Ajker Patrika

স্কুলে ঢুকে বহিরাগতদের হামলা, ২২ ছাত্র আহত

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ০৬
Thumbnail image

বগুড়ার শিবগঞ্জের ধাওয়াগীর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ছাত্র ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে বহিরাগতরা শ্রেণিকক্ষে ঢুকে হামলা চালায়। এতে ২২ শিক্ষার্থী আহত হয়। অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষকের ইন্ধনে এ হামলা চালানো হয়।

হামলার এ ঘটনা ঘটে ১০ জানুয়ারি। এরপর ১৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) বেশ কয়েকটি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন এক অভিভাবক।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ জানুয়ারি নবম শ্রেণির এক ছাত্র বিদ্যালয়ে সেশন ফি দিতে যায়। এ সময় প্রধান শিক্ষক তার কাছ থেকে ভর্তি ও সেশন ফি বাবদ অতিরিক্ত ৪৫০ টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মর্তুজার কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ছাত্রদের একটি অংশ শিক্ষকের পক্ষ নেয়। বর্ধিত ফি না দেওয়ার পক্ষে থাকা শিক্ষার্থীরা স্থানীয় বাসিন্দা শিহাবুল ইসলাম সুইটকে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু এতে সুরাহা হয়নি। ওই দিন বিকেলে অতিরিক্ত ফি দেওয়া না-দেওয়া নিয়ে তর্কের জেরে দুই ছাত্রের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

পরদিন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য তোজাম্মেল হোসেন ও বেশ কয়েকজন বহিরাগতকে সঙ্গে নিয়ে এক অভিভাবক বিদ্যালয়ে যান। বহিরাগতরা শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মারধর করে। এ সময় অন্তত ২২ জন ছাত্র আহত হয়।

গতকাল শনিবার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার দিন বহিরাগতরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আহত ছাত্ররা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। আর ঘটনার সূত্রপাত অতিরিক্ত সেশন ফি নিয়ে হলেও, পরে তা মোড় নেয় ইউপি নির্বাচনে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের বিরোধের দিকে। সুইট সদস্য পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে যাওয়ায় বিজয়ী ইউপি সদস্য তোজাম্মেলের সমর্থকেরা ক্ষিপ্ত হন। এ কারণে হামলা হয়।

ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া এক অভিভাবক বলেন, ‘ক্লাস চলাকালে বহিরাগতরা আমাদের সন্তানদের মারধর করে আহত করলেও প্রধান শিক্ষক কোনো ব্যবস্থা নেননি। প্রধান শিক্ষকের ইন্ধনেই এই হামলা হয়েছে।’

দশম শ্রেণির এক ছাত্র বলে, ‘আমরা নবম থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আমাদের কাছ থেকে ভর্তি ও সেশন ফি চেয়েছেন। নতুন করে কেন ভর্তি ফি দিতে হবে, তা জানতে চাইলে তিনি আমার গালে থাপ্পড় মারেন। এরপর বলেন এখন থেকে এই নিয়ম। প্রতিবছরই ভর্তি হতে হবে।’

দশম শ্রেণির আরেক ছাত্র বলে, ‘হামলার পর প্রধান শিক্ষকের কাছে বারবার বিচার চেয়েও আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তিনি সরাসরি হামলাকারীদের পক্ষ নিয়েছেন।’

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মর্তুজা বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। এ ঘটনায় আগামী (আগামীকাল) সোমবার ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসার কথা আছে।’

উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা টি এম আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

ইউএনও উম্মে কুলসুম সম্পা বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত