Ajker Patrika

ঝুঁকি জেনেও পাদদেশে বাস

শাকিলা ববি, সিলেট
আপডেট : ০৮ জুন ২০২২, ১৩: ০৩
ঝুঁকি জেনেও পাদদেশে বাস

সিলেট নগরীর জাহাঙ্গীরনগর এলাকার একটি টিলার পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে চার বছর বাস করছেন বিলকিস বেগম। স্বামী ও চার সন্তান নিয়ে টিলার একাংশে ঘর বানিয়ে থাকছেন তাঁরা। বিলকিস বেগম বলেন, ‘আমাদের স্থায়ী জায়গা নেই। স্বামী দিনমজুর, আমি মানুষের বাসায় কাজ করি। এখানে কম ভাড়ায় থাকা যায়, তাই ঝুঁকি জেনেও বাচ্চাদের নিয়ে বাস করছি। সারা বছর তেমন কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু বর্ষার সময় টিলার নিচে থাকা অনেক ঝুঁকির জেনেও থাকতে হচ্ছে। এ ছাড়া আর উপায় নেই আমার।’

নগরীর জাহাঙ্গীরনগর এলাকায় আলীবাহার চা বাগানের টিলার নিচে বাস করে ১৫ পরিবার। এই পরিবারগুলোতে নারী শিশুসহ প্রায় ৫০ জন থাকেন। এখানে বসবাসরত সবাই দরিদ্র ও ভূমিহীন। বেশির ভাগ মানুষই দিনমজুর।

জাহাঙ্গীরনগর এলাকায় আরেকটি টিলার নিচে বাস করেন স্বপ্না বেগম। তাঁর স্বামী রিকশাচালক। স্বামী ও চার সন্তান নিয়ে টিলার নিচে একটি টিনের ঘরে বাস করেন তিনি। স্বপ্না বেগম বলেন, ‘বৃষ্টি হলে আতঙ্কে থাকি। কারণ আমরা একদম টিলার নিচে থাকি। যেদিন রাতে বেশি বৃষ্টি হয় সেদিন ঘুমাই না। কারণ কোন সময় কী হয় বলা যায় না।’

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই সিলেটে পাহাড় ও টিলা ধসের ঘটনায় প্রাণহানি হয়। এ সময় এসব পাহাড় ও টিলায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের মধ্যেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়ে যায়।

সিলেট নগরী ও সদর উপজেলাসহ জেলার গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় সহস্রাধিক পাহাড়-টিলা রয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো পরিসংখ্যান নেই জেলা প্রশাসনের কাছে। তবে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও সেভ দ্য হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিভিন্ন সময় সিলেটের পাহাড়-টিলা নিয়ে জরিপ করেছে। বেলার তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সিলেট বিভাগে ১ হাজার ৭৪৫টি (২৭৪৯.৫০ একর) টিলাভূমি রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশন, সিলেট সদর উপজেলা, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ ও জৈন্তাপুরে ১ হাজার ২৫টি টিলাভূমি রয়েছে। এ ছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও ও সদর ইউনিয়নে ২৫১.০৮ একর টিলাভূমি রয়েছে।

সেভ দ্য হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ২০১৭ সালের জরিপে দেখা গেছে, সিলেটে টিলার পাদদেশে বাড়ি তৈরি করে বাস করছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। তবে এ সংখ্যা বর্তমানে দ্বিগুণ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বেলার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হাই।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরানো যায় না। এটা একটা বড় সমস্যা। এ জন্য বৃষ্টির সময় দুর্ঘটনা ঘটে। টিলার পাদদেশে বসবাসকারীদের কীভাবে সরানো যায় ও পুনর্বাসন করা যায় তা নিয়ে ভাবছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত