Ajker Patrika

সিনেমা হলে হামলা, ক্ষোভ জানালেন নির্মাতারা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের খবর পেয়েই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে দেশবাসী। এই সুযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে সংগীতশিল্পী রাহুল আনন্দের বাড়ি। হামলা চালানো হয়েছে সিনেমা হলেও। দেশের দুই সিনেপ্লেক্স—রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কের স্টার সিনেপ্লেক্স ও সিরাজগঞ্জের রুটস সিনেক্লাবে ভাঙচুর করা হয়েছে। স্টার সিনেপ্লেক্সের হামলায় কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা জানা না গেলেও রুটস সিনেক্লাবের কর্ণধার সামিনা ইসলাম জানান, তাঁদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা।

হামলার ঘটনার কথা জানিয়ে সামিনা ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্ট রাতে একদল মানুষ এসে প্রথমে ঢিল মারা শুরু করে। একসময় গেট ভেঙে তারা ভেতরে এসে লুট করে এবং ভাঙচুর করে। সবকিছু নিয়ে গেছে। যেই জিনিসগুলো নিতে পারেনি, তা ভেঙে দিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। কীভাবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠব বলতে পারছি না।’

হলটি আবার চালু হওয়া প্রসঙ্গে সামিনা বলেন, ‘এটা এখনো ভাবছি না। দেশজুড়ে যে সহিংসতা হচ্ছে, তা নিয়েই খুব চিন্তার মধ্যে আছি। আমার বাবার বাড়িতে আগুন দিয়েছে। চারতলা বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় হল নিয়ে ভাবছি না, আপাতত বাঁচতে চাই।’

স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অনেক জায়গায়ই তো হামলা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে হামলা চালায়। সে সময় স্টার সিনেপ্লেক্সেও ভাঙচুর করে তারা।’

মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ আরও জানান, হামলায় কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা এখনই সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এখন স্টার সিনেপ্লেক্সের সব শাখার কার্যক্রম বন্ধ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই দ্রুত খুলে দেওয়া হবে হলগুলো। সে সময় মেরামত করা হবে স্টার সিনেপ্লেক্সের রাজশাহী শাখার সিনেপ্লেক্সটি।  

রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে স্টার সিনেপ্লেক্সে ভাঙচুরের পরের অবস্থাদীর্ঘদিন ধরে মন্দা চলছে দেশের হল ব্যবসায়। এক দশক ধরেই বাড়ছে বন্ধ হওয়া হলের সংখ্যা। কমতে কমতে হলের সংখ্যা এক শর নিচে নেমেছে। এমন অবস্থায় হল ভাঙচুরের ঘটনা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

ভাঙচুর হওয়া স্টার সিনেপ্লেক্সের কয়েকটি ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে নির্মাতা ও পরিবেশক অনন্য মামুন লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের চলচ্চিত্র যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, ঠিক তক্ষুনি এত বড় আঘাত। আজ সিনেপ্লেক্স আছে বলে চলচ্চিত্র দেখার জন্য নতুন দর্শক আসতে শুরু করেছে। আমরা বড় বাজেটের চলচ্চিত্র বানানোর স্বপ্ন দেখি। রাজশাহী হাই-টেক পার্কে লুটপাট হয়েছে, সিনেপ্লেক্স ভেঙে চুরমার! শুনেছি সিরাজগঞ্জের রুটস সিনেপ্লেক্সও লুটপাট করা হয়েছে। সবাইকে অনুরোধ করব, চলচ্চিত্র বাঁচাতে হলে সিনেপ্লেক্স বাঁচাতে হবে।’

সিনেমা হল ভাঙচুর করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস, নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল, জয়ন্ত রোজারিও, অন্তু আজাদ, আলোক হাসানসহ অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত