূল্যস্ফীতির হার আরও অনেক বেশি! বিশ্বের প্রায় সব দেশে মূল্যস্ফীতি এখন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে; অথচ বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতিকে দক্ষ হাতে নিয়ন্ত্রণের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর অদক্ষতা নিয়েও অহরহ অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন আমদানি করা পণ্যের বাজারে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হচ্ছে, যাদের গোপন যোগসাজশে দাম বাড়ানোর অপতৎপরতা পরিদৃষ্ট হলেও সরকারের বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা একেবারেই অকার্যকর হয়ে রয়েছে। এর প্রত্যক্ষ দায়ভার বাণিজ্যমন্ত্রীর ওপরেই এসে পড়ছে। বিদেশে পুঁজি পাচার এখন দেশের ‘এক নম্বর সমস্যায়’ পরিণত হওয়া সত্ত্বেও গত তিন বছরে এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। গত বছরের বাজেটে ৭ শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার যে ‘টোটকা দাওয়াই’ তিনি ঘোষণা করেছিলেন, সেই সুবিধা বছরজুড়ে একজনও গ্রহণ করেনি।
হুন্ডি ব্যবসা দমনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আজও নেওয়া হলো না। ফলে ফরমাল চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো দিন দিন কমছে। বিদেশে অভিবাসন-সম্পর্কিত সরকারি সংস্থা ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) দাবি করে চলেছে যে এখন প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে এক লাখের বেশি শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। এই তথ্য সত্য হলে রেমিট্যান্স প্রবাহে যে জোয়ার আসার কথা, সেটা দেখা যাচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলেই সত্যের সন্ধান মিলবে যে সিংহভাগ প্রবাসী এখন ফরমাল চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এই ‘হুন্ডি ডলারগুলো’ বিদেশে রয়ে যাচ্ছে, যেগুলো বেশি দামে কিনে নিচ্ছে দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীরা—মানে, যে ‘হুন্ডি ডলার’ (বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা) বিদেশেই রয়ে যাচ্ছে, সেগুলোর চাহিদা জোগাচ্ছে প্রধানত দেশের দুর্নীতিবাজ ও কালোটাকার মালিকেরা এবং ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার ‘কালচার’ সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ীরা। মার্জিনখোর রাজনীতিক বলুন, দুর্নীতিবাজ সিভিল আমলা-প্রকৌশলী বলুন, রাঘববোয়াল ঋণখেলাপি বলুন, ডাকসাইটে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি বলুন—হুন্ডি ডলারের সহায়তায় ক্রমেই গড়ে উঠছে বিদেশে ঘরবাড়ি, ব্যবসাপাতি, সিডনি-ফ্রেটারনিটি, টরন্টোর বেগমপাড়া কিংবা মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোমগুলো। দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচারের বহুল প্রচলিত পদ্ধতি আমদানির ওভার ইনভয়েসিং, রপ্তানির আন্ডার ইনভয়েসিং এবং রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না আনার পাশাপাশি এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের বহুল ব্যবহৃত হুন্ডি পদ্ধতিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর অভ্যাস বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীদের একটি সহজ বিকল্প উপহার দিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর কি কিছুই করণীয় নেই? কয়েকটি কলামে আমি পুঁজি পাচারকারীদের দমনে সরকারের করণীয় সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেছি। এগুলো কি সরকারের কর্তাব্যক্তিদের চোখে পড়ে না? নাকি সরকারের মধ্যেই পুঁজি পাচারকারীরা গেড়ে বসে আছে? পুঁজি পাচার কঠোরভাবে দমন না করলে ডলার সংকট কাটবে না, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের ধারা থামানো যাবে না, ব্যালেন্স অব পেমেন্টসের কারেন্ট অ্যাকাউন্টকে আবার উদ্বৃত্ত অবস্থানে ফেরানো যাবে না, কিংবা ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোকে গতিশীল করা যাবে না। এই সমস্যাগুলো পরস্পর সম্পর্কিত। অর্থমন্ত্রীর যোগ্যতার অভাব থাকায় এসব ব্যাপারে সরকারি নিষ্ক্রিয়তা গেড়ে বসেছে। ভারতেও হুন্ডি ব্যবসা খুবই সচল, ওটাকে তারা ‘হাওয়ালা’ বলে। কিন্তু হাওয়ালা ব্যবসা ভারত থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারের মারাত্মক কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেনি। এর প্রধান কারণ, ভারতে দুর্নীতি থাকলেও বাংলাদেশের মতো দুর্নীতিকে তারা দেশের ‘এক নম্বর সমস্যা’ হতে দেয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ভারতীয়রাই সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিবাসী, যে জন্য রেমিট্যান্সপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও ভারত এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু একজন ভারতীয় অভিবাসীর বিদেশে চাকরি পেতে গড়ে কত টাকা খরচ করতে হয়, তার পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে, ওই খরচ একজন বাংলাদেশি অভিবাসীর খরচের এক-পঞ্চমাংশেরও কম। ভারতের বাজারে ১ ডলারের দাম এখন ৮২-৮৩ রুপি, কিন্তু ওখানে ডলারের তিন-চার রকমের দাম তো সৃষ্টি হয়নি! ভারতে পুঁজি পাচারও বড় সমস্যা হয়ে ওঠেনি। আমরা কি ভারতের কাছ থেকে এ-সম্পর্কে জ্ঞান নিতে পারি না?
ড. মইনুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত ভালো। যাঁরা অর্থনীতিতে সমস্যার কথা বলেন, তাঁরা অর্থনীতি জানেন না। এ রকম ‘গলাবাজি’ করে কি তিনি অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংকটকে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য হলো, দেড় বছর ধরে অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিমজ্জমান। সংকটগুলোর প্রায় প্রতিটিই গুরুতর।
কিন্তু আমাদের অর্থমন্ত্রীর কাছে এই সব সমস্যা সত্ত্বেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে ‘কুসুমাস্তীর্ণ’ মনে হচ্ছে! কারণ, দুঃখজনক হলেও সত্য যে দেশের ইতিহাসে এমন অর্থমন্ত্রী অতীতে কখনোই আমরা পাইনি। এমন ধারণা করার কারণ রয়েছে যে তাঁকে অর্থমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়ে রেখে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব হয়তো অন্য কারও সহায়তায় এবং উচ্চতর পদের আমলাদের পরামর্শে অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণের দায়িত্বটি পালন করতেই বেশি পছন্দ করছেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে দেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বেশ কিছুদিন আগেই ‘অ্যাবসেন্ট ফিন্যান্স মিনিস্টার’ আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি দুই বছর ধরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সভায় অংশ নেননি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৪ সেপ্টেম্বরের পত্রপত্রিকায় দেখলাম জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রীকে ‘বোবা অর্থমন্ত্রী’ বলে গালমন্দ করলেন প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই, কিন্তু এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল না!
১৯৯৬-২০০১ সালে শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো মেধাবী অর্থমন্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়ায় এবং ২০০৯-১৮ পর্যায়ে মেধাবী ও দেশের অভিজ্ঞ সাবেক আমলা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দেশের দীর্ঘতম সময়ের অর্থমন্ত্রী বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে যে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, বিপরীতে বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়ে তিনি সবার কাছে হাস্যাস্পদ হয়ে চলেছেন। যদিও অর্থমন্ত্রী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পরীক্ষায় প্রথম স্থান দখল করেছিলেন। যদিও ম্যানপাওয়ার এক্সপোর্টের ব্যবসা করেই তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। মিডিয়ায় পারতপক্ষে বক্তব্য দেন না, সংসদে তিনি প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন। তিন বছর ধরে অর্থনীতি যে একাধিক সমস্যায় জর্জরিত, এর জন্য শুধু করোনাভাইরাস মহামারি কিংবা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করে পার পাওয়া যাবে না। এর জন্য অর্থমন্ত্রীর যোগ্যতার ঘাটতিকেই প্রধানত দায়ী করা যায়।
ভারত ২০২০-২১ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক ধারায় পতিত হওয়া সত্ত্বেও এ বছর প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ভারতের মূল্যস্ফীতিও ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এমনকি যে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ২০২১ সালে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছিল, তারাও এ বছর নিজেদের মূল্যস্ফীতির হারকে ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে; অথচ আমাদের মূল্যস্ফীতির হার সরকারের দাবি মোতাবেকই এখনো ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়ে গেছে! সাধারণ ক্রেতাদের জীবনকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যস্ফীতির লাগামহীন পাগলা ঘোড়া যেভাবে অসহনীয় করে তুলেছে, তাদের অভিজ্ঞতা সাক্ষ্য দেবে যে প্রকৃতপক্ষে মূল্যস্ফীতির হার আরও অনেক বেশি! বিশ্বের প্রায় সব দেশে মূল্যস্ফীতি এখন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে; অথচ বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতিকে দক্ষ হাতে নিয়ন্ত্রণের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর অদক্ষতা নিয়েও অহরহ অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন আমদানি করা পণ্যের বাজারে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হচ্ছে, যাদের গোপন যোগসাজশে দাম বাড়ানোর অপতৎপরতা পরিদৃষ্ট হলেও সরকারের বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা একেবারেই অকার্যকর হয়ে রয়েছে। এর প্রত্যক্ষ দায়ভার বাণিজ্যমন্ত্রীর ওপরেই এসে পড়ছে। বিদেশে পুঁজি পাচার এখন দেশের ‘এক নম্বর সমস্যায়’ পরিণত হওয়া সত্ত্বেও গত তিন বছরে এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। গত বছরের বাজেটে ৭ শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার যে ‘টোটকা দাওয়াই’ তিনি ঘোষণা করেছিলেন, সেই সুবিধা বছরজুড়ে একজনও গ্রহণ করেনি।
হুন্ডি ব্যবসা দমনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আজও নেওয়া হলো না। ফলে ফরমাল চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো দিন দিন কমছে। বিদেশে অভিবাসন-সম্পর্কিত সরকারি সংস্থা ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) দাবি করে চলেছে যে এখন প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে এক লাখের বেশি শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। এই তথ্য সত্য হলে রেমিট্যান্স প্রবাহে যে জোয়ার আসার কথা, সেটা দেখা যাচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলেই সত্যের সন্ধান মিলবে যে সিংহভাগ প্রবাসী এখন ফরমাল চ্যানেলের পরিবর্তে হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এই ‘হুন্ডি ডলারগুলো’ বিদেশে রয়ে যাচ্ছে, যেগুলো বেশি দামে কিনে নিচ্ছে দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীরা—মানে, যে ‘হুন্ডি ডলার’ (বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা) বিদেশেই রয়ে যাচ্ছে, সেগুলোর চাহিদা জোগাচ্ছে প্রধানত দেশের দুর্নীতিবাজ ও কালোটাকার মালিকেরা এবং ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার ‘কালচার’ সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ীরা। মার্জিনখোর রাজনীতিক বলুন, দুর্নীতিবাজ সিভিল আমলা-প্রকৌশলী বলুন, রাঘববোয়াল ঋণখেলাপি বলুন, ডাকসাইটে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি বলুন—হুন্ডি ডলারের সহায়তায় ক্রমেই গড়ে উঠছে বিদেশে ঘরবাড়ি, ব্যবসাপাতি, সিডনি-ফ্রেটারনিটি, টরন্টোর বেগমপাড়া কিংবা মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোমগুলো। দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচারের বহুল প্রচলিত পদ্ধতি আমদানির ওভার ইনভয়েসিং, রপ্তানির আন্ডার ইনভয়েসিং এবং রপ্তানি আয় দেশে ফেরত না আনার পাশাপাশি এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের বহুল ব্যবহৃত হুন্ডি পদ্ধতিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর অভ্যাস বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীদের একটি সহজ বিকল্প উপহার দিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর কি কিছুই করণীয় নেই? কয়েকটি কলামে আমি পুঁজি পাচারকারীদের দমনে সরকারের করণীয় সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেছি। এগুলো কি সরকারের কর্তাব্যক্তিদের চোখে পড়ে না? নাকি সরকারের মধ্যেই পুঁজি পাচারকারীরা গেড়ে বসে আছে? পুঁজি পাচার কঠোরভাবে দমন না করলে ডলার সংকট কাটবে না, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের ধারা থামানো যাবে না, ব্যালেন্স অব পেমেন্টসের কারেন্ট অ্যাকাউন্টকে আবার উদ্বৃত্ত অবস্থানে ফেরানো যাবে না, কিংবা ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোকে গতিশীল করা যাবে না। এই সমস্যাগুলো পরস্পর সম্পর্কিত। অর্থমন্ত্রীর যোগ্যতার অভাব থাকায় এসব ব্যাপারে সরকারি নিষ্ক্রিয়তা গেড়ে বসেছে। ভারতেও হুন্ডি ব্যবসা খুবই সচল, ওটাকে তারা ‘হাওয়ালা’ বলে। কিন্তু হাওয়ালা ব্যবসা ভারত থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারের মারাত্মক কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেনি। এর প্রধান কারণ, ভারতে দুর্নীতি থাকলেও বাংলাদেশের মতো দুর্নীতিকে তারা দেশের ‘এক নম্বর সমস্যা’ হতে দেয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ভারতীয়রাই সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিবাসী, যে জন্য রেমিট্যান্সপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও ভারত এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু একজন ভারতীয় অভিবাসীর বিদেশে চাকরি পেতে গড়ে কত টাকা খরচ করতে হয়, তার পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে, ওই খরচ একজন বাংলাদেশি অভিবাসীর খরচের এক-পঞ্চমাংশেরও কম। ভারতের বাজারে ১ ডলারের দাম এখন ৮২-৮৩ রুপি, কিন্তু ওখানে ডলারের তিন-চার রকমের দাম তো সৃষ্টি হয়নি! ভারতে পুঁজি পাচারও বড় সমস্যা হয়ে ওঠেনি। আমরা কি ভারতের কাছ থেকে এ-সম্পর্কে জ্ঞান নিতে পারি না?
ড. মইনুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত ভালো। যাঁরা অর্থনীতিতে সমস্যার কথা বলেন, তাঁরা অর্থনীতি জানেন না। এ রকম ‘গলাবাজি’ করে কি তিনি অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংকটকে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য হলো, দেড় বছর ধরে অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিম
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত ভালো। যাঁরা অর্থনীতিতে সমস্যার কথা বলেন, তাঁরা অর্থনীতি জানেন না। এ রকম ‘গলাবাজি’ করে কি তিনি অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংকটকে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য হলো, দেড় বছর ধরে অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিম
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত ভালো। যাঁরা অর্থনীতিতে সমস্যার কথা বলেন, তাঁরা অর্থনীতি জানেন না। এ রকম ‘গলাবাজি’ করে কি তিনি অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংকটকে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য হলো, দেড় বছর ধরে অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিম
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত ভালো। যাঁরা অর্থনীতিতে সমস্যার কথা বলেন, তাঁরা অর্থনীতি জানেন না। এ রকম ‘গলাবাজি’ করে কি তিনি অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংকটকে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? কিন্তু অনস্বীকার্য সত্য হলো, দেড় বছর ধরে অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিম
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫