পরীক্ষা না পেছালে তাদের জীবনটাই পেছাত

এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল মোহাম্মদ শোয়াইবুল ইসলামের। কারণ সে পড়েছে মানবিক শাখায়। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন আর প্রবেশপত্র এসেছে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার। বিষয়টি শুরুতে শিক্ষকদের জানালেও কোনো সদুত্তর মেলেনি। পরে অবশ্য এক আত্মীয়ের সহায়তায় শোয়াইবুল যোগাযোগ করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে। সবকিছু যাচাইয়ের পর তার রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র সংশোধন করা হয়।

কিন্তু এটি সম্ভব হতো না, যদি ঠিক সময়ে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। কেননা চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গত ১৯ জুন শুরু হওয়ার কথা ছিল। শোয়াইবুল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র হাতে পায় ১৬ জুন। ফলে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র সংশোধন করার সুযোগও ছিল না। শোয়াইবুল ও তার স্বজনেরা যখন অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই আশার প্রদীপ হয়েই যেন আসে পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার ঘোষণা।

শুধু শোয়াইবুল নয়, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এ রকম অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র ভুল এসেছিল। জুন থেকে জুলাইয়ের ৭ তারিখ পর্যন্ত এসব রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র সংশোধনের জন্য শিক্ষার্থীরা বোর্ডে আবেদন করে। তাদের মধ্যে অনেকে আবেদন করেছে ১৯ জুনের আগে। কেউ কেউ করে ১৯ জুনের পর। সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় ভয়াবহ বন্যার কারণে পরীক্ষা শুরুর দুই দিন আগে তা স্থগিত করা না হলে অনেক শিক্ষার্থীর জীবন থেকে একটা বছর নষ্ট হয়ে যেত।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক বিপ্লব গাঙ্গুলি বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সচেতন হলে এ ভুল হতো না। রেজিস্ট্রেশন সংশোধনের প্রায় ৬০টি আবেদন আমরা পেয়েছি। মানবিকে পড়ে তো ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব না। সে জন্য শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমরা সংশোধন করে দিয়েছি।’

ভুল সংশোধন করা না গেলে বড় বিপাকে পড়ত শিক্ষার্থীরা। কেননা দুই বছর এক শাখায় পড়ে অন্য শাখার বিষয়গুলোতে তো পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হতো না। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা দিতে না পারলে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতেও সমস্যায় পড়ত তারা। এখন রেজিস্ট্রেশন সংশোধন হওয়ায় ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাওয়া এ পরীক্ষা তারা দিতে পারবে নিশ্চিন্ত হয়েই।