Ajker Patrika

সারের দামে চিন্তায় কৃষক

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৪
সারের দামে চিন্তায় কৃষক

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতারা বেশি দাম আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, সারের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের হিসাব মতে, এবার ২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হবে। কিন্তু চাষের শুরুতেই সারের দাম নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন কৃষকেরা। প্রকার ভেদে এক বস্তা সার কিনতে তাঁদের ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে।

বেলঘরিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনি স্থানীয় চৌমহুনী বাজার থেকে প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার ৮৫০ টাকা, এমওপি ১ হাজার ১৭০ টাকা, টিএসপি ১ হাজার ৩০০ টাকা ও ডিএপি ৯০০ টাকা দরে কিনেছেন।

কেল্লা মেলার খুচরা বিক্রেতা মো. আহমদ আলী বলেন, তাঁরা পরিবেশকদের (ডিলার) কাছ থেকে বেশি দরে সার কিনছেন। অল্প লাভে বিক্রি করছেন। তাঁরাও অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন না।

অথচ কৃষি অফিসের তালিকা অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে ইউরিয়া সারের সর্বোচ্চ মূল্য বস্তা প্রতি (৫০ কেজি) ৮০০ টাকা, টিএসপি ১ হাজার ১০০ টাকা, ডিএপি ৮০০ টাকা ও এমওপি ৭৫০ টাকা রাখার কথা।

দাম বেশি হওয়ার পেছনে সারের সংকটকে দায়ী করছেন খুচরা বিক্রেতারা। বিক্রেতা আল আমিন বলেন, ‘ডিলারদের কাছে গেলে সার পাওয়া যায় না। ১০০ বস্তা চাইলে আমাদের ২০ বস্তা দেওয়া হয়। এর ফলে বেশি দামে সার কিনে চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে।’

কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এক বিঘা জমিতে আলু চাষের জন্য সার ব্যবহারের মাত্রা টিএসপি ১৭ কেজি, এমওপি ৪২ কেজি, জিপসাম ২ কেজি, ডিএপি ১৭ কেজি ও ইউরিয়া ৩৯ কেজি। এই হিসাবেই সারের চাহিদা প্রণয়ন ও বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয়ে থাকে।

কিন্তু সুবলি গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে অন্যান্য সারের সঙ্গে তিনি ৭৫ কেজি টিএসপি, ৮৩ কেজি এমওপি, ৪০ কেজি ইউরিয়া ২০ কেজি ম্যাগনেশিয়াম ও ২৫ কেজি ডিএপি ব্যবহার করেন।

উপজেলার অনেক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে একই তথ্য। ফলে সরকারি হিসাবের সঙ্গে কৃষকের হিসাবের গরমিল পাওয়া গেছে। কৃষকদের দাবি অনুযায়ী, সারের চাহিদা দ্বিগুণেরও বেশি।

সরকার নির্ধারিত সার প্রয়োগের মাত্রা বিষয়ে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সালমান আহমেদ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য থাকে প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ১৫০ মণ আলু উৎপাদন করা। সরকারি হিসাবে সার প্রয়োগ করলে ১১০ থেকে ১১২ মণের বেশি আলু পাওয়া যায় না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘জমিতে অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করলে জমির উর্বরতাশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। আমরা সার প্রয়োগের বিষয়ে কৃষকদের সব সময় সচেতন করার চেষ্টা করছি। এ জন্য নিয়মিত কর্মশালার আয়োজন করা হয়।’ সারের কোনো সংকট নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ডিলার পর্যায়ে সারের পর্যাপ্ত মজুত আছে। নভেম্বর মাসের চাহিদা মোতাবেক ডিলাররা ইতিমধ্যে ২৮২ টন টিএসপি, ৩৮৯ টন এমওপি, ৫২৪ টন ইউরিয়া ও ৩৯০ টন ডিএপি তুলেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত