রাহুল শর্মা, ঢাকা
রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমির পরিমাণ নথিতে ২ একর। কিন্তু বাস্তবে আছে আধা একরের কিছু বেশি। অর্থাৎ জমির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দখলে নেই। এটিসহ সারা দেশের ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৩৩ একরের বেশি জমি বেহাত হয়ে গেছে।
এই তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ)। জমি বেহাত ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাল সনদ, অবৈধ নিয়োগ, তথ্য গোপন করে বেতন উত্তোলন, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত উত্তোলনসহ বিভিন্ন কারণে সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার বেশি অনিয়মের তথ্যও পেয়েছে অধিদপ্তর। ২০২১-২২ অর্থবছরে করা নিরীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে ডিআইএর গবেষণা প্রতিবেদন ২০২৩-এ।
অনিয়ম করা অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গত ৩০ জুন প্রতিবেদনটি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে এক সভায় উপস্থাপন করা হয়।
ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিটি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বেহাত হওয়া জমি ও অন্যান্য অনিয়ম গুরুত্বসহ তুলে ধরে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিআইএ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিআইএ’র তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর।’
দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার। ডিআইএ প্রতিবছর গড়ে ২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা ও তদন্ত করে। এ জন্য পুরো দেশকে আগের চারটি বিভাগে ভাগ করে কার্যক্রম চালায়। বিভাগ চারটি হলো:
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী।
বেহাত ৬৩৩ একর জমি
গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ৬৩৩ দশমিক ৩৯৩৬ একর জমি বেহাত হয়েছে। বেহাত জমির মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল/কলেজ/স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ৪২৮ দশমিক ৪৬০৫ একর এবং ৪৮২টি মাদ্রাসা এবং ৪১টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০৪ দশমিক ৯৩৩১ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৪৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৩৫ দশমিক ৩৬৩৪ একর, রাজশাহী বিভাগের ৬২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫৮ দশমিক ৮২৪৫ একর, চট্টগ্রাম বিভাগের ৪৩১টি প্রতিষ্ঠানের ১৪৩ দশমিক ৪৫১৬ একর এবং খুলনা বিভাগের ৩৫৫ প্রতিষ্ঠানের ৯৫ দশমিক ৭৫৪০৮ একর জমি বেহাত হয়েছে।
ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১ দশমিক ৪৬ একর জমি বেহাত হয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, এর এক দিকে সড়ক, বাকি তিন দিকেই বহুতল আবাসিক ভবন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, ‘কাগজে ২ একর জমি আছে, বাস্তবে নেই। আমরা ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ জমির খাজনা দিচ্ছি। বাকি জমি কোথায় এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, দাতা সদস্যদের কেউ কেউ স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়া জমির বেশির ভাগ অংশ পরে নিজেদের প্রয়োজনে দখল করেছেন।
ডিআইএর তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জের জয়গোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের শূন্য দশমিক ৮০ একর জমি বেহাত হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন জয়গোবিন্দ রায় চৌধুরীর ২০০ শতাংশ জায়গা থেকে স্কুলের নামে খারিজ হয়েছে ৬৭ শতাংশ। বাকিটা কোথায় আছে তাঁর জানা নেই।
তবে একজন শিক্ষক বলেন, সামনের পুকুরের জমিটি বিদ্যালয়ের। আগে পুকুর ছিল না। এখান থেকে মাটি কেটে স্কুলমাঠ ভরাট করায় পুকুর হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে পুকুরটি স্কুলের বাইরে থেকে যায়। এখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) মাছ চাষ করছে, এলাকাবাসী গোসল করে। পুকুরটি কারও দখলে না, আবার স্কুলও পুকুরটি পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে না।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘পুকুরটি আমাদের না সিটি করপোরেশনের, তা জানা নেই। আমরাও ব্যবহার করি, নাসিকও ব্যবহার করে। আমি আসার আগে এই পুকুর ভরাট করতে চেয়েছিল, তখন এলাকাবাসী বাধা দিয়েছে। এর পর থেকে পুকুর সবাই ব্যবহার করছে।’
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মথুরাপাড়া বি কে উচ্চবিদ্যালয়ের ৫ দশমিক ৭৫ একরের মধ্যে ৪ দশমিক ৭৩ একর বেহাত বলে উল্লেখ আছে প্রতিবেদনে। তবে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমানে স্কুলের জমির পরিমাণ ২ একর। এর মধ্যে দেড় একরের খাজনা দেওয়া হচ্ছে, বাকি আধা একরও স্কুলের দখলে। বাকি জমি নদীভাঙনে কমেছে।
তদন্ত কার্যক্রমে যুক্ত একাধিক শিক্ষা পরিদর্শকের মতে, অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি এবং প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের জমি বেহাতের ঘটনায় যোগসূত্র বা অবহেলা থাকে। প্রতিবেদনে বেহাত হওয়া জমি প্রতিষ্ঠানের দখলে এনে মন্ত্রণালয়কে জানানোর এবং বেহাত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি দুঃখজনক। বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার অনিয়ম
ডিআইএর প্রতিবেদন বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অবৈধ নিয়োগ, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন, প্রাপ্য স্কেলে বেতন না নেওয়া, তথ্য গোপন করে বেতন উত্তোলন এবং জাল সনদ দিয়ে চাকরির মাধ্যমে ৪৩ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ১৫৬ টাকার অনিয়ম হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৯ কোটি ৩২ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৭ টাকার এবং ৫২৩টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় মোট ১৪ কোটি ২০ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৯ টাকার অনিয়ম হয়েছে। এসব অর্থ চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার এবং অভিযুক্ত শিক্ষক/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
জাল সনদধারী ৮৬ জন
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ৮৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল পেয়েছে নিরীক্ষা দল। এ জন্য বেতন-ভাতা বাবদ নেওয়া ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৩৫ টাকা এমপিওভুক্ত এই শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ৬৮ জন বেতন-ভাতা নিয়েছেন ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৯ হাজার ২৩৮ টাকা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসার ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়েছেন ২ কোটি ৯৭ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৭ টাকা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাতের ঘটনা উদ্বেগজনক। এর সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাবিত আল হাসান, বগুড়া প্রতিনিধি গনেশ দাস ও ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন)
রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমির পরিমাণ নথিতে ২ একর। কিন্তু বাস্তবে আছে আধা একরের কিছু বেশি। অর্থাৎ জমির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দখলে নেই। এটিসহ সারা দেশের ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৩৩ একরের বেশি জমি বেহাত হয়ে গেছে।
এই তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ)। জমি বেহাত ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাল সনদ, অবৈধ নিয়োগ, তথ্য গোপন করে বেতন উত্তোলন, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত উত্তোলনসহ বিভিন্ন কারণে সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার বেশি অনিয়মের তথ্যও পেয়েছে অধিদপ্তর। ২০২১-২২ অর্থবছরে করা নিরীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে ডিআইএর গবেষণা প্রতিবেদন ২০২৩-এ।
অনিয়ম করা অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গত ৩০ জুন প্রতিবেদনটি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে এক সভায় উপস্থাপন করা হয়।
ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিটি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বেহাত হওয়া জমি ও অন্যান্য অনিয়ম গুরুত্বসহ তুলে ধরে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিআইএ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিআইএ’র তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর।’
দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার। ডিআইএ প্রতিবছর গড়ে ২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা ও তদন্ত করে। এ জন্য পুরো দেশকে আগের চারটি বিভাগে ভাগ করে কার্যক্রম চালায়। বিভাগ চারটি হলো:
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী।
বেহাত ৬৩৩ একর জমি
গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ৬৩৩ দশমিক ৩৯৩৬ একর জমি বেহাত হয়েছে। বেহাত জমির মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল/কলেজ/স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ৪২৮ দশমিক ৪৬০৫ একর এবং ৪৮২টি মাদ্রাসা এবং ৪১টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০৪ দশমিক ৯৩৩১ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৪৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৩৫ দশমিক ৩৬৩৪ একর, রাজশাহী বিভাগের ৬২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫৮ দশমিক ৮২৪৫ একর, চট্টগ্রাম বিভাগের ৪৩১টি প্রতিষ্ঠানের ১৪৩ দশমিক ৪৫১৬ একর এবং খুলনা বিভাগের ৩৫৫ প্রতিষ্ঠানের ৯৫ দশমিক ৭৫৪০৮ একর জমি বেহাত হয়েছে।
ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১ দশমিক ৪৬ একর জমি বেহাত হয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, এর এক দিকে সড়ক, বাকি তিন দিকেই বহুতল আবাসিক ভবন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, ‘কাগজে ২ একর জমি আছে, বাস্তবে নেই। আমরা ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ জমির খাজনা দিচ্ছি। বাকি জমি কোথায় এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, দাতা সদস্যদের কেউ কেউ স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়া জমির বেশির ভাগ অংশ পরে নিজেদের প্রয়োজনে দখল করেছেন।
ডিআইএর তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জের জয়গোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের শূন্য দশমিক ৮০ একর জমি বেহাত হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন জয়গোবিন্দ রায় চৌধুরীর ২০০ শতাংশ জায়গা থেকে স্কুলের নামে খারিজ হয়েছে ৬৭ শতাংশ। বাকিটা কোথায় আছে তাঁর জানা নেই।
তবে একজন শিক্ষক বলেন, সামনের পুকুরের জমিটি বিদ্যালয়ের। আগে পুকুর ছিল না। এখান থেকে মাটি কেটে স্কুলমাঠ ভরাট করায় পুকুর হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে পুকুরটি স্কুলের বাইরে থেকে যায়। এখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) মাছ চাষ করছে, এলাকাবাসী গোসল করে। পুকুরটি কারও দখলে না, আবার স্কুলও পুকুরটি পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে না।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘পুকুরটি আমাদের না সিটি করপোরেশনের, তা জানা নেই। আমরাও ব্যবহার করি, নাসিকও ব্যবহার করে। আমি আসার আগে এই পুকুর ভরাট করতে চেয়েছিল, তখন এলাকাবাসী বাধা দিয়েছে। এর পর থেকে পুকুর সবাই ব্যবহার করছে।’
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মথুরাপাড়া বি কে উচ্চবিদ্যালয়ের ৫ দশমিক ৭৫ একরের মধ্যে ৪ দশমিক ৭৩ একর বেহাত বলে উল্লেখ আছে প্রতিবেদনে। তবে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমানে স্কুলের জমির পরিমাণ ২ একর। এর মধ্যে দেড় একরের খাজনা দেওয়া হচ্ছে, বাকি আধা একরও স্কুলের দখলে। বাকি জমি নদীভাঙনে কমেছে।
তদন্ত কার্যক্রমে যুক্ত একাধিক শিক্ষা পরিদর্শকের মতে, অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি এবং প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের জমি বেহাতের ঘটনায় যোগসূত্র বা অবহেলা থাকে। প্রতিবেদনে বেহাত হওয়া জমি প্রতিষ্ঠানের দখলে এনে মন্ত্রণালয়কে জানানোর এবং বেহাত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি দুঃখজনক। বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার অনিয়ম
ডিআইএর প্রতিবেদন বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অবৈধ নিয়োগ, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন, প্রাপ্য স্কেলে বেতন না নেওয়া, তথ্য গোপন করে বেতন উত্তোলন এবং জাল সনদ দিয়ে চাকরির মাধ্যমে ৪৩ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ১৫৬ টাকার অনিয়ম হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৯ কোটি ৩২ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৭ টাকার এবং ৫২৩টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় মোট ১৪ কোটি ২০ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৯ টাকার অনিয়ম হয়েছে। এসব অর্থ চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার এবং অভিযুক্ত শিক্ষক/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
জাল সনদধারী ৮৬ জন
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ৮৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল পেয়েছে নিরীক্ষা দল। এ জন্য বেতন-ভাতা বাবদ নেওয়া ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৩৫ টাকা এমপিওভুক্ত এই শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ৬৮ জন বেতন-ভাতা নিয়েছেন ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৯ হাজার ২৩৮ টাকা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসার ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়েছেন ২ কোটি ৯৭ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৭ টাকা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাতের ঘটনা উদ্বেগজনক। এর সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাবিত আল হাসান, বগুড়া প্রতিনিধি গনেশ দাস ও ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন)
রাহুল শর্মা, ঢাকা
রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমির পরিমাণ নথিতে ২ একর। কিন্তু বাস্তবে আছে আধা একরের কিছু বেশি। অর্থাৎ জমির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দখলে নেই। এটিসহ সারা দেশের ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৩৩ একরের বেশি জমি বেহাত হয়ে গেছে।
এই তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ)। জমি বেহাত ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাল সনদ, অবৈধ নিয়োগ, তথ্য গোপন করে বেতন উত্তোলন, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত উত্তোলনসহ বিভিন্ন কারণে সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার বেশি অনিয়মের তথ্যও পেয়েছে অধিদপ্তর। ২০২১-২২ অর্থবছরে করা নিরীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে ডিআইএর গবেষণা প্রতিবেদন ২০২৩-এ।
অনিয়ম করা অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গত ৩০ জুন প্রতিবেদনটি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে এক সভায় উপস্থাপন করা হয়।
ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিটি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বেহাত হওয়া জমি ও অন্যান্য অনিয়ম গুরুত্বসহ তুলে ধরে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিআইএ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিআইএ’র তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর।’
দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার। ডিআইএ প্রতিবছর গড়ে ২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা ও তদন্ত করে। এ জন্য পুরো দেশকে আগের চারটি বিভাগে ভাগ করে কার্যক্রম চালায়। বিভাগ চারটি হলো:
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী।
বেহাত ৬৩৩ একর জমি
গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ৬৩৩ দশমিক ৩৯৩৬ একর জমি বেহাত হয়েছে। বেহাত জমির মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল/কলেজ/স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ৪২৮ দশমিক ৪৬০৫ একর এবং ৪৮২টি মাদ্রাসা এবং ৪১টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০৪ দশমিক ৯৩৩১ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৪৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৩৫ দশমিক ৩৬৩৪ একর, রাজশাহী বিভাগের ৬২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫৮ দশমিক ৮২৪৫ একর, চট্টগ্রাম বিভাগের ৪৩১টি প্রতিষ্ঠানের ১৪৩ দশমিক ৪৫১৬ একর এবং খুলনা বিভাগের ৩৫৫ প্রতিষ্ঠানের ৯৫ দশমিক ৭৫৪০৮ একর জমি বেহাত হয়েছে।
ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১ দশমিক ৪৬ একর জমি বেহাত হয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, এর এক দিকে সড়ক, বাকি তিন দিকেই বহুতল আবাসিক ভবন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, ‘কাগজে ২ একর জমি আছে, বাস্তবে নেই। আমরা ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ জমির খাজনা দিচ্ছি। বাকি জমি কোথায় এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, দাতা সদস্যদের কেউ কেউ স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়া জমির বেশির ভাগ অংশ পরে নিজেদের প্রয়োজনে দখল করেছেন।
ডিআইএর তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জের জয়গোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের শূন্য দশমিক ৮০ একর জমি বেহাত হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন জয়গোবিন্দ রায় চৌধুরীর ২০০ শতাংশ জায়গা থেকে স্কুলের নামে খারিজ হয়েছে ৬৭ শতাংশ। বাকিটা কোথায় আছে তাঁর জানা নেই।
তবে একজন শিক্ষক বলেন, সামনের পুকুরের জমিটি বিদ্যালয়ের। আগে পুকুর ছিল না। এখান থেকে মাটি কেটে স্কুলমাঠ ভরাট করায় পুকুর হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে পুকুরটি স্কুলের বাইরে থেকে যায়। এখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) মাছ চাষ করছে, এলাকাবাসী গোসল করে। পুকুরটি কারও দখলে না, আবার স্কুলও পুকুরটি পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে না।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘পুকুরটি আমাদের না সিটি করপোরেশনের, তা জানা নেই। আমরাও ব্যবহার করি, নাসিকও ব্যবহার করে। আমি আসার আগে এই পুকুর ভরাট করতে চেয়েছিল, তখন এলাকাবাসী বাধা দিয়েছে। এর পর থেকে পুকুর সবাই ব্যবহার করছে।’
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মথুরাপাড়া বি কে উচ্চবিদ্যালয়ের ৫ দশমিক ৭৫ একরের মধ্যে ৪ দশমিক ৭৩ একর বেহাত বলে উল্লেখ আছে প্রতিবেদনে। তবে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমানে স্কুলের জমির পরিমাণ ২ একর। এর মধ্যে দেড় একরের খাজনা দেওয়া হচ্ছে, বাকি আধা একরও স্কুলের দখলে। বাকি জমি নদীভাঙনে কমেছে।
তদন্ত কার্যক্রমে যুক্ত একাধিক শিক্ষা পরিদর্শকের মতে, অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি এবং প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের জমি বেহাতের ঘটনায় যোগসূত্র বা অবহেলা থাকে। প্রতিবেদনে বেহাত হওয়া জমি প্রতিষ্ঠানের দখলে এনে মন্ত্রণালয়কে জানানোর এবং বেহাত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি দুঃখজনক। বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার অনিয়ম
ডিআইএর প্রতিবেদন বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অবৈধ নিয়োগ, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন, প্রাপ্য স্কেলে বেতন না নেওয়া, তথ্য গোপন করে বেতন উত্তোলন এবং জাল সনদ দিয়ে চাকরির মাধ্যমে ৪৩ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ১৫৬ টাকার অনিয়ম হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৯ কোটি ৩২ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৭ টাকার এবং ৫২৩টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় মোট ১৪ কোটি ২০ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৯ টাকার অনিয়ম হয়েছে। এসব অর্থ চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার এবং অভিযুক্ত শিক্ষক/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
জাল সনদধারী ৮৬ জন
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ৮৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল পেয়েছে নিরীক্ষা দল। এ জন্য বেতন-ভাতা বাবদ নেওয়া ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৩৫ টাকা এমপিওভুক্ত এই শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ৬৮ জন বেতন-ভাতা নিয়েছেন ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৯ হাজার ২৩৮ টাকা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসার ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়েছেন ২ কোটি ৯৭ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৭ টাকা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাতের ঘটনা উদ্বেগজনক। এর সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাবিত আল হাসান, বগুড়া প্রতিনিধি গনেশ দাস ও ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন)
রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমির পরিমাণ নথিতে ২ একর। কিন্তু বাস্তবে আছে আধা একরের কিছু বেশি। অর্থাৎ জমির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দখলে নেই। এটিসহ সারা দেশের ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৩৩ একরের বেশি জমি বেহাত হয়ে গেছে।
এই তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ)। জমি বেহাত ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাল সনদ, অবৈধ নিয়োগ, তথ্য গোপন করে বেতন উত্তোলন, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত উত্তোলনসহ বিভিন্ন কারণে সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার বেশি অনিয়মের তথ্যও পেয়েছে অধিদপ্তর। ২০২১-২২ অর্থবছরে করা নিরীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে ডিআইএর গবেষণা প্রতিবেদন ২০২৩-এ।
অনিয়ম করা অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গত ৩০ জুন প্রতিবেদনটি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে এক সভায় উপস্থাপন করা হয়।
ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিটি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বেহাত হওয়া জমি ও অন্যান্য অনিয়ম গুরুত্বসহ তুলে ধরে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিআইএ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং আর্থিক স্বচ্ছতা আনতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন) মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিআইএ’র তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর।’
দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার। ডিআইএ প্রতিবছর গড়ে ২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা ও তদন্ত করে। এ জন্য পুরো দেশকে আগের চারটি বিভাগে ভাগ করে কার্যক্রম চালায়। বিভাগ চারটি হলো:
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী।
বেহাত ৬৩৩ একর জমি
গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ৬৩৩ দশমিক ৩৯৩৬ একর জমি বেহাত হয়েছে। বেহাত জমির মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল/কলেজ/স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ৪২৮ দশমিক ৪৬০৫ একর এবং ৪৮২টি মাদ্রাসা এবং ৪১টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০৪ দশমিক ৯৩৩১ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৪৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৩৫ দশমিক ৩৬৩৪ একর, রাজশাহী বিভাগের ৬২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫৮ দশমিক ৮২৪৫ একর, চট্টগ্রাম বিভাগের ৪৩১টি প্রতিষ্ঠানের ১৪৩ দশমিক ৪৫১৬ একর এবং খুলনা বিভাগের ৩৫৫ প্রতিষ্ঠানের ৯৫ দশমিক ৭৫৪০৮ একর জমি বেহাত হয়েছে।
ডিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১ দশমিক ৪৬ একর জমি বেহাত হয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, এর এক দিকে সড়ক, বাকি তিন দিকেই বহুতল আবাসিক ভবন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার বলেন, ‘কাগজে ২ একর জমি আছে, বাস্তবে নেই। আমরা ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ জমির খাজনা দিচ্ছি। বাকি জমি কোথায় এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, দাতা সদস্যদের কেউ কেউ স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়া জমির বেশির ভাগ অংশ পরে নিজেদের প্রয়োজনে দখল করেছেন।
ডিআইএর তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জের জয়গোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের শূন্য দশমিক ৮০ একর জমি বেহাত হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন জয়গোবিন্দ রায় চৌধুরীর ২০০ শতাংশ জায়গা থেকে স্কুলের নামে খারিজ হয়েছে ৬৭ শতাংশ। বাকিটা কোথায় আছে তাঁর জানা নেই।
তবে একজন শিক্ষক বলেন, সামনের পুকুরের জমিটি বিদ্যালয়ের। আগে পুকুর ছিল না। এখান থেকে মাটি কেটে স্কুলমাঠ ভরাট করায় পুকুর হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে পুকুরটি স্কুলের বাইরে থেকে যায়। এখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) মাছ চাষ করছে, এলাকাবাসী গোসল করে। পুকুরটি কারও দখলে না, আবার স্কুলও পুকুরটি পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে না।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘পুকুরটি আমাদের না সিটি করপোরেশনের, তা জানা নেই। আমরাও ব্যবহার করি, নাসিকও ব্যবহার করে। আমি আসার আগে এই পুকুর ভরাট করতে চেয়েছিল, তখন এলাকাবাসী বাধা দিয়েছে। এর পর থেকে পুকুর সবাই ব্যবহার করছে।’
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মথুরাপাড়া বি কে উচ্চবিদ্যালয়ের ৫ দশমিক ৭৫ একরের মধ্যে ৪ দশমিক ৭৩ একর বেহাত বলে উল্লেখ আছে প্রতিবেদনে। তবে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমানে স্কুলের জমির পরিমাণ ২ একর। এর মধ্যে দেড় একরের খাজনা দেওয়া হচ্ছে, বাকি আধা একরও স্কুলের দখলে। বাকি জমি নদীভাঙনে কমেছে।
তদন্ত কার্যক্রমে যুক্ত একাধিক শিক্ষা পরিদর্শকের মতে, অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি এবং প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের জমি বেহাতের ঘটনায় যোগসূত্র বা অবহেলা থাকে। প্রতিবেদনে বেহাত হওয়া জমি প্রতিষ্ঠানের দখলে এনে মন্ত্রণালয়কে জানানোর এবং বেহাত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি দুঃখজনক। বেহাত হওয়া জমি উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সাড়ে ৪৩ কোটি টাকার অনিয়ম
ডিআইএর প্রতিবেদন বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অবৈধ নিয়োগ, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন, প্রাপ্য স্কেলে বেতন না নেওয়া, তথ্য গোপন করে বেতন উত্তোলন এবং জাল সনদ দিয়ে চাকরির মাধ্যমে ৪৩ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ১৫৬ টাকার অনিয়ম হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮টি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৯ কোটি ৩২ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৭ টাকার এবং ৫২৩টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় মোট ১৪ কোটি ২০ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৯ টাকার অনিয়ম হয়েছে। এসব অর্থ চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার এবং অভিযুক্ত শিক্ষক/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
জাল সনদধারী ৮৬ জন
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ৮৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল পেয়েছে নিরীক্ষা দল। এ জন্য বেতন-ভাতা বাবদ নেওয়া ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৩৫ টাকা এমপিওভুক্ত এই শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে আদায়ের সুপারিশ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ৬৮ জন বেতন-ভাতা নিয়েছেন ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৯ হাজার ২৩৮ টাকা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসার ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়েছেন ২ কোটি ৯৭ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৭ টাকা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি বেহাতের ঘটনা উদ্বেগজনক। এর সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাবিত আল হাসান, বগুড়া প্রতিনিধি গনেশ দাস ও ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন)
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমির পরিমাণ নথিতে ২ একর। কিন্তু বাস্তবে আছে আধা একরের কিছু বেশি। অর্থাৎ জমির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দখলে নেই। এটিসহ সারা দেশের ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৩৩ একরের বেশি জমি বে
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমির পরিমাণ নথিতে ২ একর। কিন্তু বাস্তবে আছে আধা একরের কিছু বেশি। অর্থাৎ জমির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দখলে নেই। এটিসহ সারা দেশের ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৩৩ একরের বেশি জমি বে
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমির পরিমাণ নথিতে ২ একর। কিন্তু বাস্তবে আছে আধা একরের কিছু বেশি। অর্থাৎ জমির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দখলে নেই। এটিসহ সারা দেশের ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৩৩ একরের বেশি জমি বে
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
রাজধানীর মগবাজারের মধুবাগের শের-ই-বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমির পরিমাণ নথিতে ২ একর। কিন্তু বাস্তবে আছে আধা একরের কিছু বেশি। অর্থাৎ জমির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দখলে নেই। এটিসহ সারা দেশের ১ হাজার ৮৯১টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৩৩ একরের বেশি জমি বে
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫